নিউইয়র্ক ০৮:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ০২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

উইন রোজারিও নিহতের ভিডিও প্রকাশের পর কমিউনিটিতে তোলপাড়

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৬:৩২:০৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৬ মে ২০২৪
  • / ৮৪ বার পঠিত

নিউইয়র্কের ওজনপার্কে পুলিশের গুলিতে নিহত বাংলাদেশী তরুণ উইন রোজারিও ভিডিও প্রকাশের পর কমিউনিটিতে তোলপাড় শুরু হয়েছে। সচেতন প্রবাসীরা রোজারিও নিহতের ঘটনাটিকে পরিকল্পিত হত্যা বলে মন্তব্য করে সংশ্লিষ্ট পুলিশ অফিসারদের বিচার দাবী করেছেন। এদিকে রোজারিও নিহতের ঘটনায় শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন মেয়র এরিক অ্যাডামস। উল্লেখ্য, মানসিক রোগে আক্রান্ত উইন রোজারিও গত ২৭ মার্চ বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে তাদের বাসায় এনওয়াইপিডি’র পুলিশের গুলিতে নিহত হন।

নিউইয়র্ক ষ্টেট এটর্ণী জেনারেল অফিস শুক্রবার (৩ মে) এই ভিডিও প্রকাশ করে। প্রকাশিত ঐ বডিক্যাম ভিডিওতে প্রকাশ পেয়েছে রোজারিওর মৃত্যুর লোমহর্ষক ও মর্মান্তিক ঘটনা। যারাই ভিডিওটি দেখেছেন তারাই রোজারিও নিহতের ঘটনাটিকে পরিকল্পিত হত্যা বলে মন্তব্য করেছেন। বিচার দাবী করেছেন সংশ্লিষ্ট দুই পুলিশ অফিসারের। বলেছেন, পুলিশও আইনের উর্দ্বে নয়।

উইন রোজারিও ভিডিও প্রকাশের পর কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ভিডিওটি দেখে স্তব্ধ হয়ে গেছেন বলে জানিয়েছেন। তারা বলেন, পুলিশ হচ্ছে জনগণের বন্ধু, মানুষকে হত্যা করা নয়। ভিডিওটি দেখেই বুঝা যায়, পুলিশ চাইলে রোজারিও-কে বাঁচাতে পারতো। তারা রোজারিও’র নিহতের ঘটনাকে পরিকল্পিত হত্যা বলেও দাবী করেন এবং এই দাবীতে কমিউনিটির জোড়ালো আন্দোলন প্রত্যাশা করেন।

সাপ্তাহিক পরিচয় সম্পাদক নাজমুল আহসান বলেন, রোজারিও নিহতের ঘটনা পুরো ভিডিও দেখা সম্ভব না। শক্ত মনের মানুষ না হলে কারো পক্ষে এই ভিডিও দেখা সম্ভব না। তিনি বলেন, মানসিকভাবে অসুস্থ রোজারির ওপর পুলিশ যেভাবে গুলি চালিয়েছে তা হৃদয় বিদারক। রোজারিও নিহতের ঘটনাটিকে একটি হত্যাকান্ড হিসেবেই তিনি দেখছেন। তিনি বলেন, শুধু বাংলাদেশী কমিউনিটি হিসেবে নয়, নিউইয়র্ক সিটির সকল কমিউনিটির জন্যই ঘটনাটি ভাবতে হবে। নিউইয়র্কবাসীদের নিরাপত্তার জন্যই ঐকবদ্ধ প্রতিবাদ জরুরী।

সাপ্তাহিক প্রথম আলো সম্পাদক ইব্রাহিম চৌধুরী খোকন বলেন, মানুষ বিপদে পড়লে ৯১১-এ কল করলেন পুরিশ সাহয্যের জন্য এগিয়ে আসে। আর রোজারিও’র ক্ষেত্রে দেখলাম পুলিশ তাকে ব৭াচাতে গিয়ে হত্যা করলো। এ অবস্থা চলতে থাকলে মানুষ বিপদে পড়লেও আর ৯১১-এ কল দেবে না। তিনি আরো বলেন, ভিডিওটি প্রকাশের পর মেয়র এরিক অ্যাডামস বিবিৃতি দিয়ে শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন, কিন্তু কোন ব্যবস্থা নেননি সংশ্লিস্ট পুলিশ অফিসারদের বিরুদ্ধে। এটা মেনে নেয়া যায় না।
ড্রাম-এর সংগঠক কাজী ফৌজিয়া বলেন, রোজারিও’র নিহতের ঘটনা একটি হত্যা। পুলিশ পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করেছে। তার হত্যার প্রতিবাদ আর বিচারের দাবীতে কমিউনিটিকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

