নিউইয়র্ক ০৮:৪১ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

নিউইয়র্কে রবীন্দ্র উৎসবে মানুষের ঢল

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৬:৪৭:৩৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ মে ২০২৩
  • / ৩২ বার পঠিত

হককথা ডেস্ক :  হাজারো মানুষের উপস্থিতি আর উৎসব মুখর পরিবেশের মধ্যদিয়ে নিউইয়র্কে শেষ হয়েছে দু’দিনব্যাপী (৬-৭ মে) উত্তর আমেরিকা রবীন্দ্র উৎসব। রবীন্দ্র সম্মিলন পরিষদ ইউএসএ আয়োজিত প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত এ উৎসবের সহযোগী যুক্তরাষ্ট্রের ভারতীয় বাঙালীদের সর্ববৃহৎ সংগঠন বঙ্গ সংস্কৃতি সংঘ-সিএবি ও পশ্চিম বাংলা’র বাংলা ওয়ার্ল্ড ওয়াইড।

গত ৬ মে শনিবার উৎসবের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের কিংবদন্তী রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী ড. রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক। শারীরিক অসুস্থতার কারণে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে না পারলেও এক ভিডিও বার্তায় তিনি বিদেশে পড়াশোনা করা নতুন প্রজন্মের কাছে আরও বেশি বেশি রবীন্দ্রনাথকে তুলে ধরার আহ্বান জানিয়েছেন।

রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়ে এমন আয়োজন সত্যিই অতুলনীয়। এই অনুষ্ঠান থেকে আমাদের সবার শিক্ষাগ্রহণ করা উচিত। তিনি বলেন, মানুষ যত রবীন্দ্রনাথকে জীবনে ধারণ করবে ততই বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ভারতের রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. পবিত্র সরকার, নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটে নিযুক্ত কনসাল জেনারেল ড. মো: মনিরুল ইসলাম, ভারতের কনসাল জেনারেল রনধীর জয়সুয়াল, বিশ্বখ্যাত বাঙালী বক্তা চন্দ্রিল ভট্টাচার্য, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক আহকাম উল্লাহ, টিভি ব্যক্তিত্ব ও বিতার্কিক হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ, অধ্যাপক ডা. জিয়াউদ্দিন আহমেদ, হাসান ফেরদৌস, রণদেব সরকার, রাহাত হোসেন নাজু, এটর্নি মঈন চৌধুরী ও উৎসবের আহ্বায়ক হাসানুজ্জামান সাকী।

উদ্বোধনী এ পর্বে আয়োজক কমিটির নেতৃবৃন্দের মধ্যে ছিলেন সমন্বয়কারী গোপাল স্যানাল, স্বীকৃতি বড়ুয়া, আবদুল হামিদ, সুখেন গমেজ, অনুষ্ঠান সহযোগীদের মধ্যে ড. সাহানা ভট্টাচার্য্য, শুভ রায়, শুভদীপ ঘোষ, কৃশ ঘোষ বাপ্পা, শিল্প নির্দেশনায় জাহেদ শরীফ ও মিডিয়া ব্যবস্থাপনায় পিনাকী তালুকদার।

উৎসবের উদ্বোধনী সঙ্গীত শতকন্ঠে রবীন্দ্রনাথ পরিবেশিত হয়। বিশেষ উপস্থিতি ছিলেন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, পরিচালনা করেন মহিতোষ তালুকদার তাপস। নীলা জেরীন ডান্স একাডেমির শিল্পীরা উদ্বোধনী নৃত্য পরিবেশন করেন। এর আগে সকাল ১১টা থেকে রবীন্দ্র সাহিত্য সম্মেলন শুরু হয় উৎসব। উৎসবের প্রথম পর্বটি ছিল লেখক, কবি, সাহিত্যিকদের অংশগ্রহণে মুখর। দুদিনে প্রায় একশ লেখক অংশ নেন। সাহিত্য সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকপ্রাপ্ত কথাসাহিত্যিক ড. জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত। উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমী পুরস্কারপ্রাপ্ত ড. পূরবী বসু ও ভারতীয় লেখিকা আলোলিকা মুখোপাধ্যায়। নিউইয়র্ক সাহিত্য একাডেমীর পরিচালক মোশাররফ হোসেনের সঞ্চালনায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সাপ্তাহিক ঠিকানা’র প্রধান সম্পাদক মুহম্মদ ফজলুর রহমান।

