নিউইয়র্ক: প্রবাসী বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের সর্ববৃহৎ সংগঠন জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশী বিজনেস এসোসিয়েশন (জেবিবিএ) অব নিউইয়র্ক ইন্কের কার্যকরী পরিষদের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনে (২০১৬-২০১৭) পরিষদের ১৫টি পদে ৩০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচন কমিশন ২৭ নভেম্বর চুড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে। প্রার্থীদের মধ্যে সাধারণ সম্পাদক পদে তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদিকে কোষাধ্যক্ষ পদে মনোনয়নপত্র দাখিলকারী দু’জনের মধ্যে একজনের মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ায় মোহাম্মদ সেলিম হারুন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কোষাধ্যক্ষ নির্বাচিত হওয়ার পথে। জেবিবিএ’র আহ্বায়ক কমিটি/নির্বাচন কমিশন ২৭ নভেম্বর শুক্রবার, রাত ৯টায় চুড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেন। ইতিপূর্বে জেবিবিএ’র ১৫ সদস্যের কার্যকরী পরিষদের জন্য ৩১জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। মনোনয়নপত্র বাছাইকালে কোষাধ্যক্ষ পদে মনোনয়নপত্র দাখিলকারী মোহাম্মদ সেলিম হারুন ও মোহাম্মদ হোসেন মনিরের মধ্যে মোহাম্মদ হোসেন মনিরের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। উল্লেখ্য, আগামী ২০ ডিসেম্বর রোববার নির্বাচন । নির্বাচনে ভোটার হচ্ছেন ২৫৭জন। খবর ইউএনএ’র।
ঐক্যবদ্ধ জেবিবিএ’র আলোচিত এবারের নির্বাচন বিষয়ে প্রবাসী বাংলাদেশী সহ কমিউনিটিতে নানা জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে। ক্রমশ: জমে উঠছে এই নির্বাচন। বিশেষ করে জ্যাকসন হাইটসের হোটেল-রেস্তরার আড্ডায় এখন একই আলাপ জেবিবিএ’র নির্বাচন। চলছে গণ সংযোগ আর ভোট প্রার্থনা। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে এসব কর্মকান্ড। এবারের ভোটার লিস্টসহ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী কোন কোন প্রার্থীর যোগ্যতার বিষয়েও প্রশ্ন উঠে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনে কোন প্রার্থীর পক্ষে অফিসিয়ালী কোন আপত্তি বা প্রশ্ন উঠেনি। জানা গেছে, চুড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর সম্ভাব্য দুই প্যানেলের পক্ষ থেকেই একাধিক প্রার্থীর ব্যাপারে ২০/২৫টির মতো আপত্তি/অভিযোগ উঠে। কিন্তু নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ এবং জেবিবিএ’র বৃহত্তর স্বার্থে আহ্বায়ক/নির্বাচন কমিশন-এর পরামর্শ ও সহযোগিতায় বৃহত্তর স্বার্থে সংশ্লিস্টরা কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ দায়ের করেনি। এব্যাপারে আহ্বায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য মাহবুব চৌধুরী ২৯ নভেম্বর রোববার ইউএনএ প্রতিনিধিকে বলেন, জেবিবিএ-কে শক্তিশালী করতে একটি সুন্দর নির্বাচন দরকার। আমরা সেই নির্বাচনের পথে। তিনি সকল প্রার্থী ও জেবিবিএ’র সদস্যদের সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, তাদের সহযোগিতা ছাড়া সুন্দর নির্বাচন সম্ভব নয়। আমরা সাধ্য মত চেষ্টা করছি, তারাও সহযোগিতা করছেন। তিনি বলেন, অফিসিয়ালী আমরা কারো বিরুদ্ধে কোন আপত্তি বা অভিযোগ পাইনি।
এদিকে শুরুতেই নির্বাচন কমিশন প্যানেল ভিত্তিক নির্বাচন না করার কথা ঘোষণা করলেও প্রার্থীদের পক্ষ থেকে দৃশ্যত ‘দিদার-কামরুল’ ও ‘জিকো-তারেক’ দুই প্যানেলে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হয়েছেন। প্রার্থীদের দাবী প্যানেল ভিত্তি নির্বাচন। এই দাবী আমলে নিয়ে প্যানেল ভিত্তিক নির্বাচনের ব্যাপারে জেবিবিএ’র আহ্বায়ক কমিটি/নির্বাচন কমিশন নতুন সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে। এব্যাপারে চলতি সপ্তাহেই নতুন সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে নির্বাচন কমিশনের এক সদস্য ইউএনএ প্রতিনিধিকে জানান। উল্লেখ্য, ‘দিদার-কামরুল’ ও ‘জিকো-তারেক’ প্যানেলের পক্ষ থেকে জেবিবিএ’র ১৫ সদস্যের কার্যকরী পরিষদের সকল পদেই প্রার্থীতা ঘোষণা করেন। অপরদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে এককভাবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন মাহবুবুর রহমান টুকু।
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত চুড়ান্ত প্রার্থীদের মধ্যে সম্ভাব্য ‘দিদার-কামরুল’ প্যানেলের প্রার্থীরা হলেন: সভাপতি- আবুল ফজল দিদারুল ইসলাম, সহ সভাপতি- শাহ নেওয়াজ ও মনসুর চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক- কামরুজ্জামান কামরুল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক- ফাহাদ সোলায়মান, কোষাধ্যক্ষ- মোহাম্মদ সেলিম হারুন, সাংগঠনিক সম্পাদক- শাকিল মিয়া, দপ্তর সম্পাদক- মাহমুদ হোসেন বাদশা, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক- সাজ্জাদ হোসাইন, সংস্কৃতি ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক- রাসেদ আহমেদ। কার্যকরী পরিষদ সদস্য- মোশাররফ হোসেন, মোহাম্মদ আলম, সেবুল দেবনাথ, বাচ্চু ও মোহাম্মদ হাসান।
সম্ভাব্য ‘জিকো-তারেক’ প্যানেলের প্রার্থীরা হলেন: সভাপতি- জাকারিয়া মাসুদ জিকো, সহ সভাপতি- মোহাম্মদ সুরুজ্জামান ও মোল্লা মাসুদ, সাধারণ সম্পাদক- তারেক হাসান খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক- আব্দুল কাইয়ুম খান, সাংগঠনিক সম্পাদক- আতিকুল ইসলাম জাকির, দপ্তর সম্পাদক- শেখ আলী হাসান, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক- মোস্তাফিজুর রহমান মুস্তাফিজ, সংস্কৃতি ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক- হাসান জিলানী। কার্যকরী পরিষদ সদস্য- জাকির মিয়া, আব্দুল আলীম, ঋশীধাম চৌধুরী, এম এ হক ও মোহাম্মদ লিয়াকত আলী।
উল্লেখিত প্রার্থীদের মধ্যে ‘দিদার-কামরুল’ প্যানেলের সভাপতি পদপ্রার্থী আবুল ফজল দিদারুল ইসলাম ইতিপূর্বে বিভক্ত জেবিবিএ’র সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এই প্যানেলের সাধরণ সম্পাদক পদপ্রার্থী কামরুজ্জামান কামরুল জেবিবিএ’র সাবেক কর্মকর্তা। অপরদিকে ‘জিকো-তারেক’ প্যানেলের সভাপতি পদপ্রার্থী জাকারিয়া মাসুদ জিকো জেবিবিএ’র অপরাংশের সভাপতি আর তারেক হাসান খান একই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। স্বতন্ত্র সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী মাহবুবুর রহমান টুকু জেবিবিএ’র সাবেক কর্মকর্তা। জানা গেছে, এবারে নির্বাচনে উভয় প্যানেল থেকে অপেক্ষাকৃত ইয়ং নেতৃত্ব প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের মধ্যে অনেকেই কমিউনিটির খুবই পরিচিত মুখ। ফলে লড়াই হবে হাড্ডা-হাড্ডি।
উল্লেখ্য, ৫ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালন করছেন। কমিটির কর্মকর্তারা হচ্ছেন- সাঈদ রহমান মান্নান, এম এম রহমান, কাজী পারভেজ, মাহবুব চৌধুরী এবং কাজী মন্টু।