নিউইয়র্ক ০১:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

পদের জন্য বিনিয়োগ আত্মসাতের অভিযোগ

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১০:১৯:১২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০১৪
  • / ১০৭১ বার পঠিত

দীর্ঘ তিন বছরেও যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র কমিটি না হওয়ায় চরম হতাশা বিরাজ করছে দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে। সেই সাথে কমিটি না হওয়ায় ঐক্য হয়েও ঐক্য হচ্ছে না বিএনপিতে বরং নতুন করে বিভক্তি দেখা দিয়েছে নেতা-কর্মীদের মধ্যে। বিশেষ করে নতুন কমিটিতে পছন্দের পদ পেতে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সুনজরে আসতে তাদের খুশী করা দলের কয়েকজন নেতাও চরম নাখোশ। তাদের অভিযোগ ‘পদের জন্য আমাদের বিনোয়োগ আতœসাৎ’ হয়েছে, কমিটি না হওয়ায় আমাদের ‘আমও গেলো ছালাও গেলো’। অনুসন্ধানে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র নতুন কমিটিতে পছন্দের পদ-পদবী পেতে দলের দ্বিতীয় সারির একাধিক নেতা কেন্দ্রীয় একাধিক নেতার সাথে সখ্যতা গড়ে তোলার পাশাপাশি তাদের সুদৃষ্টিতে থাকার জন্য ‘আর্থিক সুবিধা‘ প্রদানসহ লাগাতার নানা সুযোগ-সুবিধা দিয়েছেন। কিন্তু দীর্ঘ তিন বছরেও কমিটি না হওয়ায় তারা হতাশায় ভুগছেন।
দীর্ঘ তিন বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র কমিটি নেই। কমিটির আশায় প্রহর গুনছেন সংগঠনটির সর্বস্তরের নেতা-কর্মী। আর কমিটি না থাকায় দল পরিচালনায় ভেঙ্গে গেছে ‘চেইন অব কমান্ড’। বেড়েছে বিভক্তি, বাড়ছে গ্রুপিং। বাড়ছে নেতার সংখ্যা। কোন কোন সভা-সমাবেশে দেখা যাচ্ছে কর্মীর চেয়ে নেতাই বেশী। কমিটি না হওয়ায় আর দলের নেতাদের বিভক্তিতে ব্যথিত, ক্ষুব্ধ হাজারো প্রবাসী বিএনপি ভক্ত, শুভাকাংখী, সমর্থক। দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের প্রত্যাশা ছিলো লন্ডন প্রবাসী বিএনপির কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত মাহিদুর রহমান নিউইয়র্ক সফরকালে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র কমিটি দেবেন। সেই লক্ষ্যে দলের পদ-পদবী প্রত্যাশী নেতৃবৃন্দ ছিলো উৎসাহী। সম্প্রতি তার নিউইয়র্ক সফরকালীন সময়ে সংশ্লিষ্ট সবাই বিভক্তি আর ভেদাভেদ ভুলে ‘দৃশ্যত’ ঐক্যবদ্ধও হয়েছিলেন। যদিও অপ্রত্যাশিতভাবে দুটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। তারপরও মাহিদুর রহমান সব বিভক্তি, ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হবেন, ঐক্যবদ্ধ থাকবেন বলে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। সূত্রমতে, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কমিটি নিয়ে কেন্দ্র চাপের মধ্যে রয়েছে। প্রস্তাবিত কমিটি রয়েছে তারেক রহমানের ল্যাপটপে। খোঁজ-খবর রয়েছে দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার কাছেও। সূত্র মতে, দেশের রাজনীতিসহ আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ও ভূমিকা অনস্বীকার্য। সেই বিবেচনায় যুক্তরাষ্ট্রে দলের প্রচার-প্রচারণা ও মূলধারায় লবিং করতে যোগ্য নেতৃত্ব সহ শক্তিশালী কমিটি দরকার। এই চিন্তা-ভাবনা মাথায় রেখে কেন্দ্র যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র শীর্ষ দুই পদে ‘যোগ্য’ প্রার্থী খুজছেন। আর এই ‘যোগ্য’ প্রার্থী না পাওয়ায় কেন্দ্র কর্তৃক কমিটি প্রদানে বিলম্ব হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র নেতৃত্ব পেতে ঢাকা ছাড়াও সিলেট, চট্টগ্রাম, ফেনী-নোয়াখালী লবিং সহ ব্যক্তিগত লবিং-এ কেন্দ্রের শীর্ষ নেতাদের সাথে জোড় তৎপরতা চলছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সভাপতি পদের জন্য সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক ডা. মজিবুর রহমান মজুমদার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান জিল্লু, সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি গিয়াস আহমেদ, সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি শরাফত হোসেন বাবু, সাবেক যুগ্মম্ম্পাদক কাজী আজম, আর সাধারণ সম্পাদক পদে সাবেক সহ সভাপতি আলহাজ সোলায়মান ভূইয়া ও সামসুল ইসলাম মজনু, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও যুক্তরাষ্ট্র জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মিজানুর রহমান ভুঁইয়া মিল্টন, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক হেলাল উদ্দিন ও আখতার হোসেন বাদল, সাবেক কোষাধ্যক্ষ জসিম ভূঁইয়া প্রমুখ মনোনয়র লাভের দাবীদার বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সংশিষ্ট নেতারা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র শীর্ষ পদ পেতে দলের প্রথম সারির দুই-চারজন সহ দ্বিতীয় সারির একাধিক নেতা একাধিক কেন্দ্রীয় নেতার সাথে অব্যাহত যোগাযোগ রেখে চলেছেন। আর নেতাদের সুনজরে থাকতে ‘আর্থিক সুবিধা’ প্রদানসহ নিউইয়র্ক তথা যুক্তরাষ্ট্র সফরকালীন সময়ে নামী-দামী ‘গিফ্্ট’ প্রদান, হোটেলে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা, যাতায়াতের ব্যবস্থা, আনন্দ ভ্রমণ  প্রভৃতি কর্মকান্ডে নিজেদের নিয়োজিত রাখেন। কেউ কেউ নেতার আগমনে নিজের কাজ-কর্ম, সংসার ফেলে নেতার সেবায় নিয়োজিত ছিলেন। বিশেষ করে আঞ্চলিকতার দাবী নিয়ে ঐ নেতারা কেন্দ্রীয় নেতার প্রভাবকে নিজের দলীয় পদ পাওয়ার কাজে  তাদের সেবা বিনিয়োগ করেছেন। সূত্র মতে লন্ডন-ঢাকাসহ সিলেট, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, ফেনী অঞ্চলের কেন্দ্রীয় নেতারাই তাদের মূল টার্গেটে রয়েছেন। কিন্তু দীর্ঘ দিনেও যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র কমিটি না হওয়ায় দলের শীর্ষ পদ-পদবীর আশায় ‘সেবা বিনিয়োগকারীরা’ চরম হতাশায় ভুগছেন। অন্যদিকে বিপদে রয়েছেন ‘সেবা গ্রহণকারী’ কেন্দ্রীয় নেতারাও। কেননা, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র চুড়ান্ত কমিটি হবে দলীয় চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া আর সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সিদ্ধান্তে। তাদের দুই জনের কাছে যেহেতু সরাসরি যাওয়ার কোন সুযোগ নেই সেইহেতু তারা কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে ‘গিভ এন্ড টেক পলিসি’ গ্রহণ করেছেন।
