বিএনপি চেয়ারপার্সনের ‘বিশেষ উপদেষ্টা ও বৈদেশিক দূত’ সাদীর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার দাবী
- প্রকাশের সময় : ০২:১৮:০৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০১৪
- / ১০৯৭ বার পঠিত
ঢাকা: নিজেকে সচিবের পুত্র, জনাব তারেক রহমানের ক্লাসফ্রেন্ড এবং ক্যাপিটল হিলের লবিস্ট পরিচয় দেয়া বিএনপি চেয়ারপার্সনের ‘বিশেষ উপদেষ্টা ও বৈদেশিক দূত’ জনৈক সর্দার জাহিদ ফারুক সাদী’র বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিএনপির গুলশান অফিসের কেউ কেউ উস্মা প্রকাশ করার পর থেকেই সাদী সম্পর্কিত তথ্য বিভিন্ন মিডিয়া থেকে অনুসন্ধান করা শুরুর এই পর্যায়ে জানা গেছে তার অপরাধ জীবনের নানান কিসসা কাহানী। এই সর্দার সাদী বিগত ৯ বছরে ২৭ মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছে। এই মামলাগুলোর মধ্যে অর্গানাইজড ফ্রডের মত অপরাধও রয়েছে যার সাজার মেয়াদ আগামী ২০১৬ সালের ২৭ জুলাই শেষ হবে। প্রশ্ন উঠেছে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী এবং তারেক রহমানের শ্বশুর বাড়ীর আত্মীয় যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র রাজনীতি সংশ্লিষ্ট ৩৪টি সংগঠনের স্বঘোষিত প্রধান শরাফত হোসেন বাবু কেন এই সাদীকে সর্বদাই সহায়তা করে চলেছে? ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামই বা কেন চেয়ারপার্সনের নামে সাদী’র মত একজন অপরিচিত ও অখ্যাত ব্যক্তিকে ‘বিশেষ উপদেষ্টা ও বৈদেশিক দুতে’র মত একটি গুরুত্ব পদে নিয়োগপত্রে স্বাক্ষর করলেন? যদিও বিএনপিতে বর্তমানে দেশে ও বিদেশে প্রভাবশালী কেউ কেউ নিজেদের অবস্থানকে পোক্ত করতে নিজেদের যোগ্যতা সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য প্রদান করে ও প্রচারনা চালিয়ে দলীয় নেতা কর্মীদের বিভ্রান্ত করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এ সকল প্রভাবশালীদের দ্বারা বিএনপি লাভবান হওয়ার পরিবর্তে নিজেরাই সামাজিক, রাজনৈতিক ও অন্যান্য ফায়দা লুটছেন বলেও জানা যায়। বিএনপির হাইকমান্ড এ সকল বিষয়ে কঠোর না হলে বড় ধরনের রাজনৈতিক কেলেংকারি বা বিপর্যয় হতে পারে।
শেখনিউজ ডট কমে ‘তারেক রহমানের উপদেষ্টারা যুক্তরাষ্ট্রে কি কারো হাতে জিম্মি?’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশের পরে সদ্য যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত ‘ঠিকানা’ পত্রিকা ‘জাহিদ নামা’ প্রকাশ করে শেখনিউজ ডট কমের সংবাদের যথার্থতা প্রমান করে দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের অপরাধ ডাটাবেজ ঘেঁটে এই সরদারের কমপক্ষে ১৬টি সচিত্র তথ্য পাওয়া গেছে। ছবিগুলো বিভিন্ন সময়ে পুলিশের কাস্টডিতে থাকাকালে তোলা হয়েছে। এতে দেখা যায় অতি অল্প বয়স থেকেই সাদী অপরাধে জড়িয়ে পড়েছিল। শেখনিউজ ডট কমের প্রতিনিধির কাছে জনাব তারেক