নিউইয়র্ক ০১:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

নিউইয়র্কের অ্যাওয়ার্ড বাণিজ্য-৩ : আদান-প্রদানে যোগ্যতার মাপকাঠি কি?

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০১:১৯:২১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৪
  • / ১০৫৮ বার পঠিত

নিউইয়র্ক: নিউইয়র্কের বাংলাদেশী কমিউনিটিতে অ্যাওয়ার্ড বাণিজ্য নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা আর প্রতিক্রিয়ার শেষ নেই। সচেতন মহলে প্রশ্ন কি লাভ-ক্ষতি এই অ্যাওয়ার্ড আদান-প্রদানে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রদত্ত অ্যাওয়ার্ড ট্রফি বা ক্রেস্ট-এর মূল্যই বা কি? কমিউনিটিতে অ্যাওয়ার্ড বাণিজ্য সফল করতে ‘জাতির জনক’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম ব্যবহার থেকে শুরু করে বাংলাদেশী কুটনীতিক, শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক, সাংবাদিক জ্ঞানী-গুণীদেরদেরকে কৌশলে ব্যবহার করা হচ্ছে। কমিউনিটিতে প্রশ্ন উঠেছে ‘বঙ্গবন্ধু লিডারশীপ অ্যাওয়ার্ড’ আয়োজনকারীদের কি যোগ্যতা রয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু’র নামে অ্যাওয়ার্ড প্রদানের। আবার এই অ্যাওয়ার্ড প্রদানের জন্য যাদের মনোনীত করা হয়েছে তাদের মধ্যে কারো কারো যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। প্রশ্ন উঠেছে বঙ্গবন্ধু’র নামে প্রদত্ত অ্যাওয়ার্ড-এর সাথে ঐ অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্তদের সম্পর্ক কি? বঙ্গবন্ধু বা আওয়ামী লীগের জন্য কি অবদান রয়েছে তাদের, যার জন্য তাদেরকে  ‘বঙ্গবন্ধু লিডারশীপ অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করতে হবে। এদিকে কমিউনিটিতে যারা অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান আয়োজন বা অ্যাওয়ার্ড আদান-প্রদানের জন্য কোন কোন নাম/সংগঠন ব্যবহার করা হলেও এসব সংগঠনের গ্রহণযোগ্যতা ও কমিটি নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। কোন কোন অ্যাওয়ার্ডদাতা নিজেই নিজের মনগড়া সিদ্ধান্তে ‘গিভ এন্ড টেক পলিসি’র অন্তরালে অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান আয়োজন করে আসছেন। প্রশ্ন উঠেছে অ্যাওয়ার্ড আদান-প্রদানে যোগ্যতার মাপকাঠিই বা কি? এব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তারা বলেন, আমাদের অ্যাওয়ার্ড কমিটি রয়েছে। প্রয়োজনে জরিপ করে অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্তদের তালিকা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু সরজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে বাস্তবে এমন কিছু নেই। আবার কোন কোন সংগঠনে স্বামী-স্ত্রী দু’জনই কমিটির কর্মকর্তা। এই হচ্ছে কমিউনিটির অ্যাওয়ার্ড সমাচার।
এদিকে বিতর্ক আর প্রতিবাদের মুখে নিরাপত্তা বেষ্টনীতে অনুষ্ঠিত হয়েছে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু লিডাশীপ অ্যাওয়ার্ড’-এর ক্রেস্ট প্রদান পর্ব। গত ১৩ ডিসেম্বর শনিবার জ্যাকসন হাইটসের একটি রেষ্টুরেন্টে ‘বঙ্গবন্ধু লিডারশীপ অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
কমিউনিটির অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী ও একুশে পদকপ্রাপ্ত ব্যক্তিত্ব রথীন্দ্র নাথ রায়,  একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও নাট্যাভিনেতা জামাল উদ্দিন হোসেন, নাট্যাভিনেত্রী জাহানারা হোসেন প্রমুখ ব্যক্তিত্ব।
