আজ থেকে নিউইয়র্কে চারদিনব্যাপী বইমেলা
- প্রকাশের সময় : ০১:২৩:৫৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ জুন ২০১৯
- / ৪৮৬ বার পঠিত
হককথা ডেস্ক: আজ ১৪ জুন শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে চারদিনব্যাপী ২৮ তম নিউইয়র্ক বাংলা বইমেলা। ইতিমধ্যে বইমেলায় যোগ দিতে জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক, কবি বিমল গুহ, উন্মাদ সম্পাদক ও রম্য লেখক আহসান হাবীব, কবি হোসেইন কবির ও কালি ও কলম সম্পাদক আবুল হাসনাত এবং শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা যুক্তরাষ্ট্রে এসে পৌছেছেন। বাকি অতিথিরাও এক এক করে এসে পৌছাবেন বলে বইমেলার আহ্বায়ক ড. নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন।
নিউইয়র্ক বাংলা বইমেলায় অভিবাসী লেখকদের রচিত সেরা গ্রন্থের জন্য একটি বার্ষিক পুরস্কার প্রবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মুক্তধারা ফাউন্ডেশন। এই পুরস্কারের নাম হবে ‘শহীদ কাদরী স্মৃতি সাহিত্য পুরষ্কার’। পুরস্কারের মূল্যমান হবে ১০০০ ইউএস ডলার।
বাংলাদেশ ও ভারতের বাইরে বসবাসরত বাংলা ভাষী যে কোন লেখকের রচিত বাংলা গ্রন্থ থেকে সেরা বইটি পুরস্কারের জন্য বেছে নেওয়া হবে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চেতনা বিরোধী নয়, এমন যে কোন গদ্য-পদ্য পুরস্কারের যোগ্য বিবেচিত হবে। এইসব গ্রন্থের প্রকাশ কাল হবে জুলাই থেকে জুন। যেমন, ২০১৮ সালের জুলাই ও ২০১৯ সালের জুন মাসের মধ্যে প্রকাশিত যেকোন বই ২৮-তম নিউইয়র্ক বাংলা বইমেলায় পুরস্কারের জন্য যোগ্য বিবেচিত হবে। লেখক নিজে অথবা যেকোন পাঠক তাঁর চোখে বিবেচিত বছরের শ্রেষ্ঠ গ্রন্থটি পুরস্কারের জন্য নির্বাচনার্থে নাম প্রস্তাব করতে পারেন। মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের নির্বাহীর কমিটির কোন সদস্য এই পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হবেন না।
বাংলাভাষার প্রতিনিধিত্বশীল তিন সদস্যের একটি কমিটি তালিকাভূক্ত গ্রন্থ থেকে ‘শহীদ কাদরী পুরষ্কার’ নির্ধারণ করবেন। ২০২০ সালের বইমেলায় এই পুরস্কার ঘোষণা করা হবে। এই পুরস্কারের নাম প্রয়াত কবি শহীদ কাদরীর নামানুসারে প্রবর্তনের সিদ্ধান্তে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন কবি-পতœী নীরা কাদরী।
এবছরের বইমেলার যথারীতি থাকছে স্বরচিত কবিতা, কবিতা আবৃত্তি, সাহিত্য আলোচনা ও নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন। এর বাইরে থাকছে প্রবাসী শিল্পীদের বহু বর্ণিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এবছরের বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছে নিউইয়র্কের সুপরিচিত সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অফ পারফর্মিং আর্টস (বিপা)।
