নিউইয়র্ক ০৯:৩৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ বনাম মহানগর আ: লীগ : ড. সিদ্দিক চাঁদাবাজ : নুরুন্নবী খুনের মামলার পলাতক আসামী

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৯:৫১:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ মে ২০১৫
  • / ৮৪৮ বার পঠিত

নিউইয়র্ক: যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগে হচ্ছেটা কি? কেন বহিষ্কার, বিবৃতি পাল্টা বিবৃতি? চলছে কমিটি আর নেতাদের নিয়ে বাহাস। কিন্তু কেন? জেলা সভাপতির মর্যাদায় অভিষিক্ত যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমানকে সিটি আওয়ামী লীগ সভাপতি কমান্ডার নুরুন্নবী অবাঞ্ছিত করার ঘোষণা করেছেন। প্রশ্ন উঠেছে জেলা সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমানের বিরুদ্ধে কমান্ডার নুরুন্নবী এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন কি না।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ঢাকা ও চট্টগ্রামের তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ক্ষমতাসীন মহাজোট সরকারের বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সমর্থিত তিন প্রার্থী মেয়র নির্বাচিত, বৃটেনের সাধারণ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর শানিত রক্তের উত্তরাধিকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি ও শেখ রেহানার কন্যা টিউলিপ সিদ্দিকীসহ চার বাংলাদেশী-বৃটিশ লেবার পার্টি থেকে পার্লামেন্ট মেম্বার নির্বাচিত হওয়া এবং ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে স্থল চুক্তি বাস্তবায়নের পথ প্রশস্ত হওয়ায় স্বস্তি, আনন্দ ও উল্লাস বিরাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী পরিবার। এমন একটি আনন্দ অনুষ্ঠানও সম্মন্ন হয়েছে বিভক্তির আয়োজনে। মিষ্টি বিতরণসহ আনন্দ সভা-সমাবেশও হয়েছে। সব মিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী পরিবার নতুন সঙ্কটের মুখোমুখী।
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান দুই সপ্তাহ আগে বাংলাদেশ সফরে গেছেন। তার অনুপস্থিতিতে তাকে (ড. সিদ্দিকুর রহমান) অসাংগঠনিক কর্মকান্ডের অভিযোগে নিউইয়র্কে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছেন নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি কামান্ডার নূরুন নবী। শুধু ড. সিদ্দিক-ই নয়, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ চৌধুরী ও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক আহমেদকেও জড়িয়ে বিবৃতি দিয়েছেন কমান্ডার নবী। ফলে বিবৃতি পাল্টা বিবৃতিতে এখন সরগরম হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ। নবী কমান্ডারের বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন ইমদাদ চৌধুরী ও ফারুক আহমেদ। আর এই বিবৃতির মধ্য দিয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যকার বিরোধ নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমানের অনুপস্থিতিতে দলের উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খুলছেন না শীর্ষ কোন নেতা। তারা বলছেন, আপাতত: কোন কথা বা মন্তব্য নয়, সভাপতি দেশ থেকে ফেরার পরই সাংগঠনিক বিষয়ে কথা বলা হবে। তবে জেলা পর্যায়ের মর্যাদা সম্পন্ন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতিকে সিটি কমিটির সভাপতি কর্তৃক নিউইয়র্কে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে মিডিয়ায় বিবৃতি দেয়ার ঘটনায় আওয়ামী পরিবারে প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের একাধিক নেতা নবী কমান্ডারের বিবৃতিকে ‘ধৃষ্ঠতা’র শামিল উল্লেখ করে বলেছেন, তার এই বিবৃতির নেপথ্যে আরো কেউ রয়েছে। যারা তাকে ‘মদদ’ দিচ্ছে। এসব নিয়ে সাংগঠনিক সভায় কথা বলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা জানান তারা।
নবী কমান্ডারের বক্তব্য মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন : ফারুক আহমেদ
নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি কামান্ডার নবী কর্তৃক যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমানকে অবাঞ্চিত করার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক আহমদ।
