নিউইয়র্ক (ইউএনএ): নিউইয়র্কে বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের সংগঠন জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশী বিজনেস এসোসিয়েশন (জেবিবিএ) অব নিউইয়র্ক আবার বিভক্ত হয়ে গেলো। এসোসিয়েশনের বিগত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট জটিলতার প্রেক্ষিতে পাল্টা-পাল্টি অভিযোগ, এক পক্ষের নির্বাচন অপর পক্ষের নির্বাচন বর্জন, সর্বশেষ মামলা-মোকদ্দমার প্রেক্ষাপটে ‘প্রকৃত ব্যবসায়ী দাবীদার’ ব্যবসায়ীদের সাধারণ সভায় জেবিবিএ’র পাল্টা কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে আবুল ফজল দিদারুল ইসলাম সভাপতি, মোহাম্মদ জামান কামরুল সাধারণ সম্পাদক ও মোহাম্মদ সেলিম হারুন কোষাধ্যক্ষ মনোনীত হয়েছেন। সেই সাথে সভায় জেবিবিএ’র অতীত ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার অঙ্গীকার এবং উপদেষ্টা ও পরিচালক (ডিরেক্টর) পরিষদ গঠন করা হয়।
উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে জেবিবিএ’র নির্বাচন কমিশন ‘শাহ নেওয়াজ-টুকু’ প্যানেল-কে নির্বাচিত ঘোষণা করেন। এই প্যানেল থেকে সভাপতি নির্বাচিত হন শাহ নেওয়াজ আর সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন মাহবুবুর রহমান টুকু। ভোটার প্রক্রিয়া অস্বচ্ছ সহ নানা অভিযোগের দাবীতে ‘দিদার-কামরুল’ প্যানেল ও তাদের সমর্থকরা সেই নির্বাচনী কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকেন।খবর ইউএনএ’র।
সিটির জ্যাকসন হাইটসের পালকি পার্টি সেন্টারে গত ১৭ অক্টোবর আয়োজিত জেবিবিএ অব এনওয়াই’র ব্যানারে আয়োজিত সাধারণ সভায় উপস্থিত ব্যবসায়ীদের কন্ঠভোটে নতুন কমিটি গঠন করা হয়। জেবিবিএ’র প্রধান উপদেষ্টা মহসীন ননীর সভাপতিত্বে আয়োজিত সভায় অন্যান্য উপদেষ্টাদের মধ্যে মোহাম্মদ পিয়ার, মোহাম্মদ মহসিন, এম এম রহমান ও কাজী মন্টু ছাড়াও এডভোকেট এম শামসুদ্দোহা মঞ্চে উপবিষ্ট থেকে বক্তব্য রাখেন। সভায় জেবিবিএ’র সদস্য একাধিক ব্যবসায়ীও বক্তব্য রাখেন। যৌথভাবে সভা পরিচালনা করেন আবুল ফজল দিদারুল ইসলাম ও মোশাররফ হোসাইন। সভায় শতাধিক ব্যবসায়ী উপস্থিত ছিলেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
সভায় বক্তারা জেবিবিএ’র চলমান পরিস্থিতি ও প্রেক্ষাপটে গভীর অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, জেবিবিএ প্রবাসে বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের ঐতিহ্যবাহী সংগঠন। এক সময় প্রবাসে ও বাংলাদেশে জেবিবিএ’র সুনাম ছড়িয়ে পড়েছিলো। আজ সেই সুনাম নেই। সবাই মিলে এই সংগঠনের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে হবে। জেবিবিএ-কে প্রকৃত ব্যবসায়ীদের সংগঠনে পরিণত করতে হবে। ভোটার বানিয়ে জেবিবিএ’র নেতা হওয়া যাবে না। এই পথ চিরতরে বন্ধ করে দেয়া হবে।
সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক ৫ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদকে নির্বাচন কমিশন মনোনীত করে নতুন কমিটি গঠন করা হয়। এছাড়াও সভায় উপস্থিত সদস্য ব্যবসায়ীদের কন্ঠভোটে জেবিবিএ’র পরিচালনা (ডিরেক্টর) কমিটি ও উপদেষ্টা পরিষদ গঠন এবং পরিচালক ও সদস্যদের নিয়ে নিয়ে আলোচনার ভিত্তিতে আগামী দুই বছরের জন্য নতুন কার্যকরী কমিটি গঠন করা হয়।
জেবিবিএ’র নতুন পরিচালকরা হচ্ছেন: হারুন ভূঁইয়া, এডভোকেট কাজী শাসুদ্দোহা, আবুল ফজল দিদারুল ইসলাম, ইকবালুর রশীদ লিটন, হোসেন সোহেল রানা, রাশেদ রহমান, প্রদীপ সাহা, ফাহাদ সোলায়মান, মোহাম্মদ এম জামান, মোস্তাফিজুর খন্দকার, জেড মোল্লা সানি, ডা. রশিদ আহমেদ, রুহুল আমীন সরকার ও মওলানা এম কে রহমান মাহমুদ। পরবর্তীতে আরো পরিচালক মনোনীত করে ১৭ সদস্য সদস্য বিশিষ্ট পরিচালক (ডিরেক্টর) পরিষদ গঠন করা হবে বলে সভায় জানানো হয়।
উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা হলেন: বদরুল হক, ডা. চৌধুরী সারোয়ারুল হাসান, ডা. ইভান খান, আবু নোমান শাফি, কেশব সরকার, সিরাজুল হক কামাল, বাবু খান, সারেয়ার চৌধুরী সিপিএ, আনোয়ার জাহিদ, সামিউর রহমান, ডা. এটিএম ইউসুফ, আব্দুল হাই জিয়া ও আসাদুল হক।

কার্যকরী কমিটির অন্য কর্মকর্তারা হলেন: সিনিয়র সহসভাপতি- মনসুর এ চৌধুরী,  সহ সভাপতি- মোশাররফ হোসেন ও মোহাম্মদ আলম নমী, যুগ্ম সম্পাদক- আবুল কাশেম ও বিপ্লব সাহা, কোষাধ্যক্ষ- মোহাম্মদ সেলিম হারুন, সাংগঠনিক সম্পাদক- সাকিল মিয়া, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক- সাজ্জাদ হোসাইন, সাংস্কৃতিক ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক- রাশেদ আহম্মেদ, দপ্তর সম্পাদক- মাহমুদ হোসাইন বাদশা, নির্বাহী সদস্য- কামরুজ্জামান বাচ্চুু, সুবল দেবনাথ, শাহ চিশতী, শাহজাদা ইলিয়াস, নাজিরুল ইসলাম, সনাতন শীল ও মাসুদ রানা তপন।
সভার শেষ পর্যায়ে সভাপতি মহসীন ননী ঘোষণা দেন যে, আগামী ২৫ অক্টোবার বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় জ্যাকসন হাইটসের বেলোজিনো পার্টি হলে জেবিবিএ’র নতুন কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠিত হবে।
সবশেষে ছিলো সঙ্গীতানুষ্ঠান। এতে প্রবাসী শিল্পীরা সঙ্গীত পরিবেশন করেন।