শুক্রবার সন্ধ্যায় তারা পরিবেশন করবে বইমেলার জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুত উপস্থাপনা ‘বরণীয় বাঙালী’। এতে থাকবে নজরুল, রবীন্দ্রনাথ, জসীম উদ্দিন, রাধারমণ দত্ত ও বাউল ফকির লালন শাহ, এই পাঁচজন স্মরণীয় বাঙ্গালীর পাঁচটি সৃষ্টিগাঁথা সমন্বয়ে এক বিশেষ গ্রন্থনা।
রোববার, বইমেলার তৃতীয় দিনে সমাপ্তি অনুষ্ঠানে অংশ নেবে নিউইয়র্কের আরেক সুপরিচিত সাংস্কৃতিক সংগঠন, বাংলাদেশ একাডেমি অফ ফাইন আর্টস (বাফা)। বইমেলার জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুত তাদের উপস্থাপনার নাম ‘পরম্পরা’। এতে থাকবে বাংলার বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ধারার ভিত্তিতে নির্মিত এক বিশেষ নৃত্যানুষ্ঠান। নিউইয়র্কে তাঁর জীবনের শেষ কয়েকটি বছর কাটিয়েছেন পন্ডিত রামকানাই দাশ।
এবারের বইমেলায় তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রস্তুত হয়েছে বিশেষ সঙ্গীতানুষ্ঠান ‘সুরধ্বনির কিনারে’। এতে অংশ নেবেন শাহ মাহবুব, পারমিতা মুমু, শ্রুতিকণা দাশ, শ্রেষ্ঠা প্রিয়দর্শিনী ও কাবেরী দাশ।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ প্রবলভাবে প্রভাবিত হয়েছিলেন বাউল শিল্পী লালন ফকির দ্বারা। রবীন্দ্র সঙ্গীতের বাউল রস নিয়ে রচিত হয়েছে একটি বিশেষ অনুষ্ঠান, মনের মানুষ। এতে অংশ নেবেন গোলাম সরোয়ার হারুন ও সুবর্ণা মজুমদার। সাথে সারেঙ্গীতে থাকবেন রাকেশ মিশ্র।
অতুলপ্রসাদ সেন বাংলা সঙ্গীতে এক প্রবাদ প্রতিম পুরুষ। তাঁর জীবন ও সঙ্গীত নিয়ে প্রস্তুত এক বিশেষ অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন শান্তা নাগ ও জয়ন্ত নাগ।
সদ্য প্রয়াত শিল্পী সুবীর নন্দীর গানের ভিত্তিতে অনুষ্ঠান স্মরণ, এতে কথা ও গানে থাকবেন জীবন বিশ্বাস। বিশিষ্ঠ নাট্য ব্যক্তিত্ব মমতাজ উদ্দিন আহমদকে আমরা সদ্য হারিয়েছি। তাঁর স্মরণে প্রস্তুত এক অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণ করবেন জামাল উদ্দিন হোসেন, একক অভিনয় করবেন শিরীন বকুল।
বইমেলার প্রথম তিনদিনের অনুষ্ঠানেই থাকছে প্রবাসী শিল্পীদের পরিবেশনা। সঙ্গীতে অংশ নেবেন শাহীন হক, নীপা ভৌমিক, নন্দিনী পোদ্দার ও তমাল। একক নৃত্য পরিবেশন করবেন রাহীন। আরো থাকছে প্রবাসের জনপ্রিয় শিল্পী তনিমা হাদীর একক পরিবেশনা। সৈয়দ আবদুল হাদীর সুযোগ্যা কন্যা তনিমা হাদী শোনাবেন তাঁর নির্বাচিত প্রিয় গান।
উল্লেখ্য, আগামী ১৪, ১৫, ১৬ ও ১৭ জুন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ২৮ তম নিউইয়র্ক বাংলা বইমেলা। প্রথম তিনদিন জ্যাকসন হাইটসের পি এস ৬৯-এ ও চতুর্থ দিন ঠিক পাশে অবস্থিত জুইশ সেন্টারে বইমেলা বসবে। চতুর্থ দিনটি আলাদা করে রাখা হয়েছে শুধুমাত্র বই বিক্রির জন্য। এবারের বইমেলা ঢাকা থেকে এগারো জন প্রকাশক আসছেন বলে নিশ্চিত করেছেন।