নিউইয়র্কে বাঙালীদের জন্য শনি ও রোববার দুটি দিন ছিল অবিস্মরণীয়। এমন দৃশ্য কেউ কোনোদিন দেখেনি নিউইয়র্কে। জ্যামাইকা পারফরমিং আর্টস সেন্টারের ভেতর ও বাইরে মানুষের ভিড় সামলাতে আয়োজকদের হিমশিম খেতে হয়। হাজার হাজার মানুষের ঢলে আয়োজকরা ভেন্যুর তিনটি স্থানে অনুষ্ঠানটিকে ভাগ করতে বাধ্য হন। এমনকি অনুষ্ঠান স্থলের বাইরে উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে ‘শতকণ্ঠে রবীন্দ্রনাথ’ শীর্ষক সমাপনী পর্বটি স্থানান্তর করেন। এতে করে বাইরে অপেক্ষায় থাকা হাজারো মানুষের ঢল কিছুটা হলেও অনুষ্ঠান উপভোগ করার সুযোগ পায়।

সকাল থেকেই উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে চলে ‘শিল্পীর চোখে রবীন্দ্রনাথ’ শীর্ষক চিত্রপ্রদর্শনী। শিশুরা আঁকে রবীন্দ্রনাথকে। এ পর্বের উদ্বোধন করেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চিত্রশিল্পী খুরশিদ আলম সেলিম। এসময় বাংলাদেশী আমেরিকান আর্টিস্ট ফোরামের সভাপতি আর্থার আজাদ ও সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ চৌধুরী বক্তব্য রাখেন।

ঠিক একই সময় জ্যাপেক বেইজমেন্টে শুরু হয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আঁকা চিত্রপ্রদর্শনী ও ড. ওবায়দুল্লাহ মামুনের আলোকচিত্র প্রদর্শনী। প্রদর্শনীতে ওহাইয়ো থেকে আগত সিলভিয়া পান্ডিতের তিনটি চিত্র স্থান পায়। প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের সাবেক ডিন অধ্যাপক মতলুব আলী। তিনটি প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, বাংলাদেশ ও ভারতের কনসাল জেনারেল।

উৎসবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে সত্যজিৎ রায়ের তথ্যচিত্র, রবীন্দ্রনাথের চিত্রকলার ওপর সনাৎ মহান্তের পরিচালনায় নির্মিত তথ্যচিত্র ‘রুপের অতীত রূপ’ ও সুমন মুখোপাধ্যায় পরিচালিত চলচিত্র ‘শেষের কবিতা’ প্রদর্শিত হয়।
প্রথম দিনের উৎসবে অনুষ্ঠান সূচিতে ছিল আমার রবীন্দ্রনাথ, রবীন্দ্রনাথের বিজ্ঞান চিন্তা, রবীন্দ্রনাথের গানে বাউল প্রভাব, গীতাঞ্জলি ও নোবেল পুরস্কার আমেরিকায় রবীন্দ্রনাথ, রবীন্দ্রনাথের চিঠিপত্র এবং রবীন্দ্রনাথ ও প্রবাসে নতুন প্রজন্ম শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। কবিতা পাঠের আসরে অর্ধশতাধিক কবি রবীন্দ্রনাথের লেখা ও রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে লেখা কবিতা পাঠ করেন।

উৎসবে হাসানুজ্জামান সাকীর সম্পাদনায় স্মারক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচনে অতিথি ছিলেন মোর্শেদ আলম, ড. সিদ্দিকুর রহমান, রেখা আহমেদ, জাফর ফেরদৌস, শিতাংশু গুহ, হুসনে আরা ও খাইরুল ইসলাম পাখি। ভিনভাষীর চর্চায় রবীন্দ্রনাথ পরিবেশন করে শ্রী চিন্ময় (নিউইয়র্ক)। প্রথম দিন দুটি মঞ্চনাটক শিরীন বকুল ও ড. নজরুল ইসলাম অভিনীত ও শিল্পাঙ্গণ পরিবেশিত ‘রক্ত করবী’ এবং গোলাম সারওয়ার হারুন নির্দেশিত ও ঢাকা ড্রামা পরিবেশিত ‘মিছে কোলাহল’ নাটক মঞ্চস্থ হয়।