সূত্রমতে, যুক্তরাষ্ট্র Ÿিএনপি’র কমিটি না হওয়ায় বিএনপির কেন্দ্রীয় একাধিক নেতাও সুযোগটি নিচ্ছেন। এসব নেতাদের মধ্যে কেন্দ্রীয় ও সাবেক একাধিক মন্ত্রী, কেন্দ্রীয় এক নেতা কাম সাবেক কূটনীতিক, জাতীয় সংসদের সাবেক চীফ হুইপ, একাধিক সাবেক ছাত্রনেতা রয়েছেন বলেন সূত্র জানিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র এক নেতা জানান, দলের সাধারণ সম্পাদক পদ পেতে দ্বিতীয় সারির এক নেতা কেন্দ্রীয় নেতাদের পিছনে হাজার হাজার ডলার ব্যয় করে এখন হতাশায় ভুগছেন। দলের অনেক নেতা হতাশ হয়ে রাজনীতি ছেড়ে চেয়ার চিন্তা-ভাবনা করছেন।
দলের আরেক নেতা জানান, কেন্দ্রীয় নেতারা নিউইয়র্ক তথা যুক্তরাষ্ট্র সফরে আসলে তাদের সেবার নামে অনেকেই নানা বিনিয়োগের পথ ধরেন। পাশাপাশি ‘নেতার সেবা আর অনুষ্ঠান করার’ নামে চাঁদাবাজীর ঘটনাও ঘটে। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কমিটি না হওয়া পর্যন্ত এই চাঁদাবাজী বন্ধ হবে না। আর এই চাঁদাবাজীর ফলে দলের মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীরও অতিষ্ঠ।
উপরোক্ত অভিযোগের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র দায়িত্বশীল একাধিক নেতার দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে তারা অভিযোগটি সরাসরি স্বীকার না করে বলেন, দলের কমিটি না হওয়ায় আমরা হতাশ, দলের নেতা-কর্মীরাও হতাশ। আর ব্যক্তিগতভাবে কে কি করছেন তা আমাদের জানা নেই। তবে দল পরিচালনার জন্য দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের কাছ থেকে ‘চাঁদা না আর্থিক সহযোগিতা’ নিয়েই দলের কর্মকান্ড পরিচালিত হয়ে থাকে। এটাই বাস্তবতা। তারা বলেন, শুধু বিএনপি নয়, সকল রাজনৈতিক দলই এভাবে দলীয় নেতা-কর্মীদের আর্থিক সহযোগিতায় চলছে। (সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা)

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

পদের জন্য বিনিয়োগ আত্মসাতের অভিযোগ

প্রকাশের সময় : ১০:১৯:১২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০১৪

দীর্ঘ তিন বছরেও যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র কমিটি না হওয়ায় চরম হতাশা বিরাজ করছে দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে। সেই সাথে কমিটি না হওয়ায় ঐক্য হয়েও ঐক্য হচ্ছে না বিএনপিতে বরং নতুন করে বিভক্তি দেখা দিয়েছে নেতা-কর্মীদের মধ্যে। বিশেষ করে নতুন কমিটিতে পছন্দের পদ পেতে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সুনজরে আসতে তাদের খুশী করা দলের কয়েকজন নেতাও চরম নাখোশ। তাদের অভিযোগ ‘পদের জন্য আমাদের বিনোয়োগ আতœসাৎ’ হয়েছে, কমিটি না হওয়ায় আমাদের ‘আমও গেলো ছালাও গেলো’। অনুসন্ধানে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র নতুন কমিটিতে পছন্দের পদ-পদবী পেতে দলের দ্বিতীয় সারির একাধিক নেতা কেন্দ্রীয় একাধিক নেতার সাথে সখ্যতা গড়ে তোলার পাশাপাশি তাদের সুদৃষ্টিতে থাকার জন্য ‘আর্থিক সুবিধা‘ প্রদানসহ লাগাতার নানা সুযোগ-সুবিধা দিয়েছেন। কিন্তু দীর্ঘ তিন বছরেও কমিটি না হওয়ায় তারা হতাশায় ভুগছেন।