সাম্প্রতিককালে ‘মানুষ মানুষের জন্য অ্যাওয়ার্ড’, ‘এনআরবি অ্যাওয়ার্ড’, ‘জেমিনি স্টার মিউজিক অ্যাওয়ার্ড’ প্রদানের পর সর্বশেষ বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন ইউএসএ’র ব্যানারে আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু লিডারশীপ অ্যাওয়ার্ড’ প্রদানের জন্য ১৩ জনকে মনোনীত করে পত্র-পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়া তালিকার মধ্যে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে আব্দুল মোমেন, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান, ওয়াশিংটন মেট্্েরা আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. শাহজাহান মাহমুদ প্রমুখ অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন। এদিকে ‘বঙ্গবন্ধু লিডারশীপ অ্যাওয়ার্ড’ প্রাপ্তির তালিকাভুক্ত একাধিক ব্যক্তির যোগ্যতার বিষয়েও নানা প্রশ্ন উঠেছে।
‘বঙ্গবন্ধু লিডারশীপ অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান অনুষ্ঠান সম্পর্কে ড. এ কে আব্দুল মোমেন রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বলেন, লিমা-তে পরিবেশ সম্মেলনে যোগদান শেষে শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) নিউইয়র্ক ফিরেই জানতে পারি আমি এই আনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি এবং অনুষ্ঠানে আমাকে অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হবে। আমি এ বিষয়ে আগে থেকে কিছু জানতাম না বলেই ঐ অনুষ্ঠানে যাইনি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন ইউএসএ’র সভাপতি ও নিউজার্সীর প্লেইন্সবরো সিটির কাউন্সিলম্যান ড. নূরুন্নবী বলেন, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন ইউএসএ’র পক্ষ থেকে ড. মোমেন ও আমাকে অ্যাওয়ার্ড প্রদানের কথা শুনে ঐ অনুষ্ঠানে যেতে সম্মতি থাকলেও পরবর্তীতে অনুষ্ঠনটি সম্পর্কে বিতর্ক উঠলে আমি শেষ পর্যন্ত যাইনি। তিনি বলেন, আমি কোন বিতর্কিত অনুষ্ঠানে গিয়ে নিজে বিতর্কিত হতে চাইনি।
বঙ্গবন্ধু লিডারশীপ অ্যাওয়ার্ড প্রদান সম্পর্কে নিউইয়র্ক ষ্টেট আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন আজমল বলেন, যারা আওয়ামী লীগকে প্রতিনিধিত্বই করে না, তারা কি করে ‘জাতির জনক’ শেখ মুজিবুর রহমানের নামে অ্যাওয়ার্ড প্রদান করেন। অ্যাওয়ার্ড কেনা-বেচা করে চলাই যাদের কাজ তাদের কাছে অ্যাওয়ার্ডের গুরুত্বই বা কি? আর যাদেরকে এই অ্যাওয়ার্ড প্রদানের জন্য মনোনীত করা হয়েছে, কোন্্ যোগ্যতায় তারা অ্যাওয়ার্ড পাচ্ছেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তিনি বলেন, আমরা এমন অ্যাওয়ার্ড বেচা-কেনা বন্ধ করতে চাই। আর বঙ্গবন্ধু নাম ব্যবহার করে যাকে-তাকে অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হলে তা প্রতিহত করা হবে।
নিউইয়র্কের জ্যামাইকায় বসবাসকারী এক ব্যবসায়ী এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘দুই সপ্তাহ আগে এক ব্যক্তি এসে বললেন, আপনাকে আমরা অ্যাওয়ার্ড দিতে চাই। আমি বললাম, কেন কিসের অ্যাওয়ার্ড?’। ঐ ব্যক্তি বললেন, কমিউনিটিতে অবদান রাখার জন্য। প্রত্যুত্তরে আমি বললাম, ‘কমিউনিটিতে আমার তো কোন অবদান নেই’। আমার এই কথা শুনে তিনি নিরুৎসাহিত হয়ে ফিরে গেলেন।
এদিকে নিউইয়র্কের অ্যাওয়ার্ড বাণিজ্য নিয়ে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশের পর কমিউনিটিতে বিষয়টি ব্যাপক আলোচিত হচ্ছে। অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান আয়োজকদের একজন ইউএনএ প্রতিবেদকের কাছে ফোন করে বলেন, ‘ভাই আমাকে শেষ কইরা দিছেন’। আরেক আয়োজক বলেন, ‘আপনাদের প্রতিবেদনের জন্য ভালোই হয়েছে। আমরা সতর্ক হয়েছি। প্রয়োজনে নিজের পকেট থেকে হাজার ডলার দেবো তবু কারো কাছ থেকে টাকা নেবো না’।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

নিউইয়র্কের অ্যাওয়ার্ড বাণিজ্য-৩ : আদান-প্রদানে যোগ্যতার মাপকাঠি কি?

