নিউইয়র্ক ০৭:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

তাদের নাম আলোকিত করবে বিশ্ববাসীকে, আসবে বিশ্বশান্তি : ড. গুলশান আরা

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৭:০০:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জুলাই ২০১৭
  • / ১৩৩৪ বার পঠিত

নিউইয়র্ক: বিশিষ্ট নজরুল ও রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ এবং বিজ্ঞানী ড. গুলশান আরা বলেছেন, বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের নাম জ্বল জ্বল করে জ্বলবে, তাঁদের আলোক আলোকিত করবে বিশ্ববাসীকে, আসবে বিশ্বশান্তি। জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন ও নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল-এর যৌথ উদ্যোগে কনস্যুলেট জেনারেল অফিসের অডিটরিয়ামে গত ১ জুলাই শনিবার বিকেলে বিশ্বকবি খ্যাত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৬তম এবং বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১১৮তম জন্ম বার্ষিকী তথা ‘রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী’ উদযাপন অনুষ্ঠানে মূল আলোচকের বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠানটির মূল আকর্ষণ ছিলেন বাংলাদেশের খ্যাতনামা রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও নজরুলসঙ্গীত শিল্পী অনুপ বড়–য়ার গাওয়া একক গান। অনুষ্ঠানে সঙ্গীতের পাশাপাশি ছিল প্রাণবন্ত আলোচনা পর্ব। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের এই উজ্জ্বল দুই নক্ষত্রের জীবনদর্শন এবং সাহিত্যকর্মের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচক এবং বক্তাগণ গবেষণাধর্মী বক্তব্য উপস্থাপন করেন। রবি ঠাকুর ও নজরুলের দর্শন, আধ্যাত্মবাদ এবং সাহিত্যকর্মের উপর আলোকপাত করেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী নজরুল ও রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ এবং বিজ্ঞানী ড. গুলশান আরা এবং ‘একজন কূটনীতিকের চোখে নোবেল বিজয়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং বিদ্রোহী কবি নজরুল ইসলাম’ বিষয়ে তথ্যসমৃদ্ধ আলোচনা করেন নিউইয়র্কে নিযুক্ত ভারতের কনসাল জেনারেল মিজ রিভা গাঙ্গুলী দাস। উল্লেখ্য, রিভা গাঙ্গুলী ঢাকা ছাড়াও স্পেন, নেদারল্যান্ড, গণ চীন প্রভৃতি দেশে কূটনীতিকের দায়িত্ব পালন করেন। খবর ইউএনএ’র।
অনুষ্ঠানের মূল আলোচনার আগে সদ্য প্রয়াত প্রখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ এবং নজরুল বিশেষজ্ঞ সুধীন দাস এবং একুশে পদক বিজয়ী নজরুল ও রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ ড. করুণাময় গোস্বামীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এর আগে অনুষ্ঠানটির সূচনা পর্বে স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন এবং নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ শামীম আহসান এনডিসি।
