যুক্তরাষ্ট্র আর্মি ওয়ার কলেজ প্রতিনিধিদলের বাংলাদেশ মিশন পরিদর্শন
- প্রকাশের সময় : ০৮:২৮:৫৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ মার্চ ২০১৫
- / ৭২৮ বার পঠিত
নিউইয়র্ক: বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে বাংলাদেশ সংবিধানের আলোকে তার প্রতিশ্রুতি পূরণ করে যাচ্ছে। এলক্ষ্যে সশস্ত্র ও পুলিশ বাহিনী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নিচ্ছে। বর্তমান সরকার সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে আপোষহীন নীতি অনুসরণ করছে।
যুক্তরাষ্ট্র আর্মি ওয়ার কলেজের ২২ সদস্যের প্রতিনিধিদল ১৩ মার্চ জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে এলে বাংলাদেশের এই অবস্থান আবারও প্রতিধ্বনিত হয়েছে। আর্মি কলেজের ডেপুটি কমান্ডার কর্নেল ডেভিড ফাংক প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।
আলোচনার সূত্রপাত করে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশের জনগণ শান্তিপ্রিয়। এজন্য বাংলাদেশ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ‘শান্তির সংস্কৃতি’ শীর্ষক প্রস্তাব উত্থাপন করে। যা সাধারণ পরিষদে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। এই অঙ্গীকার থেকেই বাংলাদেশ জাতিসংঘ শান্তি মিশনে অংশগ্রহণ করে যাচ্ছে এবং বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় অনবদ্ধ অবদান রেখে যাচ্ছে।
অর্থনৈতিক ও সামাজিক খাতে বর্তমান সরকারের সাফল্যের চিত্র তুলে ধরে ড. মোমেন বলেন, সরকার দেশের বিপুল জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তরের লক্ষ্যে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ওপর জোর দিয়েছে। নারীর অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন হয়েছে। এই তিনটি খাতেই নারীর অবদান প্রতিবছর বাড়ছে। বিভিন্নমুখী সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচী বাস্তবায়নের ফলে উন্নয়নের সাথে সাথে আয় বৈষম্য হ্রাস পাচ্ছে। দারিদ্র্যের হার ২০০৮ সালের ৪০ শতাংশ থেকে ২৪ শতাংশে নেমে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের লক্ষ্যভিত্তিক কর্মসূচী বাস্তবায়নের ফলেই এ অর্জন সম্ভব হয়েছে।
স্থায়ী মিশনের প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম আখতারুজ্জামান, এনডিসি, পিএসসি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশের অবদান তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এ পর্যন্ত বাংলাদেশের ১ লক্ষ ৩৯ হাজার ২৯৫ জন শান্তিরক্ষী বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ৫৪টি শান্তি মিশনে দায়িত্ব পালন করেছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ ২০১৪ সালে শীর্ষস্থান অর্জন করেছে। বর্তমানে বাংলাদেশের ৯ হাজার ৫৬৫ জন শান্তিরক্ষী বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের ১০টি শান্তিরক্ষা মিশনে কর্মরত আছেন। শান্তিরক্ষা মিশনগুলোতে দায়িত্বপালনের সময় এ পর্যন্ত বাংলাদেশের ১২৩ জন শান্তিরক্ষী জীবন বিসর্জন দিয়েছেন এবং ১৬৫ জন শান্তিরক্ষী আহত হয়েছেন।
ব্রিগেডিয়ার আখতারুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা তাঁদের পেশাদারিত্ব, দৃঢ়তা ও মানবিক গুণাবলী প্রদর্শনের মাধ্যমে ‘রোল মডেল’ এ পরিণত হয়েছে। সাধারণ জনগণ ও শান্তিরক্ষীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে যুদ্ধরত বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে শান্তি স্থাপন করা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জপূর্ণ। এই বাস্তব অবস্থার সাথে খাপ খাওয়ানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ শান্তিরক্ষীদের জন্য একটি কার্যকর ও আধুনিক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট স্থাপন করেছে।
উপস্থাপনার পর প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। অংশগ্রহণকারীরা বাংলাদেশের বর্তমান আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করেন। তাঁরা বহুমুখী চ্যালেঞ্জ সত্তে¦ও বাংলাদেশের উন্নয়ন কৌশল সম্পর্কে জানতে চান। প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা ও স্থায়ী প্রতিনিধি তাঁদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।