নিউইয়র্ক ১২:১৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচনে ‘কুনু-রহীম’ প্যানেলের বিজয়ের চমক

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৪:৫৩:২২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০১৪
  • / ১১২৮ বার পঠিত

বাংলাদেশ সোসাইটি ইন্্ক নিউইয়র্কের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনে (২০১৫-২০১৬) ‘কুনু-রহীম’ প্যানেল বিজয়ের চমক দেখিয়েছে। নির্বাচনে এই প্যানেল থেকে আজমল হোসেন কুনু সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে আব্দুর রহীম হাওলাদার পুন: নির্বাচত হয়েছেন। গত ২৬ অক্টোবর রোববার এই নির্বাচনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ‘কুনু-রহীম’ ও ‘কামাল-সানী’ প্যানেল সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। নির্বাচন কমিশনের বেসরকারী ফলাফলে ‘কুনু-রহীম’ প্যানেলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদসহ ১০টি পদে অপরদিকে ‘কামাল-সানী’ প্যানেলের সিনিয়র সহ সভাপতি পদসহ ৮জন প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। কার্যকরী পরিষদের একটি পদে উভয় প্যানেল থেকে একজন করে সমান সংখ্যক ভোট পাওয়ায় নির্বাচন কমিশন এই পদের ফল স্থগিত রেখেছেন। তবে নির্বাচনে অধিকাংশ পদে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে। মাত্র দুই ভোট থেকে শুরু করে স্বল্প সংখ্যক ভোটের ব্যবধানে জয়-পরাজয় নির্ধারিত হয়েছে। নির্বাচনে বড় ধরনের কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
চুড়ান্ত ভোট গণনা শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইঞ্জিনিয়ার নূরুল হক রোববার দিবাগত রাত একটার দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন। এর আগে নির্বাচন কমিশনের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে সংক্ষিপ্ত শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন।
‘কুনু-রহীম’ প্যানেলের নির্বাচিতরা হচ্ছেন: সভাপতি- আজমল হোসেন কুনু, সহ সভাপতি- ফারুক হোসেন মজুমদার, সাধারণ সম্পাদক- আব্দুর রহীম হাওলাদার, সহ সাধারণ সম্পাদক- ওসমান চৌধুরী, কোষাধ্যক্ষ- মোহাম্মদ আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক- সৈয়দ এম কে জামান, সাংষ্কৃতিক সম্পাদক- মনিকা রায়, কার্যকরী পরিষদ সদস্য- একেএম রফিকুল ইসলাম, আবুল কাশেম চৌধুরী ও মোহাম্মদ সিরাজুল হক জামাল।
অপরদিকে ‘কামাল-সানী’ প্যানেলের নির্বাচিতরা হচ্ছেন: সিনিয়র সহ সভাপতি- মোহাম্মদ মহিউদ্দিন দেওয়ান, জন সংযোগ ও প্রচার সম্পাদক- মফিজুর রহমান ভূঁইয়া রুমি, সমাজকল্যাণ সম্পাদক- কাজী তোফায়েল ইসলাম, সাহিত্য সম্পাদক- ওয়াহিদ কাজী এলিন, ক্রীড়া ও আপ্যায়ন সম্পাদক- সৈয়দ এনায়েত আলী এবং স্কুল ও শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক- ফারহানা চৌধুরী, কার্যকরী পরিষদ সদস্য- নাসির উদ্দিন আহমেদ ও নাদির এ আইয়ুব।
এছাড়া ‘কুনু-রহীম’ প্যানেলের কার্যকরী পরিষদ সদস্য পদপ্রার্থী সাইকুল ইসলাম ও ‘কামাল-সানী’ প্যানেলের কার্যকরী পরিষদ সদস্য পদপ্রার্থী সৈয়দ ইলিয়াস খসরু সমান সংখ্যক ভোট পাওয়ায় এই পদের ঘোষণা নির্বাচন কমিশন স্থগিত রেখেছেন।
