ঢালিউডে সানি লিওনের অংশ গ্রহণ নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে

- প্রকাশের সময় : ১২:৩৫:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ এপ্রিল ২০১৯
- / ১০৯৮ বার পঠিত
বাংলা পত্রিকা রিপোর্ট: ঢালিউড ফিল্ম এন্ড মিউজিক এওয়ার্ড অনুষ্ঠানে ভারতীয় বংশোদ্ভুত অভিন্ত্রেী সানি লিওনের অংশ গ্রহণ নিয়ে বাংলাদেশী কমিউনিটি এখন সরগরম। একজন পর্ণ স্টারকে কিভাবে কমিউনিটির একটি বড় অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে নিয়ে আসা হচ্ছে এটাই এই বিতর্কের কারণ। উল্লেখ্য যে, সানি লিওন এখন বোম্বে ফিল্ম ইন্ড্রাস্ট্রির নায়িকা হলেও যুক্তরাষ্ট্রের একজন পর্ণ স্টার হিসেবে তিনি তার ক্যারিয়ার শুরু করেন। তিনিই প্রথম ইন্ডিয়ান-আমেরিকান যিনি পর্ণ ইন্ড্রাস্ট্রির আলোচিতদের একজন। অনুষ্ঠানে তাকে সেনসেশন হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
আগামী ৭ এপ্রিল রোববার ঢালিউড অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠিত হবে কুইন্সের আমাজোরা পার্টি হলে। এতে সানি লিওন ছাড়াও বাংলাদেশী নামীদামী অনেক তারকা উপস্থিত থাকবেন বলে ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশী তারকা শিল্পীদের মধ্যে চিত্রনায়ক ফারুক এমপি, অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তফা এমপি, অভিনেতা জাহিদ হাসান, অভিনেত্রী শাওন, তাহসান, মৌ, তানভীর তারেক, ইমন, সজল, শিলা, নিশাত, প্রভা, তিশা, রিজিয়া পারভীন, মিশা সওদাগর, নাদিয়া খান সহ আরো অনেকে।
এবিষয়ে শো টাইম মিউজিকের প্রধান এবং অনুষ্ঠানের আয়োজক আলমগীর খান আলম যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় টাইম টেলিভশনকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে বলেছেন, সানি লিওন কি বা কি করেছেন এসব বিবেচনায় নিয়ে আমরা তাকে আমন্ত্রণ জানাইনি। সানি লিওনের শিল্পী স্বত্বাকে স্বীকৃতি দিতেই আমরা তাকে এখানে আমন্ত্রন জানিয়েছি।
একজন পর্ণ স্টার বাদ দিয়ে অন্যকেও আনতে পারতেন এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সানি লিওনের সাম্প্রতিক একটি নাচ জনপ্রিয়তায় অন্যতম শীর্ষস্থান অধিকার করেছে। সেই বিবেচনায় আমরা মনে করেছি তাকে আনা হলে ব্যবসায়িকভাবে আমরা লাভবান হবো।
একজন পর্ণ স্টারকে এভাবে উপস্থাপনের মাধ্যমে কমিউনিটিকে কি ম্যাসেজ দেয়া হচেছ এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা তাকে শিল্পী হিসেবে আমন্ত্রণ করেছি। তার অতীত বিষয়টি আমাদের বিবেচ্য নয়। নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত একটি পত্রিকায় এবিষয়ে প্রকাশিত একটি রিপোর্টের সমালোচনা করেন তিনি।
সোমবার রাত ১১টায় আলমগীর খান আলমের পূর্ণ সাক্ষাতকারটি প্রচার করবে টাইম টেলিভিশন।
এদিকে সানি লিওনের পর্ণ স্টারের খবরটি চাউর হবার খবরে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে কমিউনিটিতে। কমিউনিটির অনেকেই এটাকে বাংলাদেশী বর্ধিষ্ণু কমিউনিটির জন্য ভাল খবর নয় বলে অভিহিত করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশী কমিউনিটির আমব্রেলা সংগঠন হিসেবে খ্যাত বাংলাদেশ সোসাইটি’র সভাপতি কামাল আহমেদ এবিষয়ে তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, একজন বাংলাদেশী হিসেবে আমি কোনভাবেই আমাদের দেশীয় তারকাদের মাঝখানে একজন পর্ণস্টারকে উপস্থাপনের বিষয়টি মেনে নিতে পারি না। এটা আমাদের সাংস্কৃতিক ও পারিবারিক আবহমান ঐতিহ্যের একেবারেই বিরোধী। তিনি বলেন, আমাদের পরিবার পরিজন নিয়ে পর্ণ ইমেজের একজন তারকার অনুষ্ঠান কেন করা হলো এটা আয়োজকদেরই উত্তর দিতে হবে। আমি এর প্রতিবাদ করি।
নিউইয়র্কের জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী শাহ মাহবুব বাংলা পত্রিকার সাথে আলাপকালে বলেন, একজন মানুষের পেছনের ইতিহাস থাকতে পারে। তবে দেখতে হবে এখন তিনি কি করছেন। সানি লিওনের অতীতকে আমি কোনভাবেই সমর্থন করি না। তবে বর্তমানে ভারতের বানিজ্যিক ছবিতে তিনি একজন তারকা হিসেবে খ্যাতি পেয়েছেন। এই প্রেক্ষিতে আমি তাকে শিল্পী হিসেবেই বিবেচনা করছি। বাংলাদেশী কমিউনিটিতে এর প্রতিক্রিয়া কি হবে সেটা আমি ঠিক বুঝতে পারছি না।
নিউইয়র্কে বিশিষ্ট নাট্য ও চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব গোলাম সারোয়ার হারুন বলেন, এই ঢালিউড অ্যাওয়ার্ড এটা কি এবং কিভাবে হয় সেটা আমি কখনো দেখিনি। সুতরাং তার অনুষ্ঠান নিয়ে আমি কোন মন্তব্য করতে পারছি না। তিনি বলেন, ঢালিউড অ্যাওয়ার্ড নামের অনুষ্ঠানে আমি কখনো যাইনি এবং তাদের সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না।
অনুষ্ঠানের অন্যতম স্পন্সর মেগা হোম রিয়েলিটির প্রধান বিশিষ্ট রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী মইনুল ইসলাম বলেন, কোনভাবেই আমরা এটাকে সমর্থন করতে পারবো না। এই অনুষ্ঠানের প্রতি আমার কোন সমর্থন বা স্পন্সর নেই।