কিশোরগঞ্জ ডিষ্ট্রিক্ট এসোসিয়েশন অব নর্থ আমেরিকার বোর্ড অব ট্রাষ্টিার চেয়ারম্যান এবিএম ওসমান গণি ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, আমি বাংলাদেশী কমিউনিটির পক্ষ থেকে রোজারিও হত্যার তদন্ত সাপেক্ষে ন্যায় বিচার চাই। একইভাবে রোজারিও-কে হত্যার বিচার দাবী করেন সংগঠনটির নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান এবাদুল হক।

এদিকে উইন রোজারিও নিহতের ভিডিও প্রকাশের পর মেয়র এরিক অ্যাডামস এক বিবৃতিতে উইন রোজারিও নিহতের ঘটনায় গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করলেও অভিযুক্ত দুই পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেওয়ায় কমিউনিটিতে ক্ষোভ বিরাজ করছে। মেয়র তার বিবৃতিতে উল্লেখিত ঘটনায় এটর্নী জেনারেলের অফিসের তদন্তে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতির কথা জানিয়ে বলেছেন- ‘আমার হৃদয় ভেঙ্গে গেছে এবং উইন রোজারিওর মৃত্যুর ঘটনার মর্মান্তিক ভিডিও দেখার পরে আমি নিউইয়র্কবাসীদের দ্বারা অনুভূত গভীর বেদনা শেয়ার করছি’।

অপরদিকে উইন রোজারিও নিহতের ঘটনাটিকে হত্যা দাবী করে সংশ্লিষ্ট দুই পুলিশ অফিসারের বিচার দাবীতে আগামী বুধবার ৮ মে বেলা ১২টায় নিউইয়র্ক সিটি হলের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করেছে ড্রাম।

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

উইন রোজারিও নিহতের ভিডিও প্রকাশের পর কমিউনিটিতে তোলপাড়

প্রকাশের সময় : ০৬:৩২:০৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৬ মে ২০২৪

নিউইয়র্কের ওজনপার্কে পুলিশের গুলিতে নিহত বাংলাদেশী তরুণ উইন রোজারিও ভিডিও প্রকাশের পর কমিউনিটিতে তোলপাড় শুরু হয়েছে। সচেতন প্রবাসীরা রোজারিও নিহতের ঘটনাটিকে পরিকল্পিত হত্যা বলে মন্তব্য করে সংশ্লিষ্ট পুলিশ অফিসারদের বিচার দাবী করেছেন। এদিকে রোজারিও নিহতের ঘটনায় শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন মেয়র এরিক অ্যাডামস। উল্লেখ্য, মানসিক রোগে আক্রান্ত উইন রোজারিও গত ২৭ মার্চ বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে তাদের বাসায় এনওয়াইপিডি’র পুলিশের গুলিতে নিহত হন।

নিউইয়র্ক ষ্টেট এটর্ণী জেনারেল অফিস শুক্রবার (৩ মে) এই ভিডিও প্রকাশ করে। প্রকাশিত ঐ বডিক্যাম ভিডিওতে প্রকাশ পেয়েছে রোজারিওর মৃত্যুর লোমহর্ষক ও মর্মান্তিক ঘটনা। যারাই ভিডিওটি দেখেছেন তারাই রোজারিও নিহতের ঘটনাটিকে পরিকল্পিত হত্যা বলে মন্তব্য করেছেন। বিচার দাবী করেছেন সংশ্লিষ্ট দুই পুলিশ অফিসারের। বলেছেন, পুলিশও আইনের উর্দ্বে নয়।

