নিউইয়র্ক ০৯:১৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834
নিউইয়র্কে প্রবাসীদের সাথে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের মত বিনিময়

বিভিন্ন দেশে পাচারকৃত অর্থ ফেরত নিতে ল ফার্ম নিয়োগের ঘোষনা : যোগ দিলেন না বিতর্কিত রেমিটেন্স ফেয়ারে

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০২:১৯:১১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫
  • / ৭৪ বার পঠিত

নিউইয়র্ক (ইউএনএ): আগামী ২২-২৩ এপ্রিল ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠেয় বিশ্বব্যাংকের সম্মেলনে যোগ দিনে নিউইয়র্কে অবস্থান করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। সম্মেলনে তিনি বাংলাদেশ দলের প্রতিনিধিত্ব করবেন। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় তিনি নিউইয়র্ক পৌছেন। তবে গভর্নর জ্যাকসন হাইটসে আয়োজিত বিতর্কিত রেমিটেন্স ফেয়ারে যোগ না দিয়ে শনিবার প্রবাসী বাংলাদেশীদের সাথে মত বিনিময় করেছেন। বাংলাদেশ কনস্যুলেট অফিসে এই মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় তিনি বলেন, দেশের আর্থিক স্থিতিশীলনতা না থাকলে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আসবে না। তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশে পাচারকৃত অর্থ ফেরত নিতে সরকার ল’ ফার্ম নিয়োগ করা হবে।
নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল নাজমুল হুদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় ডেপুটি গভর্ণর ড. হাবিবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। পরে গভর্ণর সভায় উপস্থিত প্রবাসীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। খবর ইউএনএ’র।
সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর ঋণের কিস্তি ছাড় নিয়ে আইএমএফের সঙ্গে সৃষ্ট জটিলতা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান সম্ভব বলে আশা প্রকাশ করে বলেন, কিস্তি ছাড় নিয়ে আইএমএফের সঙ্গে আমাদের পলিসিগত কিছু মতপার্থক্য আছে। আলোচনার মাধ্যমে সেগুলো সমাধান হবে বলে আমি আশাবাদী।
দায়িত্বের আট মাসে দেশের ব্যাংক খাতে বড় ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এ ছাড়া রিজার্ভ চুরি, অর্থপাচার ও আর্থিক খাতের সংস্কারসহ বিভিন্ন ইস্যুতে গত কয়েকমাসে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়েছে জানিয়ে ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাচার হওয়া সম্পদ যত বেশি উদ্ধার করতে পারব, আমাদের হাত তত শক্তিশালী হবে।
সভায় গভর্ণর ড. মনসুর বলেন, বিদেশে পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনা প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, আমরা কাজ করে যাচ্ছি। টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। বৃটেনে তারা কাজ করছে। টাকা পাচারের সঙ্গে জড়িত কয়েকশ ব্যক্তিকে আমরা চিহ্নিত করেছি। তাদের বিষয়ে আমরা ল ফার্মকে হায়ার করছি। ফার্মগুলোকে আমরা তথ্য দিব। তারা যদি অর্থ আদায় করতে পারে তার নির্দিষ্ট একটা অংশ তাদের দেয়া হবে। যুক্তরাষ্ট্রে টাকা পাচারকারীদের সন্ধান দেবার জন্য প্রবাসীদের প্রতি তিনি আহবান জানান। তিনি বলেন, দূতাবাস ও কনস্যুলেটে তথ্য দিন। আমরা অ্যাকশন নেব।