শনিবার সন্ধ্যায় প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মেলবন্ধন শীর্ষক একটি অনুষ্ঠান উপস্থাপন করেন অভিনয়শিল্পী লুতফুন নাহার লতা ও মার্ক ওয়াইনবার্গ দম্পতি। ভার্জিনিয়া থেকে আগত আশীফ এন্তাজ রবির গ্রন্থনায় শিল্পী দিনার মণি ও নাজিয়া নওশাদ শাওন পরিবেশন করেন গীতিকথা ওরা সন্ধ্যার মেঘমালা। অনুপ দাস ডান্স একাডেমি-আড্ডা পরিবেশন করে ভানুসিংহের পদাবলী। ভার্জিনিয়ার ভারতীয় সংগঠন তা থৈ ও বাংলাদেশী সংগঠন ‘ধ্রƒপদ’ পরিবেশন করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ফিকশন-নন ফিকশন প্রেমের আখ্যানÑকার মিলন চাও বিরহী।

নৃত্যনাট্য তাসের দেশ (ইংরেজি) পরিবেশন করে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পারফরমিং আর্টস-বিপা। প্রথম দিনে রাতে একক সংগীত পরিবেশন করেন ভারতীয় শিল্পী শ্রেয়া গুহঠাকুরতা। উৎসবের দ্বিতীয় দিন রোববার যথারীতি সাহিত্য সম্মেলনের মাধ্যমে রবীন্দ্র উৎসব শুরু হয়। এতে আমার রবীন্দ্রনাথ শীর্ষক আলোচনায় অংশ নেন জ্যোতি প্রকাশ দত্ত, সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ্, তমিজ উদ্দীন লোদী ও ফকির ইলিয়াস। সঞ্চালনা করেন হাসান ফেরদৌস।

কবিতা, শ্রুতি নাটক শীর্ষক অনুষ্ঠানে ছিলেন আলোলিকা মুখোপাধ্যায়, অবন্তিকা মুখার্জী, সঞ্চালনা করেন সুদীপ্তা চট্টোপাধ্যায়।
আবীর আলমগীরের সমন্বয়ে নিউইয়র্ক ও নিউজার্সীর শিল্পীরা আবৃত্তি পরিবেশন করেন। এদিন দুটি তথ্যচিত্র বরেণ্য সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ’র রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বইয়ের বিরল সংগ্রহশালা নিয়ে ‘স্টাডি রুম’ এবং অধ্যাপক ডা. জিয়াউদ্দীন আহমেদ পরিচালিত ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সংক্ষিপ্ত জীবনী : প্রবাসে রবীন্দ্র চর্চা’ শীর্ষক ডক্যুমেন্টারি প্রতিবেদন প্রদর্শিত হয়।
এরপর চারুশিল্পীরা মঞ্চে আসেন এবং মতলুব আলীর সদ্য প্রকাশিত গ্রন্থ কবির ছবি ও ছবির কবি-এর মোড়ক উন্মোচন হয়। এসময় বক্তব্য রাখেন সাপ্তাহিক বাঙালী সম্পাদক কৌশিক আহমেদ ও শিল্পী কায়সার কামাল। রবীন্দ্রনাথ : তর্কে বিতর্কে শীর্ষক আলোচনায় অংশ নেন ড. পবিত্র সরকার, মনজুর আহমদ, ড. পূরবী বসু ও ড. আবেদীন কাদের। সঞ্চালনা করেন হাসান ফেরদৌস।

এদিন নিউজার্সীর এপিকস এক্টরস ওয়ার্কশপের পরিবেশনায় রবি ঠাকুরের স্ত্রীর পত্র গল্প অবলম্বনে ইংরেজি মঞ্চনাটক মৃণালের পত্র মঞ্চস্থ হয়। রচনা, পরিচালনা ও অভিনয়ে ছিলেন গার্গী মুখার্জী। রবীন্দ্র সংগীতে শাস্ত্রীয় ধারা শীর্ষক অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সংগীত পরিষদের কাবেরী দাশ। ‘ওই মহামানব আসে’ সংগীতানুষ্ঠান পরিবেশন করে প্রকৃতি নিউইয়র্ক। রবীন্দ্র সংগীতে কীর্তন ধারা পরিবেশন করে ড. সাহানা ভট্টাচার্য্য (মেরিল্যান্ড) ও ড. উদিতা মুখার্জী (উইসকনসিন)।

