ড. মোমেন ও শাহীনের সমর্থন সভা : ড. মিলনের সমর্থকরা হতাশ
- প্রকাশের সময় : ০৪:৩১:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ ডিসেম্বর ২০১৮
- / ৫৯২ বার পঠিত
নিউইয়র্ক: আগামী ৩০ ডিসেম্বর রোববার বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের একাদশ নির্বাচন। এই নির্বাচনের দিন-ক্ষণ যতই ঘনিয়ে আসছে দেশের ন্যায় প্রবাসেও নির্বাচন নিয়ে নানা জল্পনা কল্পনা চলছে। বিশেষ করে বিভিন্ন জোট ও ফ্রন্টের প্রার্থী মনোনয়ন চুড়ান্ত হওয়ায় এই আলোচনা আরো জমে উঠে। বিশেষ করে দীর্ঘদিনের প্রবাস জীবন শেষে দেশে ফিরে ডা. আব্দুল মোমেন ও এম এম শাহীন ক্ষমতাসীন মহাজোট থেকে মনোনয়ন পাওয়ায় তাদের সমর্থকরা আনন্দ-উল্লাস করছে। অপরদিকে ড. এহসানুল হক মিলন বিএনপি তথা ঐক্যফ্রন্টের মনোনয়ন না পাওয়ায় তার সমর্তকদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। উল্লেখ্য, ড. আব্দুল মোমেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ছিলেন এবং এম এম শাহীন ইতিপূর্বে দুইবার এমপি নির্বাচিত হন। অপরদিকে ড. এহসানুল হক মিলন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি প্রবাস জীবন শেষে দেশে ফিরে একাধিকবার এমপি নির্বাচিত হন এবং শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। কেন্দ্রীয় বিএনপি’র আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক। ড. মোমেন সিলেট-১ আর এম এম শাহীন মৌলভীবাজার-২ আসন থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন।
এদিকে ড. মোমেন ও এম এম শাহীন-এর সমর্থনে প্রবাসে সভা-সমাবশের আয়োজন করা হয়েছে এবং তাদের নির্বাচনী ব্যয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশীরা। যদিও প্রবাস থেকে দেশের নির্বাচনে আর্থিকভাবে সহযোগিতার বিষয়ে মিশ্র প্রক্রিয়াও লক্ষ্য করা গেছে। ড. মোমেনের সমর্থকরা গত ২ ডিসেম্বর রোববার জ্যাকসন হাইটসের পালকি পার্টি সেন্টারে সভা করে তাকে সার্বিকভাবে সহযোগিতার অঙ্গীকার করেছেন। পাশাপাশি এম এম শাহীনের সমর্থকরা গত ৯ ডিসেম্বর রোববার সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসের বেলোজিনো পার্টি হলে সভা-সমাবেশ করে সার্বিকভাবে সহযোগিতার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
অপরদিকে কোন কোন প্রার্থীর নামে প্রবাস থেকে ‘চাঁদাবাজী’র অভিযোগ কমিউনিটিতে আলোচিত হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ড. মোমেনের নামে ‘চাঁদাবাজী’র অভিযোগ উঠায় তিনি সিলেটের মিডিয়ার মাধ্যমে প্রদত্ত বিবৃতির মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করে দিয়েছেন।
সংশ্লিস্টরা জানান, ড. মোমেন ও এম এম শাহীন দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসী থাকায় তাদের অনেকে নিকটাত্বীয়, বন্ধু-বান্ধব ও শুভাকাঙ্খী রয়েছে। আমরা তাদের সমর্তনে করছি তা নিজেদের উদ্যোগেই স্বেচ্ছা প্রনোদিত হয়ে করছি এবং একজন বাংলাদেশী হিসেবে এটা আমাদের দায়িত্ব বলেই মনে করছি।
সংশ্লিস্টদের মতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে অন্য একটি দেশের নির্বাচনী ব্যয়ে ‘চাঁদা’ উঠিয়ে আর্থিকভাবে সহযোগিতা আইনত বৈধ নয়। তবে স্বেচ্ছা প্রণোদিত হয়ে কেউ যদি আর্তিকভাবে সহযোগিতার জন্য এগিয়ে আসেন সেটা অন্য কথা। এব্যাপারে প্রবীন প্রবাসী ও ট্যাক্স কনসালটেন্ট আবুল কালাম ও সিপিএ মোহাম্মদ কামাল জানান, আইনগতভাবে এক দেশ থেকে অন্য দেশের নির্বাচনের জন্য বা কোন প্রার্থীর জন্য ‘চাঁদা’ সংগ্রহ বৈধ নয়। তবে স্বেচ্ছা প্রনোদিত হয়ে কেউ কারো জন্য কিছু করলে সেটা অন্য কথা।
আবার কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা ও সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ড. এহসানুল হক মিলন মনোনয়ন (চাঁদপুর-১) না পাওয়ায় নিউইয়র্ক তথা যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী তার সমর্থকরা ক্ষোভের পাশাপাশি হতাশা ব্যক্ত করেছেন। কেউ কেউ বিষয়টি পুন:বিবেচনার জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন বলেও জানা গেছে।
ড. মিলনের মনোনয়ন না পাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি নেতা আব্দস সবুর তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন: ‘যেখানে একজন নিবাঁহী সদস্য বিএনপির নমিনেশন পায় কি করে বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পাদক ড. এহছানুল হক মিলন (চাদঁপুর-১), বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান, মিডিয়া জগতের সিংহপুরুষ শওকত মাহমুদ (কুমিল্লা-৫)-এর নমিনেশন পায় না। বিবেচ্য বিষয় আজকে যদি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কোন প্রাথীঁ তাদের চেয়ে ভাল হতো তাহলে মেনে নেওয়া যেত কিন্তু এক্ষেত্রে মেনে নেওয়া শুধু কচুয়াবাসী বা বুড়িচং-ব্রাক্ষনপাড়াবাসী না কোন প্রবাসী বা বাংলাদেশের কোন বিএনপির নেতাকর্মী মেনে নিতে পারছে না। ঐক্যফ্রন্টের ভবিষ্যত অগ্রগতির প্রশ্নে বিবেচনার আহ্বান রইল ঐক্যফ্রন্টের প্রধান ড কামাল হোসেন ও মুখপাত্র বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দের কাছে। আমরা আশা করি জাতির এই ক্লান্তিকালে স্বজন-প্রীতি না করে প্রকৃত প্রাথীঁকে সুযোগ দেওয়া হউক।’
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আওয়ামী লীগ-বিএনপি দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্য থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে বিফল হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক নিজাম চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক আহমদ, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সাবেক সহ সভাপতি আলহাজ সোলায়মান ভুইয়া, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল, বিএনপি নেতা পারভেজ সাজ্জাদ, যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জয় চৌধুরী প্রমুখ।