সভায় উপস্থিত প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এটাও সত্যি কথা যে, আপনারা হয়তো জানেন কোথায় কার সম্পদ আছে। যেটা আমরা হয়তো ঢাকায় বসে জানতে পারি না। পাচারকারীরা যে পাড়ায় সম্পদ কিনেছে সেই পাড়ার কোনো প্রবাসী হয়তো জানেন যে সেটা কার? এই তথ্যগুলো যদি আমরা সংগ্রহ করতে পারি তাহলে হয়তো আমরা ব্যবস্থা নিতে পারবো।
সভায় গভর্ণর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন সময়ে কি পরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে এবং কিভাবে পাচার হয়েছে সে বিষয়টি নিয়ে কমিশন কাজ করছে। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ যেসব দেশে বিগত সরকারের সময় পাচারকৃত অর্থ ফেরত নিতে হলে সেসব দেশের আইনী প্রক্রিয়াকে মোকাবেলা করতে হবে। এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংক বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। যেসকল দেশে টাকা পাচার হয়েছে সেসব দেশগুলোতে লা ফার্ম এজেন্সীকে নিয়োগ দেয়া হবে। ওইসব লো ফার্ম নির্দিষ্ট কমিশনের ভিত্তিতে পাচার হওয়া টাকা উদ্ধার ও ফেরতে সার্বিক কাজ করবে। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ থেকে অন্য দেশে টাকা নিতে যে সুইফট সিস্টেম রয়েছে সেটির অপব্যবহার বন্ধে ইতিমধ্যে এ সিস্টেমের পরিবর্তনের ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের সাথে আলাপ হয়েছে। গত সপ্তাহে তাদের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশে গিয়ে আমাদের সাথে বৈঠক হয়েছে। তাদেরকে এ সিস্টেম পরিবর্তন করে অপব্যবহার বন্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার জন্য বলা হয়েছে।
ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে পরিবারতন্ত্র বন্ধে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে গভর্নর বলেন, আমরা দেশের প্রতিটি ব্যাংকে পরিচালক নিয়োগে নির্দিষ্ট নীতিমালা করছি। এতে ব্যাংকের শেয়ার কিনে একজন ব্যক্তি পরিচালক হতে চাইলে তার সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংক যাচাই করবে। যদি তিনি যোগ্য হোন তাহলে তিনি পরিচালক হতে পারবেন। কিন্তু শেয়ার হোল্ডার হিসেবে কেউ চাইলেও এখন বউ, সন্তান, মেয়ের জামাইসহ স্বজনরা ঢালাওভাবে পরিচালক করতে পারবেন না। এ সুযোগটি আমরা হ্রাস করে দিবো।
অর্থ সংকটে থাকা ব্যাংকগুলো কেন বন্ধ করা হচ্ছে না এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অর্থ সংকটে থাকা ব্যাংকগুলোর ডিপোজিট রাখা গ্রাহকরা যাতে তাদের জমাকৃত অর্থ ফেরত পান সেজন্য এগুলো চাইলেও বন্ধ করা যাবে না। এ ব্যাংকগুলোকে একিভূত করে সরকার থেকে ফান্ড নিয়ে ব্যাংকগুলোকে স্থিতিশীল ও শক্তিশালী করে দেশ ও প্রবাসে বিনোয়গকারীদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
সভায় সাবেক এমপি আনিসুজ্জামান খোকন, সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা’র সম্পাদক ও টাইম টিভি’র সিইও আবু তাহের, সাপ্তাহিক বাংলাদেশ সম্পাদক ডা. ওয়াজেদ এ খান, অধ্যাপক ড. শওকত আলী, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সভাপতি আব্দুর রব মিয়া, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিষ্ট ও সাংবাদিক ড. ইমরান আনসারী, সাপ্তাহিক সাদাকালো’র নির্বাহী সম্পাদক মোহাম্মদ কাশেম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মুকিত চৌধুরী, বিএনপি নেতা আব্দুল লতিফ স¤্রাট, বিএনপি নেতা ও জেবিবিএ’র সভাপতি গিয়াস আহমেদ, বিএনপি নেতা আব্দুস সবুর, মোশাররফ হোসেন সবুজ, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিষ্ট জয়নাল আবেদীন, রওশন হক, আহমেদ সোহেল, মাসুম আহমেদ প্রমুখ প্রশ্ন পর্বে অংশ নেন।

মতবিনিময় সভায় প্রবাসী বাংলাদেশী সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, রেমিট্যান্স বিজনেসম্যান ও বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন সিনিয়র সাংবাদিক ও লেখক সাঈদ তারেক, স্ট্যান্ডার্ড এক্সপ্রেস-এর প্রেসিডেন্ট আব্দুল মালেক, সেন্টার ফর এনআরবি’র প্রেসিডেন্ট শেকিল চৌধুরী, বিএনপি নেতা গিয়াস উদ্দিন, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিষ্ট রাব্বী সৈয়দ, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা আব্দুল কাদের প্রমুখ।
উল্লেখ্য, সভায় সাবেক এমপি আনিসুজ্জামান খোকন প্রয়াত অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান-কে নিয়ে একটি মন্তব্য করাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে আনিসুজ্জামান খোকন তার বক্তব্য সংক্ষিপ্ত করে গভর্নরের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করে বসে পড়ায় পরিস্থিতি শান্ত হয়।

গভর্নর ২০ এপ্রিল ওয়াশিংটন ডিসিতে রওনা হয়েছেন। সেখানে আইএমএফ’র বসন্তকালীন অধিবেশনে যোগ দিবেন তিনি। আগামী ২২-২৩ এপ্রিল এই অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে।

 

 

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

নিউইয়র্কে প্রবাসীদের সাথে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের মত বিনিময়

বিভিন্ন দেশে পাচারকৃত অর্থ ফেরত নিতে ল ফার্ম নিয়োগের ঘোষনা : যোগ দিলেন না বিতর্কিত রেমিটেন্স ফেয়ারে

প্রকাশের সময় : ০২:১৯:১১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫

নিউইয়র্ক (ইউএনএ): আগামী ২২-২৩ এপ্রিল ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠেয় বিশ্বব্যাংকের সম্মেলনে যোগ দিনে নিউইয়র্কে অবস্থান করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। সম্মেলনে তিনি বাংলাদেশ দলের প্রতিনিধিত্ব করবেন। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় তিনি নিউইয়র্ক পৌছেন। তবে গভর্নর জ্যাকসন হাইটসে আয়োজিত বিতর্কিত রেমিটেন্স ফেয়ারে যোগ না দিয়ে শনিবার প্রবাসী বাংলাদেশীদের সাথে মত বিনিময় করেছেন। বাংলাদেশ কনস্যুলেট অফিসে এই মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় তিনি বলেন, দেশের আর্থিক স্থিতিশীলনতা না থাকলে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আসবে না। তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশে পাচারকৃত অর্থ ফেরত নিতে সরকার ল’ ফার্ম নিয়োগ করা হবে।
নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল নাজমুল হুদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় ডেপুটি গভর্ণর ড. হাবিবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। পরে গভর্ণর সভায় উপস্থিত প্রবাসীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। খবর ইউএনএ’র।
সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর ঋণের কিস্তি ছাড় নিয়ে আইএমএফের সঙ্গে সৃষ্ট জটিলতা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান সম্ভব বলে আশা প্রকাশ করে বলেন, কিস্তি ছাড় নিয়ে আইএমএফের সঙ্গে আমাদের পলিসিগত কিছু মতপার্থক্য আছে। আলোচনার মাধ্যমে সেগুলো সমাধান হবে বলে আমি আশাবাদী।
দায়িত্বের আট মাসে দেশের ব্যাংক খাতে বড় ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এ ছাড়া রিজার্ভ চুরি, অর্থপাচার ও আর্থিক খাতের সংস্কারসহ বিভিন্ন ইস্যুতে গত কয়েকমাসে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়েছে জানিয়ে ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাচার হওয়া সম্পদ যত বেশি উদ্ধার করতে পারব, আমাদের হাত তত শক্তিশালী হবে।
সভায় গভর্ণর ড. মনসুর বলেন, বিদেশে পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনা প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, আমরা কাজ করে যাচ্ছি। টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। বৃটেনে তারা কাজ করছে। টাকা পাচারের সঙ্গে জড়িত কয়েকশ ব্যক্তিকে আমরা চিহ্নিত করেছি। তাদের বিষয়ে আমরা ল ফার্মকে হায়ার করছি। ফার্মগুলোকে আমরা তথ্য দিব। তারা যদি অর্থ আদায় করতে পারে তার নির্দিষ্ট একটা অংশ তাদের দেয়া হবে। যুক্তরাষ্ট্রে টাকা পাচারকারীদের সন্ধান দেবার জন্য প্রবাসীদের প্রতি তিনি আহবান জানান। তিনি বলেন, দূতাবাস ও কনস্যুলেটে তথ্য দিন। আমরা অ্যাকশন নেব।

সভায় উপস্থিত প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এটাও সত্যি কথা যে, আপনারা হয়তো জানেন কোথায় কার সম্পদ আছে। যেটা আমরা হয়তো ঢাকায় বসে জানতে পারি না। পাচারকারীরা যে পাড়ায় সম্পদ কিনেছে সেই পাড়ার কোনো প্রবাসী হয়তো জানেন যে সেটা কার? এই তথ্যগুলো যদি আমরা সংগ্রহ করতে পারি তাহলে হয়তো আমরা ব্যবস্থা নিতে পারবো।
সভায় গভর্ণর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন সময়ে কি পরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে এবং কিভাবে পাচার হয়েছে সে বিষয়টি নিয়ে কমিশন কাজ করছে। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ যেসব দেশে বিগত সরকারের সময় পাচারকৃত অর্থ ফেরত নিতে হলে সেসব দেশের আইনী প্রক্রিয়াকে মোকাবেলা করতে হবে। এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংক বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। যেসকল দেশে টাকা পাচার হয়েছে সেসব দেশগুলোতে লা ফার্ম এজেন্সীকে নিয়োগ দেয়া হবে। ওইসব লো ফার্ম নির্দিষ্ট কমিশনের ভিত্তিতে পাচার হওয়া টাকা উদ্ধার ও ফেরতে সার্বিক কাজ করবে। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ থেকে অন্য দেশে টাকা নিতে যে সুইফট সিস্টেম রয়েছে সেটির অপব্যবহার বন্ধে ইতিমধ্যে এ সিস্টেমের পরিবর্তনের ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের সাথে আলাপ হয়েছে। গত সপ্তাহে তাদের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশে গিয়ে আমাদের সাথে বৈঠক হয়েছে। তাদেরকে এ সিস্টেম পরিবর্তন করে অপব্যবহার বন্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার জন্য বলা হয়েছে।
ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে পরিবারতন্ত্র বন্ধে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে গভর্নর বলেন, আমরা দেশের প্রতিটি ব্যাংকে পরিচালক নিয়োগে নির্দিষ্ট নীতিমালা করছি। এতে ব্যাংকের শেয়ার কিনে একজন ব্যক্তি পরিচালক হতে চাইলে তার সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংক যাচাই করবে। যদি তিনি যোগ্য হোন তাহলে তিনি পরিচালক হতে পারবেন। কিন্তু শেয়ার হোল্ডার হিসেবে কেউ চাইলেও এখন বউ, সন্তান, মেয়ের জামাইসহ স্বজনরা ঢালাওভাবে পরিচালক করতে পারবেন না। এ সুযোগটি আমরা হ্রাস করে দিবো।
অর্থ সংকটে থাকা ব্যাংকগুলো কেন বন্ধ করা হচ্ছে না এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অর্থ সংকটে থাকা ব্যাংকগুলোর ডিপোজিট রাখা গ্রাহকরা যাতে তাদের জমাকৃত অর্থ ফেরত পান সেজন্য এগুলো চাইলেও বন্ধ করা যাবে না। এ ব্যাংকগুলোকে একিভূত করে সরকার থেকে ফান্ড নিয়ে ব্যাংকগুলোকে স্থিতিশীল ও শক্তিশালী করে দেশ ও প্রবাসে বিনোয়গকারীদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
সভায় সাবেক এমপি আনিসুজ্জামান খোকন, সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা’র সম্পাদক ও টাইম টিভি’র সিইও আবু তাহের, সাপ্তাহিক বাংলাদেশ সম্পাদক ডা. ওয়াজেদ এ খান, অধ্যাপক ড. শওকত আলী, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সভাপতি আব্দুর রব মিয়া, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিষ্ট ও সাংবাদিক ড. ইমরান আনসারী, সাপ্তাহিক সাদাকালো’র নির্বাহী সম্পাদক মোহাম্মদ কাশেম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মুকিত চৌধুরী, বিএনপি নেতা আব্দুল লতিফ স¤্রাট, বিএনপি নেতা ও জেবিবিএ’র সভাপতি গিয়াস আহমেদ, বিএনপি নেতা আব্দুস সবুর, মোশাররফ হোসেন সবুজ, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিষ্ট জয়নাল আবেদীন, রওশন হক, আহমেদ সোহেল, মাসুম আহমেদ প্রমুখ প্রশ্ন পর্বে অংশ নেন।

মতবিনিময় সভায় প্রবাসী বাংলাদেশী সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, রেমিট্যান্স বিজনেসম্যান ও বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন সিনিয়র সাংবাদিক ও লেখক সাঈদ তারেক, স্ট্যান্ডার্ড এক্সপ্রেস-এর প্রেসিডেন্ট আব্দুল মালেক, সেন্টার ফর এনআরবি’র প্রেসিডেন্ট শেকিল চৌধুরী, বিএনপি নেতা গিয়াস উদ্দিন, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিষ্ট রাব্বী সৈয়দ, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা আব্দুল কাদের প্রমুখ।
উল্লেখ্য, সভায় সাবেক এমপি আনিসুজ্জামান খোকন প্রয়াত অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান-কে নিয়ে একটি মন্তব্য করাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে আনিসুজ্জামান খোকন তার বক্তব্য সংক্ষিপ্ত করে গভর্নরের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করে বসে পড়ায় পরিস্থিতি শান্ত হয়।

গভর্নর ২০ এপ্রিল ওয়াশিংটন ডিসিতে রওনা হয়েছেন। সেখানে আইএমএফ’র বসন্তকালীন অধিবেশনে যোগ দিবেন তিনি। আগামী ২২-২৩ এপ্রিল এই অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে।