নিউইয়র্ক ০৬:৫২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

নানা আয়োজনে উত্তর আমেরিকায় একুশের অনুষ্ঠান

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১১:৫৩:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২১
  • / ৩ বার পঠিত

হককথা ডেস্ক: মহান একুশে ফেব্রæয়ারী তথা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস যেন উত্তর জুড়ে যথাযোগ্য মর্যাদা ও বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে পালিত হয়েছে। একুশ উপলক্ষ্যে ওয়াশিংটন ডিস্থি বাংলাদেশ দূতাবাস, জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশন এবং বাংলাদেশ কনস্যুলেট সহ বিভিন্ন সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচী গ্রহণ করে। বরারের মতো মুক্তধারা ফাউন্ডেশন ও বাঙালীর চেতনা মঞ্চ বাংলাদেশ সময় একুশের প্রথম প্রহরে (স্থানীয় সময় ২০ ফেব্রæয়ারী বেলা ১টা) জাতিসংঘ ভবনের সামনে অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মান করে ভাষা শহীদদের প্রত শ্রদ্ধা নিবেদন করে। এতে সর্বস্তরের প্রবাসী বাংলাদেশীরা অংশ নেন। এদিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনে ইউএস কংগ্রেসে একটি রেজল্যুশন উত্থাপন করেছেন কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং। নিউইয়র্কের ডিস্ট্রিক্ট ৬ থেকে নির্বাচিত ডেমোক্রেট এই আইনপ্রণেতা গত ১৮ ফেব্রæয়ারী বৃহস্পতিবার ইউএস কংগ্রেসে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব তুলে ধরেন।
জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা বা ইউনেস্কো ১৯৯৯ সালে মহান ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিবাহী ২১ ফেব্রæয়ারীকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। জাতিসংঘও দিনটি পালনের সিদ্ধান্ত নিলেও পৃথিবীর অনেক দেশে এখনো দিনটি সেইভাবে পালিত হয় না।
কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং

বাংলাদেশী অধ্যুষিত নিউইয়র্কের কুইন্স থেকে নির্বাচিত কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং তার রেজল্যুশনের বিষয়ে পরে একটি ভিডিও বিবৃতিতে বলেছেন, তার লক্ষ্য হচ্ছে আমেরিকার মানুষ যেন দিনটিকে ঠিকভাবে বুঝতে পারে এবং বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে পালনও করে। গত চারটি কংগ্রেসে তিনি এমন রেজল্যুশন তুলে ধরেছেন।
তিনি বলেন, ‘আরো বেশি আমেরিকানের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এবং এই দিনটি পালনের তাৎপর্য সম্পর্কে জানা উচিত। আমার রেজল্যুশনটি সেই সচেতনতা বাড়াতে সহায়তা করবে বলে আশা করছি’।
তিনি ১৯৫২ সালে মহান ভাষা আন্দোলনে শহীদদের স্মরণ করেন। তিনি তার বিবৃতিতে বলেন, ‘ইউনেস্কো সারা পৃথিবীর মানুষের ভাষার অধিকার রক্ষার জন্যে ২১ ফেব্রæয়ারীকে স্বীকৃতি দিয়েছে। তবে বাংলাদেশের মানুষের কাছে এই দিনটির মর্যাদা একটু ভিন্ন।’ তিনি উল্লেখ করেন বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে সেদিন ছাত্ররা পাকিস্তানি শাসকদের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন করে গড়ে তুলেছিলেন। অনেকে জীবনও দিয়েছেন।
গ্রেস মেং উল্লেখ করেন, পরিচর্যার অভাবে পৃথিবী থেকে প্রায় দুই হাজার ভাষা বিলুপ্ত হওয়ার পথে। যুক্তরাষ্ট্রের আদমশুমারির তথ্য তুলে ধরেন তিনি বলেন, ‘আমেরিকার সৌন্দর্যই হচ্ছে এর বৈচিত্র্য। এখানে ৩৮১টি ভাষায় মানুষ কথা বলে। ফলে আমেরিকায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের গুরুত্ব আরো বেশি।’
ভবিষ্যতেও তিনি এমন প্রচেষ্টা আরো চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রæতি দেন। এই কাজে অগ্রণী ভূমিকা রাখার জন্যে তিনি মুক্তধারা ফাউন্ডেশনকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান। এর আগে এই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগেই ২০১৫ সালে নিউইয়র্ক স্টেটের আইনসভা প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের জন্যে একটি রেজল্যুশন পাস করেছিল। এবারো স্টেট সিনেটর জেসিকা রামোস এর উদ্যোগে যা নবায়ন করা হয়েছে।
মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা বিশ্বজিৎ সাহা জানিয়েছেন, গ্রেস ম্যাং-এর রেজল্যুশন উত্থাপনের ঘটনা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলা ভাষা ও আমাদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় আরো একটি ধাপ এগিয়ে গেল। তিনি বলেন, ‘আমরা ১৯৯২ সাল থেকে জাতিসংঘের সামনে একুশে ফেব্রæয়ারী পালন করে আসছি। এ বছর সেই কর্মসূচির ৩০ বছর পূর্ণ হচ্ছে। ২০১৬ সালে সেখানে মাসব্যাপী ভাস্কর্য প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করেছিলাম। ওই বছরই ইউএস পোস্টাল সার্ভিস আমাদের উদ্যোগেই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্মারক ডাকটিকেট প্রকাশ করে। নিউইয়র্কসহ আমেরিকার আইন সভায় এ সংক্রান্ত রেজল্যুশন পাশের ক্ষেত্রেও আমাদের ধারাবাহিক উদ্যোগ ছিল এবং ভবিষ্যতেও থাকবে’।
একুশের প্রথম প্রহরে জাতিসংঘের সামনে
প্রতি বছরের মতো এবারও নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সামনে অস্থায়ী শহীদ বেদীতে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করেছে প্রবাসী বাংলাদেশীরা। আয়োজকরা জানান, বাংলাদেশে একুশের প্রথম প্রহরের সঙ্গে মিল রেখে নিউইয়র্ক স্থানীয় সময় শনিবার (২০ ফেব্রæয়ারী) দুপুর ১টা ১ মিনিটে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ছুটে আসেন শতাধিক প্রবাসী বাংলাদেশী।
