নিউইয়র্ক ১২:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৫ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

ঢাকায় একের পর এক অগ্নিকান্ড : আইনের যথাযথ প্রয়োগ চান প্রবাসীরা

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৮:২০:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ এপ্রিল ২০১৯
  • / ৫৪৭ বার পঠিত

নিউইয়র্ক (ইউএনএ): ঢাকার নীমতলী থেকে চকবাজার। চকবাজারের পর বনানী। বনানীর পর গুলশান বাজারে সংঘটিত সাম্প্রতিককালের একের পর এক অগ্নিকান্ডের ঘটনা দেশবাসীর ন্যায় উদ্বিগ্ন-উৎকন্ঠিত প্রবাসী বাংলাদেশীরাও। বিশেষ করে নিউইয়র্কে বসবাসকারী বাংলাদেশীরা এসব অঘিকান্ডের ঘটনায় গভীর উদ্বেগের পাশাপাশি প্রচন্ড ক্ষোভ প্রকাশ করে এরজন্য সরকারের উদাসীনতাকেই দায়ী করেছেন। ঢাকাসহ বাংলাদেশের অগ্নিকন্ডের ঘটনা রোধে এবং জানমাল রক্ষায় আইনের যথাযথ প্রয়োগ চান নিউইয়র্ক প্রবাসী বাংলাদেশীরা।
উল্লেখ্য, ঢাকা থেকে প্রাপ্ত খবরে প্রকাশ গত ১০ বছরে ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সংঘটিত ১৬ হাজার অগ্নিকান্ডে ১৫৯০ জনের প্রাণহাণী ঘটেছে। সর্বশেষ বনানীর ঘটনায় ২৫ জনের অধিক নর-নারী নিহত হয়েছেন। আর এতো প্রাণহানী সহ বিপুল ক্ষয়ক্ষতির ঘটনার পরও যথাযথ টনক নড়ছে না সরকারের তথা সংশ্লিস্ট দফতর-অধিদপ্তরে দায়িত্বশীলদের। খবর ইউএনএ’র।
ঢাকায় অগ্নিকান্ডের ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় নিউইয়র্কের সাপ্তাহিক পরিচয় সম্পাদক নাজমুল আহসান বলেছেন, আসলে অগ্নিকান্ড আর সড়ক দূর্ঘটনা সহ জনজীবনের চরম ঘটনাগুলোর জন্য সরকারের উদাসীনতাই মূলত: দায়ী। সরকার বা সংশ্লিস্ট দপ্তর-অধিদপ্তর সজাগ থাকার পাশাপাশি আইনের যথাযথ প্রয়োগ থাকলেই অনেক ঘটনা রোধ সম্ভব। তিনি বলেন, একের পর এক অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটছে, তদন্ত কমিটি হচ্ছে, এক দপ্তর আরেক দপ্তরের উপর দোষারোপ করছে- ঐ পর্যন্তই। এসব নিয়ে কিছুদিন আলোচনা-সমালোচনার আবার সবই আগের জায়গায় ফিরে যায়।