বিকেলে আমেরিকায় রবীন্দ্রনাথের বসবাস করা বাড়ির ক্রেতা বাঙালী দম্পতি কাজল মুখোপাধ্যায় ও মৌসুমী দত্ত রায়ের সংবর্ধনায় উপস্থিত ছিলেন প্রবীর রায়, মিলন আওন, বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী, নজরুল মিন্টো, এ্যানি ফেরদৌস, কাজী আজিজ মামুন, তাপস সান্যাল, পার্থ চক্রবর্তী ও পার্থ সারথী মুখোপাধ্যায়।

শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা উপস্থিতিতে তাঁর প্রতিষ্ঠিত সুরের ধারা (নিউইয়র্ক) পরিবেশন করে মনোজ্ঞ সঙ্গীতানুষ্ঠান। পরিচালনা করেন বিদিশা দেওয়ানজী (কানেকটিকাট)। এন জে বুটিকের পরিবেশনায় ও ইন্টারলিংক নেটের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত হয় ভিন্নধর্মী রাবীন্দ্রিক ফ্যাশন শোÑবসনে ভূষণে রবির চয়নে। আমিই রবীন্দ্রনাথের শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি শীর্ষক আরও একটি ভিন্নধর্মী পরিবেশনা প্রীতি বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। রবি ঠাকুরের অমিত-লাবণ্য, মহেন্দ্র-বিনোদনী ও রমেশ-হেমনলিনী চরিত্রে বিতর্কে অংশ নেন যথাক্রমে অ্যাটর্নি রাজু মহাজন (মেরিল্যান্ড) ও সামছুন নাহার নূপুর (নিউইয়র্ক), মোহিত প্রধান (টেক্সাস) ও সাঈদা সাথী (ভার্জিনিয়া) এবং মোস্তাফিজ খান (টেক্সাস) ও ড. তারান্নুম শায়লা জামান প্রত্যাশা (নিউইয়র্ক)। সঞ্চালনায় ছিলেন বাংলাদেশ থেকে আগত টিভি ব্যক্তিত্ব ও বিতার্কিক হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

আন্তর্জাতিক রবীন্দ্রনাথ নিয়ে আলোয় ভুবন ভরা পরিবেশন করে সৃষ্টি (নিউজার্সী)। পরিচালনায় ছিলেন সূবর্ণা খান, বিচিত্রা, তমা ও অহনা। রাতে সমাপনী অনুষ্ঠানে দেড় শতাধিক শিল্পী প্রাঙ্গণের বাইরে ‘শতকণ্ঠে রবীন্দ্রনাথ’ পরিবেশন করেন। আর ভেন্যুর অভ্যন্তরে বিশেষ সমাপনী নৃত্য পরিবেশন করে নৃত্যাঞ্জলী। পরিচালনা করেন চন্দ্রা ব্যানার্জী।

উৎসবে দেবব্রত বিশ্বাসের ছাত্র অমিয় বন্দ্যোপাধ্যায় (ভারত) ও বিপার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সেলিমা আশরাফকে (বাংলাদেশ) আজীবন সম্মাননা তুলে দেন ড. পবিত্র সরকার, অধ্যাপক ডা. জিয়াউদ্দীন আহমেদ ও রাহাত হোসেন নাজু। এসময় টিবিএন টোয়ান্টিফোরের সিইও পুলক ভূঁইয়া ও কানাডার দেশে-বিদেশে পত্রিকার প্রধান সম্পাদক নজরুল মিন্টো উপস্থিত ছিলেন।
এরআগে সন্ধ্যায় স্মারক বক্তৃতা দেন চন্দ্রিল ভট্টাচার্য। চল্লিশ মিনিটের টানা বক্তৃতার সময় পিনপতন নিরবতা নেমে আসে অনুষ্ঠান স্থলে। সবশেষ রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় দুদিনের অনুষ্ঠান।

উৎসবে ভারত, বাংলাদেশ, ব্রিটেন, জার্মানী, মেক্সিকো ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত: ২৫টি অঙ্গরাজ্য থেকে কবি, লেখক, সাহিত্যিক, শিল্পী, কলাকুশলী ও রবীন্দ্র অনুরাগীরা অংশ নেন। -প্রেস  বিজ্ঞপ্তি।