প্রকাশের সময় : ০১:১৯:২১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৪

নিউইয়র্ক: নিউইয়র্কের বাংলাদেশী কমিউনিটিতে অ্যাওয়ার্ড বাণিজ্য নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা আর প্রতিক্রিয়ার শেষ নেই। সচেতন মহলে প্রশ্ন কি লাভ-ক্ষতি এই অ্যাওয়ার্ড আদান-প্রদানে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রদত্ত অ্যাওয়ার্ড ট্রফি বা ক্রেস্ট-এর মূল্যই বা কি? কমিউনিটিতে অ্যাওয়ার্ড বাণিজ্য সফল করতে ‘জাতির জনক’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম ব্যবহার থেকে শুরু করে বাংলাদেশী কুটনীতিক, শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক, সাংবাদিক জ্ঞানী-গুণীদেরদেরকে কৌশলে ব্যবহার করা হচ্ছে। কমিউনিটিতে প্রশ্ন উঠেছে ‘বঙ্গবন্ধু লিডারশীপ অ্যাওয়ার্ড’ আয়োজনকারীদের কি যোগ্যতা রয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু’র নামে অ্যাওয়ার্ড প্রদানের। আবার এই অ্যাওয়ার্ড প্রদানের জন্য যাদের মনোনীত করা হয়েছে তাদের মধ্যে কারো কারো যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। প্রশ্ন উঠেছে বঙ্গবন্ধু’র নামে প্রদত্ত অ্যাওয়ার্ড-এর সাথে ঐ অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্তদের সম্পর্ক কি? বঙ্গবন্ধু বা আওয়ামী লীগের জন্য কি অবদান রয়েছে তাদের, যার জন্য তাদেরকে  ‘বঙ্গবন্ধু লিডারশীপ অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করতে হবে। এদিকে কমিউনিটিতে যারা অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান আয়োজন বা অ্যাওয়ার্ড আদান-প্রদানের জন্য কোন কোন নাম/সংগঠন ব্যবহার করা হলেও এসব সংগঠনের গ্রহণযোগ্যতা ও কমিটি নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। কোন কোন অ্যাওয়ার্ডদাতা নিজেই নিজের মনগড়া সিদ্ধান্তে ‘গিভ এন্ড টেক পলিসি’র অন্তরালে অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান আয়োজন করে আসছেন। প্রশ্ন উঠেছে অ্যাওয়ার্ড আদান-প্রদানে যোগ্যতার মাপকাঠিই বা কি? এব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তারা বলেন, আমাদের অ্যাওয়ার্ড কমিটি রয়েছে। প্রয়োজনে জরিপ করে অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্তদের তালিকা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু সরজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে বাস্তবে এমন কিছু নেই। আবার কোন কোন সংগঠনে স্বামী-স্ত্রী দু’জনই কমিটির কর্মকর্তা। এই হচ্ছে কমিউনিটির অ্যাওয়ার্ড সমাচার।
এদিকে বিতর্ক আর প্রতিবাদের মুখে নিরাপত্তা বেষ্টনীতে অনুষ্ঠিত হয়েছে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু লিডাশীপ অ্যাওয়ার্ড’-এর ক্রেস্ট প্রদান পর্ব। গত ১৩ ডিসেম্বর শনিবার জ্যাকসন হাইটসের একটি রেষ্টুরেন্টে ‘বঙ্গবন্ধু লিডারশীপ অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
কমিউনিটির অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী ও একুশে পদকপ্রাপ্ত ব্যক্তিত্ব রথীন্দ্র নাথ রায়,  একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও নাট্যাভিনেতা জামাল উদ্দিন হোসেন, নাট্যাভিনেত্রী জাহানারা হোসেন প্রমুখ ব্যক্তিত্ব।
সাম্প্রতিককালে ‘মানুষ মানুষের জন্য অ্যাওয়ার্ড’, ‘এনআরবি অ্যাওয়ার্ড’, ‘জেমিনি স্টার মিউজিক অ্যাওয়ার্ড’ প্রদানের পর সর্বশেষ বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন ইউএসএ’র ব্যানারে আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু লিডারশীপ অ্যাওয়ার্ড’ প্রদানের জন্য ১৩ জনকে মনোনীত করে পত্র-পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়া তালিকার মধ্যে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে আব্দুল মোমেন, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান, ওয়াশিংটন মেট্্েরা আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. শাহজাহান মাহমুদ প্রমুখ অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন। এদিকে ‘বঙ্গবন্ধু লিডারশীপ অ্যাওয়ার্ড’ প্রাপ্তির তালিকাভুক্ত একাধিক ব্যক্তির যোগ্যতার বিষয়েও নানা প্রশ্ন উঠেছে।
‘বঙ্গবন্ধু লিডারশীপ অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান অনুষ্ঠান সম্পর্কে ড. এ কে আব্দুল মোমেন রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বলেন, লিমা-তে পরিবেশ সম্মেলনে যোগদান শেষে শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) নিউইয়র্ক ফিরেই জানতে পারি আমি এই আনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি এবং অনুষ্ঠানে আমাকে অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হবে। আমি এ বিষয়ে আগে থেকে কিছু জানতাম না বলেই ঐ অনুষ্ঠানে যাইনি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন ইউএসএ’র সভাপতি ও নিউজার্সীর প্লেইন্সবরো সিটির কাউন্সিলম্যান ড. নূরুন্নবী বলেন, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন ইউএসএ’র পক্ষ থেকে ড. মোমেন ও আমাকে অ্যাওয়ার্ড প্রদানের কথা শুনে ঐ অনুষ্ঠানে যেতে সম্মতি থাকলেও পরবর্তীতে অনুষ্ঠনটি সম্পর্কে বিতর্ক উঠলে আমি শেষ পর্যন্ত যাইনি। তিনি বলেন, আমি কোন বিতর্কিত অনুষ্ঠানে গিয়ে নিজে বিতর্কিত হতে চাইনি।
বঙ্গবন্ধু লিডারশীপ অ্যাওয়ার্ড প্রদান সম্পর্কে নিউইয়র্ক ষ্টেট আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন আজমল বলেন, যারা আওয়ামী লীগকে প্রতিনিধিত্বই করে না, তারা কি করে ‘জাতির জনক’ শেখ মুজিবুর রহমানের নামে অ্যাওয়ার্ড প্রদান করেন। অ্যাওয়ার্ড কেনা-বেচা করে চলাই যাদের কাজ তাদের কাছে অ্যাওয়ার্ডের গুরুত্বই বা কি? আর যাদেরকে এই অ্যাওয়ার্ড প্রদানের জন্য মনোনীত করা হয়েছে, কোন্্ যোগ্যতায় তারা অ্যাওয়ার্ড পাচ্ছেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তিনি বলেন, আমরা এমন অ্যাওয়ার্ড বেচা-কেনা বন্ধ করতে চাই। আর বঙ্গবন্ধু নাম ব্যবহার করে যাকে-তাকে অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হলে তা প্রতিহত করা হবে।
নিউইয়র্কের জ্যামাইকায় বসবাসকারী এক ব্যবসায়ী এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘দুই সপ্তাহ আগে এক ব্যক্তি এসে বললেন, আপনাকে আমরা অ্যাওয়ার্ড দিতে চাই। আমি বললাম, কেন কিসের অ্যাওয়ার্ড?’। ঐ ব্যক্তি বললেন, কমিউনিটিতে অবদান রাখার জন্য। প্রত্যুত্তরে আমি বললাম, ‘কমিউনিটিতে আমার তো কোন অবদান নেই’। আমার এই কথা শুনে তিনি নিরুৎসাহিত হয়ে ফিরে গেলেন।
এদিকে নিউইয়র্কের অ্যাওয়ার্ড বাণিজ্য নিয়ে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশের পর কমিউনিটিতে বিষয়টি ব্যাপক আলোচিত হচ্ছে। অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান আয়োজকদের একজন ইউএনএ প্রতিবেদকের কাছে ফোন করে বলেন, ‘ভাই আমাকে শেষ কইরা দিছেন’। আরেক আয়োজক বলেন, ‘আপনাদের প্রতিবেদনের জন্য ভালোই হয়েছে। আমরা সতর্ক হয়েছি। প্রয়োজনে নিজের পকেট থেকে হাজার ডলার দেবো তবু কারো কাছ থেকে টাকা নেবো না’।