করোনা মহামারির মধ্যে এবার ভিন্ন আবহে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। নিউইয়র্ক সিটির স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকলেই পুষ্পাঞ্জলি প্রদানে অংশ নেন। এমনকি নিউইয়র্কের বৈরি আবহাওয়াও তাতে বাধা হতে পারেনি। প্রতি বছরের মতো এ বছরও উপস্থিত সর্বকনিষ্ঠ শিশু প্রথমে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে। এরপর বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, রাজনৈতিক দল, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়। মুক্তধারা ফাউন্ডেশন ও বাঙালীর চেতনা মঞ্চ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এবার নিয়ে ৩০ বছর ধরে তারা জাতিসংঘের সামনে শ্রদ্ধা নিবেদন অনুষ্ঠান করে আসছে।
এছাড়া এবার মুক্তধারা একুশে স্মরণে বিশেষ স্মারক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। অনলাইনে প্রচারিত এই ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মধ্যে থাকছে অমর একুশের গান রচয়িতা আবদুল গাফফার চৌধুরীর সঙ্গে নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধিদের আলাপচারিতা, একুশ থেকে একাত্তর। আবদুল গাফফার চৌধুরী লন্ডন থেকে এই অনুষ্ঠানে যুক্ত থাকছেন। হাসান ফেরদৌসের সঞ্চালনায় নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধি হিসেবে থাকছে সুশনা চৌধুরী, চন্দ্রিমা দে ও নাফিউল বারী।
অনুষ্ঠানের আরো থাকবে ১৯৯২ সাল থেকে গত ৩০ বছর একটানা মুক্তধারা ফাউন্ডেশন ও বাঙালীর চেতনা মঞ্চ জাতিসংঘের সামনে একুশে ফেব্রæয়ারী ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপনে যে আয়োজন করেছে তার ওপর ভিত্তি করে একটি প্রামাণ্য চিত্র। আরো থাকবে ‘কৃষ্ণচূড়ার গান’ এর লেখক ও গায়ক তাজুল ইমামের সঙ্গে আলাপচারিতা। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালন করেন সালমা বাণী। এছাড়া কবিতা পাঠসহ অন্যান্য আয়োজনও রয়েছে।
জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন
নিউইয়র্ক: যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করা হয়। এ উপলক্ষে ২১ ফেব্রæয়ারী রোববার মিশনস্থ বঙ্গবন্ধু অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানের শুরুতে মহান একুশের ভাষা শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এর আগে প্রভাত ফেরীর মাধ্যমে অডিটোরিয়ামটিতে স্থাপিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পন করা হয়। অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ এবং মহান একুশের ভাষা শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে একটি প্রামাণ্য ভিডিও চিত্র প্রদর্শণ করা হয়।
অনুষ্ঠানটির আলোচনা পর্ব শুরু হয় জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমার স্বাগত ভাষণের মধ্য দিয়ে। স্বাগত ভাষণে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য “শিক্ষায় এবং সমাজে বহুভাষার অন্তভূক্তি সযতেœ লালন করি” উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, “বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন জাতিসংঘসহ সকল আন্তর্জাতিক ফেরামে বহুভাষিকতাকে এগিয়ে নিতে সর্বাত্তক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকবে”।
ভাষণের শুরুতেই তিনি বাহান্নের ভাষাশহীদ এবং ভাষা আন্দোলনের পথিকৃৎ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, “১৯৪৮ সালে বঙ্গবন্ধুর প্রস্তাবে ছাত্রলীগ, তমদ্দুন মজলিশ ও অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত হয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ। এই পরিষদই ভাষা আন্দোলনকে বেগবান করে। জাতির পিতা ভাষা আন্দোলন করতে গিয়ে বার বার গ্রেফতার হয়েছেন। জেলে থেকে ভাষা আন্দোলনের দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন। সেই দুর্বার আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রæয়ারী শাসকগোষ্ঠীর জারি করা ১৪৪ ধারা ভাঙতে গিয়ে প্রাণ দিয়েছিলেন ভাষা শহীদগণ”।
ভাষা আন্দোলনের পথ ধরেই কীভাবে জাতির পিতার নেতৃত্বে বাঙালী জাতি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করে সে প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্বে জাতিসংঘসহ বিশ্ব পরিমন্ডলে বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তা তুলে ধরেন তিনি। বাংলাদেশের জন্য কোভিড-১৯ এর টিকা সংগ্রহের ক্ষেত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন এবং চলমান টিকা প্রদান কর্মসূচিতে সরকার যে সফলতা দেখিয়েছে তা সারা বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে মর্মে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। তিনি বলেন, “বিশ্বের ২৫ কোটি মানুষের ভাষা বাংলাকে জাতিসংঘের অন্যতম দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি লাভের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘে যে প্রস্তাবনা রেখেছেন তা বাস্তবায়নে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে”।
প্রবাসে বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মের মধ্যে বাংলা ভাষা উজ্জ্বীবিত রাখতে পরিবার এবং কমিউনিটিতে বাংলার শুদ্ধ চর্চা অব্যাহত রাখতে প্রবাসী বাঙালীদের প্রতি আহŸান জানান রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। উন্মুক্ত আলোচনা পর্বে অংশ নেন মিশনের সকল স্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারিবৃন্দ। কোভিড-১৯ জনিত স্থানীয় বিধিনিষেধ অনুযায়ী সামাজিক দুরত্ব মেনে সীমিত পরিসরে অনুষ্ঠানটি উদযাপন করা হয়।