    • নাছরিন/হককথা

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

নিউইয়র্কে রবীন্দ্র উৎসবে মানুষের ঢল

প্রকাশের সময় : ০৬:৪৭:৩৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ মে ২০২৩

হককথা ডেস্ক :  হাজারো মানুষের উপস্থিতি আর উৎসব মুখর পরিবেশের মধ্যদিয়ে নিউইয়র্কে শেষ হয়েছে দু’দিনব্যাপী (৬-৭ মে) উত্তর আমেরিকা রবীন্দ্র উৎসব। রবীন্দ্র সম্মিলন পরিষদ ইউএসএ আয়োজিত প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত এ উৎসবের সহযোগী যুক্তরাষ্ট্রের ভারতীয় বাঙালীদের সর্ববৃহৎ সংগঠন বঙ্গ সংস্কৃতি সংঘ-সিএবি ও পশ্চিম বাংলা’র বাংলা ওয়ার্ল্ড ওয়াইড।

গত ৬ মে শনিবার উৎসবের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের কিংবদন্তী রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী ড. রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক। শারীরিক অসুস্থতার কারণে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে না পারলেও এক ভিডিও বার্তায় তিনি বিদেশে পড়াশোনা করা নতুন প্রজন্মের কাছে আরও বেশি বেশি রবীন্দ্রনাথকে তুলে ধরার আহ্বান জানিয়েছেন।

রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়ে এমন আয়োজন সত্যিই অতুলনীয়। এই অনুষ্ঠান থেকে আমাদের সবার শিক্ষাগ্রহণ করা উচিত। তিনি বলেন, মানুষ যত রবীন্দ্রনাথকে জীবনে ধারণ করবে ততই বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ভারতের রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. পবিত্র সরকার, নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটে নিযুক্ত কনসাল জেনারেল ড. মো: মনিরুল ইসলাম, ভারতের কনসাল জেনারেল রনধীর জয়সুয়াল, বিশ্বখ্যাত বাঙালী বক্তা চন্দ্রিল ভট্টাচার্য, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক আহকাম উল্লাহ, টিভি ব্যক্তিত্ব ও বিতার্কিক হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ, অধ্যাপক ডা. জিয়াউদ্দিন আহমেদ, হাসান ফেরদৌস, রণদেব সরকার, রাহাত হোসেন নাজু, এটর্নি মঈন চৌধুরী ও উৎসবের আহ্বায়ক হাসানুজ্জামান সাকী।

উদ্বোধনী এ পর্বে আয়োজক কমিটির নেতৃবৃন্দের মধ্যে ছিলেন সমন্বয়কারী গোপাল স্যানাল, স্বীকৃতি বড়ুয়া, আবদুল হামিদ, সুখেন গমেজ, অনুষ্ঠান সহযোগীদের মধ্যে ড. সাহানা ভট্টাচার্য্য, শুভ রায়, শুভদীপ ঘোষ, কৃশ ঘোষ বাপ্পা, শিল্প নির্দেশনায় জাহেদ শরীফ ও মিডিয়া ব্যবস্থাপনায় পিনাকী তালুকদার।

উৎসবের উদ্বোধনী সঙ্গীত শতকন্ঠে রবীন্দ্রনাথ পরিবেশিত হয়। বিশেষ উপস্থিতি ছিলেন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, পরিচালনা করেন মহিতোষ তালুকদার তাপস। নীলা জেরীন ডান্স একাডেমির শিল্পীরা উদ্বোধনী নৃত্য পরিবেশন করেন। এর আগে সকাল ১১টা থেকে রবীন্দ্র সাহিত্য সম্মেলন শুরু হয় উৎসব। উৎসবের প্রথম পর্বটি ছিল লেখক, কবি, সাহিত্যিকদের অংশগ্রহণে মুখর। দুদিনে প্রায় একশ লেখক অংশ নেন। সাহিত্য সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকপ্রাপ্ত কথাসাহিত্যিক ড. জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত। উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমী পুরস্কারপ্রাপ্ত ড. পূরবী বসু ও ভারতীয় লেখিকা আলোলিকা মুখোপাধ্যায়। নিউইয়র্ক সাহিত্য একাডেমীর পরিচালক মোশাররফ হোসেনের সঞ্চালনায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সাপ্তাহিক ঠিকানা’র প্রধান সম্পাদক মুহম্মদ ফজলুর রহমান।

