নিউইয়র্ক ০৩:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

নিউইয়র্কে আইএফসি’র সভায় ফারাক্কা ইস্যুতে বাংলাদেশ সরকারকে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের দাবী

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৩:৫৬:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ এপ্রিল ২০১৯
  • / ৫৭৩ বার পঠিত

নিউইয়র্ক (ইউএনএ): ভারত-বাংলাদেশ চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ ফারাক্কার পানি না পাওয়ায় যৌথ রিভার কমিশনের কাছে আপত্তি জানিয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যে চিঠি দেয়া হয়েছে, সেই প্রেক্ষিতে করণীয় নির্ধারণের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটি (আইএফসি), নিউইয়র্ক গত ৬ এপ্রিল শনিবার এক মতবিনিময় সভা করেছে। সভায় ফারাক্কা ইস্যুতে সৃষ্ট সমস্যা সমাধানের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের জোড় দাবী জানিয়ে বলা হয় যে, ‘নদী-পানির অধিকারের দাবীতে গোটা জাতী আজ ঐক্যবদ্ধ’।
সিটির জ্যাকসন হাইটসে এদিন সন্ধ্যায় আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ত্ব করেন আইএফসি’র চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান সালু এবং সভা পরিচালনা করেন সংগঠনের সেক্রেটারী জেনারেল সৈয়জদ টিপু সুলতান। সভায় আলোচনায় অংশ নেন বিশিষ্ট সাংবাদিক মঈনুদ্দীন নাসের, আইএফসি’র সহ সভাপতি আলী ইমাম শিকদার ও সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ হোসেন খান সহ কমিউনিটি অ্যাক্টিভিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার ফরহাদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশন ইউএসএ’র সাবেক সভাপতি তাজুল ইসলাম, কমিউনিটি নেতা আবু তালেব চৌধুরী চান্দু, কাজী আজম, এডভোকেট মনির হোসেন, মাকসুদুল হক চৌধুরী প্রমুখ। খবর ইউএনএ’র।
সভায় বাংলাদেশের বিশিষ্ট সাংবাদিক ও লেখক গুরুতর অসুস্থ মাহফুজ উল্লাহ এবং আইএফসি’র অন্যতম সহ সভাপতি অসুস্থ অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেনের দ্রুত সুস্থ্যতা কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়।
