আর ইউ বাংলাদেশী? হোয়াট হ্যাপেন্ড ইন বাংলাদেশ….
- প্রকাশের সময় : ১০:২১:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ জুলাই ২০১৬
- / ৮২২ বার পঠিত
নিউইয়র্ক: ‘আর ইউ বাংলাদেশী? হোয়াট হ্যাপেন্ড ইন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ নাইস কান্ট্রি, পিপলস আর নাইস, গুড’। এভারেই ঢাকার গুলশান হত্যাকান্ডের খবর জানতে চাইলেন এক পোর্টোরিকান-আমেরিকান মহিলা। ১ জুলাই শুক্রবার দিবাগত ভোর রাতে গুলশান ঘটনার একদিন পর অর্থাৎ গত শনিবার (২ জুলাই) হঠাৎই জ্যামাইকার হিলসাইড এভিনিউতে তার সাথে দেখা। নাম-পরিচয় জানার সুযোগের আগেই আমাকে দেখে প্রথমে জানতে চাইলে ‘আর ইউ বাংলাদেশী?’। আমি বললাম ইয়েস। চল্লিশোর্ধ ঐ মহিলার পাল্টা প্রশ্ন ‘হোয়াট হ্যাপেন্ড ইন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ নাইস কান্ট্রি, পিপলস আর নাইস, গুড’। আমি আর কি বলবো, দেশ থেকে এত্তো দূরে আছি, মিডিয়ার খবর ছাড়া আর কিছুই জানিনা। তাছাড়া এমন স্পর্শকাতর ঘটনা নিয়ে কি বলবো ভেবে পাচ্ছিলাম না। পাশাপাশি অন্তরের ভিতরে দেশপ্রেম, দেশের ভাবমূর্তীর বিষয়টি তোলপাড় খাচ্ছিলো। আর হঠাৎ করে এমন প্রশ্নের মুখোমুখি হবো তাও ভাবিনি। খবর ইউএনএ’র।
কিন্তু কিছু না বললে কেমন দেখায় ভেবে বললাম- ‘মাই পার্সোনাল ওপিনিয়ন ইট ইজ পলিটিক্যাল ম্যাটার, বাট ভেরী স্যাড ফর আজ এন্ড বাংলাদেশ টু’। মহিলাটি আর কথা বাড়ালো না, আমিও হাফ ছেড়ে বাঁচলাম। তবে খবরটি যে ‘টক অব দ্য ওয়ার্ল্ড’-এ পরিণত হয়েছে তাতে কোন সন্দেহ হলো না।
পরবর্তীতে পরিচিত বাংলাদেশী তো বটেই, ভারতীয়, পাকিস্তানী-আমেরিকান যার সাথেই দেখা হয়েছে তাদের একই প্রশ্ন ‘হোয়াট হ্যাপেন্ড ইন বাংলাদেশ, ওহ মাই গড। ইউ স টভি নিউজ, হোয়াটস গোইং অন’। আমি তাদের বলেছি- ভেরি স্যাড নিউজ। খবরটি শুনার পর মিশ্র প্রতিক্রিয়াও লক্ষ্য করা যায় প্রবাসী বাংলাদেশীদের মধ্যে। বিশেষ করে সরকারের তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ আর বক্তব্য নিয়েও নানা বিভ্রান্তি দেখা যায় প্রবাসী বাংলাদেশীদের মাঝে। ঘটনা সম্পর্কে এক প্রবাসী উদ্বেগের সাথে বললেন- তাহলে কি সত্যিই বাংলাদেশে জঙ্গী ঢুকে পড়লো? আরেক বাংলাদেশী বললেন- গুলশান ঘটনার পর মনে হলো ‘বাঘ এলো বাঘ এলো’ গল্পের কথা। আরেক বাংলাদেশী বললেন- জঙ্গী দমনে সরকার চরমভাবে ব্যর্থ হচ্ছে। তবে গুলশানের ঘটনায় প্রবাসী বাংলাদেশীদের পাশাপাশি ভিনদেশীরাও বেশ উদ্বিগ্ন-উৎকন্ঠিত।
এদিকে গুলশান হত্যাকান্ডের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর পরই সিএনএন সহ বিশ্বের প্রায় সকল ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় গুরুত্বের সাথে খবরটি প্রচার করা হয়। সিএনএন সহ কোন কোন ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া খবরটি সরাসরি সম্প্রচার করে। অবশ্য দেশের স্বার্থে বাংলাদেশের টিভিগুলোতে খবরটি সরাসরি সম্প্রচারে সরকারের পক্ষ থেকে বারন করা হয়।
বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমস ২ জুলাই ‘Bangladesh Troops Move Against Gunmen in Hostage Crisis Linked to ISIS’ এবং ৩ জুলাই ‘Slaughter in Bangladesh As ISIS Broadens Reach’ শিরোনামে গুলশান হত্যাকান্ডের খবর ফলাও করে প্রকাশ করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ডেইলী ওয়ার্ল্ড ষ্ট্রীট জার্ণাল ‘Bangladesh Attack Marks Tactical Shift by Islamic State Militants’ এবং ‘Bangladesh Attack Reveals Reach of Islamic State’s Radicalism’ শিরোনামে ২ ও ৩ জুলাই গুলশান হত্যাকান্ডের খবর ফলাও করে প্রকাশ করে।
নিউইয়র্কের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ডেইলী ‘নিউজডে’ ‘28 killed as diners in Bangladeshi restaurant ‘tortured’ in hostage crisis, officials say’ এবং ‘Bangladesh hunts hostage crisis clues, investigates IS claim’ শিরোনামে ২ ও ৩ জুলাই গুলশান হত্যাকান্ডের খবর ফলাও করে প্রকাশ করেছে।
নিউইয়র্কের অপর ডেইলী নিউইয়র্ক পোষ্ট ‘20 hostages dead after standoff in Bangladesh, ISIS claims credit’ এবং ‘US college students among victims of terror attack in Bangladesh’ শিরোনামে ১ ও ২ জুলাই গুলশান হত্যাকান্ডের খবর ফলাও করে প্রকাশ করেছে।