নিউইয়র্কে বাঙালীদের জন্য শনি ও রোববার দুটি দিন ছিল অবিস্মরণীয়। এমন দৃশ্য কেউ কোনোদিন দেখেনি নিউইয়র্কে। জ্যামাইকা পারফরমিং আর্টস সেন্টারের ভেতর ও বাইরে মানুষের ভিড় সামলাতে আয়োজকদের হিমশিম খেতে হয়। হাজার হাজার মানুষের ঢলে আয়োজকরা ভেন্যুর তিনটি স্থানে অনুষ্ঠানটিকে ভাগ করতে বাধ্য হন। এমনকি অনুষ্ঠান স্থলের বাইরে উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে ‘শতকণ্ঠে রবীন্দ্রনাথ’ শীর্ষক সমাপনী পর্বটি স্থানান্তর করেন। এতে করে বাইরে অপেক্ষায় থাকা হাজারো মানুষের ঢল কিছুটা হলেও অনুষ্ঠান উপভোগ করার সুযোগ পায়।

সকাল থেকেই উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে চলে ‘শিল্পীর চোখে রবীন্দ্রনাথ’ শীর্ষক চিত্রপ্রদর্শনী। শিশুরা আঁকে রবীন্দ্রনাথকে। এ পর্বের উদ্বোধন করেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চিত্রশিল্পী খুরশিদ আলম সেলিম। এসময় বাংলাদেশী আমেরিকান আর্টিস্ট ফোরামের সভাপতি আর্থার আজাদ ও সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ চৌধুরী বক্তব্য রাখেন।

ঠিক একই সময় জ্যাপেক বেইজমেন্টে শুরু হয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আঁকা চিত্রপ্রদর্শনী ও ড. ওবায়দুল্লাহ মামুনের আলোকচিত্র প্রদর্শনী। প্রদর্শনীতে ওহাইয়ো থেকে আগত সিলভিয়া পান্ডিতের তিনটি চিত্র স্থান পায়। প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের সাবেক ডিন অধ্যাপক মতলুব আলী। তিনটি প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, বাংলাদেশ ও ভারতের কনসাল জেনারেল।

উৎসবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে সত্যজিৎ রায়ের তথ্যচিত্র, রবীন্দ্রনাথের চিত্রকলার ওপর সনাৎ মহান্তের পরিচালনায় নির্মিত তথ্যচিত্র ‘রুপের অতীত রূপ’ ও সুমন মুখোপাধ্যায় পরিচালিত চলচিত্র ‘শেষের কবিতা’ প্রদর্শিত হয়।
প্রথম দিনের উৎসবে অনুষ্ঠান সূচিতে ছিল আমার রবীন্দ্রনাথ, রবীন্দ্রনাথের বিজ্ঞান চিন্তা, রবীন্দ্রনাথের গানে বাউল প্রভাব, গীতাঞ্জলি ও নোবেল পুরস্কার আমেরিকায় রবীন্দ্রনাথ, রবীন্দ্রনাথের চিঠিপত্র এবং রবীন্দ্রনাথ ও প্রবাসে নতুন প্রজন্ম শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। কবিতা পাঠের আসরে অর্ধশতাধিক কবি রবীন্দ্রনাথের লেখা ও রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে লেখা কবিতা পাঠ করেন।

উৎসবে হাসানুজ্জামান সাকীর সম্পাদনায় স্মারক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচনে অতিথি ছিলেন মোর্শেদ আলম, ড. সিদ্দিকুর রহমান, রেখা আহমেদ, জাফর ফেরদৌস, শিতাংশু গুহ, হুসনে আরা ও খাইরুল ইসলাম পাখি। ভিনভাষীর চর্চায় রবীন্দ্রনাথ পরিবেশন করে শ্রী চিন্ময় (নিউইয়র্ক)। প্রথম দিন দুটি মঞ্চনাটক শিরীন বকুল ও ড. নজরুল ইসলাম অভিনীত ও শিল্পাঙ্গণ পরিবেশিত ‘রক্ত করবী’ এবং গোলাম সারওয়ার হারুন নির্দেশিত ও ঢাকা ড্রামা পরিবেশিত ‘মিছে কোলাহল’ নাটক মঞ্চস্থ হয়।

