নিউইয়র্ক ০৫:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৬ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

দীর্ঘ ৪২ বছর পর স্ত্রী-সন্তানের কাছে ফিরছেন কফিনে বন্দি তাহের আহমেদ

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৮:০৮:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ মার্চ ২০২১
  • / ৬৫ বার পঠিত

বিশেষ প্রতিনিধি: অবশেষে নিউইয়র্কে পরিচয় মিললো নিখোঁজ বাংলাদেশী তাহের আহমেদ-এর তবে জীবিত নয়, মৃত। তার দেশের বাড়ী লক্ষœীপুর জেলার রায়পুর উপজেলা। দীর্ঘ ৪২ বছরের প্রবাস জীবন শেষে তাহের আহমেদ (৬৭) স্ত্রী-সন্তানের কাছে ফিরছেন কফিনে বন্দি হয়ে। মহামারী করোনায় আক্রান্ত হয়ে তিনি ব্রঙ্কসের মন্টিফিউর হাসপাতালে গত ৮ মার্চ ইন্তেকাল করেন। তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট মাজেদা এ উদ্দিন।
তাহের আহমেদ

গত ২৫ ফেব্রæয়ারী থেকে কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিলো না তাহের আহমেদ-এর। এনিয়ে গত সপ্তাহের বাংলা পত্রিকায় ‘সন্ধান চাই’ নামে তার ছবি সহ ছোট একটি খবর প্রকাশিত হয়। খবরে বলা হয়, সর্বশেষ গত ২৫ ফেব্রæয়ারী বিকেলে তাকে এম্বুলেন্সে উঠিয়ে নিতে দেখেছেন বলে একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন। তারপর থেকে তাহের আহমেদ-এর আর কোন সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিলো না।
মাজেদা এ উদ্দিন জানান, দীর্ঘ প্রবাস জীবনে অভিবাসনের মর্যাদা পাননি তাহের। দিনাতিপাত করতেন নিউইয়র্ক সিটির ব্রঙ্কসের স্টার্লিং-পার্কচেস্টার এলাকায় বই-পত্র বিক্রি করে। স্থানীয় ১৯৩৯ এলিস এভিনিউতে প্রবাসী বাংলাদেশী বাবুল নবীর বাসার বেসমেন্টে বাস করতেন তিনি। বাবুল নবীও করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ফেব্রæয়ারী একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
মাজেদা উদ্দিন

মাজেদা উদ্দিন আরো জানান, একমাত্র পুত্র সন্তানের মুখ দেখেননি অভাগা তাহের আহমেদ। তার একমাত্র পুত্রের বয়স যখন মাত্র দেড় মাস, তখোনই তিনি স্বপ্নের দেশ আমেরিকায় এসেছিলেন। এরপর দীর্ঘ ৪২ বছরেও তার স্বপ্ন পূরণ হয়নি। অভিবাসনের মর্যাদা না পাওয়ায় স্ত্রী-সন্তানের কাছে যাবার সৌভাগ্যও হয়নি। যদিও সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অভিবাসন নীতি ঢেলে সাজানোর প্রস্তাব কংগ্রেসে বিবেচনাধীন থাকায় স্বস্তিবোধ করছিলেন তাহের আহমেদ। ফেসটাইমে স্ত্রী-পুত্রকে সে আশ্বাসও দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু করোনায় তার সবকিছু তছনছ করে দিলো। তার স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে গেলো।
জানা গেছে, কোন পরিচয় না পাওয়ায় তাহের আহমেদের মরদেহ বেওয়ারিশ হিসেবে ওয়েস্টচেস্টার মর্গে নেয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে তার খোঁজ মেলে এবং মাজেদা উদ্দিনের তদবিরে তার মরদেহ ব্রঙ্কসে গানহিল মর্গে আনা হয়। সেখানে আনুষ্ঠানিকতা শেষে শনিবার (১৩ মার্চ) ব্রঙ্কসের পার্কচেস্টার ইসলামিক সেন্টারে বাদ যোহর জানাযার পর রাত ১১টার আমিরাতের একটি ফ্লাইটে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে তাহেরের লাশবাহী কফিন। নিউইয়র্কে বসবাসরত প্রবাসী রায়পুরবাসীদের আর্থিক সহায়তায় মরহুম তাহের আহমেদ-এর ফিউনারেল ও বিমানের খরচ বহন করা হয়।
মাজেদা উদ্দিন জানান, মরহুম তাহের আহমেদের পুত্র রেজওয়ান বিন আয়াত (সোহেল আহমদ)-এর সাথে ফোনে কথা হয়েছে। সে তার বাবার মরদেহ ঢাকায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রহণ করবেন। সেখান থেকে তার মরদেহ গ্রামের বাড়ীতে নিয়ে যাওয়ার পর আনুষ্ঠানিকতা শেষে স্থানীয় কবর স্থানে দাফন করা হবে।

 

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

দীর্ঘ ৪২ বছর পর স্ত্রী-সন্তানের কাছে ফিরছেন কফিনে বন্দি তাহের আহমেদ

প্রকাশের সময় : ০৮:০৮:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ মার্চ ২০২১

বিশেষ প্রতিনিধি: অবশেষে নিউইয়র্কে পরিচয় মিললো নিখোঁজ বাংলাদেশী তাহের আহমেদ-এর তবে জীবিত নয়, মৃত। তার দেশের বাড়ী লক্ষœীপুর জেলার রায়পুর উপজেলা। দীর্ঘ ৪২ বছরের প্রবাস জীবন শেষে তাহের আহমেদ (৬৭) স্ত্রী-সন্তানের কাছে ফিরছেন কফিনে বন্দি হয়ে। মহামারী করোনায় আক্রান্ত হয়ে তিনি ব্রঙ্কসের মন্টিফিউর হাসপাতালে গত ৮ মার্চ ইন্তেকাল করেন। তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট মাজেদা এ উদ্দিন।
তাহের আহমেদ

গত ২৫ ফেব্রæয়ারী থেকে কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিলো না তাহের আহমেদ-এর। এনিয়ে গত সপ্তাহের বাংলা পত্রিকায় ‘সন্ধান চাই’ নামে তার ছবি সহ ছোট একটি খবর প্রকাশিত হয়। খবরে বলা হয়, সর্বশেষ গত ২৫ ফেব্রæয়ারী বিকেলে তাকে এম্বুলেন্সে উঠিয়ে নিতে দেখেছেন বলে একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন। তারপর থেকে তাহের আহমেদ-এর আর কোন সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিলো না।
মাজেদা এ উদ্দিন জানান, দীর্ঘ প্রবাস জীবনে অভিবাসনের মর্যাদা পাননি তাহের। দিনাতিপাত করতেন নিউইয়র্ক সিটির ব্রঙ্কসের স্টার্লিং-পার্কচেস্টার এলাকায় বই-পত্র বিক্রি করে। স্থানীয় ১৯৩৯ এলিস এভিনিউতে প্রবাসী বাংলাদেশী বাবুল নবীর বাসার বেসমেন্টে বাস করতেন তিনি। বাবুল নবীও করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ফেব্রæয়ারী একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
মাজেদা উদ্দিন

মাজেদা উদ্দিন আরো জানান, একমাত্র পুত্র সন্তানের মুখ দেখেননি অভাগা তাহের আহমেদ। তার একমাত্র পুত্রের বয়স যখন মাত্র দেড় মাস, তখোনই তিনি স্বপ্নের দেশ আমেরিকায় এসেছিলেন। এরপর দীর্ঘ ৪২ বছরেও তার স্বপ্ন পূরণ হয়নি। অভিবাসনের মর্যাদা না পাওয়ায় স্ত্রী-সন্তানের কাছে যাবার সৌভাগ্যও হয়নি। যদিও সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অভিবাসন নীতি ঢেলে সাজানোর প্রস্তাব কংগ্রেসে বিবেচনাধীন থাকায় স্বস্তিবোধ করছিলেন তাহের আহমেদ। ফেসটাইমে স্ত্রী-পুত্রকে সে আশ্বাসও দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু করোনায় তার সবকিছু তছনছ করে দিলো। তার স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে গেলো।
জানা গেছে, কোন পরিচয় না পাওয়ায় তাহের আহমেদের মরদেহ বেওয়ারিশ হিসেবে ওয়েস্টচেস্টার মর্গে নেয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে তার খোঁজ মেলে এবং মাজেদা উদ্দিনের তদবিরে তার মরদেহ ব্রঙ্কসে গানহিল মর্গে আনা হয়। সেখানে আনুষ্ঠানিকতা শেষে শনিবার (১৩ মার্চ) ব্রঙ্কসের পার্কচেস্টার ইসলামিক সেন্টারে বাদ যোহর জানাযার পর রাত ১১টার আমিরাতের একটি ফ্লাইটে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে তাহেরের লাশবাহী কফিন। নিউইয়র্কে বসবাসরত প্রবাসী রায়পুরবাসীদের আর্থিক সহায়তায় মরহুম তাহের আহমেদ-এর ফিউনারেল ও বিমানের খরচ বহন করা হয়।
মাজেদা উদ্দিন জানান, মরহুম তাহের আহমেদের পুত্র রেজওয়ান বিন আয়াত (সোহেল আহমদ)-এর সাথে ফোনে কথা হয়েছে। সে তার বাবার মরদেহ ঢাকায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রহণ করবেন। সেখান থেকে তার মরদেহ গ্রামের বাড়ীতে নিয়ে যাওয়ার পর আনুষ্ঠানিকতা শেষে স্থানীয় কবর স্থানে দাফন করা হবে।