তিনি তার বিবৃতিতে বলেন: যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান এবং আমাকে জড়িয়ে (১১ মে’২০১৫ প্রকাশিত) বিভিন্ন মিডিয়াতে নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি নবী কমান্ডারের বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। আমি তার বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলতে চাই- আমার বড় পরিচয় আমি ‘জাতির জনক’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তথা মুজিব আদর্শের একজন সৈনিক। জননেত্রী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন কর্মী হিসেবে দেশ-প্রবাসে জনগণ ও দলের জন্য কাজ করাই আমার রাজনীতির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। আমি কখনো আওয়ামী লীগ বা আওয়ামী লীগ সরকার বা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কোন সাংবাদিক সম্মেলন করিনি। ২০০৯ সালে আমি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেছিলাম। ঐ নির্বাচন নির্দলীয় নিরপেক্ষ স্থানীয় সরকার নির্বাচন ছিলো এবং নির্বাচনে আমার সাথে স্থানীয় আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ আওয়ামী লীগের চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। কিন্তু নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী জয়ী হয়। তাই ঐ নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার বা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সাংবাদিক সম্মেলন করে বক্তব্য রাখার কোন প্রশ্নই উঠে না।
আমি মনে করি নবী কমান্ডার কারো প্ররোচণায় যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী, দলীয় সভাপতি ও আমাকে নিয়ে মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন বক্তব্য দিয়ে নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মেরেছেন। আমি বলতে চাই, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ বা দলের সংগ্রামী সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান সম্পর্কে কথা বলার সে (নবী কমান্ডার) কে? তার যোগ্যতাই বা কি? মুক্তিযোদ্ধা নামধারী এই ব্যক্তি সম্পর্কে প্রবাসীরা অবহিত। কমিউনিটির কোথায় ড. সিদ্দিকুর রহমান আর কোথায় নবী কমান্ডার তা সকলের জানা। ড. সিদ্দিক নয় নবীকেই আওয়ামী লীগ ও যুক্তরাষ্ট্রে অবাঞ্ছিত করা হবে। আমি বলতে চাই, ড. সিদ্দিকুর রহমান কোন চাঁদাবাজীতে নন, বরং চাঁদা দিয়েই দলের কর্মকান্ড পরিচালনা করছেন। এছাড়া আমাদের আগামী দিনের নেতা সজিব ওয়াজেদ জয় সম্পর্কে সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি নেতা পুত্র সিজারের মিথ্যাচার ও তথাকথিত তার (সিজার) সাংবাদিক সম্মেলনের প্রতিবাদ ও প্রতিহত আমরাই করেছি, নবী কমান্ডার নয়। অপরদিকে বেকার নবী কমান্ডার দলের নামে চাঁদা তুলে নিজেই থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করছেন। অশিক্ষিত, অর্বাচিন নবী কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা আর আওয়ামী লীগের নাম করে ব্যক্তিগত আর কতিপয় ব্যক্তির স্বার্থ উদ্ধারে ব্যস্ত। বাংলাদেশে নিজ এলাকায় ‘খুনের ঘটনা’য় জড়িত থাকায় সে যে দেশে যেতে পারেন না, নিউইয়র্কের ব্রুকলীনে নোয়াখালী ভবনে বসসবাস করে তার ভাড়া পরিশোধ না করার কথাও প্রবাসীদের অজানা নয়।
আমি যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও দলীয় নেতা-কর্মীদের সম্পর্কে মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন বক্তব্য প্রত্যাহার করার জন্য নবী কমান্ডারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলতে চাই তিনি তার বক্তব্য প্রত্যাহার না করলে বা ভবিষ্যতে এমন বক্তব্য রাখলে তাকে চরম খেশারত দিতে হবে এবং তার পরিণতির জন্য সকল দায়-দায়িত্ব নবী কমান্ডারকেই নিতে হবে।
নবী কমান্ডার কর্তৃক ড. সিদ্দিককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা
নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি কামান্ডার নূরুন্নবী যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমানের বিরুদ্ধে একটি বিবৃতি দিয়েছেন।
মুলত তার এই প্রকাশ্য বিবৃতি দলের আভ্যন্তরীন অর্ন্তদ্বন্দকে প্রকাশ্য করে দিয়েছে।