অনুষ্ঠানের গান পর্বে প্রথমে শিল্পী অনুপ বড়–য়া ‘অঞ্জলী লহ মোর’, ‘আজো কাঁদে কাননে কোয়েলিয়া’, ‘আমি চিরতরে দূরে চলে যাবো’ ও ‘খোদারও প্রেমের সরাব পিয়ে’সহ নজরুলসঙ্গীতের জনপ্রিয় ৬টি গান পরিবেশন করেন।


এরপর দর্শকদের মন মাতাতে মঞ্চে আসেন বন্যা। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বাংলাদেশের বরেণ্য এই শিল্পীর অসাধারণ গায়কী আর রবীন্দ্রসঙ্গীতের চিরচেনা সুরের ধারায় আবিষ্ট হয় গোটা অডিটোরিয়াম। দর্শকদের অনুরোধে একে একে তিনি পরিবেশন করেন ‘আমার হিয়ার মাঝে লুকিয়ে ছিলে’, ‘আমি হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যাকুল’, ‘কতবারও ভেবেছিনু আপনা ভুলিয়া’ ‘ভালোবেসে সখী নিভৃতে যতনে’, ‘সখী ভাবনা কাহারে বলে’, এবং ‘আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ’সহ ১২টি জনপ্রিয় রবীন্দ্রসঙ্গীত। দর্শকরা মূহুমূহু করতালির মাধ্যমে শিল্পীদ্বয়কে অভিনন্দিত করেন। শিল্পীদয়ের সাথে তবলায় ছিলেন প্রবাসের জনপ্রিয় তবলাবাদক তপন মোদক।

অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল বাংলা সাহিত্যকে বিশ্বদরবারে উচ্চ আসনে তুলে ধরেছেন। সার্বজনীনতা এবং ধর্মনিরপেক্ষতার চেতনা এ দুই বরেণ্য কবির লেখনীতে অত্যন্ত পরিস্ফুট। বাংলাদেশ ও ভারতের জাতীয় সঙ্গীত বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের অনবদ্য সৃষ্টি যা বন্ধুপ্রতীম এ রাষ্ট্রদুটির জাতীয় ইতিহাসের অংশ। আর প্রেম ও দ্রোহের কবি নজরুলের অসাধারণ লেখনী, কবিতা ও গান ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে মহান মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত বাঙালী জাতিকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে’।

কনসাল জেনারেল শামীম আহসান তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ‘জাতির পিতা’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কবি কাজী নজরুল ইসলামকে কলকাতার পশ্চিমবঙ্গ থেকে ঢাকা নিয়ে আসেন এবং বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ও জাতীয় কবির মর্যাদা প্রদান করেন। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কবি নজরুল এবং রবীন্দ্রনাথের চর্চা ও গবেষণাকে জাতীয় জীবনে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন যা নজরুল ও রবীন্দ্র সৃষ্টিকর্মকে চিরভাস্মর রাখতে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখছে। তিনি বলেন, সবার সহযোগিতা পেলে আমরা এমন আনুষ্ঠানের আয়োজন অব্যাহত রাখবো।
এছাড়া অনন্যাদের মাঝে শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন নিউইয়র্ক সফররত প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারি ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ এবং যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান।
মুল আলোচনায় ড. গুলশান আরা তার দীর্ঘ বক্তব্যে বলেন, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বাংলার দুই কিংবদন্তী, তাঁরা বাংলা সাহিত্য, বাঙালীর জীবন দর্শন ও আধ্যাতিকতার ধারক, বাহক ও দিক নির্দেশক। তাদের দর্শন, সাহিত্য ও সংগীতের মাধ্যমে তারা এসেছেন আলোর দিশারী হয়ে, মানুষের অন্তর্নিহিত সৌন্দর্যকে জাগিয়ে তুলেছেন, মানুষকে ভালোবাসতে শিখিয়েছেন, একই সংগে ¯্রষ্টার মহিমাকে উপলব্ধি করতে অনুপ্রাণিত করেছেন, আন্তশক্তির উপর এবং আত্মবিশ্বাসের উপর ভর করে সত্যি অর্থে অন্যায়কে রুখে দাঁড়াবার সাহস জুগিয়েছেন।