সভায় ২০২৬ সালে ফারাক্কা চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই অববাহিকা তথা নদ-নদী ভিত্তিক পানির ন্যায্য ও সুষম বন্টন এবং এই সব চুক্তিতে আরবিট্রেশনের ব্যবস্থাসহ ‘গ্যারান্টি ক্লজ’ অন্তর্ভূক্ত রাখা, ভারতের নদ-নদীর উৎসমুখ থেকে বঙ্গপোসাগর পর্যন্ত পানি প্রবাহের বন্টন নিশ্চিত করার দাবী জানিয়ে বলা হয়, এজন্য দ্বিপাক্ষিক আলোচনা এখন থেকেই জোরদার করতে হবে। ভারত বাংলাদেশ উভয় দেশের স্বার্থেই যৌথ নদীগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। ড্যাম ও ব্যারেজ নির্ভর পানি ব্যবস্থাপনার জন্য ভারতের অভ্যন্তরে সবার মাটি নদী শুকিয়ে গেছে। কাবেরি নদী নিয়ে কর্নাটক ও তামিল নাড়ুর মধ্যে পানি-যুদ্ধের আর দরকার হবেনা। কারন পানি প্রবাহ থাকলেই তো যুদ্ধ। উজান থেকে বয়ে আসা কিছু নদীর প্রবাহ চুরি করার কারণে গঙ্গায় যৎসামান্য প্রবাহ এখনো থকলেও আচিরেই অপরিনামদর্শি ব্যবস্থাপনার জন্য তা নিঃশেষ হয়ে যাবে। কারণ ফারক্কা চুক্তির ক্ষেত্রে ফারাক্কা পয়েন্টে পানি আসার পূর্বেই উজানে পানি প্রত্যাহারের ফলে বাংলাদেশ অংশে পানি না আসার কারণেই নতুন চুক্তিতে উপরোক্ত ব্যবস্থা রাখা উচিৎ বলে বক্তারা অভিমত ব্যক্ত করেন।
বক্তারা বলেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সিন্ধু নদের পানি বন্টনের যে চুক্তি হয় বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যেও সেই ধরণের চুক্তির নীতিমালা অনুসরণ করা উচিৎ।
সভায় গঙ্গার পানি প্রবাহ কমে যাওয়ায় যৌথ নদী কমিশনে প্রতিবাদ জানানোয় বাংলাদেশ সরকারকে অভিনন্দন জানিয়ে বলা হয়, তবে খোদ ভারতের পানি বিশেষজ্ঞরা বলেছেন ক্রমাগত প্রবাহ হারিয়ে একসময়ের প্রমত্তা গঙ্গা শুকিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশে এখন গঙ্গার পানি আসেনা। তলানির যে প্রবাহ ফারাক্কা থেকে পশ্চিমবঙ্গের দিকে গতি পরিবর্তন করে নেয়া হয় তা নেপাল থেকে নেমে আসা কিছু নদীর এবং তিস্তার গজল ডোবা থেকে সরিয়ে নেয়া পানির অংশ। সামনে দিন আসছে ফারাক্কায় আর প্রবাহ থাকবেনা বন্টনের জন্য।
বক্তারা বলেন, ড্যাম, ব্যারেজ তুলে নিয়ে নদীতে ভারসাম্যপূর্ণ প্রবাহ অব্যহত রেখে সাগর পর্যন্ত জীবিত রাখলেই নদীর স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনা সম্ভব। নদী প্রবাহমান থাকলে উজান-ভাটির সকল মানুষ তার উপকারিতা পাবে। প্রয়োজন শুধু সার্বিক টেকসই ব্যবস্থাপনা। ভাটির দেশ হিসেবে বেশী আক্রান্ত বাংলাদেশকেই এব্যাপারে উদ্যোগ নিতে হবে। আমরা বাংলাদেশ সরকারকে কাল বিলম্ব না করে সকল যৌথনদী সাগর পর্যন্ত প্রবাহমান রাখার স্বার্থে স্বোচ্চার হবার জন্য আহবান জানাই।
সভায় বাংলাদেশের নদী-পানির অধিকারের দাবীতে আগামীতে ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটাল হীলে স্মারকলিপি প্রদান, জাতিসংঘের সামনে ও ম্যানহাটানের টাইমস স্কয়ারে সমাবেশ করারও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