বিবৃতিতে কমান্ডার নুরুন্নবী বলেন: যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি হওয়ার পর থেকে একের পর এক অসাংগঠনিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন সিদ্দিকুর রহমান। প্রথমে আমরা ভেবেছিলাম হয়ত অরাজনৈতিক ব্যক্তি হওয়ার কারণে এসব ভুল করছেন। কিন্তু একের পর এক তার ধারাবাহিক অসাংগঠনিক কর্মকান্ড ও দলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র এখন পরিষ্কার হয়ে গেছে তিনি কাদের পারপাস সার্ভ করছেন। সভানেত্রী কর্তৃক স্বাক্ষরিত কমিটি প্রতি সপ্তাহে পরিবর্তন তার ইচ্ছামত সংযোজন বিয়োজন করে দলীয় সভানেত্রীর প্রতি চরম অসম্মান দেখিয়েছেন। ঠিক তেমনিভাবে কেন্দ্র কর্তৃক অনুমোদিত প্রত্যেকটি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনকে প্রত্যাখান করে নিজের পছন্দমত অরাজনৈতিক ব্যক্তিদের নিয়ে পাল্টা কমিটি গঠন করে যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ সহ সকল সংগঠনকে নিষ্ক্রিয় করার হীন তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন।
সিদ্দিকুর রহমান তার সকল সংগঠন বিরোধী তৎপরতা জায়েজ করার জন্য কথায় কথায় দলীয় হাইকমান্ডের নাম বিক্রি করে থাকেন। তিনি বিগত দিনে দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ও দেশের মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে ধরা পড়েছেন। যার প্রমাণ ডাক ও টেলি যোগাযোগ মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দীকি। উনি তার এলাকার লোকদের নিয়ে একটি ঘরোয়া মিটিং এ বক্তব্য রেখেছিলেন, সেই বক্তব্য সিদ্দিকুর রহমানের স্ত্রী নিজ আইপ্যাডে ধারণ করে বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচার করে সরকারকে বিব্রত করার অপচেষ্টা চালিয়েছেন।
গত বৎসর বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতির নিউইয়র্ক সফরের সময় সিদ্দিকুর রহমান মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে সংবর্ধনা দেওয়ার একটি উদ্যোগ নিয়েছিলেন। সেই সংবর্ধনা কমিটিতে বঙ্গবন্ধুর খুনী কর্ণেল রশিদের যুক্তরাষ্ট্রের আশ্রয়দাতা ও কুখ্যাত রাজাকার আব্দুল লতিফ স¤্রাটকে সংবর্ধনা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক করায় এবং চিহ্নিত ৮ জন স্বাধীনতা বিরোধী লোকের নাম থাকায় মহামান্য রাষ্ট্রপতি সেই সংবর্ধনা প্রত্যাখান করেছিলেন। তাছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ষ্টেটে কমিটি গঠন করতে গিয়ে নেত্রীর পরিক্ষিত পুরোনো লোকদের বাদ দিয়ে। অর্থের বিনিময়ে জামাত-বিএনপি’র লোকদের নিয়ে কমিটি গঠন করেছেন।
যার প্রমাণ সাউথ জার্সি মেট্রো আওয়ামী লীগ, তিন হাজার টাকার বিনিময়ে নেপচুন ডাইনারে বসে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের এক সাবেক নেতার পরামর্শে পুরনো আওয়ামী লীগ নেতাদের বাদ দিয়ে জামাত ও বিএনপি লোকদের নিয়ে কমিটি গঠন করেন। তেমনিভাবে ফ্লোরিডা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আশ্রাফের ভাই মুজিবের কাছ থেকে বিশ হাজার টাকার বিনিময়ে নেত্রীর দীর্ঘদিনের পরিক্ষিত নেতাদের বাদ দিয়ে মুজিবকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। টেক্সাসে বসবাসরত বঙ্গবন্ধুর সহচর জনাব আনোয়ারুল আমিন সিদ্দিকের কাছে ফোন করে টেক্সাসের কমিটি করার আগ্রহ প্রকাশ করলে সিদ্দিকুর রহমান তার কাছে ঢাকায় দলীয় ফান্ডে দেওয়ার জন্য পাঁচ হাজার টাকা দাবী করেন। এভাবেই চলছে বিভিন্ন স্টেটে কমিটি করার নামে বেপরোয়া চাঁদাবাজি।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কটাক্ষকারীদের সাথে তার সখ্যতা সর্বজন বিদিত। যার প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক আহম্মদ যিনি সিলেটের গোয়াইন ঘাট উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচন করে পরাজিত হয়ে বিএনপি’র প্রার্থীকে সাথে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ভোট ডাকাতির অভিযোগ এনেছিলেন। যা সিলেটের পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। সিদ্দিক এখন সেই ফারুক আহম্মদকে সাথে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ কে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র করছেন।
বিগত ১৫ মার্চ ফুডকোর্ট মিলনায়তনে সজীব ওয়াজেদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী সাজাপ্রাপ্ত আসামী সিজার সংবাদ সম্মেলন করার কথা শুনে আমার নেতৃত্বে মহানগর আওয়ামী লীগ ও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের অনেক নেতৃবৃন্দ সহ আমরা নিচে অবস্থান করি। তখন সিদ্দিক ও ফারুক গংরা সেখানে গিয়ে বিএনপি’র সভাপতি লতিফ স¤্রাট কে বলেন, আপনারা আপনাদের সংবাদ সম্মেলন চালিয়ে যান কিন্তু আমরা ছাড়া কেউ আওয়ামী লীগের নামে বাধা দিলে আপনারা তাদের পিটিয়ে হাত পা ভেঙ্গে দিবেন। এভাবে বিএনপির সাথে হাত মিলিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের শায়েস্তা করার খবর ভিডিও সহ বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচারিত হয়েছে।