বাংলাদেশ সোসাইটির কার্যকরী পরিষদের ১৯ পদে দুই প্যানেল থেকে ৩৮জন প্রার্থী ছিলেন। সোসাইটির নির্বাচন ঘিরে কমিউনিটি ছিলো মুখরিত। ছিলো ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা। ছোট-খাটো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই নির্বাচনে শান্তিপূর্ণভাবে কুইন্স ও ব্রুকলীন কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। হিমেল হাওয়া আর মৃদমন্দ বাতাসের ঠান্ডা উপক্ষো করে ভোটাররা কেন্দ্রে এসে ভোট দেন। ভোটারদের উপস্থিতিতে ‘গরম‘ হয়ে উঠে ভোট কেন্দ্রের নির্বাচনী আর প্রাকৃতিক পরিবেশ। এদিকে বিগত বছরগুলোর চেয়ে এবছর তুলনামূলকভাবে সোসাইটির ভোটার কম হওয়ায় ভোট কেন্দ্রের ভিতরে সহজেই ভোট দিতে পেরেছেন  তারা। ভোট গ্রহণে কোন বেগ পেতে হয়নি দায়িত্ব পালনরত কর্মকর্তাদের। অপরদিকে নির্বাচন ঘিরে ভোট কেন্দ্রের আশেপাশে প্রার্থীদের ব্যাপক প্রচারণা লক্ষ্য করা গেছে। ছিলো উভয় প্যানেলে পৃথক পৃথক একাধিক টেবিল। এই টেবিল থেকে ভোটারদের ভোটার নম্বর জানিয়ে দেন স্বেচ্ছাসেবকরা। সেই সাথে ছিলো পোস্টারিং। এক গাছের এপার থেকে আরেক গাছের ওপারে দেশীয় স্টাইলে রশিতে পোস্টার টাঙ্গিয়ে, দেয়ালে দেয়ালে পোস্টার সাটিয়ে প্রচারণা চালানো হয়। বাদ যায়নি বৈদ্যুতিক খুটি আর পোস্ট অফিসের বক্সগুলো। সেই সাথে ছিলো প্রার্থী, সমর্থকদের ব্যক্তিগত প্রচারণা।
এছাড়া এবার সোসাইটির সভাপতি পদের প্রার্থীদ্বয় একই এলাকার অর্থাৎ সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার সন্তান এবং সম্পর্কে মামা-ভাগ্নে হওয়ায় কৌতুহল ছিলো ভোটারদের মধ্যে। অনেকে সোসাইটির নির্বাচনকে ‘মামা-ভাগ্নের নির্বাচন’ বলে অভিহিত করেছেন। সোসাইটির ইতিহাসে একই এলাকার কোন প্রার্থী বিশেষ করে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী ছিলেন না। ইতিপূর্বে দেখা গেছে এক এলাকার (জেলা) সভাপতি হলে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী হয়েছেন অন্য এলাকার (জেলা)। কিন্তু এবারই ব্যতিক্রম যে, শুধু সিলেট জেলা নয়, বরং একই উপজেলা বিয়ানীবাজারের সন্তান হচ্ছেন কামাল আহমেদ ও আজমল হোসেন কুনু। ফলে নির্বাচনটি উভয়ের জন্য মর্যাদার লড়াইয়ে পরিণত হয়। অপরদিকে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থীদের মধ্যে জে মোল্লা সানী নরসিংদীর আর আব্দুর রহীম হাওলাদার বিক্রমপুর-মুন্সীগঞ্জ জেলার সন্তান।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছেন, সোসাইটির নির্বাচনে কুইন্স ও ব্রুকলীন দু’টি ভোট কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হয়। সকাল ৯টায় কুইন্সের ভোট কেন্দ্র (গুলশান ট্যারেস) আর ব্রুকলীন কেন্দ্র পিএস ২১৪-এ ভোট গ্রহণ শুরু হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলো ৪,০৩৬ জন। নির্বাচন কমিশনের দাবী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। কুইন্স কেন্দ্রে ১৫টি মেশিনে ভোট গৃহীত হয়। এই কেন্দ্রে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইঞ্জিনিয়ার নূরুল হক সহ কমিশনের সদস্য মোহাম্মদ এ হাকিম মিয়া ও আজমল আলী ছাড়াও ১৫জন পুলিং অফিসার দায়িত্ব পালন করেন। অপরদিকে ব্রুকলীন কেন্দ্রে ৪টি মেশিনে ভোট গৃহীত হয়। এই কেন্দ্রে কমিশনের সদস্য মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন ও মোহাম্মদ আজিজ ছাড়াও ৭জন পুলিং অফিসার দায়িত্ব পালন করেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইঞ্জিনিয়ার নূরুল হক জানান, সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোট গ্রহণ হয়। উভয় কেন্দ্রের ভোটারগণ যথাসময়ে নিজ নিজ আইডি প্রদর্শন করে লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দেন। সোসাইটির আজীবন সদস্যদের জন্য ছিলো ভিন্ন লাইন। নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শেষে ব্রুকলীন কেন্দ্রের ভোটের হিসাব কুইন্স কেন্দ্রে এনে দুই কেন্দ্রের ফল যোগ করে রাত একটার দিকে চুড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইঞ্জিনিয়ার নূরুল হক নির্বাচনী কর্মকর্তা, প্রার্থী, দুই প্যানেলের এজেন্ট ও সাংবাদিক এবং কমিউনিটি নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে বেসরকারীভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন। ফলাফল ঘোষণাকালে ইঞ্জিনিয়ার নূরুল হক বলেন, একটি প্যানেলের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেয়েছি। আমরা এব্যাপারে পরবর্তীতে কমিশনের সিদ্ধান্ত তাদের জানাবো। এছাড়া নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন হওয়ায় তিনি সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এদিকে কুইন্স কেন্দ্রের ফলাফল মেশিন থেকে গণনার শেষ পর্যায়ে ‘কামাল-সানী’ প্যানেলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির পক্ষে ডা.মাসুদুর রহমান নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগ এনে ইসি বরাবর একটি অভিযোগ পত্র দাখিল করেন। এসময় সোসাইটির সভাপতি ও একই পদে পুনরায় প্রার্থী কামাল আহমেদ তার সাথে ছিলেন। নির্বাচন সম্পর্কে ‘কামাল-সানী’ প্যানেলের প্রতিক্রিয়া পরবর্তী সময়ে মিডিয়ার মাধ্যমে জানানো হবে বলে ডা. মাসুদুর রহমান উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান।
নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণার পর বিজয়ী প্রার্থী ও সমর্থকরা উল্লাস প্রকাশ করেন। তারা একে অপরকে জড়িয়ে ধরে আনন্দও ভাগাভাগী করে নেন। তাদের আনন্দোল্লাসে শীতের ঠান্ডা উত্তপ্ত হয়ে উঠে। এরপর নবনির্বাচিত সভাপতি আজমল হোসেন কুনু ও পুন: নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহীম হাওলাদার উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে সোসাইটিকে শক্তিশালী করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন।
নিবাচনে ‘কামাল-সানী’ প্যানেল থেকে সভাপতি পদে সোসাইটির বর্তমান সভাপতি কামাল আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক পদে সোসাইটির কার্যকরী পরিষদের সাবেক সদস্য, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জে মোল্লা সানী এবং ‘কুনু-রহীম’ প্যানেল থেকে সভাপতি পদে জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আজমল হোসেন কুনু ও সাধারণ সম্পাদক পদে সোসাইটির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহীম হাওলাদার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় এবার নতুন মাত্রা যোগ হয় সোসাইটির নির্বাচনে। কেননা, কথা ছিলো বিগত নির্বাচনে বিজয়ী ‘কামাল-রহীম’ প্যানেল আবার একই প্যানেল থেকে নির্বাচন করবেন। কিন্তু বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে সেই কথা আর রাখা সম্ভব হয়নি কারোরই। ফলে পাশাপাশি অবস্থান থেকে মুখোমুখী অবস্থান নেন কামাল আহমেদ ও আব্দুর রহীম হাওলাদার। সেই সাথে নির্বাচনকে ঘিরে ‘আপাতত’ বিভক্ত হয়ে পড়ে কমিউনিটি।
‘বাংলাদেশীদের মধ্যে সুদৃঢ় সর্বজনীন ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় কুনু-রহীম পরিষদ সর্বদা প্রবাসীদের পাশে’ শ্লোগান নিয়ে নির্বাচনী মাঠে ছিলেন ‘কুনু-রহীম’ প্যানেলের প্রার্থীরা। এই প্যানেলের ‘নির্বাচনী এজেন্ডা’ অর্থাৎ কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে যে কোন প্রবাসী বাংলাদেশী, বাংলাদেশ সোসাইটির সদস্য পদ গ্রহণ করার পর থেকে সকল সময়ের জন্য সদস্যপদ নথিভুক্ত রেখে নিয়মিত নবায়নের মাধ্যমে ভোটার করার পদক্ষেপ গ্রহণ, সোসাইটির সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে বাৎসরিক সদস্য ফি কমিয়ে ৫ ডলার করার পদক্ষেপ গ্রহণ, স্থায়ী শহীদ মিনার প্রতিষ্ঠায় কমিউনিটি ও কর্তৃপক্ষের সাথে যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ, জবের জন্য তথ্য সংগ্রহ করে কমিউনিটিকে সার্বক্ষনিক সহযোগিতা প্রদান, বাংলাদেশী কমিউনিটিকে মূলধারায় সম্পৃক্ত করার জন্য মেলবন্ধন তৈরী করা, বাংলাদেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করার জন্য ইতিবাচক ভূমিকা পালন, সিটি ও ষ্টেট থেকে কমিউনিটির জন্য বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা আদায়ের উদ্যোগ গ্রহণ, বাংলাদেশ ডে উপলক্ষ্যে প্যারেড আয়োজন, নতুন প্রজন্মের ছাত্র-ছাত্রীদের বাংলাদেশী কৃষ্টি ও সংস্কৃতি শিক্ষাদান এবং বাংলা স্কুলের কার্যক্রম আরো জোরদার করা।