তিনি বলেন, তারা দু’জনে ছিলেন যেন দুই মেরুর মানুষ, একজন বেড়ে উঠেছেন রাজকীয় ঐশ্বর্য আর বিলাসিতার মাঝে আরেকজন দারিদ্রের কষাঘাতে নিষ্ঠুর বাস্তবতার সাথে অহরহ যুদ্ধ করে। তাদের চলার পথ ছিল ভিন্ন, তথাপি কোথায় গিয়ে তাদের চিন্তাধারা, মানবতা এবং আধ্যাতিকতার প্রতি তাদের নিবিড় একাত্মতা যেন এক নদীর ¯্রােতে মিশে গিয়েছিলো একই সুরে বেজে উঠেছিল তাঁদের সুরেলা কন্ঠ। তাদের চিন্তা চেতনায় ও অনুভূতিতে এই বিশ্ব ব্রহ্মান্ড, সৃষ্টি ও ¯্রষ্টা সবই যেন একই সূত্রে গাথা, একে অন্যের পরিপূরক। অতএব ধর্মের পথে চলতে গিয়ে ¯্রষ্টাকে যেমন উপলব্ধি করতে হয় তেমনি সযতেœ সংরক্ষন ও করতে হয় তাঁর সৃষ্টিকে, মানুষের কল্যানে যতœশীল হওয়া আর প্রকৃতিকে সংরক্ষন করা এই সবই ধর্মের পথে করণীয়। সৃষ্টি এবং ¯্রষ্টার প্রতি ভালোবাসা, ¯্রষ্টার সান্নিধ্য লাভের কামনা এবং মানব কল্যানের মাঝে ¯্রষ্টাকে খুঁজে পাওয়া, এই সবই তাদের সাহিত্যের বিশাল অংশ জুড়ে রয়েছে। তাদের দুজনারই সঙ্গীতের সুরে বার বার বেজে উঠেছে ¯্রষ্টার প্রতি আকুল আবেদন তাদের আত্মার পূর্ণতা লাভের তিয়াসায়।
তিনি বলেন, রবীন্দ্রনাথ নিজেকে সমাসীন করেছেন বিশ্ব মাঝে, তাঁর আত্মার মুক্তি কামনা করেছেন মানুষের মাঝে। আর নজরুলের বিশ্বাস ছিল তিনি ¯্রষ্টা কর্তৃক প্রেরিত মানুষের কল্যান সাধন তার ব্রত, মানুষের কল্যান সাধনেই তার মুক্তি। তাদের সাহিত্যের মাঝে তারা বার বার বলেছেন যে, সৃষ্টিকে ভালবাসবার মাঝেই ¯্রষ্টাকে পাওয়া যায় এবং ভিন্ন পথের দিশারী হলেও তাতে বিরোধের অবকাশ নেই, তথাপি আজ সমগ্র বিশ্বে চলছে ধ্বংসের লীলা খেলা, ধর্মের ভেলায় চড়ে দস্যুর পতাকা উড়িয়ে মানুষ চালাচ্ছে মানুষেরই ধ্বংশযজ্ঞ। মানুব কল্যান সাধনের নামে মানুষের মৃতদেহের স্তুপের উপর দাঁড়িয়ে মানুষ সোচ্চার করছে তার জয়গান, হাজার বছরের ঐহিত্যবাহী সভ্যতার ধ্বংসস্তুপের পিরামিডের চূড়ায় দাঁড়িয়ে প্রচার করছে তার বিজয়, ভাষণ দিচ্ছে হাজার মানুষের শব যাত্রার মিছিলে। তাসের দেশের মতো ধ্বসে পড়ছে এক একটা দেশ, এক একটা সভ্যতা, এক একটা ইতিহাস। নবজাত শিশুর প্রথম ক্রন্দনের শব্দ চাপা পড়ে যাচ্ছে আগ্নেয় অস্ত্রের গর্জনে, সে হাঁটতে শিখেই হাতে তুলে নিচ্ছে মারনাস্ত্র তার প্রথম খেলনা মনে করে। তাই আজ আবার নতুন করে ধ্বনিত প্রতিধ্বনিত হয়ে ফিরুক রবীঠাকুর আর নজরুলের আধ্যাতিকতার মূল মন্ত্র, যে মন্ত্রের বলে বিশুদ্ধ হবে মানুষ, এক সাথে এগিয়ে আসবে কলুষমুক্ত সুন্দর পৃথিবী গঠনে। এই দুই মহামানবের যে আধ্যাত্মবাদের আলোকে আমরা স্নাত ও আলোকিত সেই আলোক আলোকিত করুক সমগ্র বিশ্ববাসীকে, প্রশান্তি ও সম্প্রীতির ঢেউ স্পশ করুক প্রতিটি মানুষের বক্ষতল, বন্ধ হোক ধ্বংসলীলা, ঘুচে যাক মানুষের মনের কালিমা, খুলে যাক আলোর তোরণ।
