নিউইয়র্ক ০৮:৫৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

নিউইয়র্কের ডেমক্র্যাট দলীয় প্রাইমারী-২০২০ : আর মাত্র ২দিন বাকী

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১২:২২:৫২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২১ জুন ২০২০
  • / ২৯ বার পঠিত

এমদাদ চৌধুরী দীপু: যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে মূলধারার রাজনীতিতে বাংলাদেশীদের প্রতিনিধিত্ব রয়েছে। তবে প্রতিনিধিত্ব নেই নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে। এই অঙ্গরাজ্যে বাংলাদেশীদের বসবাস সবচেয়ে বেশী, তার পরও কেন নেই মূলধারায় প্রতিনিধিত্ব এ নিয়ে রয়েছে নানা বিশ্লেষন। এসবের মধ্যে আবারো হাজির ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রাইমারী নির্বাচন। ডেমোক্র্যাটদের দূর্গখ্যাত নিউইয়র্কের গভর্নর ডেমোক্র্যাট দলীয়, বর্তমান মেয়র ডেমোক্র্যাট দলীয়, অন্যান্য জনপ্রতিনিধিরা ডেমোক্র্যাট দলীয়। এখানে রিপাবলিকানদের ভোট খুবই কম। ফলে ডেমোক্র্যাট প্রাইমারীতে যিনি নির্বাচিত হবেন তিনিই আগামী ৩ নভেম্বরের চুড়ান্ত বা জাতীয় নির্বাচনে বিজয়ী হবেন। চার বছর পর নির্বাচন আসলে বাংলাদেশী আমেরিকানরা নির্বাচনে অংশ নেন, এবারো এর ব্যতিক্রম নয়। তবে এবার কয়েকজন নির্বাচিত হওয়ার আশা করা হচ্ছে। নিউইয়র্কের আসন্ন নির্বাচনে ১২জন প্রার্থী নির্বাচনী লড়াইয়ে অংশ নিচ্ছেন। প্রার্থী তালিকায় তরুণদের প্রাধান্য রয়েছে।
কংগ্রেসওমেনঃ নিউইয়র্কের কংগ্রেসনাল ডিষ্ট্রিক্ট-১৪ থেকে এই পদে প্রার্থী হয়েছেন বদরুন নাহার খান মিতা। তিনি ডেমোক্র্যাটিক পার্টির আলোচিত কংগ্রেসওমেন আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও’র বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছেন। এবারের নির্বাচনে জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব আমেরিকার সাবেক সভাপতি বদরুন নাহার খান মিতা একজন সমাজকর্মী, কমিউনিটির পরিচিত মুখ, ডিষ্ট্রিক্ট ১৪ নির্বাচনী এলাকায় একজন আলোচিত প্রার্থী। বাংলাদেশী-আমেরিকান আর দক্ষিণ এশিয়ার ভোটারসহ সবদেশের ভোটারের কাছে তার পরিচিতি রয়েছে, ব্যাপক প্রচারনা চলছে এই প্রার্থীর পক্ষে।
ইউএস কংগ্রেসঃ নিউইয়র্ক ডিস্ট্রিক্ট-৫ আসনে প্রার্থী হয়েছেন বাংলাদেশী আমেরিকান সানিয়াত চৌধুরী। কমিউনিটির পরিচিত মুখ সানিয়াত চৌধুরী রয়েছেন আলোচনায় এই নির্বাচনে। ইউএস কংগ্রেস এর প্রার্থী বদরুন নাহার খান মিতা ছাড়াও
ষ্টেট অ্যাসেম্বলীঃ ডিস্ট্রিক্ট-২৪ আসনে ষ্টেট অ্যাসেম্বলীম্যান পদে লড়াইয়ে নেমেছেন মাহফুজুল ইসলাম। তিনি কমিউনিটির পরিচিত মুখ, বাংলাদেশীদের অধিকার প্রতিষ্ঠাসহ এবারের ভোটে রয়েছেন আলোচনায় নির্বাচনী মাঠে।
