বিলুপ্ত কমিটির পক্ষে কাউকে বহিষ্কার করার কোন এখতিয়ার নাই : মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী

- প্রকাশের সময় : ০৯:৫২:২৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২০
- / ৪৯ বার পঠিত
নিউইয়র্ক (ইউএনএ): যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক পদ থেকে মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকীকে বহিস্কার করার প্রতিবাদ জানিয়ে সংগঠনের এই সিদ্ধান্তকে ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করে তিনি বলেছেন- ‘ যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের বিলুপ্ত কমিটির পক্ষে কাউকে বহিষ্কার বা আবিষ্কার করার কোন এখতিয়ার নাই’। মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী শুক্রবার (১১ সেপ্টেম্বর) ইউএনএ প্রতিনিধির সাথে আলাপকালে তার প্রতিবাদের কথা জানান। উল্লেখ্য, সংগঠনের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক গত ১০ সেপ্টেম্বর এক সাংগঠনিক আদেশে ‘বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মনিকে নিয়ে ঔদ্ধত্যপূর্ণ, মিথ্যা, বানোয়াট, মনগড়া, বিভ্রান্তমুলক, আদর্শচূত ও একটি বিশেষ মহলের উদ্দেশ্য প্রণোদিত বক্তব্য সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণিত হওয়ায়, সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রের ৪৭ (ক) ধারা মোতাবেক মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকীকে স্বপদ বা দায়িত্ব (দপ্তর সম্পাদক এর পদ) থেকে কেন্দ্রের নির্দেশ মোতাবেক বহিস্কার করা হয়েছে।’ এ বহিস্কারাদেশ ১০ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখ থেকে বলবৎ বলে পরিগণিত হবে সংগঠনের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ স্বাক্ষরিত পত্রে (সূত্রঃ প্রে/রি/১০/২০২০, তারিখঃ ১০ই সেপ্টেম্বর ২০২০ ইং) জানানো হয়েছে। খবর ইউএনএ’র।
মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী তার প্রতিবাদে বলেন- ‘যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ স্বাক্ষরিত ও ফেসবুকে প্রচারিত আমার বিরুদ্ধে একটি বহিষ্কারাদেশ দেখে যারপরনাই বিস্মিত ও হতবাক হয়েছি।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক ২০১৯-এর সেপ্টেম্বরে তাঁর হোটেল স্যুটে অনেকের সামনে কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক আব্দুস সোবাহান গোলাপ-কে ডেকে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে ড. সিদ্দিকুর রহমানকে জানিয়ে দিতে বলেন। দু’দিন পর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে আয়োজিত গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে জননেত্রী শেখ হাসিনা নিজেই সভাপতিত্ব করেন এবং সিদ্দিকুর রহমান দর্শক সারিতে বসে থাকেন।’
মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী বলেন- ‘যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের বিলুপ্ত কমিটির পক্ষে কাউকে বহিষ্কার বা আবিষ্কার করার কোন এখতিয়ার নাই। এছাড়াও কমিটির কাউকেই দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী অব্যাহতি দিতে হলে কার্যকরী কমিটির সভায় অনুমোদন নিয়ে নূন্যতম দু’সপ্তাহ সময় দিয়ে কারণ দর্শাও নোটিশ দিতে হয়। জবাবে সন্তুষ্ট না হলে যে কোন শাস্তির জন্যে কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে পাঠিয়ে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে তা কার্যকরী কমিটির অনুমোদনের ও সিদ্ধান্তে জন্যে অপেক্ষা করতে হবে। কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় উক্ত সময়ের মধ্েয কোনো সিদ্ধান্ত না হলে তা আপনাআপনি বাতিল হয়ে যায়। এটাই গঠনতন্ত্রের নিয়ম।
আওয়ামী লীগ পরিবার আয়োজিত ১৫ আগষ্টের জাতীয় শোক দিবসের এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের নৃশংস হত্যাকান্ডের ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে কূখ্যাত খুনী খন্দকার মোশতাক তার ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করতে বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে যুবনেতা শেখ ফজলুল হক মনি’র সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে বিভিন্নভাবে বঙ্গবন্ধুকে তার বিশ্বস্থ সহকর্মীদের থেকে একা করে ফেলা হয় বলে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা, বই-পুস্তক, প্রবন্ধ, সেমিনার, নাটক, টকশোতে আলোচনা থেকে জানতে পেরেছি। যাতে খুনিরা সহজেই তাদের মিশন বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়। সেসময়ে দল ক্ষমতায় থাকলেও আমরা বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারকে রক্ষা করতে পারিনি। এখানে কোনভাবেই যুবনেতা শেখ ফজলুল হক মনি ভাইকে ছোট বা চক্রান্তকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়নি। একইভাবে আজ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেও চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রের আভাস পাওয়া যাচ্ছে বলে বিভিন্ন মিডিয়ায় খবরে প্রকাশ। আলোচনার শুরুতে বিশিষ্ট আলোচকবৃন্দকে এ বিষয়ে আলোকপাত করতে অনুরোধ জানাই এবং কিভাবে আমরা আজ জননেত্রী শেখ হাসিনাকে রক্ষা করতে পারি তা জানতে চাই?’
মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী তার প্রতিবাদে বলেন- ‘এ বিষয়টিকে উপজীব্য করে আমার বক্তব্যের অপব্যাখ্যা করে আমার বিরুদ্ধে এক গভীর ষড়যন্ত্র করে ক্রমাগত ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে কতিপয় মূর্খ ও আবাল অপপ্রচার চালাতে থাকে। অবশেষে সম্পুর্ণ ‘অবৈধভাবে বিলুপ্ত কমিটির সাবেক সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক’ অবৈধভাবে দলীয় প্যাড ব্যাবহার করে আমার বিরুদ্ধে বহি:স্কারাদেশ দিয়ে গর্হীত কাজ ও গুরুতর অপরাধ করেছেন। এজন্যে সিদ্দিক-সামাদ গং এর দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবী করছি। আর তাদের সাথে যে সকল অতি উৎসাহী মদতদাতা ও ধান্দাবাজ তথাকথিত সাবেক ছাত্রনেতা, যুবনেতা অনর্গল ফেসবুকে অশ্লীল ও কদর্য্য ভাষা ব্যাবহার করে আমার বিরুদ্ধে কূৎসা রটনা করেছে তাদের লেখাপড়ার লেভেল ও পারিবারিক পরিচয় নিয়ে করুনা প্রকাশ করছি।’
তিনি বলেন- ‘আওয়ামী লীগ পরিবারের সাম্প্রতিক কাজ -কর্মে ওরা ঈর্ষান্মিত হয়ে বিলুপ্ত কমিটির কতিপয় নেতাকর্মী ও কতিপয় সূযোগ সন্ধানী চক্রান্ত এবং ষড়যন্ত্র করে মিথ্যাচার ও অপপ্রচার করে আমাকে ফাঁসানোর হীন প্রচেষ্টা করেছে বলে আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তৃণমুল কর্মীদের আশা ভরসার স্থল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের সুযোগ্য কন্যা, মানবতার মা, জননেত্রী শেখ হাসিনা কখনও এটা মেনে নেবেন না- এ বিশ্বাস আমার আছে এবং তাই এ ধরনের বহিস্কারাদেশ আমি ঘৃনাভরে প্রত্যাখান করছি।’