উল্লেখ্য, সোমবার (২২ ফেব্রæয়ারী) ভার্চুয়ালভাবে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন, জাতিসংঘ সদরদপ্তর ও ইউনেস্কো এবং জাতিসংঘে নিযুক্ত ব্রাজিল, কানাডা, মিশর, জর্ডান, লিথুনিয়া এবং নিউজল্যান্ড মিশনের যৌথ উদ্যোগে উদযাপিত হতে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের জাতিসংঘ ভিত্তিক উদযাপন। এদিন বেলা ১২:০০ থেকে ১৩:৩০ পর্যন্ত অনুষ্ঠিতব্য এই অনুষ্ঠান জাতিসংঘ ওয়েভ টিভিতে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। -প্রেস বিজ্ঞপ্তি।
বাংলাদেশী আমেরিকান কালচারাল এসোসিয়েশন
অমর একুশে ফেব্রæয়ারী ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের বুকে বাংলা ভাষাভাষীদের অন্যতম বৃহত্তম সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন বাংলাদেশী আমেরিকান কালচারাল এসোসিয়েশনের উদ্যোগে আয়োজিত সফল ভার্চুয়াল অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। সংগঠনের সভাপতি আহবাব চৌধুরী খোকনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সারওয়ার চৌধুরীর সঞ্চালনায় এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সাবেক সদস্য এম এম শাহীন। বিশেষ অতিথি ছিলেন আগামী নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিল নির্বাচনে ডিস্ট্রিক ১৮ থেকে কাউন্সিলর প্রার্থী মোহাম্মদ এন মজুমদার, সংগঠনের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি আব্দুল হাসিম হাসনু।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মাওলানা উবায়েদ আনসারী। এরপর শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন একুশ আয়োজন কমিটির আহবায়ক ও সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাকসুদা আহমেদ। অনুষ্ঠানে অথিতি হিসেবে সংযুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব ইউএসএ’র সাবেক সহ সভাপতি আজিমুর রহমান বুরহান, বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ কামাল উদ্দিন, বাংলাদেশ সোসাইটি অব ইউএসএ’র সাবেক সহ সাধারণ সম্পাদক সিরাজ উদ্দিন আহমদ সোহাগ, ফেঞ্চুগঞ্জ অর্গানাইজেশন অব ইউএসএ’র সভাপতি জুনেদ আহমেদ চৌধুরী, জামাইকা মুসলিম সেন্টারের সেক্রেটারী মনজুর চৌধুরী, বাংলাদেশ সোসাইটি অব ব্রঙ্কসের সাবেক সভাপতি মাহবুবুল আলম, বিশিষ্ট রাজনীতিক আবু সাঈদ আহমেদ, সিলেট বিভাগ উন্নয়ন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ফারুক চৌধুরী, সিলেট সদর এসোসিয়েশনের সভাপতি দেওয়ান শাহেদ চৌধুরী, হৃদয়ে বাংলাদেশ-এর সভাপতি সাইদুর রহমান লিঙ্কন, জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব ইউএসএ’র সহ সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মানিক আহমদ, সাহিত্য সম্পাদক শরীফুল হক মনজু, সাবেক প্রচার সম্পাদক জাবেদ আহমদ, শ্রীমঙ্গল এসোসিয়েশন অব ইউএসএর সভাপতি মামুনুর রশিদ শিপু, কুলাউড়া এসোসিয়েশন অব নিউজার্সীর সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোদাব্বির চৌধুরী সুলেমান, প্রবাসী ভয়েজের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা উবায়েদ আনসারী, ওসমানীনগর এসোসিয়েশন অব ইউএসএ’র সভাপতি বশির উদ্দিন, সিনিয়র সহ সভাপতি ফখরুল চৌধুরী মিসলু, এসেনশিয়াল হোম কেয়ারের ব্রঙ্কস পরিচালক জালাল চৌধুরী, ব্রঙ্কস সোসাইটি অব ইউএসএ’র সভাপতি সামাদ মিয়া জাকের, বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ নাসির উদ্দিন, বিশিষ্ট কবি, লেখক মাসুম আহমেদ, হাবিবুর রহমান সংগঠনের পক্ষে বক্তব্য রাখেন কার্যকরী পরিষদ সদস্য, বিশিষ্ট সাংবাদিক সৈয়দ ইলিয়াস খসরু, সহ সভাপতি লোকমান হোসেন লুকু, মোহাম্মদ সাদী মিন্টু, ফয়সল আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির শামীম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ কামাল উদ্দিন, কোষাধক্ষ্য কবি শাহ বদরুজ্জামান রুহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক এম ডি আলাউদ্দিন, প্রচার ও গণ সংযোগ সম্পাদক সোহেল আহমদ, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক চৌধুরী মোমিত তানিম, স্কুল ও সমাজ সেবা সম্পাদক সালমা সুমি উপস্থিত ছিলেন কার্যকরী পরিষদ সদস্য শহীদুল ইসলাম, এ করিম রনি।
কবিতা আবৃত্তি করেন বিশিষ্ট আবৃত্তিকার কবি গোপন সাহা, সংগঠনের সহ সভাপতি রেহানুজ্জামা রেহান, সাহিত্য সম্পাদক বিশিষ্ট কবি হাবীব ফয়েজী, কবি মাকসুদা আহমেদ, হৃদয়ে বাংলাদেশ-এর সাধারণ সম্পাদক পল্লব সরকার, সালমা সুমি।
অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী শাহ মাহবুব ও শারমিন তানিয়া।
অনুষ্ঠানের সফল সমাপ্তি মুহুর্তে সংগঠনের সভাপতি আহবাব চৌধুরী খোকন সবার প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা পপ্রকাশ করে বক্তব্য প্রদানের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে সংগঠনের সদস্যরা সকল ভাষা সৈনিকদের প্রতি সম্মান জানিয়ে ব্রঙ্কসের বাংলা বাজারে নির্মিত শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় পার্টি
