নিউইয়র্ক ০৭:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

চুরাশিয়ানদের টরন্টো মিলনমেলায় স্মৃতির আকাশে হৃদয়ের ঘুড়ি

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৩:১১:৩৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৫
  • / ৩ বার পঠিত

আশরাফুল হাবিব মিহির: উত্তর আমেরিকার চুরাশিয়ানদের বহুল প্রতীক্ষিত এবং হৃদয়ছোঁয়া তৃতীয় পুনর্মিলনী গত ১৯ জুলাই শনিবার টরন্টোর এজাক্সের অডলি রিক্রিয়েশন সেন্টাওে অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্বের নানা প্রান্ত বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, জাম্বিয়া সহ বিভিন্ন দেশ থেকে আগত প্রায় ৭০ জন চুরাশিয়ান এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যসহ দেড় শতাধিক অংশগ্রহণকারীর পদচারণায় উৎসবস্থলটি পরিণত হয়েছিল এক আবেগঘন, আনন্দময় ও বর্ণাঢ্য মিলনমেলায়।
পুনর্মিলনী কমিটির আহবায়ক ইমাম উদ্দিনের প্রাণবন্ত স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের শুভসূচনা হয়। স্বাগত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘এই মিলনমেলা শুধু একদিনের আয়োজন নয়- এটি আমাদের ভালোবাসার বন্ধন, শিকড়ের টান এবং একে অপরকে ধরে রাখার অঙ্গীকারের প্রতীক।’
তৌহিদা চৌধুরী ও আলমগীর ককিরের সঞ্চালনায় বিকেল ছয়টা থেকে রাত এগারোটা পর্যন্ত টানা আনন্দ-আয়োজনের মধ্যে ছিল পরিচিতি পর্ব, নৈশভোজ, কবিতা আবৃত্তি, নাটিকা, সংগীতানুষ্ঠানসহ নানা সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। চুরাশিয়ান শিল্পী যথাক্রমে শিখা রউফ, অমিত রায়, সরোয়ারা হাবিব, রুপতনু, ইলোরা বড়–য়া, সুজাত বড়–য়া এবং জাকিরের মনমুগ্ধকর গানে মুখরিত হয়ে ওঠে মিলনমেলা।
চুরাশিয়ান খোন্দকার ইসমাইলের রসবোধসম্পন্ন কথাবার্তায় হাসির রোল উঠে যায় উপস্থিত দর্শকদের মাঝে, আর ফোয়াজ খান রিয়াজের গানে নেচে উঠেছিলেন অনেকে। আবৃত্তিকার মাহফুজ শিপু, শামস চৌধুরী রুশো এবং বন্নার কণ্ঠে কবিতার সুর যেন ছুঁয়ে যায় হৃদয়। মিজান ও সমীরের হাস্যরসে ভরা নাটিকা ছিল বিশেষ আকর্ষণ। চুরাশিয়ান সন্তান অপূর্ব, নির্ঝর ও আর্জোর পরিবেশনায় ভবিষ্যতের শিল্পীমানস স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
অনুষ্ঠানে প্রকাশিত হয়েছে বহু প্রতীক্ষিত স্মারক সংকলন ‘বন্ধন চুরাশি’, যাতে স্থান পেয়েছে চুরাশিয়ানদের স্কুল জীবনের দুর্লভ ছবি, স্মৃতিচারণ, প্রবাসজীবনের অভিজ্ঞতা এবং বহু অজানা গল্প যা মিলনমেলাকে করেছে আরও তাৎপর্যপূর্ণ।
উল্লেখ্য, উত্তর আমেরিকান চুরাশিয়ান ফোরাম মূলত ১৯৮৪ সালে মাধ্যমিক পাশ করা বন্ধুদের নিয়ে গঠিত একটি সক্রিয় ও সংবেদনশীল সম্প্রদায়, যাঁরা এখন উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন শহরে বসবাস করলেও হৃদয়ে লালন করেন স্কুল জীবনের অটুট বন্ধুত্বের স্মৃতি।
২০২৫ সালের এই তৃতীয় পুনর্মিলনীটি ছিল এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত, কারণ এই প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠানটি কানাডার মাটিতে অনুষ্ঠিত হলো। পূর্ববর্তী দুই পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়েছিল যথাক্রমে ২০২৩ সালে বাফেলোতে এবং ২০২৪ সালে টেক্সাসে। পরবর্তী পুনর্মিলনী ২০২৬ সালে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত হওয়ার ঘোষণা দিয়ে অনুষ্ঠানের পর্দা নামে, তবে রয়ে যায় হৃদয়ে গাঁথা অসংখ্য স্মৃতি।

