সাদেক খান ছিলেন সাচ্চা দেশপ্রেমিক আর সর্বজন গ্রহণযোগ্য মানুষ
- প্রকাশের সময় : ০১:১১:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ মে ২০১৬
- / ৯৩৯ বার পঠিত
নিউইয়র্ক: বিশিষ্ট সাংবাদিক, কলামিস্ট ও লেখক সাদেক খান স্মরণ সভায় বক্তারা বলেছেন, বহুগুণের অধিকারী সাদেক খান ছিলেন সাচ্চা দেশপ্রেমিক আর সর্বজন গ্রহণযোগ্য মানুষ। তিনি জাতীয় নেতা না হয়েও ছিলেন জাতীয় ব্যক্তিত্ব। তার ক্ষুরধার লেখনী জাতিকে সঠিক দিক নির্দেশনা দিয়েছে।
সিটির জ্যাকসন হাইটসস্থ ইত্যাদি রেষ্টুরেন্টের পার্টি হলে ২৯ মে রোববার সন্ধায় অনুষ্ঠিত স্মরণ সভায় বক্তারা উপরোক্ত কথা বলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন সাদেক খান স্মরণ সভা কমিটির স্মরণ সভা কমিটির আহবায়ক আতিকুর রহমান ইউসুফজাই সালু। সভা পরিচালনা করেন সদস্য সচিব প্রফেসর দেলোয়ার হোসেন। সভায় মরহুম সাদেক খানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলামিস্ট মঈনুদ্দিন নাসের, আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটির সেক্রেটারী জেনারেল সৈয়দ টিপু সুলতান, বাংলাদেশ সোসাইটির ইনক’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হোসেন খান, কমিউনিটি অ্যক্টিভিষ্ট আলী ইমাম সিকদার, খন্দকার ফরহাদ, যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক আবু তালেব চৌধুরী চান্দু, কমিউনিটি নেতা কাজী আশরাফ হোসেন নয়ন প্রমুখ।
সভায় বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের মধ্যে সাপ্তাহিক বাংলাদেশ সম্পাদক ডা. ওয়াজেদ এ খান, বাংলাদেশ সোসাইটি’র সাবেক সহ-সভাপতি কাজী আজহারুল হক মিলন, এ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান, এম এ সিদ্দিক পল্লব, আকতার হোসেন, রফিকুল ইসলাম ডালিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় সৈয়দ টিপু সুলতান বলেন, বাংলাদেশের অভিজাত পরিবারে সন্তান সাংবাদিক-কলামিস্ট সাদেক খান ছিলেন বিরল প্রতিভার অধিকারী। এত বড় মাপের মানুষ হয়ৌ তার ব্যক্তিগত জীবন ছিলো স্বাভাবিক। তার তুলনা তিনি নিজেই। তিনি সবার অনুসরণ যোগ্য।
মঈনউদ্দিন নাসের বলেন, বহুমুখি প্রতিভার অধিকারী সাদেক খানের মৃত্যুতে জাতি এক বিজ্ঞ বুদ্ধিজীবি হারাল। দেশের চলমান রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে জাতিকে সঠিক পথ দেখাতে তার মতো জ্ঞানী-গুণীর বড় প্রয়োজন।
আলী ইমাম বলেন, সাদেক খানের মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাবিভুত। জাতি যাদের নিয়ে গর্ব করতে পারে তিনি সেই রকম একজন মানুষ। তিনি দেশের ঐতিহ্যবাহী একটি রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হয়েও নিজ কর্মগুণে নিজেকে নানা প্রতিভায় বিকশিত করেছেন। তিনি আমাদের জন্য অনুকরণীয়, অনুস্মরণীয়।
মোহাম্মদ হোসেন খান বলেন, সাদেক খান আমাদের অনুপ্রেরণার উৎস। আমরা যারা ব্যক্তিগতভাবে তাকে কাছে থেকে দেখেছি, মিশেছি তারা জানি তিনি কেমন মানুষ ছিলেন। তার কাছ থেকে আমাদের শিক্ষার অনেক কিছু রয়েছে।
কাজী আশরাফ হোসেন নয়ন স্মৃতিচারণ করে বলেন, সাদেক খানকে তার জীবদ্দসায় আরেকটি জীবনধর্মী চলচিত্র নির্মাণ করার অনুরোধ জানালে তিনি তা গ্রহণ করেন। কিন্তু দূর্ভাগ্য সময় তাকে সে সুযোগ দিল না। তাকে চলে যেতে হলো না ফেরার দেশে।
আবু তালেব চৌধুরী চান্দু বলেন, সাদেক খানের প্রতিভার কথা বলে শেষ করা যাবে না। তিনি ছিলেন সাচ্চা দেশপ্রেমিক মানুষ। যা তিনি তার লেখনীর মধ্য দিয়ে তুলে ধরেছেন।
সভাপতির বক্তব্যে আতিকুর রহমান ইউসুফজাই সালু মরহুম সাদেক খানের জীবনবৃত্তান্ত সংক্ষেপে তুলে ধরে বলেন, তিনি ছিলেন বহুমুখি প্রতিভার অধিকারী। ছিলেন ভাষা সৈনিক, মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, চলচ্চিত্রের নায়ক, পরিচালক, প্রযোজক, লেখক, কলামিস্ট ও পানি বিশেষজ্ঞ। তিনি ছিলেন আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটির অন্যতম উপদেষ্টা। সংগঠনের আর্সেনিক সমস্যা ও নদী-পানির বিষয়ে ফারাক্কা কমিটি কর্তৃক প্রকাশিত জাতীয় দলিল প্রচারে তার অসামান্য অবদান ছিল। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন একজন সৎ, স্বজ্জন, বিনয়ী ও অমায়িক ব্যক্তিত্বেও অধিকারী সর্বজন শ্রদ্ধেয় মানুষ। তিনি জাতীয় নেতা ছিলেন না, ছিলেন জাতীয় ব্যক্তিত্ব। তার ক্ষুরধার লেখনী জাতিকে সঠিক দিক নির্দেশনা দিয়েছে। তিনি বলেন, সাদেক খান ছিলেন হিংসার বিপরীতে সহমর্মিতার প্রতীক। স্বাধীনতা অর্জনে তার ভুমিকা যেমন ছিল অসামান্য, তেমনি তার লেখনী বহু রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা রক্ষার জন্যেও জাতিকে অনুপ্রেরণা যোগাবে। আমরা তার বিদেহী আতœার শান্তি কামনা করি।
উল্লেখ্য, বার্ধক্যজনিত রোগে সাদেক খান গত ১৬ মে সোমবার বেলা ১১টায় রাজধানীর বারিধারায় নিজ বাসভবনে তিনি ইন্তেকাল করেন।