নিউইয়র্কে ইমাম আকুনজি ও তারা উদ্দীন হত্যার চুড়ান্ত রায় ২২ মার্চ বৃহস্পতিবার

- প্রকাশের সময় : ১১:২৬:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মার্চ ২০১৮
- / ১২৯৮ বার পঠিত
হককথা ডেস্ক: নিউইয়র্কে ইমাম আকুনজি ও তার সহযোগী তারা মিয়া হত্যা মামলার রায় চূড়ান্ত রূপ নিচ্ছে। প্রায় দুই বছর ধরে চলা মামলাটির যুক্তিতর্ক ও শুনানি শেষ হয়েছে মঙ্গলবার (২০ মার্চ)। কুইন্সের ক্রিমিনাল কোর্টে মাননীয় বিচারক উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক সহ শুনানির পর জুরী বোর্ডের মতামতের উপর ভিত্তি করে ২২শে মার্চ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় ফাইনাল রায়ের তারিখ নির্ধারণ করে শুনানি মুলতবী ঘোষণা করেছেন। এদিন কুইন্স ক্রিমিনাল কোর্টে হাজির ছিলেন অসংখ্য বাংলাদেশী। যাদের নেতৃত্বে ছিলেন ব্রুকলীন, ওজন পার্ক ও কুইন্স’সহ সিটির বিভিন্ন এলাকার বাংলাদেশী কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ। আদালতে উপস্থিত সবার প্রত্যাশা দু’জন বাংলাদেশীকে নির্মমভাবে হত্যাকান্ডে সরাসরি জড়িত খুনিকে সর্বোচ্চ সাজা দিবেন আদালত।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১৩ আগষ্ট নিউইয়র্কের ওজন পার্কে দুর্বৃত্তের গুলিত নিহত হন দুই বাংলাদেশী। ওইদিন ওজন পার্কের আল ফুরকান মসজিদ থেকে নামাজ শেষে বাসায় ফেরার পথেই নির্বিচারে গুলিবিদ্ধ হন ঐ মসজিদের ইমাম আকুনজি ও তার সহযোগী মুসল্লী তারা মিয়া। ঐ দিন দুপুর ১.৪৯ মিনিটের দিকে স্থানীয় ৭৯ স্ট্রিট আর লিবার্টীর কর্নারে এই হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়। ইমাম আকুনজি প্রতিদিনের ন্যায় দুপুরে জোহরের নামাজ পড়িয়ে মুসল্লী তারা মিয়াকে সাথে নিয়ে যখন তার নিজ বাসার দিকে ফিরছিলেন, ঠিক তখনই একজন কৃষ্ণাঙ্গ আকস্মিকভাবে পিছন দিক হতে এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়ে ইমাম সহ মুসলল্লীকে হত্যা করে। ইমাম ঘটনাস্থলেই মারা যান আর মুসল্লী তারা মিয়াকে হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
অভিযোগ উঠে মুসলিম বিদ্বেষ থেকেই হেইট-ক্রাইমের শিকার হয়েছিলেন বাংলাদেশী ইমাম ও তার সহযোগী। ঐ হত্যাকান্ডের ঘটনার পর ক্ষুব্ধ কমিউনিটি ন্যায় বিচারের দাবী জানান । মূলধারার গণমাধ্যম’সহ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের জোরালো অবস্থানের ফলে গ্রেফতার হয় ঘাতক। শেষে পর্যন্ত ইমাম আকুনজি ও তারা মিয়া হত্যা মামলার রায় চূড়ান্ত রূপ নিচ্ছে।
মঙ্গলবারের নিয়মিত এ শুনানির মামলার রায় ঘোষণা জন্য আগামী ২২ মার্চ নির্ধারণ করেন আদালত। কোনো কারণ ছাড়াই কমিউনিটির প্রিয় দু’জনকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়ে ছিল এমন দাবি সবার। কুইন্স ক্রিমিনাল কোর্টে উপস্থিত বাংলাদেশীদের বিশ্বাস রায়ে সর্বোচ্চ শাস্তি পাবে ঘাতক।
জানা গেছে, কুইন্স ক্রিমিনাল কোর্টে মরহুম ইমাম আলা উদ্দীন আকুনজি ও মুসল্লী তারা মিয়ার ঘাতক অস্কার মোরলেসকে হাজির করে তার হাতে সংঘটিত হত্যাকান্ডের বন্দুক সহ যাবতীয় যন্ত্রপাতি ও তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করা হয়। দীর্ঘদিন দফায় দফায় শুনানির পর মাননীয় বিচারক জুরী বোর্ডের গুরুত্বপূর্ণ মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে ২১ মার্চ (বুধবার) আবহাওয়া জনিত কারণে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ রেখে পরের দিন ২২ মার্চ বৃহস্পতিবার পরবর্তী দিন অর্থাৎ মামলার চুড়ান্ত রায় প্রদানের দিন নির্ধারণ করেন।
গত ২০ মার্চ দীর্ঘ শুনানিতে আদালতে উল্লেখযোগ্য নেতৃবৃন্দে মধ্যে মজলিসে শূরার মুহাম্মদ আবদুল্লাহ, ইকনার ইমাম জফির আলী, কেয়ারের সিস্টার আফাফা নাশীর, বাংলাদেশী কমিউনিটির মধ্যে মসজিদ আল আমানের সভাপতি কবীর চৌধুরী, মুফতী লুৎফুর রহমান ক্বাসিমী, আল ফুরকান মসজিদের ফারুক আহমদ, ফুলতলী জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা সুন্নাতুর রহমান, আলহাজ্ব আবদুল বারী, আলহাজ্ব গৌছ উদ্দীন, আনোয়ার খান সহ বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশী এবং মরহুমদের পরিবারের কয়েকজন সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।
ইমাম মাওলানা আলা উদ্দীন আকুনজির বাড়ী বৃহত্তর সিলেটের হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জে আর মসুল্লী মরহুম মুহাম্মাদ তারা মিয়ার বাড়ী সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার জাঙ্গাহাটা গ্রামে। হত্যাকান্ডের প্রায় দুই বছর পর চুড়ান্ত রায় হতে যাচ্ছে।
ইউনাইটেড ইমাম এন্ড উলামা কাউন্সিল ইউএস’র পক্ষ থেকে ২২ মার্চ বৃহস্পতিবার চুড়ান্ত রায়ের দিন সকল প্রবাসী বাংলাদেশীদেরকে কুইন্সের ক্রিমিনাল কোর্টে সকাল দশটায় উপস্থিত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।