ষ্টেট অ্যাসেম্বলীঃ ডিস্ট্রিক্ট-৩৭ এ আলোচিত প্রাথী হচ্ছেন মেরি জোবায়দা। ‘মেরি জোবাইদা জিতলে, জিতবে বাংলাদেশ, জয় চৌধুরী জিতলে জিতে যাবে বাংলাদেশ’ এমন শ্লোগানে চলছে নিউইয়র্কে ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রাইমারী নির্বাচনের প্রচারণা। মেরি জোবায়দা, জয় চৌধুরী ইতিহাস সৃষ্টি করতে পারেন এমন প্রত্যাশা কমিউনিটিতে।

ডিস্ট্রিক্ট-৩৪ আসনে এবার আলোচনায় তরুন প্রার্থী জয় চৌধুরী। জয় চৌধুরী জয়ী হতে পারেন এমন আশা করছেন অনেকে। ব্যাপক প্রচারনা চলছে জয় চৌধুরীর পক্ষে তার নির্বাচনী এলাকা কুইন্সে। জয় চৌধুরী শক্ত একজন প্রার্থীর বিপক্ষে লড়ছেন।
ডিষ্ট্রিক্ট-৩৬ আসন থেকে প্রার্থী হয়েছেন জোহরান খান। নিজ নির্বাচনী এলাকায় পরিচিত মুখ জোহরান এর পক্ষে চলছে বিভিন্ন ধরনের প্রচারনা।
ডিস্ট্রিক্ট-৫৪ এ অ্যাসেম্বলীম্যান প্রার্থী হয়েছেন নাফিস আই চৌধুরী। তার পক্ষে প্রচারনা চলছে,সমর্থন দিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন। আলোচিত প্রার্থী হয়ে উঠেছেন তরুন প্রার্থী নাফিস।
ডিষ্ট্রিক্ট লীডারঃ ডিষ্টিক্ট লিডার পদে পুরুষ, মহিলা অনেকই নির্বাচন করছেন। অ্যাসেম্বলী ডিষ্ট্রিক্ট-২৪ আসন থেকে লড়ছেন মাহতাব খান, চলছে নির্বাচনী প্রচারনা আর ভোট প্রার্থনা। একই আসন থেকে ডিস্ট্রিক্ট লীডার (ওম্যান) পদে আলোচিত প্রার্থী মৌমিতা আহমেদ। তিনি ডিষ্ট্রিক্ট-২৪ এ একজন শক্ত প্রার্থী। নানা কাজের জন্য কমিউনিটিতে তার রয়েছে বাড়তি পরিচিতি। অপরদিকে অ্যাসেম্বলী ডিষ্ট্রিক্ট ২৪বি-তে ডিষ্ট্রিক্ট লীডার পদে প্রার্থী হয়েছেন ইশতিয়াক চৌধুরী এবং ফারজানা চৌধুরী।
এছাড়াও ব্রæকলীনের আসেম্বলী ডিষ্ট্রিক্ট-৮৭ থেকে লড়ছেন এন মজুমদার। তিনি কমিউিনিটিতে খুবই পরিচিত। এবারের নির্বাচনে তার পক্ষে চলছে ব্যাপক প্রচারণা। কমিউনিটির বিভিন্ন সংগঠন তাকে সমর্থন করে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে।
সংশ্লিস্ট সূত্রমতে, নিউইয়র্কের ডেমোক্যাট দলীয় প্রাইমারী নির্বাচনে বাংলাদেশী-আমেরিকান ১২জন প্রার্থী লড়াই করছেন। ভোটের ব্যাপারে বাংলাদেশীদের সচেতনতা বাড়লে এবং ঐক্য সৃষ্টি হলে বাংলাদেশীদের জন্য বিজয় কোন কঠিন বিষয় নয় বলে মনে করেন প্রার্থীরা।
এদিকে আলোচনায় থাকা প্রার্থীদের মধ্যে ইউএস কংগ্রেস এর প্রার্থী বদরুন নাহার খান মিতা ছাড়াও ডিষ্ট্রিক্ট লীডার পদপ্রার্থী মোহাম্মদ মজুমদার, মৌমিতা আহমেদ, নাফিস আই চৌধুরীসহ উল্লেখিত ১২জন প্রার্থীকে ভোট দেয়ার আহŸান জানিয়েছেন কমিউনিটি লীডার আব্দুর রহিম হাওলাদার। বাংলাদেশ সোসাইটি সাংগঠনিকভাবে নির্বাচনী প্রচারণা কিংবা কাউকে সমর্থন দিতে পারেনা, তবে ব্যক্তিগতভাবে বাংলাদেশ সোসাইটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুর রহিম হাওলাদার বাংলাদেশী আমেরিকান যারা ২৩ জুনের নির্বাচনে প্রার্থী তাদেরকে ভোট প্রদানের জন্য প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন। এবারের নির্বাচনে শুধু আব্দুর রহিম হাওলাদার নন, তার মত অনেক কমিউনিটি নেতা কাজ করে যাচ্ছেন নীরবে-সরবে। কুইন্স, ব্রæকলীন, ব্রঙ্কস, ম্যানহাটন সবখানে বাংলাদেশীরা নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