নিউইয়র্কঃ গত ২০ ফেব্ররুয়ারী রাত ১২:০১ টায় নিউইয়র্কে জাতীয় পার্টি যুক্তরাষ্ট্র শাখার উদ্যোগে মহান একুশে ফেব্রæয়রী আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস উপলক্ষে সকল শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে পুষ্প অর্পন করেন। জাতীয় পার্টি যুক্তরাষ্ট্র শাখার সভাপতি হাজী আবদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক আবু তালেব চৌধুরী চান্দু সহ অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য লিয়াকত আলী, জাপার সিনিয়র উপদেষ্টা সৈয়দ শওকত আলী, উপদেষ্টা গিয়াস মজুমদার, উপদেষ্টা মাহাবুর রহমান চৌধুরী, সিনিয়ার সহ সভাপতি জসিম উদ্দিন চৌধুরী, সহ সভাপতি ও কেন্দ্রিয় সদস্য এডভোকেট হারিস উদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসেফবারী টুটুল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় সদস্য মোঃ লুৎফর রহমান, যুগ্ম প্রচার সম্পাদক ফেরদৌস ওয়াহিদ, নিউইয়র্ক স্টেট জাপার সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ হাসান মিলন, যুক্তরাষ্ট্র জাপা’র মহিলা সম্পাদক জেসমিন আকতার চৌধরী ও মীর কাশেম।
এসময় সভাপতি হাজী আব্দুর রহমান গভীর শ্রদ্ধার সাথে ভাষা সৈনিকসহ সকল শহীদের স্মরণ করেন। তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শহীদ মিনার স্থাপনের ক্ষেত্রে প্রবাসীদের আন্তরিক প্রচেষ্টা ও বলিষ্ঠ ভূমিকার কথাও তুলে ধরেন। -প্রেস বিজ্ঞপ্তি।
যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগ
নিউইয়র্ক: নিউইয়র্কের ব্রঙ্কসে নির্মিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ যুক্তরাষ্ট্র শাখা ও নিউইয়র্ক ষ্টেট শাখার যৌথ উদ্যোগে ২১ ফেব্রæয়ারী রাত ১২:১ মিনিটের প্রথম প্রহরে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি বিন¤্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছে।
এসময় যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগের নেত্রীবৃন্দের মধ্য উপস্হিত ছিলেন যুগ্ন আহবায়ক যথাক্রমে শেখ জামাল হোসেন, ইফজাল চৌধুরী, রিন্টু লাল দাস, সদস্য নুরুল ইসলাম, সাদিকুর রহমান, মোশাহিদ চৌধুরী, শাহিন কামলী, নিউইয়র্ক ষ্টেট যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শোয়েব আহমদ, যুগ্ন সম্পাদক আল মামুন সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান চৌধুরী। এছাড়াও অন্যান্যর মধ্যে যুবলীগ নেতা সেলিম রেজা, শফিকুর রহমান, রূপচান মিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। -প্রেস বিজ্ঞপ্তি।
জর্জিয়ায় সম্মিলিত পরিষদ
মনজিলুর রহমান, আটলান্টা (জর্জিয়া) থেকে জানানঃ গভীর শ্রদ্ধা এবং ভাব গাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে জর্জিয়ায় অমর একুশে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করেছে জর্জিয়া প্রবাসী বাংলাদেশীরা।
জর্জিয়ার সম্মিলিত পরিষদের উদ্যোগ স্থানীয় একটি রেস্তোরার হল রুমে ২০ ফেব্রæয়ারী দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে হিম শীতল ঠান্ডার মধ্যে ভাষা শহীদের স্মরণে নির্মিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে পুস্পাঞ্জলি প্রদান করে মহান এই ভাষা দিবসের শ্রদ্ধা নিবেদন করে। এ সময় সমবেত কন্ঠে ভরাট গলায় চলতে কন্ঠে একুশের সেই চিরজীবি গান- ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রæয়ারী, আমি কি ভুলিতে পারি……?’
অনুষ্ঠানে উল্লেখযোগ্য যেসব সংগঠন পুস্পাঞ্জলি প্রদান করে তার হলো, জর্জিয়া আওয়ামী লীগ ও জর্জিয়া বিএনপির একাংশ, জর্জিয়া যুব লীগ, বঙ্গবন্ধু পরিষদ জর্জিয়া, জর্জিয়া সোস্যাল এন্ড কালচারাল অর্গানাইজেশন, সিএম টিভি, অ্যাসেল জর্জিয়া প্রভৃতি সংগঠন।
পুস্পাঞ্জলি প্রদানের আগে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহীদ দিবসের তাৎপর্য উল্লেখ করে উত্তম দের পরিচালনায় ও ইলিয়াস হাসানের উপস্থাপনায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনায় অংশ নেন কায়েদুজ্জামান, মিনার হক, নবুয়ত মজলিস, সাদমান সুমন, সাজ্জাতুল ইসলাম রুবেল, শহিদুল ইসলাম ঠান্ডু, সাগর চক্রবর্তী, মোহাম্মদ রহমান আজাদ, মাহমুদ রহমান, শেখ জামাল, মোহন জাব্বার, ভাস্কর চন্দ ও দিদারুল আলম গাজী।
প্রতিটি বক্তা আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, আমরা ফেব্রæয়ারী এলেই বাংলা ভাষায় মাহাতœ নিয়ে কথা বলি কিন্তু আমাদের ঘরে এ প্রজন্মের শিশুদের প্রতি নজর দেই না। এ প্রবাসের অনেক শিশুই বাংলা বলতে পারে না। স্কুল কলেজে তারা তো সর্বদা ইংরেজিতে কথা বলছে আপনারা বাসায় অন্তত নিজ মাতৃভাষায় কথা বলুন তা না হলে অদূর ভিবিষ্যতে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের বাংলা ভুলে যাবে। যে মাতৃভাষা কায়েম করতে বুকের রক্ত দিতে হয়েছে। তা একদিন বৃথা যাবে।
জর্জিয়া বাংলাদেশীদের মূল সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব জর্জিয়ার পক্ষ থেকে একুশের কোন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়নি। এ ব্যাপারে সংগঠনের সভাপতি মোস্তফা মাহমুদ এ প্রতিনিধিকে জানান, জর্জিয়ায় এখনও করোনা প্রাদূর্ভাব প্রতিরোধে সভা সম্মেলন করার পূর্ণ অনুমতি নাই বা পূর্বের ঘোষণাও শিথিল করা হয়নি। তাই আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব জর্জিয়া করোনা বিস্তার প্রতিরোধে একুশের অনুষ্ঠান করা থেকে বিরত রয়েছে।
একুশের দিন বেলা ১১টা ও ১২টায় বাংলাদেশ উদীচী শিল্পগোষ্ঠি, জর্জিয়া ও জর্জিয়া বিএনপির আয়োজনে একুশের এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের করা হয় বলে জানা যায়।

 

 

 