সাপ্তাহিক বাংলাদেশ সম্পাদক ডা. ওয়াজেদ এ খান বলেন, সরকারের দাবী সারাদেশে উন্নয়নের জোয়ার বইছে। উন্নয়নের নানা ক্ষেত্রে বাংলাদেশ রোল মডেল। অথচ অগ্নিকান্ড থেকে জনামাল রক্ষায় সরকারের কোন উদ্যোগ-পদক্ষেপ নেই। তিনি বলেন, সাম্প্রতিককালের অগ্নিকান্ডের ঘটনার ভয়াবহতা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। কি বিভৎস চিত্র। বাঁচার জন্য মানুষের কিযে আকুতি। তারপরও দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের টনক নড়ছে না। তিনি বলেন, উন্নয়ন-অগ্রগতির আগে প্রয়োজন জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা, জানমালের নিরাপত্তা, আইনের শাসন। অথচ দেশের সর্বত্রই দূর্নীতি, অনিয়ম, বিশৃঙ্খলা। তিনি বলেন, আইনের সঠিক প্রয়োগ ছাড়া জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে না। পাশাপাশি সব ক্ষেত্রেই আধুনিক ব্যবস্থাও নিশ্চিত করতে হবে।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সহ সভাপতি এনামুর রেজা দীপু বলেন, গত কয়েক দিনের অগ্নিকান্ডের ঘটনার প্রতিক্রিয় ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। অগ্নিকান্ড আর সড়ক দূর্ঘটনা নিয়ে দেশে যা ঘটছে তা চরম অমানবিক। তিনি বলেন, এসবের জন্য কে বা কারা দায়ি তা কতিয়ে দেখা দরকার। সেই সাথে প্রয়োজন জবাবদিহীতা, আইনের প্রয়োগ, আইনের শাসন।
নিউইয়র্ক সিটির জ্যামাইকায় বসবাসকারী গৃহবধু মাহমুদা খাতুন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের লক্ষ্য ডিজিটাল বাংলাদেশ। অথচ প্রবাস থেকে দেখছি যেখানে সবার আগে ডিজিটাল পদ্ধতি কার্যকর হওয়া দরকার, সরকার তা করছে না। বিভিন্ন টিভির খবরে লাইভে অগ্নিকান্ডের যে ভয়াবহতা দেখলাম তাতে আমাদের ফায়ার সার্ভিস দপ্তরে করুণ অবস্থাই ফুটে উঠেছে। দেশ স্বাধীন হয়েছে ৪৮ বছর হলো। অথচ আমরা ডিজিটালের নামে এনালগ যুগেই রয়ে গেছি। তিনি বলেন, নিউইয়র্কের বাঙলা পত্রিকাগুলো পড়ে দেখছি মাঝে মধ্যেই দেশের মন্ত্রীরা আমেরিকায় আসছেন, অথচ তারা আমেরিকার আধুনিক-ভালো জিনিসগুলো গ্রহণ করছেন না। এটা দু:খজনক। তিনি ক্ষোভের সাথে বলেন চকবাজার-বনানীর ঘটনায় যারা অগ্নিকান্ডে মারা গেলো তাদের দায় নেবে কে? তিনি বনে করেন দেশে যতটুকু আইন আছে তার সঠিক আর যথাযথ প্রয়োগ হলেই অনেক দূর্ঘটনা রোধ সম্ভব।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