সর্বশেষ বিগত মেয়র নির্বাচনে বিজয়ে পর নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগ ব্রুকলিনে আওয়ামী লীগ অফিসে আনন্দ সমাবেশের আয়োজন করে। পক্ষান্তরে সিদ্দিকুর রহমান জ্যাকসন হাইটস্ েতার কিছু অনুসারীকে সাথে নিয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের ব্যানার লাগিয়ে নিজেকে প্রধান অতিথি ঘোষণা করে মহানগর আওয়ামী লীগের মিটিং বলে চালিয়ে দেওয়ার যে দৃষ্টতা দেখিয়েছেন তা জননেত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক গঠিত মহানগর কমিটির সাথে প্রতারণার শামিল। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আওয়ামী পরিবারে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে, তা যেকোন সময় বিস্ফোরনে রূপ নিতে পারে।
সর্বশেষ অনুসন্ধানে জানা যায় সিদ্দিকুর রহমান লন্ডন গিয়ে তারেক জিয়ার সাথে দেখা করে তার কাছ থেকে টাকা খেয়ে আওয়ামী লীগ কে ধ্বংস করার মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন। এ জন্য একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সিদ্দিকুর রহমানের এইসব অপকর্ম মেনে নিতে না পেরে তাকে যুক্তরাষ্ট্রে অবাঞ্ছিত ঘোষনা করা হলো।
নিউইয়র্ক মহানগর আ. লীগের সাধারণ সম্পাদকের বিবৃতি
নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি কামান্ডার নবীর বিবৃতি প্রকাশের পর ঐ বিবৃতির একাংশের প্রতিবাদ করে পাল্টা বিবৃতি দিয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ চৌধুরী। ইমদাদ চৌধুরী তার বিবৃতিতে বলেন: গত ১১ মে প্রকাশিত নিউইর্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি কমান্ডার নূর নবীর প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মেয়র নির্বাচনের বিজয় উল্লাসে নিউইর্ক মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশের ব্যাপারে ভুল ব্যাখ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রদান করা হয়েছে। আমি নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইমদাদুর রহমান চৌধুরী ঢাকা-চট্টগ্রাম মেয়র নির্বাচনের বিজয় উল্লাসে নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশের ব্যাপারে সভাপতির উস্কানী মূলক বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
গত ২৮ এপ্রিল মঙ্গলবার নিউইয়র্ক এর জ্যাকসন হাইটস এর খাবার বাড়ী চাইনিজ রেষ্টুরেন্টে আমি সভাপতির সাথে পরামর্শক্রমে তাৎক্ষনিক বিজয় সমাবেশটির আয়োজন করি এবং আওয়ামী পরিবার ও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ নেতৃবন্দকে এতে যোগদানের জন্য আমন্ত্রন জানাই। আমার সংগঠনের সভাপতি উক্ত বিজয় সমাবেশে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ এর তত্ত্বাবধানে হয়েছিলো বলে উদ্ভট দাবী করেছেন। নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের বিজয় সমাবেশটি সভাপতির অনুপস্থিতিতে আমি সভাপতিত্ব করি ও সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ শিমুল হাসান পরিচালনা করেন। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ও আওয়ামী পরিবারের সকলে উক্ত অনুষ্ঠানে আমার আমন্ত্রনে উপস্থিত হয়েছিলেন। উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ার জন্য নেতৃবৃন্দের প্রতি সভাপতি কমান্ডার নূরুন নবী কটাক্ষ করায় আমি এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। সভাপতি কমান্ডার নূরুন নবী ব্রুকলীনে ঐদিন নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের অনুষ্ঠান বলে দাবী করেছেন, তা অন্য একটি সংগঠনের ব্যানারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি ব্যস্ত ছিলেন। অথচ নিজের সংগঠনের অনুষ্ঠানে তিনি অনুপস্থিত ছিলেন। তাছাড়াও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সম্মানীত সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান সম্বন্ধে নিউইর্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি কমান্ডার নূরুন নবী যে বিবৃতি দিয়েছেন তা নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির বা আমার কোন সংশ্লিষ্টতা নাই। এটা উনার একান্ত ব্যক্তিগত বক্তব্য। (সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা)