আব্দুর রহিম হাওলাদার বলেন, মেরি জোবাইদা যিনি অ্যাসেম্বলী ডিষ্ট্রিক্ট-৩৭ এ অ্যাসেম্বলীওমেন প্রার্থী তার জন্য ফোন ব্যাংকিং প্রচারনায় অংশ নিয়েছেন। তিনি ডিষ্ট্রিক্ট-৩৪ এ অ্যাসেম্বলীম্যান প্রার্থী জয় চৌধুরীর জন্য ভোট চেয়ে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
মাত্র দুই হাজার ভোট হলে ইতিহাস হতে পারে বাংলাদেশী-আমেরিকানদের জন্য। ডিষ্ট্রিক্ট অ্যাসেম্বলীম্যান এবং অ্যাসেম্বলীওমেন প্রার্থী পদে গড়ে ভোটার ৪০ হাজার এমন তথ্য দিয়ে প্রার্থী মেরী জোবাইদা বলেন করোনাসহ সামগ্রিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় দুই হাজার ভোট প্রত্যাশা করছেন তিনি। ডিস্ট্রিক্ট ৩৭ এ অ্যাসেম্বলী ফিমেইল প্রার্থী মেরি জোবাইদা বলেন ভোট প্রদানের হার কম হবে। বাংলাদেশী প্রার্থীদের অন্তত দুই হাজার ভোট নিশ্চিত করার বিষয়টি সবাই গুরুত্ব দিলে ২৩ জুন আমরা ইতিহাস গড়তে পারবো।
এদিকে ২৩ জুনের নির্বাচনকে সামনে রেখে চলছে পরিচিতি সভা। নির্বাচনে অংশগ্রহনকারী প্রার্থীরা জানিয়েছেন গণপরিবহনের সমস্যা, আবাসন সমস্যা, স্কুল এ ভর্তি সমস্যাসহ বাংলাদেশীদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে কথা বলবেন বলে জানান। প্রার্থীদের উপস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের আমব্রেলা সংগঠন জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব আমেরিকা সম্প্রতি এক পরিচিতি সভার আয়োজন করে। এই আয়োজনে অংশ নিয়ে ৫লাখ ভোটে পেনসেলভেনিয়া অঙ্গরাজ্যে ডেমোক্র্যাট প্রাইমারীতে অডিটর জেনারেল পদে বিজয়ী ড. নীনা আহমদ আহমেদ বলেন- নিউইয়র্কে এবার বাংলাদেশীদের বিজয় নিশ্চিত করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ব হয়ে কাজ করতে হবে। সব প্রার্থীর প্রতি তার শুভকামনা জানান।
পেনসেলভেনিয়া থেকে সবাইকে শুভেচ্ছা জানান ডা. জিয়া উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, আমাদের দাবীর জন্য আমাদেরকে সোচ্চার হতে হবে। পরবর্তী প্রজন্মের জন্য পথ তৈরী করতে হবে আমাদেরকেই। নিউইয়র্কে আগাম নির্বাচন শুরু হয়ে গেছে। সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোটাররা আগাম ভোট দিতে পারবেন নির্ধারিত নিকটস্থ ভোট কেন্দ্রে।
জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব আমেরিকার সহ সভাপতি আহবাব হোসেন চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সভাপতি ময়নুল হক চৌধুরী হেলাল ও সাধারণ সম্পাদক শেফাজ। এছাড়াও জালালাবাদ এসোসিয়েশনের ট্রাস্ট্রিবোর্ডের সদস্য, নির্বাহী কমিটির সদস্যরা ভিডিও বার্তার মাধ্যমে প্রার্থীদের সফলতা কামনা করে বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে নির্বাচনে প্রার্থী মেরী জোবায়দা, জয় চৌধুরী, নাফিস আই চৌধুরী বক্তব্য রাখেন এবং প্রার্থী হওয়ার প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। এসময় প্রার্থীরা কমিউনিটির কল্যাণে তাদের অর্জন এবং অবদানের বিবরণ তুলে ধরে সবার সাহায্য কামনা করেন। প্রার্থীরা জালালাবাদ এসোসিয়েশনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
