বাংলাদেশ সোসাইটি ভবনে ৮৬ হাজার ডলারের লীন : বাড়ী হাত ছাড়া হওয়ার আশংকা
- প্রকাশের সময় : ০৯:২০:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৯
- / ২৫৪ বার পঠিত
হককথা ডেস্ক: নিউইয়র্কে বাংলাদেশীদের আমব্রেলা সংগঠন হিসেবে খ্যাত বাংলাদেশ সোসাইটি ভবনকে লীন আওতায় নিয়েছে সিটির ট্যাক্স বিভাগ। ইতোমধ্যেই এই লীন নিলামে বিক্রি হয়েছে বলে একজন রিয়েল এস্টেট ব্রোকার জানিয়েছেন। তবে সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি। সোসাইটির বেসমেন্ট ভাড়া ও সাইনবোর্ড সহ বিভিন্ন ভায়োলেশনের কারণে সোসাইটি ভবনকে জরিমান করা হয়েছে বিশাল অংকের এই অর্থ। জরিমানার পরিমাণ ৮৬ হাজার ডলারে উন্নীত হওয়ার পরও এবিষয়ে পদক্ষেপ না নেয়ায় পর্দার আড়ালে সোসাইটির কর্মকর্তাদের মধ্যে চলছে টাগ অব ওয়ার। আর দুশ্চিন্তায় ভুগছেন সচেতন সদস্যরা। প্রশ্ন উঠেছে সোসাইটি ভবন রক্ষা করা সম্ভব হবে কি না তা নিয়ে।
জানা গেছে, ২০০৯ সাল থেকে বিভিন্ন মেয়াদে সোসাইটি ভায়োলেশনের শিকার হয়েছে। এজন্য অভিজ্ঞ মহল সোসাইটির কর্মকর্তাদের গাফলতিকেই দায়ী করেছেন। পাশাপাশি সোসাইটির এক কর্মকর্তা অন্য কর্মকর্তাদের উপর দায় চাপিয়ে নিজেদের রক্ষা করা চেষ্টা করছেন বলে সংশ্লিস্ট সূত্রে জানা গেছে।
একটি সূত্রের মতে, সোসাইটির ভায়োলেশন লীন হয়ে গেছে। এই লীন কে বা কারা ক্রয় করেছে তা সোসাইটির কর্মকর্তারা অবহিত নন। ফলে সোসাইটির ঘর রক্ষা করাই সমস্যা দেখা দিয়েছে।
সোসাইটির ভবন সঙ্কট নিয়ে সভাপতি কামাল আহমেদ বলেন, সোসাইটির ভায়োলেশন আছে। এর অন্যতম হচ্ছে এর সাইনবোর্ড এবং একজন ভাড়াটিয়া ডাক্তার। যিনি আইন অমান্য করেই নিজের অফিসের জন্য রুম নির্মাণ করেছেন। এই ভায়োলেশন সমস্যা ২০০৯ থেকেই বিদ্যমান। এভাবে বিভিন্ন সময় নতুন টিকেট এসেছে। এভাবেই শেষমেষ জরিমানার পরিমান দাঁড়িয়েছে প্রায় ৮৬ হাজার ডলার।
সোসাইটির সভাপতি কামাল আহমদ বলেন, এই সমস্যা সমাধানে আইনজীবি নিয়োগ করা হয়েছে। আশা করছি সহসাই এই সমস্যা আমরা কাটিয়ে উঠতে পারবো।
এবিষয়ে সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমীন সিদ্দিকী বাংলা পত্রিকাকে বলেন, আমরা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত রয়েছি। তবে এ সংক্রান্ত অনেক চিঠি সময়মত হাতে না পাওয়ায় সমস্যা কিছুটা প্রকট হয়েছে। এছাড়া ভুল ঠিকানায় চিঠি যাওয়ার কারণে আমরা কিছুই পাইনি। এটাও সমস্যার অন্যতম কারণ। সমস্যা জানার পর আমরা সমস্যা সমাধানে আর্কিটেকচার ও আইজীবি নিয়োগ করেছি। এ মাসেই এবিষয়ে শুনানী অনুষ্ঠিত হবে। আশা করছি এর অনেকগুলোই মওকুফ হয়ে যাবে।
সোসাইটির সহ সভাপতি আব্দুর রহিমদ হাওলাদার বলেন, ২০০৯ সাল থেকেই ভায়োলেশন আছে। আমরা মাঝে মধ্যে কিছুটা দিয়েছি। কিছুটা রয়ে গেছে। এভাবেই এটা দিনে দিনে বেড়েছে। আমাদের সময় বিভিন্নভাবে ভায়োলেশন্স শেষ করা হয়েছে। পরে আবার এসেছে। ধারাবাহিকতার
বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সভাপতি এম এ আজিজ বলেন, আমাদের সময় আমরা আরো ১১ হাজার ডলার ট্যাক্স বিভাগ থেকে ফেরত নিয়ে এসের্ছিলাম। তখনকার সময়ে ভায়োলেশন সমূহ দেখভাল করা হয়েছে। এটাকে ছেড়ে দেয়া হয়নি।
পরবর্তীতে যত ভায়োলেশন হয়েছে তার ইস্যু ডেট দেখে সিদ্ধান্ত নেয়া উচিৎ। আমি মনে করি এর সমাধানও আছে। এজন্য সোসাইটি চাইলে আমি যেকোন সহযেগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছি।
তিনি বলেন, সোসাইটির একটি সংবিধান, গঠনতন্ত্র আছে। এটাকে মেনে নিয়েই সবাইকে কাজ করতে হবে।
সোসাইটির কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলী বলেন, সোসাইটির আয়-ব্যয়ের হিসাব রাখা ছাড়া মূলত: অন্য কোন দায়িত্ব আমার নেই। তবে সমস্যাগুলো আমি জেনেছি এবং এই সমস্যা সমাধানে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়েছেন বলেই জানি।
এদিকে মামলা-মোকদ্দমার পর সোসাইটির নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশন সহ সংশ্লিস্ট সবাই তৎপরতা শুরু করেছেন। তবে সদস্য/ভোটারদের মাঝে কোন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। নির্বাচন কমিশন আগামী ২০ অক্টোবর রোববার নির্বাচনের দিন ধার্য্য করেছে। সেই লক্ষ্যে তারা কাজ করে চলেছেন। নির্বাচনে গতি আনতে নির্বাচন কমিশন সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুই প্যানেলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সাথে নির্বাচন কমিশন বৈঠকে বসছে বলে জানা গেছে।
অপরদিকে সোসাইটির কার্যকরী পরিষদ নির্বাচন ঘিরে নড়েচড়ে বসতে শুরু করেছেন ইসি সহ প্রার্থীরা। সোমবার দুই প্যানেলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সাথে নির্বাচন কমিশন বৈঠকে বসছে বলে জানা গেছে। আগামী ২০ অক্টোবর সোসাইটির নির্বাচন হওয়ার কথা।
বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচনে ‘নয়ন-আলী’ ও ‘রব-সিদ্দিকী’ প্যানেল হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছে। অপরদিকে সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন স্বতন্ত্র হিসেবে প্রার্থী হয়েছেন। (বাংলা পত্রিকা)