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ বনাম মহানগর আ: লীগ : ড. সিদ্দিক চাঁদাবাজ : নুরুন্নবী খুনের মামলার পলাতক আসামী

প্রকাশের সময় : ০৯:৫১:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ মে ২০১৫

নিউইয়র্ক: যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগে হচ্ছেটা কি? কেন বহিষ্কার, বিবৃতি পাল্টা বিবৃতি? চলছে কমিটি আর নেতাদের নিয়ে বাহাস। কিন্তু কেন? জেলা সভাপতির মর্যাদায় অভিষিক্ত যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমানকে সিটি আওয়ামী লীগ সভাপতি কমান্ডার নুরুন্নবী অবাঞ্ছিত করার ঘোষণা করেছেন। প্রশ্ন উঠেছে জেলা সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমানের বিরুদ্ধে কমান্ডার নুরুন্নবী এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন কি না।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ঢাকা ও চট্টগ্রামের তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ক্ষমতাসীন মহাজোট সরকারের বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সমর্থিত তিন প্রার্থী মেয়র নির্বাচিত, বৃটেনের সাধারণ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর শানিত রক্তের উত্তরাধিকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি ও শেখ রেহানার কন্যা টিউলিপ সিদ্দিকীসহ চার বাংলাদেশী-বৃটিশ লেবার পার্টি থেকে পার্লামেন্ট মেম্বার নির্বাচিত হওয়া এবং ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে স্থল চুক্তি বাস্তবায়নের পথ প্রশস্ত হওয়ায় স্বস্তি, আনন্দ ও উল্লাস বিরাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী পরিবার। এমন একটি আনন্দ অনুষ্ঠানও সম্মন্ন হয়েছে বিভক্তির আয়োজনে। মিষ্টি বিতরণসহ আনন্দ সভা-সমাবেশও হয়েছে। সব মিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী পরিবার নতুন সঙ্কটের মুখোমুখী।
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান দুই সপ্তাহ আগে বাংলাদেশ সফরে গেছেন। তার অনুপস্থিতিতে তাকে (ড. সিদ্দিকুর রহমান) অসাংগঠনিক কর্মকান্ডের অভিযোগে নিউইয়র্কে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছেন নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি কামান্ডার নূরুন নবী। শুধু ড. সিদ্দিক-ই নয়, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ চৌধুরী ও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক আহমেদকেও জড়িয়ে বিবৃতি দিয়েছেন কমান্ডার নবী। ফলে বিবৃতি পাল্টা বিবৃতিতে এখন সরগরম হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ। নবী কমান্ডারের বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন ইমদাদ চৌধুরী ও ফারুক আহমেদ। আর এই বিবৃতির মধ্য দিয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যকার বিরোধ নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমানের অনুপস্থিতিতে দলের উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খুলছেন না শীর্ষ কোন নেতা। তারা বলছেন, আপাতত: কোন কথা বা মন্তব্য নয়, সভাপতি দেশ থেকে ফেরার পরই সাংগঠনিক বিষয়ে কথা বলা হবে। তবে জেলা পর্যায়ের মর্যাদা সম্পন্ন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতিকে সিটি কমিটির সভাপতি কর্তৃক নিউইয়র্কে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে মিডিয়ায় বিবৃতি দেয়ার ঘটনায় আওয়ামী পরিবারে প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের একাধিক নেতা নবী কমান্ডারের বিবৃতিকে ‘ধৃষ্ঠতা’র শামিল উল্লেখ করে বলেছেন, তার এই বিবৃতির নেপথ্যে আরো কেউ রয়েছে। যারা তাকে ‘মদদ’ দিচ্ছে। এসব নিয়ে সাংগঠনিক সভায় কথা বলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা জানান তারা।
নবী কমান্ডারের বক্তব্য মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন : ফারুক আহমেদ
নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি কামান্ডার নবী কর্তৃক যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমানকে অবাঞ্চিত করার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক আহমদ।
তিনি তার বিবৃতিতে বলেন: যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান এবং আমাকে জড়িয়ে (১১ মে’২০১৫ প্রকাশিত) বিভিন্ন মিডিয়াতে নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি নবী কমান্ডারের বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। আমি তার বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলতে চাই- আমার বড় পরিচয় আমি ‘জাতির জনক’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তথা মুজিব আদর্শের একজন সৈনিক। জননেত্রী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন কর্মী হিসেবে দেশ-প্রবাসে জনগণ ও দলের জন্য কাজ করাই আমার রাজনীতির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। আমি কখনো আওয়ামী লীগ বা আওয়ামী লীগ সরকার বা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কোন সাংবাদিক সম্মেলন করিনি। ২০০৯ সালে আমি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেছিলাম। ঐ নির্বাচন নির্দলীয় নিরপেক্ষ স্থানীয় সরকার নির্বাচন ছিলো এবং নির্বাচনে আমার সাথে স্থানীয় আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ আওয়ামী লীগের চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। কিন্তু নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী জয়ী হয়। তাই ঐ নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার বা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সাংবাদিক সম্মেলন করে বক্তব্য রাখার কোন প্রশ্নই উঠে না।
আমি মনে করি নবী কমান্ডার কারো প্ররোচণায় যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী, দলীয় সভাপতি ও আমাকে নিয়ে মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন বক্তব্য দিয়ে নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মেরেছেন। আমি বলতে চাই, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ বা দলের সংগ্রামী সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান সম্পর্কে কথা বলার সে (নবী কমান্ডার) কে? তার যোগ্যতাই বা কি? মুক্তিযোদ্ধা নামধারী এই ব্যক্তি সম্পর্কে প্রবাসীরা অবহিত। কমিউনিটির কোথায় ড. সিদ্দিকুর রহমান আর কোথায় নবী কমান্ডার তা সকলের জানা। ড. সিদ্দিক নয় নবীকেই আওয়ামী লীগ ও যুক্তরাষ্ট্রে অবাঞ্ছিত করা হবে। আমি বলতে চাই, ড. সিদ্দিকুর রহমান কোন চাঁদাবাজীতে নন, বরং চাঁদা দিয়েই দলের কর্মকান্ড পরিচালনা করছেন। এছাড়া আমাদের আগামী দিনের নেতা সজিব ওয়াজেদ জয় সম্পর্কে সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি নেতা পুত্র সিজারের মিথ্যাচার ও তথাকথিত তার (সিজার) সাংবাদিক সম্মেলনের প্রতিবাদ ও প্রতিহত আমরাই করেছি, নবী কমান্ডার নয়। অপরদিকে বেকার নবী কমান্ডার দলের নামে চাঁদা তুলে নিজেই থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করছেন। অশিক্ষিত, অর্বাচিন নবী কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা আর আওয়ামী লীগের নাম করে ব্যক্তিগত আর কতিপয় ব্যক্তির স্বার্থ উদ্ধারে ব্যস্ত। বাংলাদেশে নিজ এলাকায় ‘খুনের ঘটনা’য় জড়িত থাকায় সে যে দেশে যেতে পারেন না, নিউইয়র্কের ব্রুকলীনে নোয়াখালী ভবনে বসসবাস করে তার ভাড়া পরিশোধ না করার কথাও প্রবাসীদের অজানা নয়।
আমি যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও দলীয় নেতা-কর্মীদের সম্পর্কে মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন বক্তব্য প্রত্যাহার করার জন্য নবী কমান্ডারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলতে চাই তিনি তার বক্তব্য প্রত্যাহার না করলে বা ভবিষ্যতে এমন বক্তব্য রাখলে তাকে চরম খেশারত দিতে হবে এবং তার পরিণতির জন্য সকল দায়-দায়িত্ব নবী কমান্ডারকেই নিতে হবে।
নবী কমান্ডার কর্তৃক ড. সিদ্দিককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা
নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি কামান্ডার নূরুন্নবী যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমানের বিরুদ্ধে একটি বিবৃতি দিয়েছেন।
মুলত তার এই প্রকাশ্য বিবৃতি দলের আভ্যন্তরীন অর্ন্তদ্বন্দকে প্রকাশ্য করে দিয়েছে।