অপরদিকে ‘প্রবাসে বাংলাদেশী পার্লামেন্ট : ঐক্যবদ্ধ কমিউনিটি গড়াই আমাদের প্রত্যাশা’ শ্লোগান নিয়ে নির্বাচনী মাঠে ছিলেন ‘কামাল-সানী’ প্যানেলের প্রার্থীরা। এই প্যানেলের দাবী সমাজকর্মে পরীক্ষিত ও অভিজ্ঞ নবীণ-প্রবীণের সমন্বয়ে গঠিত প্যানেলই হচ্ছে ‘কামাল-সানী’ প্যানেল।
নির্বাচনী ফলাফল:
‘কুনু-রহীম’ প্যানেল: সভাপতি- আজমল হোসেন কুনু (১৩৪২), সিনিয়র সহ সভাপতি- আতাউর রহমান সেলিম (১২৬৩), সহ সভাপতি- ফারুক হোসেন মজুমদার (১৩৪৫), সাধারণ সম্পাদক- আব্দুর রহীম হাওলাদার (১৩৫৬), সহ-সাধারণ সম্পাদক- ওসমান চৌধুরী (১৩৩৯), সাংগঠনিক সম্পাদক- সৈয়দ এম কে জামান (১৩৫৩), কোষাধ্যক্ষ- মোহাম্মদ আলী (১২৯৭), সাংস্কৃতিক সম্পাদক- মনিকা রায় (১৩৫৮), প্রচার সম্পাদক- খোরশেদ আলম (১১৮৬), সমাজকল্যাণ সম্পাদক- মিয়া মোশাররফ (১২৩৯), সাহিত্য সম্পাদক- মোহাম্মদ সোহরাব হোসেন (১২১৪), ক্রীড়া সম্পাদক- মোহাম্মদ এ হোসাইন বিপ্লব (১১৯৬), ক্রীড়া সম্পাদক- প্রফেসর ওয়াজি উল্যাহ (১১৮৪) এবং কার্যকরী সদস্য- রফিকুল ইসলাম ডালিম (১৩২০), আবুল কে চৌধুরী (১২০৭), ও মোহাম্মদ এস হক জামান (১২৮০), এ কে এম আকবর চৌধুরী (১১৬৭), এমডি তুহীন আলী (১১৫৭) ও সাইফুল ইসলাম (১১৮০)।
‘কামাল-সানি’ প্যানেল: সভাপতি- কামাল আহমেদ (১২৬৭), সিনিয়র সহ সভাপতি- মহিউদ্দিন দেওয়ান (১৩০০), সহ-সভাপতি- সিরাজ উদ্দিন আহমেদ সোহাগ (১১৭৬), সাধারণ সম্পাদক- জে মোল্লা সানি (১২১৩), সহ-সাধারণ সম্পাদক- আহবাব এইচ চৌধুরী (১১৮৮), কোষাধ্যক্ষ- শেখ সিরাজুল ইসলাম (১২১৩), সাংগঠনিক সম্পাদক- সাদী মিন্টু (১১৪৮), সাংস্কৃতিক সম্পাদক- মোশাররফ হোসেন (১১৪০), প্রচার সম্পাদক- মফিজুল ইসলাম ভূঁইয়া (১২৯৩), সমাজকল্যাণ সম্পাদক- সম্পাদক কাজী তোফায়েল ইসলাম (১২৪১), সাহিত্য সম্পাদক- কাজী ওয়াহিদ এলিন (১২৫৯), ক্রীড়া সম্পাদক- সৈয়দ এনায়েত আলী (১৩০৩), শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক- ফারহানা চৌধুরী (১৩১৭) এবং কার্যকরী সদস্য- সৈয়দ ইলিয়াস খসরু (১১৮০), নাসির উদ্দিন আহমেদ (১২১১), নাদির এ আইয়ুব (১২৪৮), শেখ ফারুকুল ইসলাম (১০৫২), শাহ মিজানুর রহমান (১১১৭) ও ইয়াকুত রহমান (১০০৬)।
পুনরায় ভোট গণনার দাবী মোশারফ মিয়ার
বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচনে ‘কুনু-রহীম’ প্যানেল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী সমাজকল্যাণ সম্পাদক পদপ্রার্থী মোশারফ মিয়া ভোটিং মেশিনের ভোট পুনরায় গনণার দাবী জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইঞ্জিনিয়ার নূরুল হকের কাছে একটি অভিযোগপত্র দাখিল করেন। কমিশন তার অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন বলে জানা গেছে।  মোশারফ মিয়া জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশনের ফলাফলে আমি মাত্র দুই ভোটে পরাজিত হয়েছে বলে দেখানো হয়েছে। কিন্তু আমার জানা মতে নির্বাচনের শুরু থেকেই আমার পক্ষে কমিউনিটির জনমত ছিলো বেশী। নির্বাচনে ব্রুকলীন কেন্দ্রেও আমি এগিয়ে ছিলাম। কুইন্স কেন্দ্রেও আমার অবস্থান সুদৃঢ় ছিলো। কিন্তু হঠাৎ করেই আমার পদের ফলাফল পাল্টে যায়। ভোট গণনায় ক্রুটি থাকতে পারে বলে আমার সন্দেহ রয়েছে। আমি স্বচ্ছতার সাথে আমার পদে পুনরায় ভোট গণনার দাবী জানাচ্ছি।