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

নানা আয়োজনে উত্তর আমেরিকায় একুশের অনুষ্ঠান

প্রকাশের সময় : ১১:৫৩:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২১

হককথা ডেস্ক: মহান একুশে ফেব্রæয়ারী তথা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস যেন উত্তর জুড়ে যথাযোগ্য মর্যাদা ও বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে পালিত হয়েছে। একুশ উপলক্ষ্যে ওয়াশিংটন ডিস্থি বাংলাদেশ দূতাবাস, জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশন এবং বাংলাদেশ কনস্যুলেট সহ বিভিন্ন সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচী গ্রহণ করে। বরারের মতো মুক্তধারা ফাউন্ডেশন ও বাঙালীর চেতনা মঞ্চ বাংলাদেশ সময় একুশের প্রথম প্রহরে (স্থানীয় সময় ২০ ফেব্রæয়ারী বেলা ১টা) জাতিসংঘ ভবনের সামনে অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মান করে ভাষা শহীদদের প্রত শ্রদ্ধা নিবেদন করে। এতে সর্বস্তরের প্রবাসী বাংলাদেশীরা অংশ নেন। এদিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনে ইউএস কংগ্রেসে একটি রেজল্যুশন উত্থাপন করেছেন কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং। নিউইয়র্কের ডিস্ট্রিক্ট ৬ থেকে নির্বাচিত ডেমোক্রেট এই আইনপ্রণেতা গত ১৮ ফেব্রæয়ারী বৃহস্পতিবার ইউএস কংগ্রেসে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব তুলে ধরেন।
জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা বা ইউনেস্কো ১৯৯৯ সালে মহান ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিবাহী ২১ ফেব্রæয়ারীকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। জাতিসংঘও দিনটি পালনের সিদ্ধান্ত নিলেও পৃথিবীর অনেক দেশে এখনো দিনটি সেইভাবে পালিত হয় না।
কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং

বাংলাদেশী অধ্যুষিত নিউইয়র্কের কুইন্স থেকে নির্বাচিত কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং তার রেজল্যুশনের বিষয়ে পরে একটি ভিডিও বিবৃতিতে বলেছেন, তার লক্ষ্য হচ্ছে আমেরিকার মানুষ যেন দিনটিকে ঠিকভাবে বুঝতে পারে এবং বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে পালনও করে। গত চারটি কংগ্রেসে তিনি এমন রেজল্যুশন তুলে ধরেছেন।
তিনি বলেন, ‘আরো বেশি আমেরিকানের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এবং এই দিনটি পালনের তাৎপর্য সম্পর্কে জানা উচিত। আমার রেজল্যুশনটি সেই সচেতনতা বাড়াতে সহায়তা করবে বলে আশা করছি’।
তিনি ১৯৫২ সালে মহান ভাষা আন্দোলনে শহীদদের স্মরণ করেন। তিনি তার বিবৃতিতে বলেন, ‘ইউনেস্কো সারা পৃথিবীর মানুষের ভাষার অধিকার রক্ষার জন্যে ২১ ফেব্রæয়ারীকে স্বীকৃতি দিয়েছে। তবে বাংলাদেশের মানুষের কাছে এই দিনটির মর্যাদা একটু ভিন্ন।’ তিনি উল্লেখ করেন বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে সেদিন ছাত্ররা পাকিস্তানি শাসকদের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন করে গড়ে তুলেছিলেন। অনেকে জীবনও দিয়েছেন।
গ্রেস মেং উল্লেখ করেন, পরিচর্যার অভাবে পৃথিবী থেকে প্রায় দুই হাজার ভাষা বিলুপ্ত হওয়ার পথে। যুক্তরাষ্ট্রের আদমশুমারির তথ্য তুলে ধরেন তিনি বলেন, ‘আমেরিকার সৌন্দর্যই হচ্ছে এর বৈচিত্র্য। এখানে ৩৮১টি ভাষায় মানুষ কথা বলে। ফলে আমেরিকায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের গুরুত্ব আরো বেশি।’
ভবিষ্যতেও তিনি এমন প্রচেষ্টা আরো চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রæতি দেন। এই কাজে অগ্রণী ভূমিকা রাখার জন্যে তিনি মুক্তধারা ফাউন্ডেশনকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান। এর আগে এই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগেই ২০১৫ সালে নিউইয়র্ক স্টেটের আইনসভা প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের জন্যে একটি রেজল্যুশন পাস করেছিল। এবারো স্টেট সিনেটর জেসিকা রামোস এর উদ্যোগে যা নবায়ন করা হয়েছে।
মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা বিশ্বজিৎ সাহা জানিয়েছেন, গ্রেস ম্যাং-এর রেজল্যুশন উত্থাপনের ঘটনা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলা ভাষা ও আমাদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় আরো একটি ধাপ এগিয়ে গেল। তিনি বলেন, ‘আমরা ১৯৯২ সাল থেকে জাতিসংঘের সামনে একুশে ফেব্রæয়ারী পালন করে আসছি। এ বছর সেই কর্মসূচির ৩০ বছর পূর্ণ হচ্ছে। ২০১৬ সালে সেখানে মাসব্যাপী ভাস্কর্য প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করেছিলাম। ওই বছরই ইউএস পোস্টাল সার্ভিস আমাদের উদ্যোগেই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্মারক ডাকটিকেট প্রকাশ করে। নিউইয়র্কসহ আমেরিকার আইন সভায় এ সংক্রান্ত রেজল্যুশন পাশের ক্ষেত্রেও আমাদের ধারাবাহিক উদ্যোগ ছিল এবং ভবিষ্যতেও থাকবে’।
একুশের প্রথম প্রহরে জাতিসংঘের সামনে
প্রতি বছরের মতো এবারও নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সামনে অস্থায়ী শহীদ বেদীতে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করেছে প্রবাসী বাংলাদেশীরা। আয়োজকরা জানান, বাংলাদেশে একুশের প্রথম প্রহরের সঙ্গে মিল রেখে নিউইয়র্ক স্থানীয় সময় শনিবার (২০ ফেব্রæয়ারী) দুপুর ১টা ১ মিনিটে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ছুটে আসেন শতাধিক প্রবাসী বাংলাদেশী।