দীর্ঘ তিন বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র কমিটি নেই। কমিটির আশায় প্রহর গুনছেন সংগঠনটির সর্বস্তরের নেতা-কর্মী। আর কমিটি না থাকায় দল পরিচালনায় ভেঙ্গে গেছে ‘চেইন অব কমান্ড’। বেড়েছে বিভক্তি, বাড়ছে গ্রুপিং। বাড়ছে নেতার সংখ্যা। কোন কোন সভা-সমাবেশে দেখা যাচ্ছে কর্মীর চেয়ে নেতাই বেশী। কমিটি না হওয়ায় আর দলের নেতাদের বিভক্তিতে ব্যথিত, ক্ষুব্ধ হাজারো প্রবাসী বিএনপি ভক্ত, শুভাকাংখী, সমর্থক। দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের প্রত্যাশা ছিলো লন্ডন প্রবাসী বিএনপির কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত মাহিদুর রহমান নিউইয়র্ক সফরকালে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র কমিটি দেবেন। সেই লক্ষ্যে দলের পদ-পদবী প্রত্যাশী নেতৃবৃন্দ ছিলো উৎসাহী। সম্প্রতি তার নিউইয়র্ক সফরকালীন সময়ে সংশ্লিষ্ট সবাই বিভক্তি আর ভেদাভেদ ভুলে ‘দৃশ্যত’ ঐক্যবদ্ধও হয়েছিলেন। যদিও অপ্রত্যাশিতভাবে দুটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। তারপরও মাহিদুর রহমান সব বিভক্তি, ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হবেন, ঐক্যবদ্ধ থাকবেন বলে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। সূত্রমতে, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কমিটি নিয়ে কেন্দ্র চাপের মধ্যে রয়েছে। প্রস্তাবিত কমিটি রয়েছে তারেক রহমানের ল্যাপটপে। খোঁজ-খবর রয়েছে দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার কাছেও। সূত্র মতে, দেশের রাজনীতিসহ আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ও ভূমিকা অনস্বীকার্য। সেই বিবেচনায় যুক্তরাষ্ট্রে দলের প্রচার-প্রচারণা ও মূলধারায় লবিং করতে যোগ্য নেতৃত্ব সহ শক্তিশালী কমিটি দরকার। এই চিন্তা-ভাবনা মাথায় রেখে কেন্দ্র যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র শীর্ষ দুই পদে ‘যোগ্য’ প্রার্থী খুজছেন। আর এই ‘যোগ্য’ প্রার্থী না পাওয়ায় কেন্দ্র কর্তৃক কমিটি প্রদানে বিলম্ব হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র নেতৃত্ব পেতে ঢাকা ছাড়াও সিলেট, চট্টগ্রাম, ফেনী-নোয়াখালী লবিং সহ ব্যক্তিগত লবিং-এ কেন্দ্রের শীর্ষ নেতাদের সাথে জোড় তৎপরতা চলছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সভাপতি পদের জন্য সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক ডা. মজিবুর রহমান মজুমদার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান জিল্লু, সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি গিয়াস আহমেদ, সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি শরাফত হোসেন বাবু, সাবেক যুগ্মম্ম্পাদক কাজী আজম, আর সাধারণ সম্পাদক পদে সাবেক সহ সভাপতি আলহাজ সোলায়মান ভূইয়া ও সামসুল ইসলাম মজনু, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও যুক্তরাষ্ট্র জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মিজানুর রহমান ভুঁইয়া মিল্টন, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক হেলাল উদ্দিন ও আখতার হোসেন বাদল, সাবেক কোষাধ্যক্ষ জসিম ভূঁইয়া প্রমুখ মনোনয়র লাভের দাবীদার বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সংশিষ্ট নেতারা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র শীর্ষ পদ পেতে দলের প্রথম সারির দুই-চারজন সহ দ্বিতীয় সারির একাধিক নেতা একাধিক কেন্দ্রীয় নেতার সাথে অব্যাহত যোগাযোগ রেখে চলেছেন। আর নেতাদের সুনজরে থাকতে ‘আর্থিক