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচনে ‘কুনু-রহীম’ প্যানেলের বিজয়ের চমক

প্রকাশের সময় : ০৪:৫৩:২২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০১৪

বাংলাদেশ সোসাইটি ইন্্ক নিউইয়র্কের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনে (২০১৫-২০১৬) ‘কুনু-রহীম’ প্যানেল বিজয়ের চমক দেখিয়েছে। নির্বাচনে এই প্যানেল থেকে আজমল হোসেন কুনু সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে আব্দুর রহীম হাওলাদার পুন: নির্বাচত হয়েছেন। গত ২৬ অক্টোবর রোববার এই নির্বাচনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ‘কুনু-রহীম’ ও ‘কামাল-সানী’ প্যানেল সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। নির্বাচন কমিশনের বেসরকারী ফলাফলে ‘কুনু-রহীম’ প্যানেলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদসহ ১০টি পদে অপরদিকে ‘কামাল-সানী’ প্যানেলের সিনিয়র সহ সভাপতি পদসহ ৮জন প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। কার্যকরী পরিষদের একটি পদে উভয় প্যানেল থেকে একজন করে সমান সংখ্যক ভোট পাওয়ায় নির্বাচন কমিশন এই পদের ফল স্থগিত রেখেছেন। তবে নির্বাচনে অধিকাংশ পদে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে। মাত্র দুই ভোট থেকে শুরু করে স্বল্প সংখ্যক ভোটের ব্যবধানে জয়-পরাজয় নির্ধারিত হয়েছে। নির্বাচনে বড় ধরনের কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
চুড়ান্ত ভোট গণনা শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইঞ্জিনিয়ার নূরুল হক রোববার দিবাগত রাত একটার দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন। এর আগে নির্বাচন কমিশনের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে সংক্ষিপ্ত শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন।
‘কুনু-রহীম’ প্যানেলের নির্বাচিতরা হচ্ছেন: সভাপতি- আজমল হোসেন কুনু, সহ সভাপতি- ফারুক হোসেন মজুমদার, সাধারণ সম্পাদক- আব্দুর রহীম হাওলাদার, সহ সাধারণ সম্পাদক- ওসমান চৌধুরী, কোষাধ্যক্ষ- মোহাম্মদ আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক- সৈয়দ এম কে জামান, সাংষ্কৃতিক সম্পাদক- মনিকা রায়, কার্যকরী পরিষদ সদস্য- একেএম রফিকুল ইসলাম, আবুল কাশেম চৌধুরী ও মোহাম্মদ সিরাজুল হক জামাল।
অপরদিকে ‘কামাল-সানী’ প্যানেলের নির্বাচিতরা হচ্ছেন: সিনিয়র সহ সভাপতি- মোহাম্মদ মহিউদ্দিন দেওয়ান, জন সংযোগ ও প্রচার সম্পাদক- মফিজুর রহমান ভূঁইয়া রুমি, সমাজকল্যাণ সম্পাদক- কাজী তোফায়েল ইসলাম, সাহিত্য সম্পাদক- ওয়াহিদ কাজী এলিন, ক্রীড়া ও আপ্যায়ন সম্পাদক- সৈয়দ এনায়েত আলী এবং স্কুল ও শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক- ফারহানা চৌধুরী, কার্যকরী পরিষদ সদস্য- নাসির উদ্দিন আহমেদ ও নাদির এ আইয়ুব।
এছাড়া ‘কুনু-রহীম’ প্যানেলের কার্যকরী পরিষদ সদস্য পদপ্রার্থী সাইকুল ইসলাম ও ‘কামাল-সানী’ প্যানেলের কার্যকরী পরিষদ সদস্য পদপ্রার্থী সৈয়দ ইলিয়াস খসরু সমান সংখ্যক ভোট পাওয়ায় এই পদের ঘোষণা নির্বাচন কমিশন স্থগিত রেখেছেন।