 

 

 

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

চুরাশিয়ানদের টরন্টো মিলনমেলায় স্মৃতির আকাশে হৃদয়ের ঘুড়ি

প্রকাশের সময় : ০৩:১১:৩৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৫

আশরাফুল হাবিব মিহির: উত্তর আমেরিকার চুরাশিয়ানদের বহুল প্রতীক্ষিত এবং হৃদয়ছোঁয়া তৃতীয় পুনর্মিলনী গত ১৯ জুলাই শনিবার টরন্টোর এজাক্সের অডলি রিক্রিয়েশন সেন্টাওে অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্বের নানা প্রান্ত বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, জাম্বিয়া সহ বিভিন্ন দেশ থেকে আগত প্রায় ৭০ জন চুরাশিয়ান এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যসহ দেড় শতাধিক অংশগ্রহণকারীর পদচারণায় উৎসবস্থলটি পরিণত হয়েছিল এক আবেগঘন, আনন্দময় ও বর্ণাঢ্য মিলনমেলায়।
পুনর্মিলনী কমিটির আহবায়ক ইমাম উদ্দিনের প্রাণবন্ত স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের শুভসূচনা হয়। স্বাগত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘এই মিলনমেলা শুধু একদিনের আয়োজন নয়- এটি আমাদের ভালোবাসার বন্ধন, শিকড়ের টান এবং একে অপরকে ধরে রাখার অঙ্গীকারের প্রতীক।’
তৌহিদা চৌধুরী ও আলমগীর ককিরের সঞ্চালনায় বিকেল ছয়টা থেকে রাত এগারোটা পর্যন্ত টানা আনন্দ-আয়োজনের মধ্যে ছিল পরিচিতি পর্ব, নৈশভোজ, কবিতা আবৃত্তি, নাটিকা, সংগীতানুষ্ঠানসহ নানা সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। চুরাশিয়ান শিল্পী যথাক্রমে শিখা রউফ, অমিত রায়, সরোয়ারা হাবিব, রুপতনু, ইলোরা বড়–য়া, সুজাত বড়–য়া এবং জাকিরের মনমুগ্ধকর গানে মুখরিত হয়ে ওঠে মিলনমেলা।
চুরাশিয়ান খোন্দকার ইসমাইলের রসবোধসম্পন্ন কথাবার্তায় হাসির রোল উঠে যায় উপস্থিত দর্শকদের মাঝে, আর ফোয়াজ খান রিয়াজের গানে নেচে উঠেছিলেন অনেকে। আবৃত্তিকার মাহফুজ শিপু, শামস চৌধুরী রুশো এবং বন্নার কণ্ঠে কবিতার সুর যেন ছুঁয়ে যায় হৃদয়। মিজান ও সমীরের হাস্যরসে ভরা নাটিকা ছিল বিশেষ আকর্ষণ। চুরাশিয়ান সন্তান অপূর্ব, নির্ঝর ও আর্জোর পরিবেশনায় ভবিষ্যতের শিল্পীমানস স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
অনুষ্ঠানে প্রকাশিত হয়েছে বহু প্রতীক্ষিত স্মারক সংকলন ‘বন্ধন চুরাশি’, যাতে স্থান পেয়েছে চুরাশিয়ানদের স্কুল জীবনের দুর্লভ ছবি, স্মৃতিচারণ, প্রবাসজীবনের অভিজ্ঞতা এবং বহু অজানা গল্প যা মিলনমেলাকে করেছে আরও তাৎপর্যপূর্ণ।
উল্লেখ্য, উত্তর আমেরিকান চুরাশিয়ান ফোরাম মূলত ১৯৮৪ সালে মাধ্যমিক পাশ করা বন্ধুদের নিয়ে গঠিত একটি সক্রিয় ও সংবেদনশীল সম্প্রদায়, যাঁরা এখন উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন শহরে বসবাস করলেও হৃদয়ে লালন করেন স্কুল জীবনের অটুট বন্ধুত্বের স্মৃতি।
২০২৫ সালের এই তৃতীয় পুনর্মিলনীটি ছিল এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত, কারণ এই প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠানটি কানাডার মাটিতে অনুষ্ঠিত হলো। পূর্ববর্তী দুই পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়েছিল যথাক্রমে ২০২৩ সালে বাফেলোতে এবং ২০২৪ সালে টেক্সাসে। পরবর্তী পুনর্মিলনী ২০২৬ সালে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত হওয়ার ঘোষণা দিয়ে অনুষ্ঠানের পর্দা নামে, তবে রয়ে যায় হৃদয়ে গাঁথা অসংখ্য স্মৃতি।