প্রসঙ্গত ড. গুলশানআরা বলেন, উত্তর আমেরিকায় রবীন্দ্রনাথ এবং নজরুলকে নিয়ে গবেষনা চলছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে। শিকাগো ইউনিভার্সিটিতে রবীন্দ্রনাথ নামে চেয়ার রয়েছে, সেখানে রবীন্দ্রনাথের উপর গবেষনা হচ্ছে। ইউনিভার্সিটি অব কানেক্টটিকাট এ এবং ক্যালিফোর্নিয়া ষ্টেট ইউনির্ভাসিটি তে দু’টো নজরুল এন্ডোমেন্ট স্থাপিত হয়েছে। এই দুটো ইউনিভার্সিটিতেই নজরুলের জীবন দর্শন, তার মানবতার বাণী, ধর্ম নিরপেক্ষতার বাণীর উপর ভিত্তি করে তার সাহিত্য চর্চা চলছে। আমাদের স্বপ্ন বিশ্বের সকল দার্শনিকের সারিতে রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলের নাম জ্বল জ্বল করে জ্বলবে, তাঁদের আলোক আলোকিত করবে বিশ্ববাসীকে, আসবে বিশ্বশান্তি।
মিজ রিভা গাঙ্গুলী দাস তার সঙ্গীপ্ত বক্তব্যে বলেন, প্রবাসে কূটনৈতিক দায়িত্বপালন করতে গিয়ে একজন বাঙালী হিসেবে রবীন্দ্র-নজরুলকে তুলে ধরার দায়িত্ব বেড়ে যায়। তিনি বলেন, রবীন্দ্র-নজরুল যুগে তাদের কর্ম বাঙালী জাতিকে উদ্দীপ্ত করে, নারী জগণকে বিকশিত করে। তিনি বলেন, স্পেন, নেদারল্যান্ড, গণ চীন, বাংলাদেশ প্রভৃতি দেশে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সকল দেশেই রবীন্দ্র-নজরুল সম্পর্কে ঐদেশের মানুষদের জানার আগ্রহ লক্ষ্য করেছি। যা আমাকে উৎসহিত করেছে।
ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ বলেন, রবীন্দ্র-নজরুল তাদের কর্ম দিয়ে যুগ যুগ ধরে আমাদের অনুপ্রাণীত, উদ্বুদ্ধ করে চলেছে। বঙ্গবন্ধু যেমন দেশের কবি, শিক্ষক, সাহিত্যিকদের শ্রদ্ধা করতেন, সম্মান দিতেন। তেমনী তার কন্যা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও দেশ-বিদেশের কবি, শিক্ষক, সাহিত্যিকদের শ্রদ্ধা করছেন, সম্মান সম্মানিত করছেন। প্রসঙ্গত তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে চলছে। জাতিসংঘ সহ বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ সম্মানজনক অবস্থানে রয়েছে। উন্নয়নের এই ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।
ড. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, রবীন্দ্র-নজরুল ছাড়াও ‘জাতির জনক’ বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আমরা গর্ব করতে পারি। কেননা, তারা সবাই বাংলা ভাষার মানুষ। তিনি বলেন, আগে মিশন-কনস্যুলেটে শেক মুজিব, শেখ হাসিনার নাম নেয়া হতো না, এখন হচ্ছে। এই ধরনের অনুষ্ঠানের পথ ধরেই আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে।
অনুষ্ঠানে নিউইয়র্কে দায়িত্বরত বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিকসহ বিদেশী অতিথি, কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন ও বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্য এবং বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশীদের অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিকে ভিন্ন মাত্রা এনে দেয়। সবশেষে আমন্ত্রিত অতিথিদের ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশী খাবারে আপ্যায়িত করা হয়।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

About Author Information

তাদের নাম আলোকিত করবে বিশ্ববাসীকে, আসবে বিশ্বশান্তি : ড. গুলশান আরা

প্রকাশের সময় : ০৭:০০:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জুলাই ২০১৭

নিউইয়র্ক: বিশিষ্ট নজরুল ও রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ এবং বিজ্ঞানী ড. গুলশান আরা বলেছেন, বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের নাম জ্বল জ্বল করে জ্বলবে, তাঁদের আলোক আলোকিত করবে বিশ্ববাসীকে, আসবে বিশ্বশান্তি। জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন ও নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল-এর যৌথ উদ্যোগে কনস্যুলেট জেনারেল অফিসের অডিটরিয়ামে গত ১ জুলাই শনিবার বিকেলে বিশ্বকবি খ্যাত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৬তম এবং বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১১৮তম জন্ম বার্ষিকী তথা ‘রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী’ উদযাপন অনুষ্ঠানে মূল আলোচকের বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠানটির মূল আকর্ষণ ছিলেন বাংলাদেশের খ্যাতনামা রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও নজরুলসঙ্গীত শিল্পী অনুপ বড়–য়ার গাওয়া একক গান। অনুষ্ঠানে সঙ্গীতের পাশাপাশি ছিল প্রাণবন্ত আলোচনা পর্ব। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের এই উজ্জ্বল দুই নক্ষত্রের জীবনদর্শন এবং সাহিত্যকর্মের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচক এবং বক্তাগণ গবেষণাধর্মী বক্তব্য উপস্থাপন করেন। রবি ঠাকুর ও নজরুলের দর্শন, আধ্যাত্মবাদ এবং সাহিত্যকর্মের উপর আলোকপাত করেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী নজরুল ও রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ এবং বিজ্ঞানী ড. গুলশান আরা এবং ‘একজন কূটনীতিকের চোখে নোবেল বিজয়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং বিদ্রোহী কবি নজরুল ইসলাম’ বিষয়ে তথ্যসমৃদ্ধ আলোচনা করেন নিউইয়র্কে নিযুক্ত ভারতের কনসাল জেনারেল মিজ রিভা গাঙ্গুলী দাস। উল্লেখ্য, রিভা গাঙ্গুলী ঢাকা ছাড়াও স্পেন, নেদারল্যান্ড, গণ চীন প্রভৃতি দেশে কূটনীতিকের দায়িত্ব পালন করেন। খবর ইউএনএ’র।
অনুষ্ঠানের মূল আলোচনার আগে সদ্য প্রয়াত প্রখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ এবং নজরুল বিশেষজ্ঞ সুধীন দাস এবং একুশে পদক বিজয়ী নজরুল ও রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ ড. করুণাময় গোস্বামীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এর আগে অনুষ্ঠানটির সূচনা পর্বে স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন এবং নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ শামীম আহসান এনডিসি।
অনুষ্ঠানের গান পর্বে প্রথমে শিল্পী অনুপ বড়–য়া ‘অঞ্জলী লহ মোর’, ‘আজো কাঁদে কাননে কোয়েলিয়া’, ‘আমি চিরতরে দূরে চলে যাবো’ ও ‘খোদারও প্রেমের সরাব পিয়ে’সহ নজরুলসঙ্গীতের জনপ্রিয় ৬টি গান পরিবেশন করেন।


এরপর দর্শকদের মন মাতাতে মঞ্চে আসেন বন্যা। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বাংলাদেশের বরেণ্য এই শিল্পীর অসাধারণ গায়কী আর রবীন্দ্রসঙ্গীতের চিরচেনা সুরের ধারায় আবিষ্ট হয় গোটা অডিটোরিয়াম। দর্শকদের অনুরোধে একে একে তিনি পরিবেশন করেন ‘আমার হিয়ার মাঝে লুকিয়ে ছিলে’, ‘আমি হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যাকুল’, ‘কতবারও ভেবেছিনু আপনা ভুলিয়া’ ‘ভালোবেসে সখী নিভৃতে যতনে’, ‘সখী ভাবনা কাহারে বলে’, এবং ‘আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ’সহ ১২টি জনপ্রিয় রবীন্দ্রসঙ্গীত। দর্শকরা মূহুমূহু করতালির মাধ্যমে শিল্পীদ্বয়কে অভিনন্দিত করেন। শিল্পীদয়ের সাথে তবলায় ছিলেন প্রবাসের জনপ্রিয় তবলাবাদক তপন মোদক।

অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল বাংলা সাহিত্যকে বিশ্বদরবারে উচ্চ আসনে তুলে ধরেছেন। সার্বজনীনতা এবং ধর্মনিরপেক্ষতার চেতনা এ দুই বরেণ্য কবির লেখনীতে অত্যন্ত পরিস্ফুট। বাংলাদেশ ও ভারতের জাতীয় সঙ্গীত বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের অনবদ্য সৃষ্টি যা বন্ধুপ্রতীম এ রাষ্ট্রদুটির জাতীয় ইতিহাসের অংশ। আর প্রেম ও দ্রোহের কবি নজরুলের অসাধারণ লেখনী, কবিতা ও গান ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে মহান মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত বাঙালী জাতিকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে’।

কনসাল জেনারেল শামীম আহসান তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ‘জাতির পিতা’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কবি কাজী নজরুল ইসলামকে কলকাতার পশ্চিমবঙ্গ থেকে ঢাকা নিয়ে আসেন এবং বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ও জাতীয় কবির মর্যাদা প্রদান করেন। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কবি নজরুল এবং রবীন্দ্রনাথের চর্চা ও গবেষণাকে জাতীয় জীবনে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন যা নজরুল ও রবীন্দ্র সৃষ্টিকর্মকে চিরভাস্মর রাখতে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখছে। তিনি বলেন, সবার সহযোগিতা পেলে আমরা এমন আনুষ্ঠানের আয়োজন অব্যাহত রাখবো।
এছাড়া অনন্যাদের মাঝে শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন নিউইয়র্ক সফররত প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারি ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ এবং যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান।
মুল আলোচনায় ড. গুলশান আরা তার দীর্ঘ বক্তব্যে বলেন, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বাংলার দুই কিংবদন্তী, তাঁরা বাংলা সাহিত্য, বাঙালীর জীবন দর্শন ও আধ্যাতিকতার ধারক, বাহক ও দিক নির্দেশক। তাদের দর্শন, সাহিত্য ও সংগীতের মাধ্যমে তারা এসেছেন আলোর দিশারী হয়ে, মানুষের অন্তর্নিহিত সৌন্দর্যকে জাগিয়ে তুলেছেন, মানুষকে ভালোবাসতে শিখিয়েছেন, একই সংগে ¯্রষ্টার মহিমাকে উপলব্ধি করতে অনুপ্রাণিত করেছেন, আন্তশক্তির উপর এবং আত্মবিশ্বাসের উপর ভর করে সত্যি অর্থে অন্যায়কে রুখে দাঁড়াবার সাহস জুগিয়েছেন।
তিনি বলেন, তারা দু’জনে ছিলেন যেন দুই মেরুর মানুষ, একজন বেড়ে উঠেছেন রাজকীয় ঐশ্বর্য আর বিলাসিতার মাঝে আরেকজন দারিদ্রের কষাঘাতে নিষ্ঠুর বাস্তবতার সাথে অহরহ যুদ্ধ করে। তাদের চলার পথ ছিল ভিন্ন, তথাপি কোথায় গিয়ে তাদের চিন্তাধারা, মানবতা এবং আধ্যাতিকতার প্রতি তাদের নিবিড় একাত্মতা যেন এক নদীর ¯্রােতে মিশে গিয়েছিলো একই সুরে বেজে উঠেছিল তাঁদের সুরেলা কন্ঠ। তাদের চিন্তা চেতনায় ও অনুভূতিতে এই বিশ্ব ব্রহ্মান্ড, সৃষ্টি ও ¯্রষ্টা সবই যেন একই সূত্রে গাথা, একে অন্যের পরিপূরক। অতএব ধর্মের পথে চলতে গিয়ে ¯্রষ্টাকে যেমন উপলব্ধি করতে হয় তেমনি সযতেœ সংরক্ষন ও করতে হয় তাঁর সৃষ্টিকে, মানুষের কল্যানে যতœশীল হওয়া আর প্রকৃতিকে সংরক্ষন করা এই সবই ধর্মের পথে করণীয়। সৃষ্টি এবং ¯্রষ্টার প্রতি ভালোবাসা, ¯্রষ্টার সান্নিধ্য লাভের কামনা এবং মানব কল্যানের মাঝে ¯্রষ্টাকে খুঁজে পাওয়া, এই সবই তাদের সাহিত্যের বিশাল অংশ জুড়ে রয়েছে। তাদের দুজনারই সঙ্গীতের সুরে বার বার বেজে উঠেছে ¯্রষ্টার প্রতি আকুল আবেদন তাদের আত্মার পূর্ণতা লাভের তিয়াসায়।
তিনি বলেন, রবীন্দ্রনাথ নিজেকে সমাসীন করেছেন বিশ্ব মাঝে, তাঁর আত্মার মুক্তি কামনা করেছেন মানুষের মাঝে। আর নজরুলের বিশ্বাস ছিল তিনি ¯্রষ্টা কর্তৃক প্রেরিত মানুষের কল্যান সাধন তার ব্রত, মানুষের কল্যান সাধনেই তার মুক্তি। তাদের সাহিত্যের মাঝে তারা বার বার বলেছেন যে, সৃষ্টিকে ভালবাসবার মাঝেই ¯্রষ্টাকে পাওয়া যায় এবং ভিন্ন পথের দিশারী হলেও তাতে বিরোধের অবকাশ নেই, তথাপি আজ সমগ্র বিশ্বে চলছে ধ্বংসের লীলা খেলা, ধর্মের ভেলায় চড়ে দস্যুর পতাকা উড়িয়ে মানুষ চালাচ্ছে মানুষেরই ধ্বংশযজ্ঞ। মানুব কল্যান সাধনের নামে মানুষের মৃতদেহের স্তুপের উপর দাঁড়িয়ে মানুষ সোচ্চার করছে তার জয়গান, হাজার বছরের ঐহিত্যবাহী সভ্যতার ধ্বংসস্তুপের পিরামিডের চূড়ায় দাঁড়িয়ে প্রচার করছে তার বিজয়, ভাষণ দিচ্ছে হাজার মানুষের শব যাত্রার মিছিলে। তাসের দেশের মতো ধ্বসে পড়ছে এক একটা দেশ, এক একটা সভ্যতা, এক একটা ইতিহাস। নবজাত শিশুর প্রথম ক্রন্দনের শব্দ চাপা পড়ে যাচ্ছে আগ্নেয় অস্ত্রের গর্জনে, সে হাঁটতে শিখেই হাতে তুলে নিচ্ছে মারনাস্ত্র তার প্রথম খেলনা মনে করে। তাই আজ আবার নতুন করে ধ্বনিত প্রতিধ্বনিত হয়ে ফিরুক রবীঠাকুর আর নজরুলের আধ্যাতিকতার মূল মন্ত্র, যে মন্ত্রের বলে বিশুদ্ধ হবে মানুষ, এক সাথে এগিয়ে আসবে কলুষমুক্ত সুন্দর পৃথিবী গঠনে। এই দুই মহামানবের যে আধ্যাত্মবাদের আলোকে আমরা স্নাত ও আলোকিত সেই আলোক আলোকিত করুক সমগ্র বিশ্ববাসীকে, প্রশান্তি ও সম্প্রীতির ঢেউ স্পশ করুক প্রতিটি মানুষের বক্ষতল, বন্ধ হোক ধ্বংসলীলা, ঘুচে যাক মানুষের মনের কালিমা, খুলে যাক আলোর তোরণ।
প্রসঙ্গত ড. গুলশানআরা বলেন, উত্তর আমেরিকায় রবীন্দ্রনাথ এবং নজরুলকে নিয়ে গবেষনা চলছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে। শিকাগো ইউনিভার্সিটিতে রবীন্দ্রনাথ নামে চেয়ার রয়েছে, সেখানে রবীন্দ্রনাথের উপর গবেষনা হচ্ছে। ইউনিভার্সিটি অব কানেক্টটিকাট এ এবং ক্যালিফোর্নিয়া ষ্টেট ইউনির্ভাসিটি তে দু’টো নজরুল এন্ডোমেন্ট স্থাপিত হয়েছে। এই দুটো ইউনিভার্সিটিতেই নজরুলের জীবন দর্শন, তার মানবতার বাণী, ধর্ম নিরপেক্ষতার বাণীর উপর ভিত্তি করে তার সাহিত্য চর্চা চলছে। আমাদের স্বপ্ন বিশ্বের সকল দার্শনিকের সারিতে রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলের নাম জ্বল জ্বল করে জ্বলবে, তাঁদের আলোক আলোকিত করবে বিশ্ববাসীকে, আসবে বিশ্বশান্তি।
মিজ রিভা গাঙ্গুলী দাস তার সঙ্গীপ্ত বক্তব্যে বলেন, প্রবাসে কূটনৈতিক দায়িত্বপালন করতে গিয়ে একজন বাঙালী হিসেবে রবীন্দ্র-নজরুলকে তুলে ধরার দায়িত্ব বেড়ে যায়। তিনি বলেন, রবীন্দ্র-নজরুল যুগে তাদের কর্ম বাঙালী জাতিকে উদ্দীপ্ত করে, নারী জগণকে বিকশিত করে। তিনি বলেন, স্পেন, নেদারল্যান্ড, গণ চীন, বাংলাদেশ প্রভৃতি দেশে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সকল দেশেই রবীন্দ্র-নজরুল সম্পর্কে ঐদেশের মানুষদের জানার আগ্রহ লক্ষ্য করেছি। যা আমাকে উৎসহিত করেছে।
ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ বলেন, রবীন্দ্র-নজরুল তাদের কর্ম দিয়ে যুগ যুগ ধরে আমাদের অনুপ্রাণীত, উদ্বুদ্ধ করে চলেছে। বঙ্গবন্ধু যেমন দেশের কবি, শিক্ষক, সাহিত্যিকদের শ্রদ্ধা করতেন, সম্মান দিতেন। তেমনী তার কন্যা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও দেশ-বিদেশের কবি, শিক্ষক, সাহিত্যিকদের শ্রদ্ধা করছেন, সম্মান সম্মানিত করছেন। প্রসঙ্গত তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে চলছে। জাতিসংঘ সহ বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ সম্মানজনক অবস্থানে রয়েছে। উন্নয়নের এই ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।
ড. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, রবীন্দ্র-নজরুল ছাড়াও ‘জাতির জনক’ বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আমরা গর্ব করতে পারি। কেননা, তারা সবাই বাংলা ভাষার মানুষ। তিনি বলেন, আগে মিশন-কনস্যুলেটে শেক মুজিব, শেখ হাসিনার নাম নেয়া হতো না, এখন হচ্ছে। এই ধরনের অনুষ্ঠানের পথ ধরেই আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে।
অনুষ্ঠানে নিউইয়র্কে দায়িত্বরত বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিকসহ বিদেশী অতিথি, কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন ও বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্য এবং বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশীদের অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিকে ভিন্ন মাত্রা এনে দেয়। সবশেষে আমন্ত্রিত অতিথিদের ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশী খাবারে আপ্যায়িত করা হয়।