নেতৃত্ব প্রত্যাশিতদের শোডাউন : বিব্রত কেন্দ্রীয় নেতা নোমান
- প্রকাশের সময় : ১১:০২:৪১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০১৪
- / ৯৫০ বার পঠিত
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপিতে আবার বিভক্তি দেখা দিয়েছে। বৃদ্ধি পেয়েছে দলীয় কোন্দল। নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় বেড়েছে শীর্ষ নেতৃবৃন্দের শোডাউন। একই ব্যানারে পৃথক পৃথক আয়োজনে চলছে সভা-সমাবেশ। বিশেষ করে দলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৪৯তম জন্মদিন পালন উপলক্ষ্যে পৃথক পৃথক সভা-সমাবেশ আয়োজন করে কেন্দ্রের নজর আকৃষ্ট আর নিজেদের নেতৃত্ব শোডাউন করা হচ্ছে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রদল নিয়েও শুরু হয়েছে নতুন করে দেন-দরবার। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে বিপাকে পড়েছেন দলের সাধারণ নেতা-কর্মী, সমর্থকরা। দলীয় বিভেদ-বিভক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতৃবৃন্দের উপর বাড়ছে তাদের ঘৃণা-ক্ষোভ, অবিশ্বাস। বাড়ছে দলীয় নেতা-কর্মীদের মাঝে দূরত্ব।
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র দলীয় বিভক্তির এক দিকের নেতৃত্বে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডা. মজিবুর রহমান মজুমদার ও সাবেক সহ সভাপতি সামসুল ইসলাম মজনু প্রমুখ, আরেক দিকের নেতৃত্বে রয়েছেন সাবেক সভাপতি আব্দুল লতিফ স¤্রাট, সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি গিয়াস আহমেদ ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল, আরেক দিকের নেতৃত্বে রয়েছেন দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান জিল্লু ও সাবেক যুগ্ম সম্পাদক হেলালউদ্দিন প্রমুখ, আরেক দিকে নেতৃত্বে রয়েছেন সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি শরাফত হোসেন বাবু ও সাবেক কোষাধ্যক্ষ জসিম ভূইয়া। এছাড়াও দলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আকতার হোসেন বাদলের নেতৃত্বেও একটি গ্রুপ দলীয় কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। এদের মধ্যে আগামীতে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সভাপতি পদের জন্য ডা. মজিবুর রহমান মজুমদার, জিল্লুর রহমান জিল্লু, গিয়াস আহমেদ ও শরাফত হেসেন বাবু লবিং করে যাচ্ছেন। অপরদিকে সাধারন সম্পাদক পদের জন্য লবিং করছেন সামসুল ইসলাম মজনু, হেলাল উদ্দিন, মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল, আকতার হোসেন বাদল ও জসিম ভুইয়া।
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কমিটি নেই তিন বছর হলো। কমিটি না থাকায় দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে দ্বিধা-বিভক্তি বাড়ছে। দলের আগামী দিনের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় শীর্ষ নেতাদের মধ্যে পালা বদলের খেলা চলছে। মূলত: তিন গ্রুপে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সভা-সমাবেশ চললেও দলের মধ্যে উপ গ্রুপও তৈরী হচ্ছে। তারাও বিভিন্ন নামে সভা-সমাবেশ আয়োজন করে নিজেদের জনপ্রিয়তার পাশাপাশি শোডাউন প্রদর্শণ করছেন। এক সময় আব্দুল লতিফ স¤্রাট ও জিল্লুর রহমান জিল্লুর মধ্যে বিভিিক্ত দেখা দিলেও তা ঐক্যে পরিণত হয়, আবার সেই ঐক্য ভেঙ্গেও যায়। এদিকে ভেঙ্গে গেছে ডা. মজিবুর রহমান মজুমদার ও জিল্লুর রহমান জিল্লুর মধ্যকার সহবস্থান। এখন তারা দুই মেরুতে অবস্থান করছেন। দূরত্ব কমছে জিল্লুর রহমান জিল্লু ও শরাফত হোসেন বাবুর মধ্যকার বিরোধী অবস্থানের।
অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রদল নিয়েও যুক্তরাষ্ট্র বিএনপিতে চলছে টানাপোড়ন। দুই সপ্তাহ আগে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সাবেক ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক ও যুক্তরাষ্ট্র জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি আতাউর রহমান আতা ও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম জনি নেতৃত্বাধীন কমিটির পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের কোন ষ্টেটে ছাত্রদলের কোন কমিটি নেই বলে বিবৃতিতে দাবী করার পরপরই এম এ বাসিত, জাহিদ খান, আশফাক চৌধুরী জামি, নাজিম চৌধুরী রিঙ্কু প্রমুখের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ব্যানারে গত সপ্তাহে জ্যাকসন হাইটসের ফুডকোর্ট রেষ্টুরেন্টের পার্টি হলে বিপ্লব ও সংহতি দিবস এবং তারেক রহমানের জন্মদিন পালন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও আগামীতে সভাপতি পদপ্রার্থী জিল্লুর রহমান জিল্লু। ঐ অনুষ্ঠানে জিল্লু সমর্থিত বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের ব্যাপক শোডাউন পরিলক্ষিত হয়। একই দিন আতা-জনির নেতৃত্বাধীন যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রদলের আয়োজনে বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালন করে। ঐ সভায় আব্দুল লতিফ স¤্রাট, গিয়াস আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। পরবর্তীতে তারেক রহমানের জন্মদিন পালন উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে শোডাউন প্রদর্শন করেন আব্দুল লতিফ স¤্রাট ও গিয়াস আহমেদ নেতৃত্বাধীন গ্রুপ। আরেক অনুষ্ঠানে শোডাউন প্রদর্শন করেন শরাফত হোসেন বাবু ও জসিম উদ্দিন ভুইয়া গ্রুপ।
সূত্রমতে, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিভক্তিতে বিব্রতবোধ করছেন দলের কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি, সাবেক মন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল নোমান। তিনি বিবৃত হলেও মুখ রক্ষার জন্য হলেও বিভিন্ন গ্রুপের সভা-সমাবেশে যোগ দিতে বাধ্য হচ্ছেন। দলের স্বার্থে, নেতা-কর্মীদের উজ্জীবত করতে যখন যে গ্রুপ ডাকছেন সেখানেই যাচ্ছেন। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় নেতা নোমান সন্তুষ্ট তো ননই বরং বিব্রত বলে জানিয়েছেন তার সাথে ঘনিষ্ঠ একাধিক নেতা। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের মতে কমিটি না হওয়াই সংগঠনের চলমান পরিস্থিতি দায়ী।