বাংলাদেশ সোসাইটির কার্যকরী পরিষদের ১৯ পদে দুই প্যানেল থেকে ৩৮জন প্রার্থী ছিলেন। সোসাইটির নির্বাচন ঘিরে কমিউনিটি ছিলো মুখরিত। ছিলো ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা। ছোট-খাটো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই নির্বাচনে শান্তিপূর্ণভাবে কুইন্স ও ব্রুকলীন কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। হিমেল হাওয়া আর মৃদমন্দ বাতাসের ঠান্ডা উপক্ষো করে ভোটাররা কেন্দ্রে এসে ভোট দেন। ভোটারদের উপস্থিতিতে ‘গরম‘ হয়ে উঠে ভোট কেন্দ্রের নির্বাচনী আর প্রাকৃতিক পরিবেশ। এদিকে বিগত বছরগুলোর চেয়ে এবছর তুলনামূলকভাবে সোসাইটির ভোটার কম হওয়ায় ভোট কেন্দ্রের ভিতরে সহজেই ভোট দিতে পেরেছেন  তারা। ভোট গ্রহণে কোন বেগ পেতে হয়নি দায়িত্ব পালনরত কর্মকর্তাদের। অপরদিকে নির্বাচন ঘিরে ভোট কেন্দ্রের আশেপাশে প্রার্থীদের ব্যাপক প্রচারণা লক্ষ্য করা গেছে। ছিলো উভয় প্যানেলে পৃথক পৃথক একাধিক টেবিল। এই টেবিল থেকে ভোটারদের ভোটার নম্বর জানিয়ে দেন স্বেচ্ছাসেবকরা। সেই সাথে ছিলো পোস্টারিং। এক গাছের এপার থেকে আরেক গাছের ওপারে দেশীয় স্টাইলে রশিতে পোস্টার টাঙ্গিয়ে, দেয়ালে দেয়ালে পোস্টার সাটিয়ে প্রচারণা চালানো হয়। বাদ যায়নি বৈদ্যুতিক খুটি আর পোস্ট অফিসের বক্সগুলো। সেই সাথে ছিলো প্রার্থী, সমর্থকদের ব্যক্তিগত প্রচারণা।
এছাড়া এবার সোসাইটির সভাপতি পদের প্রার্থীদ্বয় একই এলাকার অর্থাৎ সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার সন্তান এবং সম্পর্কে মামা-ভাগ্নে হওয়ায় কৌতুহল ছিলো ভোটারদের মধ্যে। অনেকে সোসাইটির নির্বাচনকে ‘মামা-ভাগ্নের নির্বাচন’ বলে অভিহিত করেছেন। সোসাইটির ইতিহাসে একই এলাকার কোন প্রার্থী বিশেষ করে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী ছিলেন না। ইতিপূর্বে দেখা গেছে এক এলাকার (জেলা) সভাপতি হলে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী হয়েছেন অন্য এলাকার (জেলা)। কিন্তু এবারই ব্যতিক্রম যে, শুধু সিলেট জেলা নয়, বরং একই উপজেলা বিয়ানীবাজারের সন্তান হচ্ছেন কামাল আহমেদ ও আজমল হোসেন কুনু। ফলে নির্বাচনটি উভয়ের জন্য মর্যাদার লড়াইয়ে পরিণত হয়। অপরদিকে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থীদের মধ্যে জে মোল্লা সানী নরসিংদীর আর আব্দুর রহীম হাওলাদার বিক্রমপুর-মুন্সীগঞ্জ জেলার সন্তান।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছেন, সোসাইটির নির্বাচনে কুইন্স ও ব্রুকলীন দু’টি ভোট কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হয়। সকাল ৯টায় কুইন্সের ভোট কেন্দ্র (গুলশান ট্যারেস) আর ব্রুকলীন কেন্দ্র পিএস ২১৪-এ ভোট গ্রহণ শুরু হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলো ৪,০৩৬ জন। নির্বাচন কমিশনের দাবী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। কুইন্স কেন্দ্রে ১৫টি মেশিনে ভোট গৃহীত হয়। এই কেন্দ্রে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইঞ্জিনিয়ার নূরুল হক সহ কমিশনের সদস্য মোহাম্মদ এ হাকিম মিয়া ও আজমল আলী ছাড়াও ১৫জন পুলিং অফিসার দায়িত্ব পালন করেন। অপরদিকে ব্রুকলীন কেন্দ্রে ৪টি মেশিনে ভোট গৃহীত হয়। এই কেন্দ্রে কমিশনের সদস্য মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন ও মোহাম্মদ আজিজ ছাড়াও ৭জন পুলিং অফিসার দায়িত্ব পালন করেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইঞ্জিনিয়ার নূরুল হক জানান, সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোট গ্রহণ হয়। উভয় কেন্দ্রের ভোটারগণ যথাসময়ে নিজ নিজ আইডি প্রদর্শন করে লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দেন। সোসাইটির আজীবন সদস্যদের জন্য ছিলো ভিন্ন লাইন। নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শেষে ব্রুকলীন কেন্দ্রের ভোটের হিসাব কুইন্স কেন্দ্রে এনে দুই কেন্দ্রের ফল যোগ করে রাত একটার দিকে চুড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইঞ্জিনিয়ার নূরুল হক নির্বাচনী কর্মকর্তা, প্রার্থী, দুই প্যানেলের এজেন্ট ও সাংবাদিক এবং কমিউনিটি নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে বেসরকারীভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন। ফলাফল ঘোষণাকালে ইঞ্জিনিয়ার নূরুল হক বলেন, একটি প্যানেলের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেয়েছি। আমরা এব্যাপারে পরবর্তীতে কমিশনের সিদ্ধান্ত তাদের জানাবো। এছাড়া নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন হওয়ায় তিনি সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এদিকে কুইন্স কেন্দ্রের ফলাফল মেশিন থেকে গণনার শেষ পর্যায়ে ‘কামাল-সানী’ প্যানেলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির পক্ষে ডা.মাসুদুর রহমান নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগ এনে ইসি বরাবর একটি অভিযোগ পত্র দাখিল করেন। এসময় সোসাইটির সভাপতি ও একই পদে পুনরায় প্রার্থী কামাল আহমেদ তার সাথে ছিলেন। নির্বাচন সম্পর্কে ‘কামাল-সানী’ প্যানেলের প্রতিক্রিয়া পরবর্তী সময়ে মিডিয়ার মাধ্যমে জানানো হবে বলে ডা. মাসুদুর রহমান উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান।
নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণার পর বিজয়ী প্রার্থী ও সমর্থকরা উল্লাস প্রকাশ করেন। তারা একে অপরকে জড়িয়ে ধরে আনন্দও ভাগাভাগী করে নেন। তাদের আনন্দোল্লাসে শীতের ঠান্ডা উত্তপ্ত হয়ে উঠে। এরপর নবনির্বাচিত সভাপতি আজমল হোসেন কুনু ও পুন: নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহীম হাওলাদার উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে সোসাইটিকে শক্তিশালী করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন।
নিবাচনে ‘কামাল-সানী’ প্যানেল থেকে সভাপতি পদে সোসাইটির বর্তমান সভাপতি কামাল আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক পদে সোসাইটির কার্যকরী পরিষদের সাবেক সদস্য, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জে মোল্লা সানী এবং ‘কুনু-রহীম’ প্যানেল থেকে সভাপতি পদে জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আজমল হোসেন কুনু ও সাধারণ সম্পাদক পদে সোসাইটির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহীম হাওলাদার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় এবার নতুন মাত্রা যোগ হয় সোসাইটির নির্বাচনে। কেননা, কথা ছিলো বিগত নির্বাচনে বিজয়ী ‘কামাল-রহীম’ প্যানেল আবার একই প্যানেল থেকে নির্বাচন করবেন। কিন্তু বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে সেই কথা আর রাখা সম্ভব হয়নি কারোরই। ফলে পাশাপাশি অবস্থান থেকে মুখোমুখী অবস্থান নেন কামাল আহমেদ ও আব্দুর রহীম হাওলাদার। সেই সাথে নির্বাচনকে ঘিরে ‘আপাতত’ বিভক্ত হয়ে পড়ে কমিউনিটি।
‘বাংলাদেশীদের মধ্যে সুদৃঢ় সর্বজনীন ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় কুনু-রহীম পরিষদ সর্বদা প্রবাসীদের পাশে’ শ্লোগান নিয়ে নির্বাচনী মাঠে ছিলেন ‘কুনু-রহীম’ প্যানেলের প্রার্থীরা। এই প্যানেলের ‘নির্বাচনী এজেন্ডা’ অর্থাৎ কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে যে কোন প্রবাসী বাংলাদেশী, বাংলাদেশ সোসাইটির সদস্য পদ গ্রহণ করার পর থেকে সকল সময়ের জন্য সদস্যপদ নথিভুক্ত রেখে নিয়মিত নবায়নের মাধ্যমে ভোটার করার পদক্ষেপ গ্রহণ, সোসাইটির সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে বাৎসরিক সদস্য ফি কমিয়ে ৫ ডলার করার পদক্ষেপ গ্রহণ, স্থায়ী শহীদ মিনার প্রতিষ্ঠায় কমিউনিটি ও কর্তৃপক্ষের সাথে যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ, জবের জন্য তথ্য সংগ্রহ করে কমিউনিটিকে সার্বক্ষনিক সহযোগিতা প্রদান, বাংলাদেশী কমিউনিটিকে মূলধারায় সম্পৃক্ত করার জন্য মেলবন্ধন তৈরী করা, বাংলাদেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করার জন্য ইতিবাচক ভূমিকা পালন, সিটি ও ষ্টেট থেকে কমিউনিটির জন্য বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা আদায়ের উদ্যোগ গ্রহণ, বাংলাদেশ ডে উপলক্ষ্যে প্যারেড আয়োজন, নতুন প্রজন্মের ছাত্র-ছাত্রীদের বাংলাদেশী কৃষ্টি ও সংস্কৃতি শিক্ষাদান এবং বাংলা স্কুলের কার্যক্রম আরো জোরদার করা।