শনিবার সন্ধ্যায় প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মেলবন্ধন শীর্ষক একটি অনুষ্ঠান উপস্থাপন করেন অভিনয়শিল্পী লুতফুন নাহার লতা ও মার্ক ওয়াইনবার্গ দম্পতি। ভার্জিনিয়া থেকে আগত আশীফ এন্তাজ রবির গ্রন্থনায় শিল্পী দিনার মণি ও নাজিয়া নওশাদ শাওন পরিবেশন করেন গীতিকথা ওরা সন্ধ্যার মেঘমালা। অনুপ দাস ডান্স একাডেমি-আড্ডা পরিবেশন করে ভানুসিংহের পদাবলী। ভার্জিনিয়ার ভারতীয় সংগঠন তা থৈ ও বাংলাদেশী সংগঠন ‘ধ্রƒপদ’ পরিবেশন করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ফিকশন-নন ফিকশন প্রেমের আখ্যানÑকার মিলন চাও বিরহী।

নৃত্যনাট্য তাসের দেশ (ইংরেজি) পরিবেশন করে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পারফরমিং আর্টস-বিপা। প্রথম দিনে রাতে একক সংগীত পরিবেশন করেন ভারতীয় শিল্পী শ্রেয়া গুহঠাকুরতা। উৎসবের দ্বিতীয় দিন রোববার যথারীতি সাহিত্য সম্মেলনের মাধ্যমে রবীন্দ্র উৎসব শুরু হয়। এতে আমার রবীন্দ্রনাথ শীর্ষক আলোচনায় অংশ নেন জ্যোতি প্রকাশ দত্ত, সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ্, তমিজ উদ্দীন লোদী ও ফকির ইলিয়াস। সঞ্চালনা করেন হাসান ফেরদৌস।

কবিতা, শ্রুতি নাটক শীর্ষক অনুষ্ঠানে ছিলেন আলোলিকা মুখোপাধ্যায়, অবন্তিকা মুখার্জী, সঞ্চালনা করেন সুদীপ্তা চট্টোপাধ্যায়।
আবীর আলমগীরের সমন্বয়ে নিউইয়র্ক ও নিউজার্সীর শিল্পীরা আবৃত্তি পরিবেশন করেন। এদিন দুটি তথ্যচিত্র বরেণ্য সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ’র রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বইয়ের বিরল সংগ্রহশালা নিয়ে ‘স্টাডি রুম’ এবং অধ্যাপক ডা. জিয়াউদ্দীন আহমেদ পরিচালিত ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সংক্ষিপ্ত জীবনী : প্রবাসে রবীন্দ্র চর্চা’ শীর্ষক ডক্যুমেন্টারি প্রতিবেদন প্রদর্শিত হয়।
এরপর চারুশিল্পীরা মঞ্চে আসেন এবং মতলুব আলীর সদ্য প্রকাশিত গ্রন্থ কবির ছবি ও ছবির কবি-এর মোড়ক উন্মোচন হয়। এসময় বক্তব্য রাখেন সাপ্তাহিক বাঙালী সম্পাদক কৌশিক আহমেদ ও শিল্পী কায়সার কামাল। রবীন্দ্রনাথ : তর্কে বিতর্কে শীর্ষক আলোচনায় অংশ নেন ড. পবিত্র সরকার, মনজুর আহমদ, ড. পূরবী বসু ও ড. আবেদীন কাদের। সঞ্চালনা করেন হাসান ফেরদৌস।

এদিন নিউজার্সীর এপিকস এক্টরস ওয়ার্কশপের পরিবেশনায় রবি ঠাকুরের স্ত্রীর পত্র গল্প অবলম্বনে ইংরেজি মঞ্চনাটক মৃণালের পত্র মঞ্চস্থ হয়। রচনা, পরিচালনা ও অভিনয়ে ছিলেন গার্গী মুখার্জী। রবীন্দ্র সংগীতে শাস্ত্রীয় ধারা শীর্ষক অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সংগীত পরিষদের কাবেরী দাশ। ‘ওই মহামানব আসে’ সংগীতানুষ্ঠান পরিবেশন করে প্রকৃতি নিউইয়র্ক। রবীন্দ্র সংগীতে কীর্তন ধারা পরিবেশন করে ড. সাহানা ভট্টাচার্য্য (মেরিল্যান্ড) ও ড. উদিতা মুখার্জী (উইসকনসিন)।