About Author Information

নিউইয়র্কে আইএফসি’র সভায় ফারাক্কা ইস্যুতে বাংলাদেশ সরকারকে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের দাবী

প্রকাশের সময় : ০৩:৫৬:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ এপ্রিল ২০১৯

নিউইয়র্ক (ইউএনএ): ভারত-বাংলাদেশ চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ ফারাক্কার পানি না পাওয়ায় যৌথ রিভার কমিশনের কাছে আপত্তি জানিয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যে চিঠি দেয়া হয়েছে, সেই প্রেক্ষিতে করণীয় নির্ধারণের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটি (আইএফসি), নিউইয়র্ক গত ৬ এপ্রিল শনিবার এক মতবিনিময় সভা করেছে। সভায় ফারাক্কা ইস্যুতে সৃষ্ট সমস্যা সমাধানের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের জোড় দাবী জানিয়ে বলা হয় যে, ‘নদী-পানির অধিকারের দাবীতে গোটা জাতী আজ ঐক্যবদ্ধ’।
সিটির জ্যাকসন হাইটসে এদিন সন্ধ্যায় আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ত্ব করেন আইএফসি’র চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান সালু এবং সভা পরিচালনা করেন সংগঠনের সেক্রেটারী জেনারেল সৈয়জদ টিপু সুলতান। সভায় আলোচনায় অংশ নেন বিশিষ্ট সাংবাদিক মঈনুদ্দীন নাসের, আইএফসি’র সহ সভাপতি আলী ইমাম শিকদার ও সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ হোসেন খান সহ কমিউনিটি অ্যাক্টিভিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার ফরহাদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশন ইউএসএ’র সাবেক সভাপতি তাজুল ইসলাম, কমিউনিটি নেতা আবু তালেব চৌধুরী চান্দু, কাজী আজম, এডভোকেট মনির হোসেন, মাকসুদুল হক চৌধুরী প্রমুখ। খবর ইউএনএ’র।
সভায় বাংলাদেশের বিশিষ্ট সাংবাদিক ও লেখক গুরুতর অসুস্থ মাহফুজ উল্লাহ এবং আইএফসি’র অন্যতম সহ সভাপতি অসুস্থ অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেনের দ্রুত সুস্থ্যতা কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়।
সভায় ২০২৬ সালে ফারাক্কা চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই অববাহিকা তথা নদ-নদী ভিত্তিক পানির ন্যায্য ও সুষম বন্টন এবং এই সব চুক্তিতে আরবিট্রেশনের ব্যবস্থাসহ ‘গ্যারান্টি ক্লজ’ অন্তর্ভূক্ত রাখা, ভারতের নদ-নদীর উৎসমুখ থেকে বঙ্গপোসাগর পর্যন্ত পানি প্রবাহের বন্টন নিশ্চিত করার দাবী জানিয়ে বলা হয়, এজন্য দ্বিপাক্ষিক আলোচনা এখন থেকেই জোরদার করতে হবে। ভারত বাংলাদেশ উভয় দেশের স্বার্থেই যৌথ নদীগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। ড্যাম ও ব্যারেজ নির্ভর পানি ব্যবস্থাপনার জন্য ভারতের অভ্যন্তরে সবার মাটি নদী শুকিয়ে গেছে। কাবেরি নদী নিয়ে কর্নাটক ও তামিল নাড়ুর মধ্যে পানি-যুদ্ধের আর দরকার হবেনা। কারন পানি প্রবাহ থাকলেই তো যুদ্ধ। উজান থেকে বয়ে আসা কিছু নদীর প্রবাহ চুরি করার কারণে গঙ্গায় যৎসামান্য প্রবাহ এখনো থকলেও আচিরেই অপরিনামদর্শি ব্যবস্থাপনার জন্য তা নিঃশেষ হয়ে যাবে। কারণ ফারক্কা চুক্তির ক্ষেত্রে ফারাক্কা পয়েন্টে পানি আসার পূর্বেই উজানে পানি প্রত্যাহারের ফলে বাংলাদেশ অংশে পানি না আসার কারণেই নতুন চুক্তিতে উপরোক্ত ব্যবস্থা রাখা উচিৎ বলে বক্তারা অভিমত ব্যক্ত করেন।
বক্তারা বলেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সিন্ধু নদের পানি বন্টনের যে চুক্তি হয় বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যেও সেই ধরণের চুক্তির নীতিমালা অনুসরণ করা উচিৎ।
সভায় গঙ্গার পানি প্রবাহ কমে যাওয়ায় যৌথ নদী কমিশনে প্রতিবাদ জানানোয় বাংলাদেশ সরকারকে অভিনন্দন জানিয়ে বলা হয়, তবে খোদ ভারতের পানি বিশেষজ্ঞরা বলেছেন ক্রমাগত প্রবাহ হারিয়ে একসময়ের প্রমত্তা গঙ্গা শুকিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশে এখন গঙ্গার পানি আসেনা। তলানির যে প্রবাহ ফারাক্কা থেকে পশ্চিমবঙ্গের দিকে গতি পরিবর্তন করে নেয়া হয় তা নেপাল থেকে নেমে আসা কিছু নদীর এবং তিস্তার গজল ডোবা থেকে সরিয়ে নেয়া পানির অংশ। সামনে দিন আসছে ফারাক্কায় আর প্রবাহ থাকবেনা বন্টনের জন্য।
বক্তারা বলেন, ড্যাম, ব্যারেজ তুলে নিয়ে নদীতে ভারসাম্যপূর্ণ প্রবাহ অব্যহত রেখে সাগর পর্যন্ত জীবিত রাখলেই নদীর স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনা সম্ভব। নদী প্রবাহমান থাকলে উজান-ভাটির সকল মানুষ তার উপকারিতা পাবে। প্রয়োজন শুধু সার্বিক টেকসই ব্যবস্থাপনা। ভাটির দেশ হিসেবে বেশী আক্রান্ত বাংলাদেশকেই এব্যাপারে উদ্যোগ নিতে হবে। আমরা বাংলাদেশ সরকারকে কাল বিলম্ব না করে সকল যৌথনদী সাগর পর্যন্ত প্রবাহমান রাখার স্বার্থে স্বোচ্চার হবার জন্য আহবান জানাই।
সভায় বাংলাদেশের নদী-পানির অধিকারের দাবীতে আগামীতে ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটাল হীলে স্মারকলিপি প্রদান, জাতিসংঘের সামনে ও ম্যানহাটানের টাইমস স্কয়ারে সমাবেশ করারও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।