অপরদিকে ‘প্রবাসে বাংলাদেশী পার্লামেন্ট : ঐক্যবদ্ধ কমিউনিটি গড়াই আমাদের প্রত্যাশা’ শ্লোগান নিয়ে নির্বাচনী মাঠে ছিলেন ‘কামাল-সানী’ প্যানেলের প্রার্থীরা। এই প্যানেলের দাবী সমাজকর্মে পরীক্ষিত ও অভিজ্ঞ নবীণ-প্রবীণের সমন্বয়ে গঠিত প্যানেলই হচ্ছে ‘কামাল-সানী’ প্যানেল।
নির্বাচনী ফলাফল:
‘কুনু-রহীম’ প্যানেল: সভাপতি- আজমল হোসেন কুনু (১৩৪২), সিনিয়র সহ সভাপতি- আতাউর রহমান সেলিম (১২৬৩), সহ সভাপতি- ফারুক হোসেন মজুমদার (১৩৪৫), সাধারণ সম্পাদক- আব্দুর রহীম হাওলাদার (১৩৫৬), সহ-সাধারণ সম্পাদক- ওসমান চৌধুরী (১৩৩৯), সাংগঠনিক সম্পাদক- সৈয়দ এম কে জামান (১৩৫৩), কোষাধ্যক্ষ- মোহাম্মদ আলী (১২৯৭), সাংস্কৃতিক সম্পাদক- মনিকা রায় (১৩৫৮), প্রচার সম্পাদক- খোরশেদ আলম (১১৮৬), সমাজকল্যাণ সম্পাদক- মিয়া মোশাররফ (১২৩৯), সাহিত্য সম্পাদক- মোহাম্মদ সোহরাব হোসেন (১২১৪), ক্রীড়া সম্পাদক- মোহাম্মদ এ হোসাইন বিপ্লব (১১৯৬), ক্রীড়া সম্পাদক- প্রফেসর ওয়াজি উল্যাহ (১১৮৪) এবং কার্যকরী সদস্য- রফিকুল ইসলাম ডালিম (১৩২০), আবুল কে চৌধুরী (১২০৭), ও মোহাম্মদ এস হক জামান (১২৮০), এ কে এম আকবর চৌধুরী (১১৬৭), এমডি তুহীন আলী (১১৫৭) ও সাইফুল ইসলাম (১১৮০)।
‘কামাল-সানি’ প্যানেল: সভাপতি- কামাল আহমেদ (১২৬৭), সিনিয়র সহ সভাপতি- মহিউদ্দিন দেওয়ান (১৩০০), সহ-সভাপতি- সিরাজ উদ্দিন আহমেদ সোহাগ (১১৭৬), সাধারণ সম্পাদক- জে মোল্লা সানি (১২১৩), সহ-সাধারণ সম্পাদক- আহবাব এইচ চৌধুরী (১১৮৮), কোষাধ্যক্ষ- শেখ সিরাজুল ইসলাম (১২১৩), সাংগঠনিক সম্পাদক- সাদী মিন্টু (১১৪৮), সাংস্কৃতিক সম্পাদক- মোশাররফ হোসেন (১১৪০), প্রচার সম্পাদক- মফিজুল ইসলাম ভূঁইয়া (১২৯৩), সমাজকল্যাণ সম্পাদক- সম্পাদক কাজী তোফায়েল ইসলাম (১২৪১), সাহিত্য সম্পাদক- কাজী ওয়াহিদ এলিন (১২৫৯), ক্রীড়া সম্পাদক- সৈয়দ এনায়েত আলী (১৩০৩), শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক- ফারহানা চৌধুরী (১৩১৭) এবং কার্যকরী সদস্য- সৈয়দ ইলিয়াস খসরু (১১৮০), নাসির উদ্দিন আহমেদ (১২১১), নাদির এ আইয়ুব (১২৪৮), শেখ ফারুকুল ইসলাম (১০৫২), শাহ মিজানুর রহমান (১১১৭) ও ইয়াকুত রহমান (১০০৬)।
পুনরায় ভোট গণনার দাবী মোশারফ মিয়ার
বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচনে ‘কুনু-রহীম’ প্যানেল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী সমাজকল্যাণ সম্পাদক পদপ্রার্থী মোশারফ মিয়া ভোটিং মেশিনের ভোট পুনরায় গনণার দাবী জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইঞ্জিনিয়ার নূরুল হকের কাছে একটি অভিযোগপত্র দাখিল করেন। কমিশন তার অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন বলে জানা গেছে।  মোশারফ মিয়া জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশনের ফলাফলে আমি মাত্র দুই ভোটে পরাজিত হয়েছে বলে দেখানো হয়েছে। কিন্তু আমার জানা মতে নির্বাচনের শুরু থেকেই আমার পক্ষে কমিউনিটির জনমত ছিলো বেশী। নির্বাচনে ব্রুকলীন কেন্দ্রেও আমি এগিয়ে ছিলাম। কুইন্স কেন্দ্রেও আমার অবস্থান সুদৃঢ় ছিলো। কিন্তু হঠাৎ করেই আমার পদের ফলাফল পাল্টে যায়। ভোট গণনায় ক্রুটি থাকতে পারে বলে আমার সন্দেহ রয়েছে। আমি স্বচ্ছতার সাথে আমার পদে পুনরায় ভোট গণনার দাবী জানাচ্ছি।