আনুষ্ঠানে টাইম টেলিভিশন-এর সিইও এবং বাংলা পত্রিকা’র সম্পাদক আবু তাহের বলেন, এই নির্বাচন হতে পারে ইতিহাস সৃষ্টির নির্বাচন, তাই শেষ মুহুর্তে সবাইকে সহযোগীতার জন্য আহŸান জানান তিনি। অনুষ্ঠানে ভিডিও বার্তায় সবার প্রতি যার যার অবস্থান থেকে সহযোগীতার আহŸান জানান বাংলাদেশ সোসাইটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুর রহিম হাওলাদার, জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আলহাজ বদরুল খান।
যেই অঙ্গরাজ্যে দুই শতাধিক দেশের মানুষের বসবাস, ১৮০টি ভাষার মানুষের ভোট। সেই অঙ্গরাজ্যে লাল-সবুজের পতাকা উড়ানোর একটি স্বপ্ন দীর্ঘদিনের। সেই স্বপ্ন পূরণের নির্বাচনের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে প্রবাসীদের মাঝে। আবেগ, উত্তেজনায় সেটিকে স্মরণীয় করার নানামুখী চেষ্টা চলছে। এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন বাংলাদেশী কমিউনিটিকে যারা প্রতিনিধিত্ব করেন সেই সব ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন আঞ্চলিক সংগঠনের নেতারা। পেশাজীবীরাসহ সকল শ্রেনী পেশার প্রবাসী বাংলাদেশীদের দৃষ্টি এখন নির্বাচনের দিকে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

নিউইয়র্কের ডেমক্র্যাট দলীয় প্রাইমারী-২০২০ : আর মাত্র ২দিন বাকী

প্রকাশের সময় : ১২:২২:৫২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২১ জুন ২০২০

এমদাদ চৌধুরী দীপু: যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে মূলধারার রাজনীতিতে বাংলাদেশীদের প্রতিনিধিত্ব রয়েছে। তবে প্রতিনিধিত্ব নেই নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে। এই অঙ্গরাজ্যে বাংলাদেশীদের বসবাস সবচেয়ে বেশী, তার পরও কেন নেই মূলধারায় প্রতিনিধিত্ব এ নিয়ে রয়েছে নানা বিশ্লেষন। এসবের মধ্যে আবারো হাজির ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রাইমারী নির্বাচন। ডেমোক্র্যাটদের দূর্গখ্যাত নিউইয়র্কের গভর্নর ডেমোক্র্যাট দলীয়, বর্তমান মেয়র ডেমোক্র্যাট দলীয়, অন্যান্য জনপ্রতিনিধিরা ডেমোক্র্যাট দলীয়। এখানে রিপাবলিকানদের ভোট খুবই কম। ফলে ডেমোক্র্যাট প্রাইমারীতে যিনি নির্বাচিত হবেন তিনিই আগামী ৩ নভেম্বরের চুড়ান্ত বা জাতীয় নির্বাচনে বিজয়ী হবেন। চার বছর পর নির্বাচন আসলে বাংলাদেশী আমেরিকানরা নির্বাচনে অংশ নেন, এবারো এর ব্যতিক্রম নয়। তবে এবার কয়েকজন নির্বাচিত হওয়ার আশা করা হচ্ছে। নিউইয়র্কের আসন্ন নির্বাচনে ১২জন প্রার্থী নির্বাচনী লড়াইয়ে অংশ নিচ্ছেন। প্রার্থী তালিকায় তরুণদের প্রাধান্য রয়েছে।