বিবৃতিতে কমান্ডার নুরুন্নবী বলেন: যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি হওয়ার পর থেকে একের পর এক অসাংগঠনিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন সিদ্দিকুর রহমান। প্রথমে আমরা ভেবেছিলাম হয়ত অরাজনৈতিক ব্যক্তি হওয়ার কারণে এসব ভুল করছেন। কিন্তু একের পর এক তার ধারাবাহিক অসাংগঠনিক কর্মকান্ড ও দলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র এখন পরিষ্কার হয়ে গেছে তিনি কাদের পারপাস সার্ভ করছেন। সভানেত্রী কর্তৃক স্বাক্ষরিত কমিটি প্রতি সপ্তাহে পরিবর্তন তার ইচ্ছামত সংযোজন বিয়োজন করে দলীয় সভানেত্রীর প্রতি চরম অসম্মান দেখিয়েছেন। ঠিক তেমনিভাবে কেন্দ্র কর্তৃক অনুমোদিত প্রত্যেকটি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনকে প্রত্যাখান করে নিজের পছন্দমত অরাজনৈতিক ব্যক্তিদের নিয়ে পাল্টা কমিটি গঠন করে যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ সহ সকল সংগঠনকে নিষ্ক্রিয় করার হীন তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন।
সিদ্দিকুর রহমান তার সকল সংগঠন বিরোধী তৎপরতা জায়েজ করার জন্য কথায় কথায় দলীয় হাইকমান্ডের নাম বিক্রি করে থাকেন। তিনি বিগত দিনে দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ও দেশের মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে ধরা পড়েছেন। যার প্রমাণ ডাক ও টেলি যোগাযোগ মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দীকি। উনি তার এলাকার লোকদের নিয়ে একটি ঘরোয়া মিটিং এ বক্তব্য রেখেছিলেন, সেই বক্তব্য সিদ্দিকুর রহমানের স্ত্রী নিজ আইপ্যাডে ধারণ করে বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচার করে সরকারকে বিব্রত করার অপচেষ্টা চালিয়েছেন।
গত বৎসর বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতির নিউইয়র্ক সফরের সময় সিদ্দিকুর রহমান মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে সংবর্ধনা দেওয়ার একটি উদ্যোগ নিয়েছিলেন। সেই সংবর্ধনা কমিটিতে বঙ্গবন্ধুর খুনী কর্ণেল রশিদের যুক্তরাষ্ট্রের আশ্রয়দাতা ও কুখ্যাত রাজাকার আব্দুল লতিফ স¤্রাটকে সংবর্ধনা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক করায় এবং চিহ্নিত ৮ জন স্বাধীনতা বিরোধী লোকের নাম থাকায় মহামান্য রাষ্ট্রপতি সেই সংবর্ধনা প্রত্যাখান করেছিলেন। তাছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ষ্টেটে কমিটি গঠন করতে গিয়ে নেত্রীর পরিক্ষিত পুরোনো লোকদের বাদ দিয়ে। অর্থের বিনিময়ে জামাত-বিএনপি’র লোকদের নিয়ে কমিটি গঠন করেছেন।
যার প্রমাণ সাউথ জার্সি মেট্রো আওয়ামী লীগ, তিন হাজার টাকার বিনিময়ে নেপচুন ডাইনারে বসে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের এক সাবেক নেতার পরামর্শে পুরনো আওয়ামী লীগ নেতাদের বাদ দিয়ে জামাত ও বিএনপি লোকদের নিয়ে কমিটি গঠন করেন। তেমনিভাবে ফ্লোরিডা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আশ্রাফের ভাই মুজিবের কাছ থেকে বিশ হাজার টাকার বিনিময়ে নেত্রীর দীর্ঘদিনের পরিক্ষিত নেতাদের বাদ দিয়ে মুজিবকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। টেক্সাসে বসবাসরত বঙ্গবন্ধুর সহচর জনাব আনোয়ারুল আমিন সিদ্দিকের কাছে ফোন করে টেক্সাসের কমিটি করার আগ্রহ প্রকাশ করলে সিদ্দিকুর রহমান তার কাছে ঢাকায় দলীয় ফান্ডে দেওয়ার জন্য পাঁচ হাজার টাকা দাবী করেন। এভাবেই চলছে বিভিন্ন স্টেটে কমিটি করার নামে বেপরোয়া চাঁদাবাজি।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কটাক্ষকারীদের সাথে তার সখ্যতা সর্বজন বিদিত। যার প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক আহম্মদ যিনি সিলেটের গোয়াইন ঘাট উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচন করে পরাজিত হয়ে বিএনপি’র প্রার্থীকে সাথে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ভোট ডাকাতির অভিযোগ এনেছিলেন। যা সিলেটের পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। সিদ্দিক এখন সেই ফারুক আহম্মদকে সাথে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ কে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র করছেন।
বিগত ১৫ মার্চ ফুডকোর্ট মিলনায়তনে সজীব ওয়াজেদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী সাজাপ্রাপ্ত আসামী সিজার সংবাদ সম্মেলন করার কথা শুনে আমার নেতৃত্বে মহানগর আওয়ামী লীগ ও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের অনেক নেতৃবৃন্দ সহ আমরা নিচে অবস্থান করি। তখন সিদ্দিক ও ফারুক গংরা সেখানে গিয়ে বিএনপি’র সভাপতি লতিফ স¤্রাট কে বলেন, আপনারা আপনাদের সংবাদ সম্মেলন চালিয়ে যান কিন্তু আমরা ছাড়া কেউ আওয়ামী লীগের নামে বাধা দিলে আপনারা তাদের পিটিয়ে হাত পা ভেঙ্গে দিবেন। এভাবে বিএনপির সাথে হাত মিলিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের শায়েস্তা করার খবর ভিডিও সহ বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচারিত হয়েছে।
