হককথা ডেস্ক: নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে নিজের অ্যাপার্টমেন্টে নির্মম খুনের শিকার হওয়া পাঠাও-এর সহপ্রতিষ্ঠাতা ফাহিম সালেহ হত্যা মামলায় তার ব্যক্তিগত সহকারী টাইরেস ডিভন হাসপিল আদালতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন। মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) স্কাইপে কলে মামলার শুনানি চলাকালে এ ফার্স্ট ডিগ্রি হত্যায় তিনি দায়ী নন বলে দাবি করেন হাসপিল। উল্লেখ্য, চলতি বছরের গত ১৪ জুলাই ফাহিমকে তার অ্যাপার্টমেন্টে শিরচ্ছেদ ও হাত-পা কেটে ফেলার অভিযোগ আনা হয় হাসপিলের বিরুদ্ধে। খবর সিএনএন/ইউএনবি।
ম্যানহাটন ডিস্ট্রিক অ্যাটর্নি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, তিনি ম্যানহাটনের স্টেট কোর্ট জজের আদালতে হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। মামলার শুনানি আগামী ১১ জানুযারী পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। কথা কাটাকাটি বা তাৎক্ষণিক রাগের বশে যে হত্যাকান্ড সংঘটিত হয় সেটিকে যুক্তরাষ্ট্রে সেকেন্ড ডিগ্রি এবং পরিকল্পিতভাবে যে হত্যা করা হয় তাকে ফার্স্ট ডিগ্রি হত্যাকান্ড বলে অভিহিত করা হয়।
টাইরেস ডিভন হাসপিল

চাঞ্চল্যকর ফাহিম হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া হাসপিলকে গত ১৭ জুলাই হেফাজতে নেয় স্থানীয় পুলিশ এবং এ সংক্রান্ত মামলায় তাকে অভিযুক্ত করা হয়। সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে সালেহের কয়েক হাজার ডলার অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগ রয়েছে বলে জানায় পুলিশ। স্থানীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে তখন বলা হয়, হাসপিল নিনজা মাস্ক, স্যুট এবং টাই পরে সালেহকে বারবার বুকে ছুঁড়ি দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে এবং পরে বৈদ্যুতিক করাত দিয়ে তার লাশ টুকরো করে।
পুলিশের তথ্য মতে, ফাহিমের ব্যক্তিগত সহকারী থাকাকালীন মোটা অংকের অর্থ আত্মসাৎ করেন হাসপিল। বিষয়টি জানার পরও তার বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ না করে কিস্তিতে অর্থ পরিশোধের ব্যবস্থা করেন ফাহিম। কিন্তু আত্মসাৎ করা ওই অর্থ ফেরত না দেয়ার উদ্দেশ্যেই ফাহিমকে হত্যা করা হতে পারে বলে দ্য নিউইয়র্ক টাইমস-কে জানিয়েছিলেন সংশ্লিষ্ট এক পুলিশ কর্মকর্তা।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবে বাংলাদেশী বাবা-মায়ের সংসারে জন্ম নেয়া প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ফাহিম সালেহ পরবর্তীতে পরিবারের সাথে নিউইয়র্কে চলে আসেন। এখানেই তার বেড়ে ওঠা ও পড়াশুনা। পড়াশুনা শেষে ফাহিম সালেহ নিউইয়র্কেই বসবাস করতেন।
ফাহিম সালেহ ২০১৪ সালে ঢাকায় গিয়ে প্রযুক্তি-ভিত্তিক বেশ কিছু ব্যবসার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। অনেকগুলো প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলেও ‘পাঠাও’ উদ্যোগটি তাকে সফলতা এনে দেয়। শুরুতে শুধুমাত্র পণ্য পরিবহন সার্ভিস নিয়ে কাজ করলেও পরবর্তীতে রাইড শেয়ারিং সেবা চালু করে পাঠাও।