কংগ্রেসওমেনঃ নিউইয়র্কের কংগ্রেসনাল ডিষ্ট্রিক্ট-১৪ থেকে এই পদে প্রার্থী হয়েছেন বদরুন নাহার খান মিতা। তিনি ডেমোক্র্যাটিক পার্টির আলোচিত কংগ্রেসওমেন আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও’র বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছেন। এবারের নির্বাচনে জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব আমেরিকার সাবেক সভাপতি বদরুন নাহার খান মিতা একজন সমাজকর্মী, কমিউনিটির পরিচিত মুখ, ডিষ্ট্রিক্ট ১৪ নির্বাচনী এলাকায় একজন আলোচিত প্রার্থী। বাংলাদেশী-আমেরিকান আর দক্ষিণ এশিয়ার ভোটারসহ সবদেশের ভোটারের কাছে তার পরিচিতি রয়েছে, ব্যাপক প্রচারনা চলছে এই প্রার্থীর পক্ষে।
ইউএস কংগ্রেসঃ নিউইয়র্ক ডিস্ট্রিক্ট-৫ আসনে প্রার্থী হয়েছেন বাংলাদেশী আমেরিকান সানিয়াত চৌধুরী। কমিউনিটির পরিচিত মুখ সানিয়াত চৌধুরী রয়েছেন আলোচনায় এই নির্বাচনে। ইউএস কংগ্রেস এর প্রার্থী বদরুন নাহার খান মিতা ছাড়াও
ষ্টেট অ্যাসেম্বলীঃ ডিস্ট্রিক্ট-২৪ আসনে ষ্টেট অ্যাসেম্বলীম্যান পদে লড়াইয়ে নেমেছেন মাহফুজুল ইসলাম। তিনি কমিউনিটির পরিচিত মুখ, বাংলাদেশীদের অধিকার প্রতিষ্ঠাসহ এবারের ভোটে রয়েছেন আলোচনায় নির্বাচনী মাঠে।
ষ্টেট অ্যাসেম্বলীঃ ডিস্ট্রিক্ট-৩৭ এ আলোচিত প্রাথী হচ্ছেন মেরি জোবায়দা। ‘মেরি জোবাইদা জিতলে, জিতবে বাংলাদেশ, জয় চৌধুরী জিতলে জিতে যাবে বাংলাদেশ’ এমন শ্লোগানে চলছে নিউইয়র্কে ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রাইমারী নির্বাচনের প্রচারণা। মেরি জোবায়দা, জয় চৌধুরী ইতিহাস সৃষ্টি করতে পারেন এমন প্রত্যাশা কমিউনিটিতে।

ডিস্ট্রিক্ট-৩৪ আসনে এবার আলোচনায় তরুন প্রার্থী জয় চৌধুরী। জয় চৌধুরী জয়ী হতে পারেন এমন আশা করছেন অনেকে। ব্যাপক প্রচারনা চলছে জয় চৌধুরীর পক্ষে তার নির্বাচনী এলাকা কুইন্সে। জয় চৌধুরী শক্ত একজন প্রার্থীর বিপক্ষে লড়ছেন।
ডিষ্ট্রিক্ট-৩৬ আসন থেকে প্রার্থী হয়েছেন জোহরান খান। নিজ নির্বাচনী এলাকায় পরিচিত মুখ জোহরান এর পক্ষে চলছে বিভিন্ন ধরনের প্রচারনা।
ডিস্ট্রিক্ট-৫৪ এ অ্যাসেম্বলীম্যান প্রার্থী হয়েছেন নাফিস আই চৌধুরী। তার পক্ষে প্রচারনা চলছে,সমর্থন দিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন। আলোচিত প্রার্থী হয়ে উঠেছেন তরুন প্রার্থী নাফিস।
ডিষ্ট্রিক্ট লীডারঃ ডিষ্টিক্ট লিডার পদে পুরুষ, মহিলা অনেকই নির্বাচন করছেন। অ্যাসেম্বলী ডিষ্ট্রিক্ট-২৪ আসন থেকে লড়ছেন মাহতাব খান, চলছে নির্বাচনী প্রচারনা আর ভোট প্রার্থনা। একই আসন থেকে ডিস্ট্রিক্ট লীডার (ওম্যান) পদে আলোচিত প্রার্থী মৌমিতা আহমেদ। তিনি ডিষ্ট্রিক্ট-২৪ এ একজন শক্ত প্রার্থী। নানা কাজের জন্য কমিউনিটিতে তার রয়েছে বাড়তি পরিচিতি। অপরদিকে অ্যাসেম্বলী ডিষ্ট্রিক্ট ২৪বি-তে ডিষ্ট্রিক্ট লীডার পদে প্রার্থী হয়েছেন ইশতিয়াক চৌধুরী এবং ফারজানা চৌধুরী।