সর্বশেষ বিগত মেয়র নির্বাচনে বিজয়ে পর নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগ ব্রুকলিনে আওয়ামী লীগ অফিসে আনন্দ সমাবেশের আয়োজন করে। পক্ষান্তরে সিদ্দিকুর রহমান জ্যাকসন হাইটস্ েতার কিছু অনুসারীকে সাথে নিয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের ব্যানার লাগিয়ে নিজেকে প্রধান অতিথি ঘোষণা করে মহানগর আওয়ামী লীগের মিটিং বলে চালিয়ে দেওয়ার যে দৃষ্টতা দেখিয়েছেন তা জননেত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক গঠিত মহানগর কমিটির সাথে প্রতারণার শামিল। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আওয়ামী পরিবারে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে, তা যেকোন সময় বিস্ফোরনে রূপ নিতে পারে।
সর্বশেষ অনুসন্ধানে জানা যায় সিদ্দিকুর রহমান লন্ডন গিয়ে তারেক জিয়ার সাথে দেখা করে তার কাছ থেকে টাকা খেয়ে আওয়ামী লীগ কে ধ্বংস করার মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন। এ জন্য একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সিদ্দিকুর রহমানের এইসব অপকর্ম মেনে নিতে না পেরে তাকে যুক্তরাষ্ট্রে অবাঞ্ছিত ঘোষনা করা হলো।
নিউইয়র্ক মহানগর আ. লীগের সাধারণ সম্পাদকের বিবৃতি
নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি কামান্ডার নবীর বিবৃতি প্রকাশের পর ঐ বিবৃতির একাংশের প্রতিবাদ করে পাল্টা বিবৃতি দিয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ চৌধুরী। ইমদাদ চৌধুরী তার বিবৃতিতে বলেন: গত ১১ মে প্রকাশিত নিউইর্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি কমান্ডার নূর নবীর প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মেয়র নির্বাচনের বিজয় উল্লাসে নিউইর্ক মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশের ব্যাপারে ভুল ব্যাখ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রদান করা হয়েছে। আমি নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইমদাদুর রহমান চৌধুরী ঢাকা-চট্টগ্রাম মেয়র নির্বাচনের বিজয় উল্লাসে নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশের ব্যাপারে সভাপতির উস্কানী মূলক বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
গত ২৮ এপ্রিল মঙ্গলবার নিউইয়র্ক এর জ্যাকসন হাইটস এর খাবার বাড়ী চাইনিজ রেষ্টুরেন্টে আমি সভাপতির সাথে পরামর্শক্রমে তাৎক্ষনিক বিজয় সমাবেশটির আয়োজন করি এবং আওয়ামী পরিবার ও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ নেতৃবন্দকে এতে যোগদানের জন্য আমন্ত্রন জানাই। আমার সংগঠনের সভাপতি উক্ত বিজয় সমাবেশে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ এর তত্ত্বাবধানে হয়েছিলো বলে উদ্ভট দাবী করেছেন। নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের বিজয় সমাবেশটি সভাপতির অনুপস্থিতিতে আমি সভাপতিত্ব করি ও সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ শিমুল হাসান পরিচালনা করেন। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ও আওয়ামী পরিবারের সকলে উক্ত অনুষ্ঠানে আমার আমন্ত্রনে উপস্থিত হয়েছিলেন। উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ার জন্য নেতৃবৃন্দের প্রতি সভাপতি কমান্ডার নূরুন নবী কটাক্ষ করায় আমি এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। সভাপতি কমান্ডার নূরুন নবী ব্রুকলীনে ঐদিন নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের অনুষ্ঠান বলে দাবী করেছেন, তা অন্য একটি সংগঠনের ব্যানারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি ব্যস্ত ছিলেন। অথচ নিজের সংগঠনের অনুষ্ঠানে তিনি অনুপস্থিত ছিলেন। তাছাড়াও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সম্মানীত সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান সম্বন্ধে নিউইর্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি কমান্ডার নূরুন নবী যে বিবৃতি দিয়েছেন তা নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির বা আমার কোন সংশ্লিষ্টতা নাই। এটা উনার একান্ত ব্যক্তিগত বক্তব্য। (সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা)