নিউইয়র্ক ০৮:১৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল নিউইয়র্ক : অচলাবস্থায় জেএফকে বিমানবন্দর

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৭:২৩:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জানুয়ারী ২০১৭
  • / ৯০৯ বার পঠিত

নিউইয়র্ক: মুসলিম শরণার্থী ও অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ সাময়িক নিষিদ্ধ করে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের বিরুদ্ধে উত্তাল হয়ে উঠেছে নিউইয়র্কসহ যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় শহর। ৭ মুসলিম দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র প্রবেশে স্থগিতাদেশ দেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় শনিবার (২৮ জানুয়ারী) নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ৪ নাম্বার টার্মিনাল থেকে বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়। অভিবাসন কর্তৃপক্ষ বিমানবন্দরে ১১ জন শরণার্থীকে আটক করার পরই এ বিক্ষোভ শুরু হয় বলে জানা যায়। বেলা ১২টা থেকে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভ চলে রাত পর্যন্ত। ফলে অচলাবস্থার শিকার হয়ে পড়ে বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত এই বিমানবন্দর। এদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিরোধী বিক্ষোভ চলকালীন সময়ে খবর আসে যে নিউইয়র্কের ব্রুকলীন সুপ্রীম কোর্ট ট্রাম্পের আদেশ স্থগিত করেছে। ফলে বিক্ষোভকারীদের মধ্যে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়।
শনিবার জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিমানবন্দরে হাজারো মানুষ জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আদেশে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয়ের ক্ষেত্রে মুসলিম প্রধান দেশগুলোর মুসলিমদের বদলে খ্রীস্টান ও সংখ্যালঘুদের প্রাধান্য দেওয়ার কথা বলা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড সিভিল রাইটস গ্রুপের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান জানিয়েছে, জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের আটলান্টা, হাউস্টন এবং ডেট্রয়েটেও কয়েকজন ভ্রমণকারীকে আটক করা হয়েছে। কেবল জেএফকে বিমানবন্দরই নয়, ওয়াশিংটন ডিসির ডালেস বিমানবন্দরেও বিক্ষোভকারীরা জড়ো হন।
JFK Protest-4বিক্ষোভকারীদের হাতে দেখা গেছে বিভিন্ন শ্লোগানযুক্ত প্ল্যাকার্ড। সেখানে লেখা ছিল- ‘আমরা সবাই অভিবাসী’ ‘তাদেরকে আসতে দাও’ ‘শরণার্থীদের স্বাগত’ ‘অমান্য কর’ এবং ‘প্রতিরোধ কর’। স্যান ফ্রান্সিকোতে গুগলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং অ্যালফেবেটের প্রেসিডেন্ট সের্গেই ব্রিনও বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে জড়ো হন। ফোর্বসের রায়ান ম্যাকের বক্তব্যকে উদ্ধৃত করে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান জানায়, ম্যাক শুনেছেন যে ব্রিন বলছেন, ‘আমি এখানে এসেছি এবং আমি একজন শরণার্থী’।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে জারি করা নতুন নীতি বাস্তবায়ন করতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, বিমানবন্দর এবং পররাষ্ট্র বিষয়ক কার্যালয়ের হিমশিম খেতে হচ্ছে। ট্রাম্প যখন এই নির্বাহী আদেশে সই করেন, তখন যাত্রা শুরু করে আদেশ স্বাক্ষর হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছেন; এমন নাগরিকদেরও আটকে দেওয়া হয়েছে। আবার বৈধ বিমান টিকিট ও ভিসা নিয়েও বিমানে উঠতে পারেননি কেউ কেউ।
JFK Protest-1জেএফকে বিমানবন্দরের বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী আমেরিকা-বাংলাদেশ চেম্বার এন্ড কমার্স ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট হাসানুজ্জামান হাসান এই প্রতিনিধিকে জানান, বিক্ষোভে নিইয়র্কে বসবাসরত অভিবাসী বাংলাদেশীরা ব্যাপকহারে অংশ নেন। মানবাধিকার সংগঠনগুলো এবং সচেতন নাগরিকরা প্রায় সবাই ট্রাম্পের এই বিদ্বেষী নীতির প্রতিবাদে মুখর হয়ে উঠেছেন।
মানবাধিকার সংগঠন ড্রাম-এর অর্গাজাইজিং ডিরেক্টর কাজী ফৌজিয়া জানান, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অন্যায় আদেশের বিরুদ্ধে দল-মত নির্বাশেষে রুখে দাঁড়িয়েছে। আমাদের বিক্ষোভ-আন্দোলন সফল হয়েছে। আদালত প্রেসিডেন্টর আদেশের বিরুদ্ধে রুল জারি করেছে। এটা আমাদের বিজয়।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল নিউইয়র্ক : অচলাবস্থায় জেএফকে বিমানবন্দর

প্রকাশের সময় : ০৭:২৩:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জানুয়ারী ২০১৭

নিউইয়র্ক: মুসলিম শরণার্থী ও অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ সাময়িক নিষিদ্ধ করে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের বিরুদ্ধে উত্তাল হয়ে উঠেছে নিউইয়র্কসহ যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় শহর। ৭ মুসলিম দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র প্রবেশে স্থগিতাদেশ দেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় শনিবার (২৮ জানুয়ারী) নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ৪ নাম্বার টার্মিনাল থেকে বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়। অভিবাসন কর্তৃপক্ষ বিমানবন্দরে ১১ জন শরণার্থীকে আটক করার পরই এ বিক্ষোভ শুরু হয় বলে জানা যায়। বেলা ১২টা থেকে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভ চলে রাত পর্যন্ত। ফলে অচলাবস্থার শিকার হয়ে পড়ে বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত এই বিমানবন্দর। এদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিরোধী বিক্ষোভ চলকালীন সময়ে খবর আসে যে নিউইয়র্কের ব্রুকলীন সুপ্রীম কোর্ট ট্রাম্পের আদেশ স্থগিত করেছে। ফলে বিক্ষোভকারীদের মধ্যে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়।
শনিবার জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিমানবন্দরে হাজারো মানুষ জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আদেশে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয়ের ক্ষেত্রে মুসলিম প্রধান দেশগুলোর মুসলিমদের বদলে খ্রীস্টান ও সংখ্যালঘুদের প্রাধান্য দেওয়ার কথা বলা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড সিভিল রাইটস গ্রুপের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান জানিয়েছে, জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের আটলান্টা, হাউস্টন এবং ডেট্রয়েটেও কয়েকজন ভ্রমণকারীকে আটক করা হয়েছে। কেবল জেএফকে বিমানবন্দরই নয়, ওয়াশিংটন ডিসির ডালেস বিমানবন্দরেও বিক্ষোভকারীরা জড়ো হন।
JFK Protest-4বিক্ষোভকারীদের হাতে দেখা গেছে বিভিন্ন শ্লোগানযুক্ত প্ল্যাকার্ড। সেখানে লেখা ছিল- ‘আমরা সবাই অভিবাসী’ ‘তাদেরকে আসতে দাও’ ‘শরণার্থীদের স্বাগত’ ‘অমান্য কর’ এবং ‘প্রতিরোধ কর’। স্যান ফ্রান্সিকোতে গুগলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং অ্যালফেবেটের প্রেসিডেন্ট সের্গেই ব্রিনও বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে জড়ো হন। ফোর্বসের রায়ান ম্যাকের বক্তব্যকে উদ্ধৃত করে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান জানায়, ম্যাক শুনেছেন যে ব্রিন বলছেন, ‘আমি এখানে এসেছি এবং আমি একজন শরণার্থী’।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে জারি করা নতুন নীতি বাস্তবায়ন করতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, বিমানবন্দর এবং পররাষ্ট্র বিষয়ক কার্যালয়ের হিমশিম খেতে হচ্ছে। ট্রাম্প যখন এই নির্বাহী আদেশে সই করেন, তখন যাত্রা শুরু করে আদেশ স্বাক্ষর হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছেন; এমন নাগরিকদেরও আটকে দেওয়া হয়েছে। আবার বৈধ বিমান টিকিট ও ভিসা নিয়েও বিমানে উঠতে পারেননি কেউ কেউ।
JFK Protest-1জেএফকে বিমানবন্দরের বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী আমেরিকা-বাংলাদেশ চেম্বার এন্ড কমার্স ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট হাসানুজ্জামান হাসান এই প্রতিনিধিকে জানান, বিক্ষোভে নিইয়র্কে বসবাসরত অভিবাসী বাংলাদেশীরা ব্যাপকহারে অংশ নেন। মানবাধিকার সংগঠনগুলো এবং সচেতন নাগরিকরা প্রায় সবাই ট্রাম্পের এই বিদ্বেষী নীতির প্রতিবাদে মুখর হয়ে উঠেছেন।
মানবাধিকার সংগঠন ড্রাম-এর অর্গাজাইজিং ডিরেক্টর কাজী ফৌজিয়া জানান, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অন্যায় আদেশের বিরুদ্ধে দল-মত নির্বাশেষে রুখে দাঁড়িয়েছে। আমাদের বিক্ষোভ-আন্দোলন সফল হয়েছে। আদালত প্রেসিডেন্টর আদেশের বিরুদ্ধে রুল জারি করেছে। এটা আমাদের বিজয়।