এছাড়াও ব্রæকলীনের আসেম্বলী ডিষ্ট্রিক্ট-৮৭ থেকে লড়ছেন এন মজুমদার। তিনি কমিউিনিটিতে খুবই পরিচিত। এবারের নির্বাচনে তার পক্ষে চলছে ব্যাপক প্রচারণা। কমিউনিটির বিভিন্ন সংগঠন তাকে সমর্থন করে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে।
সংশ্লিস্ট সূত্রমতে, নিউইয়র্কের ডেমোক্যাট দলীয় প্রাইমারী নির্বাচনে বাংলাদেশী-আমেরিকান ১২জন প্রার্থী লড়াই করছেন। ভোটের ব্যাপারে বাংলাদেশীদের সচেতনতা বাড়লে এবং ঐক্য সৃষ্টি হলে বাংলাদেশীদের জন্য বিজয় কোন কঠিন বিষয় নয় বলে মনে করেন প্রার্থীরা।
এদিকে আলোচনায় থাকা প্রার্থীদের মধ্যে ইউএস কংগ্রেস এর প্রার্থী বদরুন নাহার খান মিতা ছাড়াও ডিষ্ট্রিক্ট লীডার পদপ্রার্থী মোহাম্মদ মজুমদার, মৌমিতা আহমেদ, নাফিস আই চৌধুরীসহ উল্লেখিত ১২জন প্রার্থীকে ভোট দেয়ার আহŸান জানিয়েছেন কমিউনিটি লীডার আব্দুর রহিম হাওলাদার। বাংলাদেশ সোসাইটি সাংগঠনিকভাবে নির্বাচনী প্রচারণা কিংবা কাউকে সমর্থন দিতে পারেনা, তবে ব্যক্তিগতভাবে বাংলাদেশ সোসাইটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুর রহিম হাওলাদার বাংলাদেশী আমেরিকান যারা ২৩ জুনের নির্বাচনে প্রার্থী তাদেরকে ভোট প্রদানের জন্য প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন। এবারের নির্বাচনে শুধু আব্দুর রহিম হাওলাদার নন, তার মত অনেক কমিউনিটি নেতা কাজ করে যাচ্ছেন নীরবে-সরবে। কুইন্স, ব্রæকলীন, ব্রঙ্কস, ম্যানহাটন সবখানে বাংলাদেশীরা নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
আব্দুর রহিম হাওলাদার বলেন, মেরি জোবাইদা যিনি অ্যাসেম্বলী ডিষ্ট্রিক্ট-৩৭ এ অ্যাসেম্বলীওমেন প্রার্থী তার জন্য ফোন ব্যাংকিং প্রচারনায় অংশ নিয়েছেন। তিনি ডিষ্ট্রিক্ট-৩৪ এ অ্যাসেম্বলীম্যান প্রার্থী জয় চৌধুরীর জন্য ভোট চেয়ে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
মাত্র দুই হাজার ভোট হলে ইতিহাস হতে পারে বাংলাদেশী-আমেরিকানদের জন্য। ডিষ্ট্রিক্ট অ্যাসেম্বলীম্যান এবং অ্যাসেম্বলীওমেন প্রার্থী পদে গড়ে ভোটার ৪০ হাজার এমন তথ্য দিয়ে প্রার্থী মেরী জোবাইদা বলেন করোনাসহ সামগ্রিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় দুই হাজার ভোট প্রত্যাশা করছেন তিনি। ডিস্ট্রিক্ট ৩৭ এ অ্যাসেম্বলী ফিমেইল প্রার্থী মেরি জোবাইদা বলেন ভোট প্রদানের হার কম হবে। বাংলাদেশী প্রার্থীদের অন্তত দুই হাজার ভোট নিশ্চিত করার বিষয়টি সবাই গুরুত্ব দিলে ২৩ জুন আমরা ইতিহাস গড়তে পারবো।
এদিকে ২৩ জুনের নির্বাচনকে সামনে রেখে চলছে পরিচিতি সভা। নির্বাচনে অংশগ্রহনকারী প্রার্থীরা জানিয়েছেন গণপরিবহনের সমস্যা, আবাসন সমস্যা, স্কুল এ ভর্তি সমস্যাসহ বাংলাদেশীদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে কথা বলবেন বলে জানান। প্রার্থীদের উপস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের আমব্রেলা সংগঠন জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব আমেরিকা সম্প্রতি এক পরিচিতি সভার আয়োজন করে। এই আয়োজনে অংশ নিয়ে ৫লাখ ভোটে পেনসেলভেনিয়া অঙ্গরাজ্যে ডেমোক্র্যাট প্রাইমারীতে অডিটর জেনারেল পদে বিজয়ী ড. নীনা আহমদ আহমেদ বলেন- নিউইয়র্কে এবার বাংলাদেশীদের বিজয় নিশ্চিত করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ব হয়ে কাজ করতে হবে। সব প্রার্থীর প্রতি তার শুভকামনা জানান।