বিকেলে আমেরিকায় রবীন্দ্রনাথের বসবাস করা বাড়ির ক্রেতা বাঙালী দম্পতি কাজল মুখোপাধ্যায় ও মৌসুমী দত্ত রায়ের সংবর্ধনায় উপস্থিত ছিলেন প্রবীর রায়, মিলন আওন, বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী, নজরুল মিন্টো, এ্যানি ফেরদৌস, কাজী আজিজ মামুন, তাপস সান্যাল, পার্থ চক্রবর্তী ও পার্থ সারথী মুখোপাধ্যায়।

শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা উপস্থিতিতে তাঁর প্রতিষ্ঠিত সুরের ধারা (নিউইয়র্ক) পরিবেশন করে মনোজ্ঞ সঙ্গীতানুষ্ঠান। পরিচালনা করেন বিদিশা দেওয়ানজী (কানেকটিকাট)। এন জে বুটিকের পরিবেশনায় ও ইন্টারলিংক নেটের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত হয় ভিন্নধর্মী রাবীন্দ্রিক ফ্যাশন শোÑবসনে ভূষণে রবির চয়নে। আমিই রবীন্দ্রনাথের শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি শীর্ষক আরও একটি ভিন্নধর্মী পরিবেশনা প্রীতি বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। রবি ঠাকুরের অমিত-লাবণ্য, মহেন্দ্র-বিনোদনী ও রমেশ-হেমনলিনী চরিত্রে বিতর্কে অংশ নেন যথাক্রমে অ্যাটর্নি রাজু মহাজন (মেরিল্যান্ড) ও সামছুন নাহার নূপুর (নিউইয়র্ক), মোহিত প্রধান (টেক্সাস) ও সাঈদা সাথী (ভার্জিনিয়া) এবং মোস্তাফিজ খান (টেক্সাস) ও ড. তারান্নুম শায়লা জামান প্রত্যাশা (নিউইয়র্ক)। সঞ্চালনায় ছিলেন বাংলাদেশ থেকে আগত টিভি ব্যক্তিত্ব ও বিতার্কিক হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

আন্তর্জাতিক রবীন্দ্রনাথ নিয়ে আলোয় ভুবন ভরা পরিবেশন করে সৃষ্টি (নিউজার্সী)। পরিচালনায় ছিলেন সূবর্ণা খান, বিচিত্রা, তমা ও অহনা। রাতে সমাপনী অনুষ্ঠানে দেড় শতাধিক শিল্পী প্রাঙ্গণের বাইরে ‘শতকণ্ঠে রবীন্দ্রনাথ’ পরিবেশন করেন। আর ভেন্যুর অভ্যন্তরে বিশেষ সমাপনী নৃত্য পরিবেশন করে নৃত্যাঞ্জলী। পরিচালনা করেন চন্দ্রা ব্যানার্জী।

উৎসবে দেবব্রত বিশ্বাসের ছাত্র অমিয় বন্দ্যোপাধ্যায় (ভারত) ও বিপার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সেলিমা আশরাফকে (বাংলাদেশ) আজীবন সম্মাননা তুলে দেন ড. পবিত্র সরকার, অধ্যাপক ডা. জিয়াউদ্দীন আহমেদ ও রাহাত হোসেন নাজু। এসময় টিবিএন টোয়ান্টিফোরের সিইও পুলক ভূঁইয়া ও কানাডার দেশে-বিদেশে পত্রিকার প্রধান সম্পাদক নজরুল মিন্টো উপস্থিত ছিলেন।
এরআগে সন্ধ্যায় স্মারক বক্তৃতা দেন চন্দ্রিল ভট্টাচার্য। চল্লিশ মিনিটের টানা বক্তৃতার সময় পিনপতন নিরবতা নেমে আসে অনুষ্ঠান স্থলে। সবশেষ রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় দুদিনের অনুষ্ঠান।

উৎসবে ভারত, বাংলাদেশ, ব্রিটেন, জার্মানী, মেক্সিকো ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত: ২৫টি অঙ্গরাজ্য থেকে কবি, লেখক, সাহিত্যিক, শিল্পী, কলাকুশলী ও রবীন্দ্র অনুরাগীরা অংশ নেন। -প্রেস  বিজ্ঞপ্তি।

    • নাছরিন/হককথা