করোনা মহামারির মধ্যে এবার ভিন্ন আবহে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। নিউইয়র্ক সিটির স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকলেই পুষ্পাঞ্জলি প্রদানে অংশ নেন। এমনকি নিউইয়র্কের বৈরি আবহাওয়াও তাতে বাধা হতে পারেনি। প্রতি বছরের মতো এ বছরও উপস্থিত সর্বকনিষ্ঠ শিশু প্রথমে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে। এরপর বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, রাজনৈতিক দল, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়। মুক্তধারা ফাউন্ডেশন ও বাঙালীর চেতনা মঞ্চ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এবার নিয়ে ৩০ বছর ধরে তারা জাতিসংঘের সামনে শ্রদ্ধা নিবেদন অনুষ্ঠান করে আসছে।
এছাড়া এবার মুক্তধারা একুশে স্মরণে বিশেষ স্মারক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। অনলাইনে প্রচারিত এই ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মধ্যে থাকছে অমর একুশের গান রচয়িতা আবদুল গাফফার চৌধুরীর সঙ্গে নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধিদের আলাপচারিতা, একুশ থেকে একাত্তর। আবদুল গাফফার চৌধুরী লন্ডন থেকে এই অনুষ্ঠানে যুক্ত থাকছেন। হাসান ফেরদৌসের সঞ্চালনায় নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধি হিসেবে থাকছে সুশনা চৌধুরী, চন্দ্রিমা দে ও নাফিউল বারী।
অনুষ্ঠানের আরো থাকবে ১৯৯২ সাল থেকে গত ৩০ বছর একটানা মুক্তধারা ফাউন্ডেশন ও বাঙালীর চেতনা মঞ্চ জাতিসংঘের সামনে একুশে ফেব্রæয়ারী ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপনে যে আয়োজন করেছে তার ওপর ভিত্তি করে একটি প্রামাণ্য চিত্র। আরো থাকবে ‘কৃষ্ণচূড়ার গান’ এর লেখক ও গায়ক তাজুল ইমামের সঙ্গে আলাপচারিতা। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালন করেন সালমা বাণী। এছাড়া কবিতা পাঠসহ অন্যান্য আয়োজনও রয়েছে।
জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন
নিউইয়র্ক: যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করা হয়। এ উপলক্ষে ২১ ফেব্রæয়ারী রোববার মিশনস্থ বঙ্গবন্ধু অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানের শুরুতে মহান একুশের ভাষা শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এর আগে প্রভাত ফেরীর মাধ্যমে অডিটোরিয়ামটিতে স্থাপিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পন করা হয়। অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ এবং মহান একুশের ভাষা শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে একটি প্রামাণ্য ভিডিও চিত্র প্রদর্শণ করা হয়।
অনুষ্ঠানটির আলোচনা পর্ব শুরু হয় জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমার স্বাগত ভাষণের মধ্য দিয়ে। স্বাগত ভাষণে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য “শিক্ষায় এবং সমাজে বহুভাষার অন্তভূক্তি সযতেœ লালন করি” উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, “বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন জাতিসংঘসহ সকল আন্তর্জাতিক ফেরামে বহুভাষিকতাকে এগিয়ে নিতে সর্বাত্তক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকবে”।
ভাষণের শুরুতেই তিনি বাহান্নের ভাষাশহীদ এবং ভাষা আন্দোলনের পথিকৃৎ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, “১৯৪৮ সালে বঙ্গবন্ধুর প্রস্তাবে ছাত্রলীগ, তমদ্দুন মজলিশ ও অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত হয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ। এই পরিষদই ভাষা আন্দোলনকে বেগবান করে। জাতির পিতা ভাষা আন্দোলন করতে গিয়ে বার বার গ্রেফতার হয়েছেন। জেলে থেকে ভাষা আন্দোলনের দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন। সেই দুর্বার আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রæয়ারী শাসকগোষ্ঠীর জারি করা ১৪৪ ধারা ভাঙতে গিয়ে প্রাণ দিয়েছিলেন ভাষা শহীদগণ”।
ভাষা আন্দোলনের পথ ধরেই কীভাবে জাতির পিতার নেতৃত্বে বাঙালী জাতি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করে সে প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্বে জাতিসংঘসহ বিশ্ব পরিমন্ডলে বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তা তুলে ধরেন তিনি। বাংলাদেশের জন্য কোভিড-১৯ এর টিকা সংগ্রহের ক্ষেত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন এবং চলমান টিকা প্রদান কর্মসূচিতে সরকার যে সফলতা দেখিয়েছে তা সারা বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে মর্মে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। তিনি বলেন, “বিশ্বের ২৫ কোটি মানুষের ভাষা বাংলাকে জাতিসংঘের অন্যতম দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি লাভের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘে যে প্রস্তাবনা রেখেছেন তা বাস্তবায়নে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে”।
প্রবাসে বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মের মধ্যে বাংলা ভাষা উজ্জ্বীবিত রাখতে পরিবার এবং কমিউনিটিতে বাংলার শুদ্ধ চর্চা অব্যাহত রাখতে প্রবাসী বাঙালীদের প্রতি আহŸান জানান রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। উন্মুক্ত আলোচনা পর্বে অংশ নেন মিশনের সকল স্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারিবৃন্দ। কোভিড-১৯ জনিত স্থানীয় বিধিনিষেধ অনুযায়ী সামাজিক দুরত্ব মেনে সীমিত পরিসরে অনুষ্ঠানটি উদযাপন করা হয়।
উল্লেখ্য, সোমবার (২২ ফেব্রæয়ারী) ভার্চুয়ালভাবে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন, জাতিসংঘ সদরদপ্তর ও ইউনেস্কো এবং জাতিসংঘে নিযুক্ত ব্রাজিল, কানাডা, মিশর, জর্ডান, লিথুনিয়া এবং নিউজল্যান্ড মিশনের যৌথ উদ্যোগে উদযাপিত হতে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের জাতিসংঘ ভিত্তিক উদযাপন। এদিন বেলা ১২:০০ থেকে ১৩:৩০ পর্যন্ত অনুষ্ঠিতব্য এই অনুষ্ঠান জাতিসংঘ ওয়েভ টিভিতে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। -প্রেস বিজ্ঞপ্তি।
বাংলাদেশী আমেরিকান কালচারাল এসোসিয়েশন
অমর একুশে ফেব্রæয়ারী ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের বুকে বাংলা ভাষাভাষীদের অন্যতম বৃহত্তম সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন বাংলাদেশী আমেরিকান কালচারাল এসোসিয়েশনের উদ্যোগে আয়োজিত সফল ভার্চুয়াল অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। সংগঠনের সভাপতি আহবাব চৌধুরী খোকনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সারওয়ার চৌধুরীর সঞ্চালনায় এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সাবেক সদস্য এম এম শাহীন। বিশেষ অতিথি ছিলেন আগামী নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিল নির্বাচনে ডিস্ট্রিক ১৮ থেকে কাউন্সিলর প্রার্থী মোহাম্মদ এন মজুমদার, সংগঠনের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি আব্দুল হাসিম হাসনু।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মাওলানা উবায়েদ আনসারী। এরপর শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন একুশ আয়োজন কমিটির আহবায়ক ও সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাকসুদা আহমেদ। অনুষ্ঠানে অথিতি হিসেবে সংযুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব ইউএসএ’র সাবেক সহ সভাপতি আজিমুর রহমান বুরহান, বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ কামাল উদ্দিন, বাংলাদেশ সোসাইটি অব ইউএসএ’র সাবেক সহ সাধারণ সম্পাদক সিরাজ উদ্দিন আহমদ সোহাগ, ফেঞ্চুগঞ্জ অর্গানাইজেশন অব ইউএসএ’র সভাপতি জুনেদ আহমেদ চৌধুরী, জামাইকা মুসলিম সেন্টারের সেক্রেটারী মনজুর চৌধুরী, বাংলাদেশ সোসাইটি অব ব্রঙ্কসের সাবেক সভাপতি মাহবুবুল আলম, বিশিষ্ট রাজনীতিক আবু সাঈদ আহমেদ, সিলেট বিভাগ উন্নয়ন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ফারুক চৌধুরী, সিলেট সদর এসোসিয়েশনের সভাপতি দেওয়ান শাহেদ চৌধুরী, হৃদয়ে বাংলাদেশ-এর সভাপতি সাইদুর রহমান লিঙ্কন, জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব ইউএসএ’র সহ সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মানিক আহমদ, সাহিত্য সম্পাদক শরীফুল হক মনজু, সাবেক প্রচার সম্পাদক জাবেদ আহমদ, শ্রীমঙ্গল এসোসিয়েশন অব ইউএসএর সভাপতি মামুনুর রশিদ শিপু, কুলাউড়া এসোসিয়েশন অব নিউজার্সীর সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোদাব্বির চৌধুরী সুলেমান, প্রবাসী ভয়েজের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা উবায়েদ আনসারী, ওসমানীনগর এসোসিয়েশন অব ইউএসএ’র সভাপতি বশির উদ্দিন, সিনিয়র সহ সভাপতি ফখরুল চৌধুরী মিসলু, এসেনশিয়াল হোম কেয়ারের ব্রঙ্কস পরিচালক জালাল চৌধুরী, ব্রঙ্কস সোসাইটি অব ইউএসএ’র সভাপতি সামাদ মিয়া জাকের, বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ নাসির উদ্দিন, বিশিষ্ট কবি, লেখক মাসুম আহমেদ, হাবিবুর রহমান সংগঠনের পক্ষে বক্তব্য রাখেন কার্যকরী পরিষদ সদস্য, বিশিষ্ট সাংবাদিক সৈয়দ ইলিয়াস খসরু, সহ সভাপতি লোকমান হোসেন লুকু, মোহাম্মদ সাদী মিন্টু, ফয়সল আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির শামীম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ কামাল উদ্দিন, কোষাধক্ষ্য কবি শাহ বদরুজ্জামান রুহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক এম ডি আলাউদ্দিন, প্রচার ও গণ সংযোগ সম্পাদক সোহেল আহমদ, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক চৌধুরী মোমিত তানিম, স্কুল ও সমাজ সেবা সম্পাদক সালমা সুমি উপস্থিত ছিলেন কার্যকরী পরিষদ সদস্য শহীদুল ইসলাম, এ করিম রনি।
কবিতা আবৃত্তি করেন বিশিষ্ট আবৃত্তিকার কবি গোপন সাহা, সংগঠনের সহ সভাপতি রেহানুজ্জামা রেহান, সাহিত্য সম্পাদক বিশিষ্ট কবি হাবীব ফয়েজী, কবি মাকসুদা আহমেদ, হৃদয়ে বাংলাদেশ-এর সাধারণ সম্পাদক পল্লব সরকার, সালমা সুমি।
অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী শাহ মাহবুব ও শারমিন তানিয়া।
অনুষ্ঠানের সফল সমাপ্তি মুহুর্তে সংগঠনের সভাপতি আহবাব চৌধুরী খোকন সবার প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা পপ্রকাশ করে বক্তব্য প্রদানের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে সংগঠনের সদস্যরা সকল ভাষা সৈনিকদের প্রতি সম্মান জানিয়ে ব্রঙ্কসের বাংলা বাজারে নির্মিত শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় পার্টি
