খোকার নিরবতা নিয়ে নানা প্রশ্ন : যুক্তরাষ্ট্র বিএনপিতে হতাশা ও স্থবিরতা আ. লীগে প্রাণচাঞ্চল্য
- প্রকাশের সময় : ০৯:৫৭:০০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ মে ২০১৫
- / ৮১৪ বার পঠিত
নিউইয়র্ক: তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন দাবীতে বিএনপি তথা ২০দলীয় জোটের লাগাতার আন্দোলন পরবর্তী তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচন ও ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের পথ প্রশস্ত হওয়ার পর এখন দেশের মতো প্রবাসেও অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতা-কর্মীদের মাঝে স্থবিরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মাঝে প্রাণচাঞ্চল্যতা লক্ষ্য করা গেছে। এদিকে সিটি নির্বাচনের পর চিকিৎসার জন্য নিউইয়র্কে অবস্থারকারী কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান, সাবেক মন্ত্রী ও অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার নিরবতা দলীয় নেতা-কর্মীসহ কমিউনিটির বিএনপি সমর্থকদের মাঝে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। দলীয় কোন বিষয়েই মুখ খুলছেন না সাদেক হোসেন খোকা। এমনকি সভা-সমাবেশেও যোগ দিচ্ছেন না। সব মিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি-আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে নতুন পরিবেশ বিরাজ করছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের রাজনৈতিক কূট-কৌশলে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের আন্দোলন ‘ব্যর্থ’ হওয়ার পর দলীয় কর্মকান্ডে স্থবিরতা নেমে আসে। যার ঢেউ লেগেছে প্রবাসেও। কেন্দ্রীয় বিএনপি ঘোষিত কর্মসূচীর আলোকে আন্দোলনের ‘কমিটি বিহীন ত্রিধা বিভক্ত’ যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নামে দলীয় নেতা-কর্মীরা সভা-সমাবেশ-বিক্ষোভ কর্মসূচীর পাশাপাশি সাংবাদিক সম্মেলনের নামে নিজেদের সক্রিয় রাখলেও সিটি নির্বাচনের পর তারা অনেকটা থমকে গেছেন। আপাতত: কোন কর্মসূচী নেই বিএনপিতে। কমিটির দাবী কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপিতে সৃষ্ট বিভক্তির অবসানেও নেই কোন উদ্যোগ। এই প্রেক্ষাপটে চরম হতাশা দেখা দিয়েছে দলের সক্রিয় নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মাঝে।
সূত্র মতে, সিটি নির্বাচনে বিএনপির পরাজয়ের পর (সরকারী দলের সন্ত্রাস, কারচূপির অভিযোগে বিএনপি সিটি নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে) সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার নিরবতায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র নেতা-কর্মীরা। নির্বাচনের সময় নিউইয়র্কে না থেকে অন্য অঙ্গরাজ্যে অবস্থান করা এবং দলীয় প্রার্থীর জন্য কোন দায়িত্ব পালন না করায় তারা ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির একাধিক নেতা বলেছেন, সিটি নির্বাচনের সময় আমাদের পক্ষ থেকে দলীয় প্রার্থী মির্জা আব্বাস ও তাবিথ আওয়ালের সমর্থনে জনাব খোকার প্রকাশ্য সমর্থন ও সহযোগিতা চাওয়া হয়েছিলো। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে সেব্যাপারে আশানুরুপ সমর্থন ও সহযোগিতা পাওয়া যায়নি কেন্দ্রীয় এই নেতার কাছ থেকে। বরং উদ্ভুত পরিস্থিতিতে দলকে নির্বাচন বয়কট করতে বাধ্য হতে হয়। দেশের রাজনীতি ও সিটি করপোরেশন নির্বাচন পরবর্তী বিষয়ে মুখ খুলছেন না স্বয়ং খোকাসহ তার ঘনিষ্টজনরা। কেন্দ্রীয় নেতার ভূমিকার ব্যাপারেও কথা বলতে বা কোন মন্তব্য করতে অনাগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সক্রিয় নেতা-কর্মীরাও। বরং তারা নিজেদেরকে ‘অভিভাবকহীন’ মন্তব্য করে বলেছেন দেশের মতো প্রবাসেরও ‘আমরা অভিবাবকহীন’। তারা বলেন, কেন্দ্রে দলের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে যেমন সমন্বয় নেই তেমনী কমিটি না থাকায় যুক্তরাষ্ট্র বিএনপিতে কোন চেইন অব কমান্ড নেই। দলীয় সঙ্কট সমাধানে তারা বিএনপিতে পূর্ণাঙ্গ মহাসচিব নিয়োগসহ দেশব্যাপী দল গুছানো ও যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কমিটি দাবী করেন।
অপরদিকে আওয়ামী লীগ সরকার রাজনৈতিক ‘কূট-কৌশলে’ বিএনপির আন্দোলন ‘ব্যর্থ’ করে দিয়ে ঢাকার দু’টি ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন এবং নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর জয়লাভ, বৃটেনের সাধারণ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি, শেখ রেহানার কন্যা টিউলিপসহ চার বাংলাদেশী-বৃটিশের জয়লাভ এবং ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের পথের খবরে দেশের মতো প্রবাসেও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের মাঝে আনন্দ-উল্লাস বিরাজ করছে। নতুন করে প্রাণচাঞ্চল্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে দলীয় কর্মকান্ডে। ইতিমধ্যেই দলীয় সভা-সমাবেশের সাধ্যমে আনন্দ-উল্লাস প্রকাশ করা হয়েছে। তবে নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি কমান্ডার নবীর কর্তৃক যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, দলীয় সভাপতি ও নেতৃবৃন্দ সস্পর্কে প্রদত্ত বিবৃতিকে কেন্দ্র করে দলেল মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান দেশে অবস্থান করায় এব্যাপারে দলের পক্ষ থেকে কোন প্রতিক্রয়া বা মন্তব্য প্রকাশ করা না হলেও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমদাদ চৌধুরী সভাপতি নবীর বিবৃতির বক্তব্যের সাথে দ্বি-মত পোষণ করে পাল্টা বিবৃতি দিয়েছেন। উল্লেখ্য, ড. সিদ্দিকুর রহমান গত সপ্তাহে ব্যক্তিগত কাজে বাংলাদেশ সফরে গেছেন। তার অনুপস্থিতিতে দলের অন্যতম সব সভাপতি মাহবুবুর রহমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।