বাংলাদেশ ডে প্যারেড আয়োজন নিয়ে এম আজিজ ও সেলিমের বাকবিতÐা!

- প্রকাশের সময় : ০২:১৮:০২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫
- / ৩৫ বার পঠিত
জলি আহমেদ: বাংলাদেশ সোসাইটি ব্যানারে কমিউনিটি অ্যাক্টিভিষ্ট ফাহাদ সোলাইমানের প্রতিষ্ঠান হিউম্যান এম্পাওয়ারমেন্ট রাইটস এবার নিউইয়র্কে ‘বাংলাদেশ ডে প্যারেড’ আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে। আগামী ১৩ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে এই প্যারেড। আনুষ্ঠানিকভাবে প্যারেডের ঘোষণা দিতে গত ২৬ ফেব্রæয়ারী (বুধবার) নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন পার্টি হলে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সোসাইটি ব্যানারে ‘বাংলাদেশ ডে প্যারেড’ আয়োজন নিয়ে বাংলাদেশ সোসাইটি ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান এম আজিজ ও সভাপতি আতাউর রহমান সেলিমের মধ্যে বাকবিতÐার ঘটনা ঘটে।
‘বাংলাদেশ ডে প্যারেড’ বাংলাদেশ সোসাইটির ব্যানারে অনুষ্ঠিত হলেও, এটি মূলত বাংলাদেশ সোসাইটির নিজস্ব আয়োজন নয়। প্যারেডটি আয়োজন করছে ফাহাদ সোলাইমানের প্রতিষ্ঠান হিউম্যান এম্পাওয়ারমেন্ট রাইটস। তারা কেবল নিজেদের স্বার্থ ও আয়োজনকে সফল করতে বাংলাদেশ সোসাইটির নাম ব্যবহার করছে। বাংলাদেশ সোসাইটি যদি সত্যিই ডে প্যারেড করতে চায়, তবে কেন তারা নিজস্ব উদ্যোগে এটি আয়োজন করছে না? সংগঠনের লোকবল, অর্থ ও সক্ষমতা থাকলেও কেন তৃতীয় পক্ষের ব্যানারে আয়োজন করতে হবে? বাংলাদেশ সোসাইটির নেতারা মনে করেন, ব্যক্তি স্বার্থে কাউকে গ্র্যান্ড মার্শাল করতে এবং গত বছরের মতো আবারও একটি অসফল প্যারেড আয়োজনের কোনো প্রয়োজন নেই।
বাংলাদেশ সোসাইটি ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান এম আজিজের বলেন, “বাংলাদেশ সোসাইটি কারো ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের প্ল্যাটফর্ম নয়।” এটি নিউইয়র্কে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের সবচেয়ে পুরোনো ও বৃহৎ সামাজিক সংগঠন। সোসাইটির ব্যানারে কোনো আয়োজন হলে, সেটি সোসাইটির সঙ্গে সংযুক্ত সবার সম্মতিতেই হতে হবে, কোনো ব্যক্তির বা প্রতিষ্ঠানের ইচ্ছেমতো নয়। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সোসাইটি যুক্তরাষ্ট্রের সর্ববৃহৎ আমব্রেলা সংগঠন, যার অধীনে বিভিন্ন আঞ্চলিক সংগঠন কাজ করে। তাই যদি সোসাইটির ব্যানারে ডে প্যারেড হয়, তবে অবশ্যই সংগঠনের সাবেক সভাপতি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং যাঁরা সংগঠনকে তিন যুগ ধরে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে পরামর্শ করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। এসময় এম আজিজ প্রশ্ন তোলেন, “গঠনতন্ত্র অনুসরণ করা হলো না কেন? কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক কেন হয়নি? বোর্ড অব ট্রাস্টির সঙ্গে কেন আলোচনা করা হলো না? আগেভাগেই গ্র্যান্ড মার্শাল নির্ধারণ করে ফেলা হলো কীভাবে? এর পেছনে ব্যক্তিগত স্বার্থ কী?”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশ সোসাইটির নেতৃত্ব পাঁচ-ছয় লাখ প্রবাসীর প্রতিনিধিত্ব করে। গত বছর ঠিক এভাবেই একজন ব্যক্তি তার স্বার্থের জন্য প্যারেড আয়োজন করেছিল, যেখানে মাত্র দুই শতাধিক লোক উপস্থিত ছিল! এতে বাংলাদেশী কমিউনিটির মানহানি হয়েছে এবং বাংলাদেশের ভাবমূর্তিও ক্ষুণœ হয়েছে।” তিনি সতর্ক করে বলেন, “সংগঠন চলে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, ব্যক্তিগত স্বার্থে নয়। বাংলাদেশ সোসাইটিকে কেউ নিজের সুবিধার জন্য ব্যবহার করতে পারবে না।”
অবশ্য সংবাদ সম্মেলনে এম আজিজের প্রশ্নের উত্তরে সভাপতি সেলিম বলেন, বিষয়টি সংবাদ সম্মেলনে উত্থাপনের বিষয় নয়, এটি নিয়ে আমরা সোসাইটির সভায় কথা বলতে পারি।
এখন প্রশ্ন হলো, প্রবাসী বাংলাদেশীরা কী সিদ্ধান্ত নেবেন? তাঁরা কি এই প্যারেডে অংশ নিয়ে নিজেরাই অপমানিত হবেন, নাকি গঠনতন্ত্র মেনে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় পরিচালিত একটি ঐক্যবদ্ধ আয়োজনের দাবি জানাবেন? সংবাদ সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট ফাহাদ সোলায়মান। উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সোসাইটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সাবেক সভাপতি এম আজিজ, বর্তমান সভাপতি আতাউর রহমান সেলিমসহ আরও অনেকে।