বাংলাদেশী-আমেরিকানরা ভোট দিলেই বিজয় নিশ্চিত : মিজান চৌধুরীর দাবী
- প্রকাশের সময় : ০১:৪৩:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ জুন ২০১৮
- / ৭২৩ বার পঠিত
নিউইয়র্ক (ইউএনএ): আগামী ২৬ জুন মঙ্গলবার নিউইয়র্কে ইউএস কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্ট-৫ এর ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রাইমারী নির্বাচন। এই নির্বাচনে প্রথমবারের মতো লড়ছেন বাংলাদেশী-আমেরিকান মিজান চৌধুরী। নির্বাচনে মিজান সহ আরো তিন প্রার্থী রয়েছেন। মূলত: মিজান রহমান লড়ছেন বর্তমান কংগ্রেসমান গ্রেগরী মিক্স (ডেমক্র্যাট) এর বিরুদ্ধে। ইউএস কংগ্রেসের আসন্ন এই নির্বাচন খুবই গুরুত্ব পূর্ণ এবং কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্ট-৫ আসনের সকল বাংলাদেশী ভোটার দলমত নির্বিশেষে ভোট দিলে বিজয় নিশ্চিত বলে দাবী করেছেন প্রার্থী মিজান চৌধুরী। একজন বাংলাদেশী হিসেবে তিনি সকল বাংলদেশী-আমেরিকানদের কাছে তার ভোট প্রার্থনা করে বলেছেন এমন সুযোগ আগামী দিনে পাওয়া যাবে কিনা জানিনা। তবে সকল বাংলাদেশী-আমেরিকানরা ভোট দিলে অন্যান্য কমিউনির ভোট মিলিয়ে তিনি বিজয়ী হবেন। আর তার বিজয় বলে বাংলাদেশী কমিউনিটির বিজয় হবে, বাংলাদেশের বিজয় হবে। খবর ইউএনএ’র।
সিটির জ্যাকসন হাইটসের একটি রেষ্টুরেন্টে গত ১৯ জুন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আয়োজিত মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে মিজান চৌধুরী উপরোক্ত কথা বলেন। আগামী ২৬ জুন মঙ্গলবারের প্রাইমারী নির্বাচন ঘিরেই এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মিজান চৌধুরীর ক্যাম্পেইন কমিটির অন্যতম সদস্য মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। এরপর নির্বাচন বিষয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন মিজান চৌধুরীর ক্যাম্পেইন কমিটির ম্যানেজার এটর্নী সোমা সাঈদ ও চেয়ারম্যান ফখরুল আলম। অনুষ্ঠানে কমিউনিটি নেতৃবৃন্দের মধ্যে বাংলাদেশ সোসাইটি ইনক’র সাবেক সভাপতি কাজী আজহারুল ইসলাম মিলন, মূলধারার রাজনীতিক এডভোকেট মজিবুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামাই এসোসিয়েশন ইউএসএ’র সাবেক সভাপতি তাজুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ্য ও আগামী নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী মোহাম্মদ আলী, সোসাইটির স্কুল ও শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অহসান হাবীব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মিট দ্য প্রেস-এ মিজান চৌধুরী বলেন, ‘দিস দ্যা টাইম ফর চেঞ্জ’। অভিবাসীদের চাকুরী, অ্যাফোর্ডেবল হাউজ, ইমিগ্রেশন, অ্যাফোর্ডেবল হেলথ কেয়ার, ক্রিমিন্যাল জাসটিস সিস্টেম রিফর্ম, গান (অস্ত্র) কন্ট্রোল পলিসি প্রভৃতি এজন্ডা নিয়ে তিনি আসন্ন প্রাইমারীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তিনি দাবী করে বলেন, মূলধারার রাজনীতির সাথে দীর্ঘ দিন সম্পৃক্ত থাকার পাশাপাশি একজন আইটি ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে আমেরিকান প্রতিষ্ঠিত কোম্পানীর ম্যানেজারিয়াল পোষ্টে দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকেই নেতৃত্ব দেয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছি। এখন শুধু প্রয়োজন কমিউনিটির সমর্থন আর ভোট। তিনি বলেন, নিউইয়র্ক সিটির রিচমন্ডহীল, ফার রকওয়ে, ওজনপার্ক, জ্যামাইকা, কুইন্স ভিলেজ, রোজডেল ভিলেজ, স্টেট আলবান্স, লাউরেল্টন, রোজডেল, ভেলস্ট্রিীম, হলিস, জ্যামাইকা এস্টেট আর এলমন্ট এলাকা নিয়েই তার নির্বাচনী আসন। আর এসব এলাকায় বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশী-আমেরিকানের বসবাস। তাই আগামী নির্বাচনে তার জয় নিশ্চিত করতে বাংলাদেশীরা ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারেন। তিনি আরও বলেন, ব্যক্তিগতভাবে একজন অভিবাসী হওয়ায় সবকিছু আমার নখদর্পণে। তিনি নির্বাচিত হলে অন্যান্য কমিউনিটির পাশাপাশি বাংলাদেশী অভিবাসীদের অধিকার সুরক্ষায় অধিকতর কাজ করারও অঙ্গীকার করেন।
মিজান চৌধুরী বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকায় রেজিস্টার্ড ডেমোক্র্যাট ভোটারের মধ্যে কমপক্ষে ১৫ হাজার বাংলাদেশী-আমেরিকান ভোটার রয়েছেন। গত দুই টার্মের প্রাইমারীতে নির্বাচনে বর্তমান কংগ্রেসম্যান গ্রেগরী মিক্স ৭/৮ হাজার ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি বলেন, বিগত ২০১৪ সালের নির্বাচনে প্রাইমারীতে গ্রেগরী মিক্স ৮ হাজার এবং ২০১৬ সালের প্রাইমারীতে পান ৭০৫০ ভোট। অর্থাৎ অন্য কোন কমিউনিটির ভোট ছাড়াই শুধু বাংলাদেশী কমিউনিটির ভোট পেলেই তিনি (মিজান চৌধুরী) প্রাইমারিতে জয়ী হতে পারেন। মিজান চৌধুরী তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বি কংগ্রেসম্যান গ্রেগরী মিক্স-এর নানা কর্মকান্ডের কথা তুলে ধরে বলেন, নির্বাচনী এলাকার ভোটারদের সাথে তার যোগাযোগ না থাকায় চীনা, ভারতীয়, শ্রীলংকান, পাকিস্তানী, জ্যামাইকান, গায়নিজ, আফ্রিকান, মেক্সিকান, হেসিয়ানরাও মিক্সকে ঠেকাতে মাঠে নেমেছেন। তাই আগামী নির্বাচনে তার জয়ের সম্ভাবনাই দেখছেন বাংলাদেশী মিজান চৌধুরী। তিনি বলেন, সিভিক এসোসিয়েশন, কমিউনিটি ফাস্ট, নিউ আমেরিকান ইয়্যুথ ফোরাম প্রভৃতি সংগঠন ইতিমধ্যেই তাকে এন্ড্রোর্স করেছে।
মঙ্গলবারের প্রাইমারী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিকারী অপর প্রার্থী চর্ল এইচ. অ্যাচিল সম্পর্কে মিজান চৌধুরী বলেন, আসন্ন নির্বাচনে তার কোন তৎপরতা নেই। কংগ্রেশনাল ডিষ্ট্রিক্ট- এর নির্বাচনী সকল এলাকার সাথে আমার সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রয়েছে। এলাকার বিভিন্ন মসজিদ, মন্দির গির্জা, প্যাগোড সহ সকল কমিউনিটি নেতৃবৃন্দের সাথে আমার সভা-সমাবেশ হয়েছে এবং হচ্ছে। অর্থাৎ মাঠ এখন আমার পক্ষে। আর তাই ২৬ জুন মঙ্গলবার সকলে ভোট কেন্দ্রে গেলেই বাংলাদেশের বিজয় হবে। তিনি বলেন, ব্যক্তি মিজান নয়, এটি হচ্ছে বাংলাদেশীদের, বাংলাদেশের বিজয়ের নির্বাচন।
পরে মিজান চৌধুরী উপস্থিত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।