About Author Information

ঢাকায় একের পর এক অগ্নিকান্ড : আইনের যথাযথ প্রয়োগ চান প্রবাসীরা

প্রকাশের সময় : ০৮:২০:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ এপ্রিল ২০১৯

নিউইয়র্ক (ইউএনএ): ঢাকার নীমতলী থেকে চকবাজার। চকবাজারের পর বনানী। বনানীর পর গুলশান বাজারে সংঘটিত সাম্প্রতিককালের একের পর এক অগ্নিকান্ডের ঘটনা দেশবাসীর ন্যায় উদ্বিগ্ন-উৎকন্ঠিত প্রবাসী বাংলাদেশীরাও। বিশেষ করে নিউইয়র্কে বসবাসকারী বাংলাদেশীরা এসব অঘিকান্ডের ঘটনায় গভীর উদ্বেগের পাশাপাশি প্রচন্ড ক্ষোভ প্রকাশ করে এরজন্য সরকারের উদাসীনতাকেই দায়ী করেছেন। ঢাকাসহ বাংলাদেশের অগ্নিকন্ডের ঘটনা রোধে এবং জানমাল রক্ষায় আইনের যথাযথ প্রয়োগ চান নিউইয়র্ক প্রবাসী বাংলাদেশীরা।
উল্লেখ্য, ঢাকা থেকে প্রাপ্ত খবরে প্রকাশ গত ১০ বছরে ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সংঘটিত ১৬ হাজার অগ্নিকান্ডে ১৫৯০ জনের প্রাণহাণী ঘটেছে। সর্বশেষ বনানীর ঘটনায় ২৫ জনের অধিক নর-নারী নিহত হয়েছেন। আর এতো প্রাণহানী সহ বিপুল ক্ষয়ক্ষতির ঘটনার পরও যথাযথ টনক নড়ছে না সরকারের তথা সংশ্লিস্ট দফতর-অধিদপ্তরে দায়িত্বশীলদের। খবর ইউএনএ’র।
ঢাকায় অগ্নিকান্ডের ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় নিউইয়র্কের সাপ্তাহিক পরিচয় সম্পাদক নাজমুল আহসান বলেছেন, আসলে অগ্নিকান্ড আর সড়ক দূর্ঘটনা সহ জনজীবনের চরম ঘটনাগুলোর জন্য সরকারের উদাসীনতাই মূলত: দায়ী। সরকার বা সংশ্লিস্ট দপ্তর-অধিদপ্তর সজাগ থাকার পাশাপাশি আইনের যথাযথ প্রয়োগ থাকলেই অনেক ঘটনা রোধ সম্ভব। তিনি বলেন, একের পর এক অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটছে, তদন্ত কমিটি হচ্ছে, এক দপ্তর আরেক দপ্তরের উপর দোষারোপ করছে- ঐ পর্যন্তই। এসব নিয়ে কিছুদিন আলোচনা-সমালোচনার আবার সবই আগের জায়গায় ফিরে যায়।
সাপ্তাহিক বাংলাদেশ সম্পাদক ডা. ওয়াজেদ এ খান বলেন, সরকারের দাবী সারাদেশে উন্নয়নের জোয়ার বইছে। উন্নয়নের নানা ক্ষেত্রে বাংলাদেশ রোল মডেল। অথচ অগ্নিকান্ড থেকে জনামাল রক্ষায় সরকারের কোন উদ্যোগ-পদক্ষেপ নেই। তিনি বলেন, সাম্প্রতিককালের অগ্নিকান্ডের ঘটনার ভয়াবহতা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। কি বিভৎস চিত্র। বাঁচার জন্য মানুষের কিযে আকুতি। তারপরও দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের টনক নড়ছে না। তিনি বলেন, উন্নয়ন-অগ্রগতির আগে প্রয়োজন জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা, জানমালের নিরাপত্তা, আইনের শাসন। অথচ দেশের সর্বত্রই দূর্নীতি, অনিয়ম, বিশৃঙ্খলা। তিনি বলেন, আইনের সঠিক প্রয়োগ ছাড়া জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে না। পাশাপাশি সব ক্ষেত্রেই আধুনিক ব্যবস্থাও নিশ্চিত করতে হবে।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সহ সভাপতি এনামুর রেজা দীপু বলেন, গত কয়েক দিনের অগ্নিকান্ডের ঘটনার প্রতিক্রিয় ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। অগ্নিকান্ড আর সড়ক দূর্ঘটনা নিয়ে দেশে যা ঘটছে তা চরম অমানবিক। তিনি বলেন, এসবের জন্য কে বা কারা দায়ি তা কতিয়ে দেখা দরকার। সেই সাথে প্রয়োজন জবাবদিহীতা, আইনের প্রয়োগ, আইনের শাসন।
নিউইয়র্ক সিটির জ্যামাইকায় বসবাসকারী গৃহবধু মাহমুদা খাতুন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের লক্ষ্য ডিজিটাল বাংলাদেশ। অথচ প্রবাস থেকে দেখছি যেখানে সবার আগে ডিজিটাল পদ্ধতি কার্যকর হওয়া দরকার, সরকার তা করছে না। বিভিন্ন টিভির খবরে লাইভে অগ্নিকান্ডের যে ভয়াবহতা দেখলাম তাতে আমাদের ফায়ার সার্ভিস দপ্তরে করুণ অবস্থাই ফুটে উঠেছে। দেশ স্বাধীন হয়েছে ৪৮ বছর হলো। অথচ আমরা ডিজিটালের নামে এনালগ যুগেই রয়ে গেছি। তিনি বলেন, নিউইয়র্কের বাঙলা পত্রিকাগুলো পড়ে দেখছি মাঝে মধ্যেই দেশের মন্ত্রীরা আমেরিকায় আসছেন, অথচ তারা আমেরিকার আধুনিক-ভালো জিনিসগুলো গ্রহণ করছেন না। এটা দু:খজনক। তিনি ক্ষোভের সাথে বলেন চকবাজার-বনানীর ঘটনায় যারা অগ্নিকান্ডে মারা গেলো তাদের দায় নেবে কে? তিনি বনে করেন দেশে যতটুকু আইন আছে তার সঠিক আর যথাযথ প্রয়োগ হলেই অনেক দূর্ঘটনা রোধ সম্ভব।