নিউইয়র্কঃ গত ২০ ফেব্ররুয়ারী রাত ১২:০১ টায় নিউইয়র্কে জাতীয় পার্টি যুক্তরাষ্ট্র শাখার উদ্যোগে মহান একুশে ফেব্রæয়রী আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস উপলক্ষে সকল শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে পুষ্প অর্পন করেন। জাতীয় পার্টি যুক্তরাষ্ট্র শাখার সভাপতি হাজী আবদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক আবু তালেব চৌধুরী চান্দু সহ অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য লিয়াকত আলী, জাপার সিনিয়র উপদেষ্টা সৈয়দ শওকত আলী, উপদেষ্টা গিয়াস মজুমদার, উপদেষ্টা মাহাবুর রহমান চৌধুরী, সিনিয়ার সহ সভাপতি জসিম উদ্দিন চৌধুরী, সহ সভাপতি ও কেন্দ্রিয় সদস্য এডভোকেট হারিস উদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসেফবারী টুটুল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় সদস্য মোঃ লুৎফর রহমান, যুগ্ম প্রচার সম্পাদক ফেরদৌস ওয়াহিদ, নিউইয়র্ক স্টেট জাপার সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ হাসান মিলন, যুক্তরাষ্ট্র জাপা’র মহিলা সম্পাদক জেসমিন আকতার চৌধরী ও মীর কাশেম।
এসময় সভাপতি হাজী আব্দুর রহমান গভীর শ্রদ্ধার সাথে ভাষা সৈনিকসহ সকল শহীদের স্মরণ করেন। তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শহীদ মিনার স্থাপনের ক্ষেত্রে প্রবাসীদের আন্তরিক প্রচেষ্টা ও বলিষ্ঠ ভূমিকার কথাও তুলে ধরেন। -প্রেস বিজ্ঞপ্তি।
যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগ
নিউইয়র্ক: নিউইয়র্কের ব্রঙ্কসে নির্মিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ যুক্তরাষ্ট্র শাখা ও নিউইয়র্ক ষ্টেট শাখার যৌথ উদ্যোগে ২১ ফেব্রæয়ারী রাত ১২:১ মিনিটের প্রথম প্রহরে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি বিন¤্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছে।
এসময় যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগের নেত্রীবৃন্দের মধ্য উপস্হিত ছিলেন যুগ্ন আহবায়ক যথাক্রমে শেখ জামাল হোসেন, ইফজাল চৌধুরী, রিন্টু লাল দাস, সদস্য নুরুল ইসলাম, সাদিকুর রহমান, মোশাহিদ চৌধুরী, শাহিন কামলী, নিউইয়র্ক ষ্টেট যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শোয়েব আহমদ, যুগ্ন সম্পাদক আল মামুন সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান চৌধুরী। এছাড়াও অন্যান্যর মধ্যে যুবলীগ নেতা সেলিম রেজা, শফিকুর রহমান, রূপচান মিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। -প্রেস বিজ্ঞপ্তি।
জর্জিয়ায় সম্মিলিত পরিষদ
মনজিলুর রহমান, আটলান্টা (জর্জিয়া) থেকে জানানঃ গভীর শ্রদ্ধা এবং ভাব গাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে জর্জিয়ায় অমর একুশে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করেছে জর্জিয়া প্রবাসী বাংলাদেশীরা।
জর্জিয়ার সম্মিলিত পরিষদের উদ্যোগ স্থানীয় একটি রেস্তোরার হল রুমে ২০ ফেব্রæয়ারী দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে হিম শীতল ঠান্ডার মধ্যে ভাষা শহীদের স্মরণে নির্মিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে পুস্পাঞ্জলি প্রদান করে মহান এই ভাষা দিবসের শ্রদ্ধা নিবেদন করে। এ সময় সমবেত কন্ঠে ভরাট গলায় চলতে কন্ঠে একুশের সেই চিরজীবি গান- ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রæয়ারী, আমি কি ভুলিতে পারি……?’
অনুষ্ঠানে উল্লেখযোগ্য যেসব সংগঠন পুস্পাঞ্জলি প্রদান করে তার হলো, জর্জিয়া আওয়ামী লীগ ও জর্জিয়া বিএনপির একাংশ, জর্জিয়া যুব লীগ, বঙ্গবন্ধু পরিষদ জর্জিয়া, জর্জিয়া সোস্যাল এন্ড কালচারাল অর্গানাইজেশন, সিএম টিভি, অ্যাসেল জর্জিয়া প্রভৃতি সংগঠন।
পুস্পাঞ্জলি প্রদানের আগে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহীদ দিবসের তাৎপর্য উল্লেখ করে উত্তম দের পরিচালনায় ও ইলিয়াস হাসানের উপস্থাপনায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনায় অংশ নেন কায়েদুজ্জামান, মিনার হক, নবুয়ত মজলিস, সাদমান সুমন, সাজ্জাতুল ইসলাম রুবেল, শহিদুল ইসলাম ঠান্ডু, সাগর চক্রবর্তী, মোহাম্মদ রহমান আজাদ, মাহমুদ রহমান, শেখ জামাল, মোহন জাব্বার, ভাস্কর চন্দ ও দিদারুল আলম গাজী।
প্রতিটি বক্তা আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, আমরা ফেব্রæয়ারী এলেই বাংলা ভাষায় মাহাতœ নিয়ে কথা বলি কিন্তু আমাদের ঘরে এ প্রজন্মের শিশুদের প্রতি নজর দেই না। এ প্রবাসের অনেক শিশুই বাংলা বলতে পারে না। স্কুল কলেজে তারা তো সর্বদা ইংরেজিতে কথা বলছে আপনারা বাসায় অন্তত নিজ মাতৃভাষায় কথা বলুন তা না হলে অদূর ভিবিষ্যতে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের বাংলা ভুলে যাবে। যে মাতৃভাষা কায়েম করতে বুকের রক্ত দিতে হয়েছে। তা একদিন বৃথা যাবে।
জর্জিয়া বাংলাদেশীদের মূল সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব জর্জিয়ার পক্ষ থেকে একুশের কোন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়নি। এ ব্যাপারে সংগঠনের সভাপতি মোস্তফা মাহমুদ এ প্রতিনিধিকে জানান, জর্জিয়ায় এখনও করোনা প্রাদূর্ভাব প্রতিরোধে সভা সম্মেলন করার পূর্ণ অনুমতি নাই বা পূর্বের ঘোষণাও শিথিল করা হয়নি। তাই আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব জর্জিয়া করোনা বিস্তার প্রতিরোধে একুশের অনুষ্ঠান করা থেকে বিরত রয়েছে।
একুশের দিন বেলা ১১টা ও ১২টায় বাংলাদেশ উদীচী শিল্পগোষ্ঠি, জর্জিয়া ও জর্জিয়া বিএনপির আয়োজনে একুশের এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের করা হয় বলে জানা যায়।