ম্যানহাটানে বেপরোয়া গাড়ির ধাক্কায় আহত বাংলাদেশী
- প্রকাশের সময় : ০১:০৭:৫২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ নভেম্বর ২০২২
- / ৩৭ বার পঠিত
বিশ্বের রাজধানী খ্যাত নিউইয়র্ক সিটির ম্যানহাটানে বেপরোয়া গাড়ির ধাক্কায় গুরুত্বর আহত হয়েছেন গোলাম মহিউদ্দিন নামে এক বাংলাদেশি। শত মাইল বেগে গাড়ি চালিয়ে ম্যানহাটানের ব্যস্ততম সড়কের ট্রাফিক লাইট অমান্য করে ইয়েলো ট্যাক্সিকে আঘাত করায় এই ঘটনা ঘটে। এতে প্রাণে বাঁচলেও তার পাঁজরের ৮টি হাড় এবং বামের ঘাড়ের হাড়ও ভেঙ্গে গেছে। কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার রামপুরা গ্রামের সন্তান গোলাম মহিউদ্দিন বেলভ্যু হাসপাতালে ১ নভেম্বর মঙ্গলবার রাতেও প্রায় অচেতন অবস্থায় ছিলেন।
জানা গেছে ম্যানহাটানে রবিবার সকাল সাড়ে ৪টার দিকে হামজা সালমান (২৭) নামক ড্রাইভারের বেপরোয়া গতির গাড়িটিও ট্যাক্সিও মতই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের উদ্ধৃতি দিয়ে পুলিশ জানায়, গোলাম মহিউদ্দিনের গাড়িতে ধাক্কা দিয়ে প্রায় এক ব্লকের মত সামনে নেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ ফিফথ এভিনিউ এবং ৪৪ স্ট্রিট অতিক্রম করার সময় গোলাম মহিউদ্দিনের ট্যাক্সির পেছনে হামজার গাড়ি (নীল রংয়ের বিএমডব্লিউ-এম৫) ধাক্কা দিয়ে ৪৩ স্ট্রিট পর্যন্ত ছেচড়ে নেয়। এরপর ট্যাক্সিটির বাম পাশ (ড্রাইভার সীটের দিক) দুমড়ে-মুচড়ে গেলে আর সম্মুখে নেয়া সম্ভব হয়নি। সংবাদ পেয়েই এ্যাম্বুলেন্সসহ পুলিশ ঘটনাস্থলে হাজির হয় এবং মুমূর্ষাবস্থায় গোলাম মহিউদ্দিনকে নিকটস্থ বেলভ্যু হাসপাতালে ভর্তি করেছে। হামজা দ্রুত কেটে পড়েছিলেন। তবে বেশী দূর যেতে পারেনি। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় কিছুক্ষণের মধ্যেই। মঙ্গলবার তাকে ম্যানহাটান ক্রিমিনাল কোর্টে হাজির করা হলে দোষ স্বীকার করে বলেছে যে, আমি রেড লাইটে থাকাবস্থায় ঐ ট্যাক্সিকে ধাক্কা দেই। তবে আমি ট্রাফিক লাইট অতিক্রমের সময় তা রেড ছিল না। ঠিক মধ্যখানে থাকাবস্থায় হলুদ ছিল। এবং ট্যাক্সিটি ছিল মাঝের লেনে।
মঙ্গলবার আদালত হামজাকে জামিনে মুক্তি দেয়ায় গোলাম মহিউদ্দিনের স্ত্রী মাসুমা আকতার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, ‘এটা কী করে সম্ভব, বেপরোয়া চালককে তারা মুক্তি দিয়েছেন। আমার স্বামী হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। সে আমার স্বামীর ট্যাক্সি ভেঙ্গেছে, স্বামীকে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। তিনি যন্ত্রণায় ছটফট করছেন। আদৌ পরিপূর্ণ সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরতে পারবেন কিনা-তার নিশ্চয়তা নেই। অথচ লোকটিকে মুক্তি দেয়া হয়েছে মাত্র একদিন হাজতে রাখার পর।’
মাসুমা আকতার উল্লেখ করেন, আমাদের ৭টি সন্তান রয়েছেন। সর্বকনিষ্ঠ সন্তানের বয়স মাত্র ৭ মাস। জ্যেষ্ঠ সন্তান ২১ বছরের। স্বামীর উপার্জনেই সংসার চলে। এখন কীভাবে সামলাবো পরিবারের বোঝা? মাসুমা বলেন, টানা ২৭ বছর যাবত ট্যাক্সি চালিয়ে পরিবার চালাচ্ছেন। কখনো এমন পরিস্থিতির শিকার হইনি। ট্যাক্সি মেডেলিয়ন নিজের হওয়ায় মোটামুটি ভালই চলছিল সবকিছু।
এদিকে, কুমিল্লা সোসাইটির সভাপতি কাজী আসাদউল্লাহ এবং সেক্রেটারি মাহবুবুর রহমান মিঠু মঙ্গলবার রাতে জানান, গোলাম মহিউদ্দিন ছিলেন আমাদের আগের টার্মের সভাপতি। খুব শান্ত মানুষ। রাতের শিফটে ট্যাক্সি চালান অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায়। শিফট শেষ করে ভোরে বাসায় ফেরার সময় এমন পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন তিনি। এটি খুবই দু:খজনক। তারা উভয়ে গোলাম মহিউদ্দিনের দ্রুত আরোগ্যে সকলের দোয়া চেয়েছেন। উল্লেখ্য, স্ত্রী-সন্তান নিয়ে গোলাম মহিউদ্দিন বাস করেন কুইন্সের ওজোনপার্কে। সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন