নিউইয়র্ক: যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র নেতৃবৃন্দ বলেছেন, শেখ হাসিনার পরিবারের কেউ যুদ্ধে অংশ না নিলেও এখন তিনি সেই মুক্তিযুদ্ধকে পুঁজি করে ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার ষড়যন্ত্র করছে। ১৯৭১ সালে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা না দিলে আমরা বিজয় দিবস পেতাম না আর এ দিবস পালন করাও সম্ভব হতো না।
সিটির জ্যাকসন হাইটেসের একটি রেষ্টুরেন্টে গত ১৬ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি আয়োজিত মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় দলীয় নেতৃবৃন্দ উপরোক্ত কথা বলেন। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বিশেষ উপদেষ্টা ও বৈদেশিক দূত ডা. মুজিবুর রহমান মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তারা আরও বলেন, ১৯৭১ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের কেউই মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়নি। এমনকি বর্তমান আওয়ামী লীগের পঁচানব্বই ভাগ সদস্যও যুদ্ধে যায়নি। পক্ষান্তরে জিয়াউর রহমান নিজের পরিবারকে বিসর্জন দিয়ে এবং জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। সে কথা আওয়ামীলীগ বেমালুম ভুলেই গেছে।
মহান বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সাবেক সহ-সভাপতি যথাক্রমে ইলিয়াস আহমেদ মাস্টার, প্রফেসর দেলোয়ার হোসেন, মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী, শামসুল ইসলাম মজনু, আনোয়ার হোসেন, নিয়াজ আহমেদ জুয়েল, আবুল কাসেম ও মমিনুল হক, সাবেক ছাত্রনেতা আব্দুস সবুর, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল মাওলা, গিয়াস উদ্দিন, ছৈয়দুল হক ও রকিব উদ্দিন দুলাল, সাবেক ছাত্রনেতা ডা. জাহিদ দেওয়ান শামীম, বিএনপি নেতা মোহাম্মদ সেলিম, আমিনুল ইসলাম কচি, মোশারফ হোসেন, শাজাহান হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা সুরুজ্জামান, অ্যাডভোকেট খায়রুল বাসার, জাফর তালুকদার, আব্দুর রাজ্জাক, আমিনুল হক চৌধুরী ও বদরুল হক আজাদ প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন দলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সফিক রহমান দুলাল।
সভায় বক্তারা বলেন, স্বাধীনতার ৪৪ বছর পর নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। কারণ ১৯৭১ সালেও আওয়ামী লীগ চায়নি বাংলাদেশ স্বাধীন হোক। ১৯৭১ সালে যারা আওয়ামী লীগ করেনি তাদেরকে হত্যা করার জন্য মুজিব বাহিনী তৈরি করা হয়েছিলো। যেসব মুক্তিযোদ্ধা মুজিব বাহিনীতে যোগ দেয়নি, সেসব মুক্তিযোদ্ধাদের আওয়ামী লীগ হত্যা করেছে। বিএনপি নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের প্রধান শক্তি ছিল জনগণের ঐক্য। আর আওয়ামী লীগ তাতেও ফাটল ধরানোর চেষ্টা করেছিলো। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে শেখ হাসিনা তার ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে রেখেছে। ১৯৭১ সালে শহীদ জিয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ছাড়া বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না। বরং দেশ গৃহযুদ্ধের দিকে চলে যেতো।
বক্তারা বলেন, ৫ জানুয়ারীর নির্বাচনে প্রমাণিত হয়েছে আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো নির্বাচনই সুষ্ঠু হতে পারে না। ভোট কেন্দ্রে মানুষের বদলে দেখা গেছে কুকুর বেড়াল। আওয়ামী লীগের এখন উচিত হবে কেন্দ্রে ভোট দিতে যাওয়া সেই কুকুরটিকে খুঁজে বের করে সম্মান প্রদর্শন করা। ৫ জানুয়ারীর প্রহসনের নির্বাচন করে সরকার দেশে রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। বর্তমান সরকার ও সংসদ অবৈধ। এখানে জনগণের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে প্রবাসের সকল নেতা-কর্মীকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার আন্দোলনে অংশ নেয়ার আহবান জানান।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নাজমুল হাসান মানিক, আলী হোসেন, ডা. মাহবুর রহমান রিপন, জাহাঙ্গীর হোসেন হাওলাদার, আশরাফ খোকন, মঞ্জুর মোর্শেদ, জাঈদ বিশ্বাস, ইউসুফ আলী, সুলতান মিয়া, আব্দুর রহিম, কামাল উদ্দিন, শাহাদত হোসেন রাজু, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী আকবর ও সুলতান মিয়া প্রমুখ।