রহমান এই সাদী সম্পর্কে তার প্রতিক্রিয়া জানানোর পর থেকেই শেখনিউজ বিএনপিকে সাদীর এবং তার পেছনে বিএনপির মদদ দাতাদের বিষয়ে তথ্য দিয়ে অনেকগুলো প্রতিবেদন প্রকাশ করে। কিন্তু বিএনপি কেন্দ্রীয় অফিস অজ্ঞাত কারনে এই সাদীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়। বিএনপির দলীয় পত্রিকা হিসেবে খ্যাত দৈনিক দিনকাল এবং অন্যান্য কিছু মিডিয়ার সাংবাদিক এই সাদীর পক্ষ বিয়ে লেখা অব্যাহত রাখে। এমনকি সাদীর নিয়োগটি ভুয়া প্রমান করে শেখনিউজ ‘বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিশেষ উপদেষ্টা ও বৈদেশিক দূত নিয়োগটি ভুয়া’ শীর্ষক সংবাদ প্রকাশের পরেও এদের অনেকে জোর গলায় বিভিন্ন মাধ্যমে প্রতিবাদ করে। সাথে তাল মিলায় বিএনপির গুলশান অফিসের একটি চক্র।
এদিকে বিভিন্ন সময়ে জনাব তারেক রহমানের উপদেষ্টাদের যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে যেকোন কারনেই হোক এই সাদীর সাথে ঘনিষ্ঠ হতে দেখা গেছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের অনেক বিএনপির নেতা কর্মীদের অভিযোগও রয়েছে। জানা গেছে, বেগম খালেদা জিয়া ও জনাব তারেক রহমানের যুক্তরাষ্ট্র সফরের একটি সূচি প্রকাশিত হওয়ার পর সাদী গং বিভিন্ন মহল থেকে খরচের নাম করে ডলার উত্তোলন (চাঁদা) করে। শেখনিউজ ডট কম এমন একটি সংবাদ প্রকাশের পর বিভিন্ন রাজনৈতিক কারনেই ঐ সফর বাতিল হয়। বর্তমানে জনাব তারেক রহমানের উপদেষ্টাদের খরচ ও গোপন সভার আয়োজনের নামে বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে একইভাবে চাঁদা উঠানো হয়েছে। জনৈক এক হাজির কাছ থেকে একটি মোটা অঙ্কের ডলার নেয়া হয়েছে বলে নিউইয়র্কে গুঞ্জন উঠেছে।
সাদী নিজেকে পিরোজপুরের সন্তান হিসেবে উল্লেখ করলেও প্রকৃতপক্ষে তার পৈত্রিক নিবাস শরিয়তপুরে। তার পিতা একজন সহকারী সচিব হিসেবে অবসর গ্রহন করেন। সে বিভিন্ন সময়ে দুইটি জন্ম তারিখ ব্যবহার করে থাকে। যুক্তরাষ্ট্র পুলিশকেও সে বিভিন্ন সময়ে জন্ম তারিখ পরিবর্তন করেই জানিয়েছে। পিরোজপুরে সাদীর মায়ের পৈত্রিক নিবাস (নানা বাড়ী)।
জানা গেছে, ভারতের সাথে অতি ঘনিষ্ঠ হিসেবে দলের ভেতরে প্রচারিত জনাব শমসের মবিন চৌধুরী, গুলশান অফিসের এক ক্ষমতাধর ব্যক্তি (যার সাথে ডিজিএফআই’র গোপন সম্পর্ক রয়েছে বলে দলের ভেতরে প্রচারিত) কোন সংস্থার স্বার্থ রক্ষার জন্য এই সর্দার সাদীকে এমন একটি পদে নিয়োগের ব্যবস্থা করলেন এটি দলের ভেতরে তদন্তের দাবী রাখে। এই বিষয়ের তদন্ত হলে কেঁচো খুঁড়তে অনেক সাপ বেরিয়ে আসবে। বিএনপি’র জন্য সকল বর্ণচোরা সাপদের বিতাড়িত করে মূলধারার বিএনপি রাজনীতি পরিচালনা সহজ হবে বলেও বিএনপির নিষ্ঠাবান ও অভিজ্ঞমহল মনে করে। তবে তদন্তের পূর্বেই অবিলম্বে সাদী ও সাদীকে নিয়োগের এবং প্রতিপালনের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার দাবী উঠেছে বিএনপিতে।