উইন রোজারিও ভিডিও প্রকাশের পর কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ভিডিওটি দেখে স্তব্ধ হয়ে গেছেন বলে জানিয়েছেন। তারা বলেন, পুলিশ হচ্ছে জনগণের বন্ধু, মানুষকে হত্যা করা নয়। ভিডিওটি দেখেই বুঝা যায়, পুলিশ চাইলে রোজারিও-কে বাঁচাতে পারতো। তারা রোজারিও’র নিহতের ঘটনাকে পরিকল্পিত হত্যা বলেও দাবী করেন এবং এই দাবীতে কমিউনিটির জোড়ালো আন্দোলন প্রত্যাশা করেন।

সাপ্তাহিক পরিচয় সম্পাদক নাজমুল আহসান বলেন, রোজারিও নিহতের ঘটনা পুরো ভিডিও দেখা সম্ভব না। শক্ত মনের মানুষ না হলে কারো পক্ষে এই ভিডিও দেখা সম্ভব না। তিনি বলেন, মানসিকভাবে অসুস্থ রোজারির ওপর পুলিশ যেভাবে গুলি চালিয়েছে তা হৃদয় বিদারক। রোজারিও নিহতের ঘটনাটিকে একটি হত্যাকান্ড হিসেবেই তিনি দেখছেন। তিনি বলেন, শুধু বাংলাদেশী কমিউনিটি হিসেবে নয়, নিউইয়র্ক সিটির সকল কমিউনিটির জন্যই ঘটনাটি ভাবতে হবে। নিউইয়র্কবাসীদের নিরাপত্তার জন্যই ঐকবদ্ধ প্রতিবাদ জরুরী।

সাপ্তাহিক প্রথম আলো সম্পাদক ইব্রাহিম চৌধুরী খোকন বলেন, মানুষ বিপদে পড়লে ৯১১-এ কল করলেন পুরিশ সাহয্যের জন্য এগিয়ে আসে। আর রোজারিও’র ক্ষেত্রে দেখলাম পুলিশ তাকে ব৭াচাতে গিয়ে হত্যা করলো। এ অবস্থা চলতে থাকলে মানুষ বিপদে পড়লেও আর ৯১১-এ কল দেবে না। তিনি আরো বলেন, ভিডিওটি প্রকাশের পর মেয়র এরিক অ্যাডামস বিবিৃতি দিয়ে শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন, কিন্তু কোন ব্যবস্থা নেননি সংশ্লিস্ট পুলিশ অফিসারদের বিরুদ্ধে। এটা মেনে নেয়া যায় না।
ড্রাম-এর সংগঠক কাজী ফৌজিয়া বলেন, রোজারিও’র নিহতের ঘটনা একটি হত্যা। পুলিশ পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করেছে। তার হত্যার প্রতিবাদ আর বিচারের দাবীতে কমিউনিটিকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

কিশোরগঞ্জ ডিষ্ট্রিক্ট এসোসিয়েশন অব নর্থ আমেরিকার বোর্ড অব ট্রাষ্টিার চেয়ারম্যান এবিএম ওসমান গণি ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, আমি বাংলাদেশী কমিউনিটির পক্ষ থেকে রোজারিও হত্যার তদন্ত সাপেক্ষে ন্যায় বিচার চাই। একইভাবে রোজারিও-কে হত্যার বিচার দাবী করেন সংগঠনটির নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান এবাদুল হক।

এদিকে উইন রোজারিও নিহতের ভিডিও প্রকাশের পর মেয়র এরিক অ্যাডামস এক বিবৃতিতে উইন রোজারিও নিহতের ঘটনায় গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করলেও অভিযুক্ত দুই পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেওয়ায় কমিউনিটিতে ক্ষোভ বিরাজ করছে। মেয়র তার বিবৃতিতে উল্লেখিত ঘটনায় এটর্নী জেনারেলের অফিসের তদন্তে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতির কথা জানিয়ে বলেছেন- ‘আমার হৃদয় ভেঙ্গে গেছে এবং উইন রোজারিওর মৃত্যুর ঘটনার মর্মান্তিক ভিডিও দেখার পরে আমি নিউইয়র্কবাসীদের দ্বারা অনুভূত গভীর বেদনা শেয়ার করছি’।

অপরদিকে উইন রোজারিও নিহতের ঘটনাটিকে হত্যা দাবী করে সংশ্লিষ্ট দুই পুলিশ অফিসারের বিচার দাবীতে আগামী বুধবার ৮ মে বেলা ১২টায় নিউইয়র্ক সিটি হলের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করেছে ড্রাম।