পেনসেলভেনিয়া থেকে সবাইকে শুভেচ্ছা জানান ডা. জিয়া উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, আমাদের দাবীর জন্য আমাদেরকে সোচ্চার হতে হবে। পরবর্তী প্রজন্মের জন্য পথ তৈরী করতে হবে আমাদেরকেই। নিউইয়র্কে আগাম নির্বাচন শুরু হয়ে গেছে। সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোটাররা আগাম ভোট দিতে পারবেন নির্ধারিত নিকটস্থ ভোট কেন্দ্রে।
জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব আমেরিকার সহ সভাপতি আহবাব হোসেন চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সভাপতি ময়নুল হক চৌধুরী হেলাল ও সাধারণ সম্পাদক শেফাজ। এছাড়াও জালালাবাদ এসোসিয়েশনের ট্রাস্ট্রিবোর্ডের সদস্য, নির্বাহী কমিটির সদস্যরা ভিডিও বার্তার মাধ্যমে প্রার্থীদের সফলতা কামনা করে বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে নির্বাচনে প্রার্থী মেরী জোবায়দা, জয় চৌধুরী, নাফিস আই চৌধুরী বক্তব্য রাখেন এবং প্রার্থী হওয়ার প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। এসময় প্রার্থীরা কমিউনিটির কল্যাণে তাদের অর্জন এবং অবদানের বিবরণ তুলে ধরে সবার সাহায্য কামনা করেন। প্রার্থীরা জালালাবাদ এসোসিয়েশনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
আনুষ্ঠানে টাইম টেলিভিশন-এর সিইও এবং বাংলা পত্রিকা’র সম্পাদক আবু তাহের বলেন, এই নির্বাচন হতে পারে ইতিহাস সৃষ্টির নির্বাচন, তাই শেষ মুহুর্তে সবাইকে সহযোগীতার জন্য আহŸান জানান তিনি। অনুষ্ঠানে ভিডিও বার্তায় সবার প্রতি যার যার অবস্থান থেকে সহযোগীতার আহŸান জানান বাংলাদেশ সোসাইটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুর রহিম হাওলাদার, জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আলহাজ বদরুল খান।
যেই অঙ্গরাজ্যে দুই শতাধিক দেশের মানুষের বসবাস, ১৮০টি ভাষার মানুষের ভোট। সেই অঙ্গরাজ্যে লাল-সবুজের পতাকা উড়ানোর একটি স্বপ্ন দীর্ঘদিনের। সেই স্বপ্ন পূরণের নির্বাচনের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে প্রবাসীদের মাঝে। আবেগ, উত্তেজনায় সেটিকে স্মরণীয় করার নানামুখী চেষ্টা চলছে। এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন বাংলাদেশী কমিউনিটিকে যারা প্রতিনিধিত্ব করেন সেই সব ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন আঞ্চলিক সংগঠনের নেতারা। পেশাজীবীরাসহ সকল শ্রেনী পেশার প্রবাসী বাংলাদেশীদের দৃষ্টি এখন নির্বাচনের দিকে।