বাংলাদেশ কনস্যুলেটে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে অভ্যর্থনা

- প্রকাশের সময় : ০১:৩০:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫
- / ২৩ বার পঠিত
হককথা ডেস্ক: বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল, নিউইয়র্কে গত ১১ এপ্রিল শুক্রবার সন্ধ্যায় একটি অভ্যর্থনার আয়োজন করা হয়। পাশাপাশি ঈদ পুনর্মিলনীর আবহে আয়োজিত অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের কনসাল জেনারেল, কূটনীতিক, নিউইয়র্ক সিটি মেয়র অফিসের প্রতিনিধিসহ বিদেশী অতিথিবৃন্দের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্বসহ কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এরপরই বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নিউইয়র্ক সিটি মেয়র অফিসের আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিশনার এডওয়ার্ড মারমেলস্টেইন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ নাজমুল হুদা। এছাড়াও আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন নিউইয়র্ক স্টেট সিনেটর জন ল্যু ও নিউইয়র্ক সিটি মেয়র অফিসের আন্তর্জাতিক বিষয়ক ডেপুটি কমিশনার দিলিপ চৌহান, মেয়র অফিসের প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা মীর বাসার। অতিথি বক্তারা নিউইয়র্কে ক্রমবর্ধমান বাংলাদেশী কম্যুনিটির ভূমিকার প্রশংসা এবং তাদের উত্তোরত্তর সমৃদ্ধি কামনা করেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন কনস্যুলার ইশরাত জাহান।
অনুষ্ঠানে উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিবর্গের মধ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মুকিত চৌধুরী, সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা’র সম্পাদক ও টাইম টেলিভিশন-এর সিইও আবু তাহের, জাজ সোমা সাঈদ, জেবিবি এর সভাপতি গিয়াস আহমেদ, শাহ নেওয়াজ গ্রæপের কর্ণধার শাহ নেওয়াজ, বাংলাদেশ সোসাইটি সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম, টাইম টেলিভিশন পরিচালক সৈয়দ ইলিয়াস খসরু, সাপ্তাহিক প্রথম আলো সম্পাদক ইব্রাহিম চৌধুরী খোকন, নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সহ সভাপতি শেখ সিরাজুল ইসলাম, নিউইয়র্ক বাংলা সম্পাদক আকবর হায়দার কিরণ, ইউএসনিউইউজঅনলাইন.কম সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সেলিম, এটর্নি মীর মোহাম্মদ মিজান রহমান, সোসাইটির সাবেক সভাপতি আব্দুর রব মিয়া, সেন্টার ফর এনআরবি’র চেয়ারপার্সন শেকিল চৌধুরী, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিষ্ট জ্যাকব মিল্টন, কাজী আজম, নীরা রব্বানী, জাহাঙ্গীর সোহরাওয়ার্দী, খলিল বিরিয়ানী’র কর্ণধার অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত শেফ খলিলুর রহমান, সঙ্গীত শিল্পী রানো নেওয়াজ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কনস্যুলেট থেকে প্রেরীত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়: অনুষ্ঠানে কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ নাজমুল হুদা ৭১-এর স্বাধীনতা যুদ্ধে সকল শহীদ, শহিদ বুদ্ধিজীবী এবং শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ২০২৪ এর জুলাই-আগষ্ট বিপ্লবে সকল শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন এবং জুলাই- আগষ্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে যারা আহত হয়েছেন তাদের আশু সুস্থ্যতা কামনা করেন। তিনি বলেন, এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের স্বাধীনতা রক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ও আন্তরিকভাবে সচেষ্ট থাকতে হবে। তিনি সকলকে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের উষ্ণ শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন। কনসাল জেনারেল বলেন, ২০২৪ সাল বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় সংযোজন করেছে এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রব্যবস্থা মেরামত তথা সংস্কারের এক অনন্য সুযোগ সৃষ্টি করেছে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুসের বক্তব্যের প্রতিধ্বনি করে ‘আমরা দেশের সকল ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছি’ মর্মে তিনি উল্লেখ করেন। বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিশ্বের নজর কেড়েছে উল্লেখ করে দারিদ্র্য বিমোচন, গণসাক্ষরতা, নারীর ক্ষমতায়ন, ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম, কৃষি বিপ্লব, গ্রামীণ স্বাস্থ্য, স্যানিটেশন, নবজাতক ও মাতৃস্বাস্থ্য, আয়ুষ্কাল, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, শিল্পায়ন ও ডিজিটালাইজেশনের ধারাবাহিক বৃদ্ধি, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা অভিযানে তার অসাধারণ সাফল্যের কথা তুলে ধরেন কনসাল জেনারেল ।
কনসাল জেনারেল তার বক্তব্যে স্বাধীনতার কাঙ্খিত লক্ষ্য, তথা একটি গণতান্ত্রিক ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, ন্যয্যতাভিত্তিক, মানবিক ও আধুনিক দেশ গড়ার জন্য সকলকে সচেষ্ট থাকার অনুরোধ জানান। বাংলাদেশের অমিত সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে একটি গতিশীল, আত্মপ্রত্যয়ী এবং উন্নত দেশ গড়ার লক্ষ্যে আমাদের নতুন প্রজন্ম যে স্বপ্ন দেখছে তা বাস্তবায়নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহবান জানান তিনি। বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্রসহ সারা পৃথিবীতে অবস্থানকারী আমাদের বিপুল সংখ্যক প্রবাসী ভাই-বোনদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রশংসা করে তিনি তাদের এ সমর্থন এবং সহযোগিতা আরো শক্তিশালী করার অনুরোধ জ্ঞাপন করেন। কনসাল জেনারেল দু’দেশের জনগণের মধ্যকার সম্পর্ক উন্নয়নে প্রবাসী বাংলাদেশীদের অবদানের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন।
তিনি কনস্যুলেট জেনারেলের কার্যক্রম সুষ্ঠভাবে সম্পাদনের লক্ষ্যে সর্বদা সমর্থন ও সহযোগিতার জন্য অফিস অব ফরেন মিশনস, মেয়র অফিস, সোসাইটি অব ফরেন কনসালস এবং কূটনৈতিক সম্প্রদায়, ফেডারেল ও রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলোকে ধন্যবাদ জানান।