সুবিধা’ প্রদানসহ নিউইয়র্ক তথা যুক্তরাষ্ট্র সফরকালীন সময়ে নামী-দামী ‘গিফ্্ট’ প্রদান, হোটেলে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা, যাতায়াতের ব্যবস্থা, আনন্দ ভ্রমণ  প্রভৃতি কর্মকান্ডে নিজেদের নিয়োজিত রাখেন। কেউ কেউ নেতার আগমনে নিজের কাজ-কর্ম, সংসার ফেলে নেতার সেবায় নিয়োজিত ছিলেন। বিশেষ করে আঞ্চলিকতার দাবী নিয়ে ঐ নেতারা কেন্দ্রীয় নেতার প্রভাবকে নিজের দলীয় পদ পাওয়ার কাজে  তাদের সেবা বিনিয়োগ করেছেন। সূত্র মতে লন্ডন-ঢাকাসহ সিলেট, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, ফেনী অঞ্চলের কেন্দ্রীয় নেতারাই তাদের মূল টার্গেটে রয়েছেন। কিন্তু দীর্ঘ দিনেও যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র কমিটি না হওয়ায় দলের শীর্ষ পদ-পদবীর আশায় ‘সেবা বিনিয়োগকারীরা’ চরম হতাশায় ভুগছেন। অন্যদিকে বিপদে রয়েছেন ‘সেবা গ্রহণকারী’ কেন্দ্রীয় নেতারাও। কেননা, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র চুড়ান্ত কমিটি হবে দলীয় চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া আর সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সিদ্ধান্তে। তাদের দুই জনের কাছে যেহেতু সরাসরি যাওয়ার কোন সুযোগ নেই সেইহেতু তারা কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে ‘গিভ এন্ড টেক পলিসি’ গ্রহণ করেছেন।
সূত্রমতে, যুক্তরাষ্ট্র Ÿিএনপি’র কমিটি না হওয়ায় বিএনপির কেন্দ্রীয় একাধিক নেতাও সুযোগটি নিচ্ছেন। এসব নেতাদের মধ্যে কেন্দ্রীয় ও সাবেক একাধিক মন্ত্রী, কেন্দ্রীয় এক নেতা কাম সাবেক কূটনীতিক, জাতীয় সংসদের সাবেক চীফ হুইপ, একাধিক সাবেক ছাত্রনেতা রয়েছেন বলেন সূত্র জানিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র এক নেতা জানান, দলের সাধারণ সম্পাদক পদ পেতে দ্বিতীয় সারির এক নেতা কেন্দ্রীয় নেতাদের পিছনে হাজার হাজার ডলার ব্যয় করে এখন হতাশায় ভুগছেন। দলের অনেক নেতা হতাশ হয়ে রাজনীতি ছেড়ে চেয়ার চিন্তা-ভাবনা করছেন।
দলের আরেক নেতা জানান, কেন্দ্রীয় নেতারা নিউইয়র্ক তথা যুক্তরাষ্ট্র সফরে আসলে তাদের সেবার নামে অনেকেই নানা বিনিয়োগের পথ ধরেন। পাশাপাশি ‘নেতার সেবা আর অনুষ্ঠান করার’ নামে চাঁদাবাজীর ঘটনাও ঘটে। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কমিটি না হওয়া পর্যন্ত এই চাঁদাবাজী বন্ধ হবে না। আর এই চাঁদাবাজীর ফলে দলের মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীরও অতিষ্ঠ।
উপরোক্ত অভিযোগের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র দায়িত্বশীল একাধিক নেতার দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে তারা অভিযোগটি সরাসরি স্বীকার না করে বলেন, দলের কমিটি না হওয়ায় আমরা হতাশ, দলের নেতা-কর্মীরাও হতাশ। আর ব্যক্তিগতভাবে কে কি করছেন তা আমাদের জানা নেই। তবে দল পরিচালনার জন্য দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের কাছ থেকে ‘চাঁদা না আর্থিক সহযোগিতা’ নিয়েই দলের কর্মকান্ড পরিচালিত হয়ে থাকে। এটাই বাস্তবতা। তারা বলেন, শুধু বিএনপি নয়, সকল রাজনৈতিক দলই এভাবে দলীয় নেতা-কর্মীদের আর্থিক সহযোগিতায় চলছে। (সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা)