নিউইয়র্ক ১২:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

টাঙ্গাইল সোসাইটির সংগঠক স্বপনের অকাল মৃত্যু

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০২:৪৪:৫২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ জুলাই ২০১৭
  • / ৮৫৮ বার পঠিত

নিউইয়র্ক: নিউইয়র্ক সিটির এমটিএ-তে কর্মরত, বাংলাদেশী কমিউনিটি বিশেষ করে প্রবাসী টাঙ্গাইলবাসীদের পরিচিত মুখ, বিশিষ্ট সংগঠক, সমাজসেবক, বাংলাদেশের শিশু-কিশোর সংগঠন খেলাঘর আসরের টাঙ্গাইল শাখার সাবেক সংগঠন শামীম আল মামুন স্বপন (৪৬) আর নেই (ইন্নল্লিাহি…….রাজেউন)। ১৪ জুলাই শুক্রবার আনুমানিক ভোর ৩/৪টার দিকে নিজ গৃহে (১৫৩-৩৬, ৭৩ এভিনিউ, কুইন্স, নিউইয়র্ক) ঘুমন্ত অবস্থায় শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই পুত্র, ভাই-বোন সহ অনেক গুনগুাহী রেখে গেছেন। তার অকাল ও আকস্মিক মৃত্যু খবরে প্রবাসী টাঙ্গাইলবাসীদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে। তার গ্রামের বাড়ী টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলায় এবং টাঙ্গাইল শহরের সাবালিয়ায় তাদের স্থায়ী বসবাস। খবর ইউএনএ’র।
জানা গেছে, ১৩ জুলাই রাতের খাবার খেয়ে স্ত্রী ও দুই পুত্র নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। মধ্যরাতে একবার ঘুম থেকে জেগে বাথরুম সেরে পুনরায় ঘুমিয়ে পড়েন। স্ত্রী সিমি স্বামী আর পুত্রদের ঘুমে রেখেই ভোরে কাজে চলে যান। বাসার কাছেই তার কর্মস্থল থাকায় সিমি সকাল ৭টার দিকে স্বামী-সন্তানদের খোঁজ নিয়ে বাসায় ফোন করেন। কিন্তু কেউ ফোন না ধরায় তিনি ৮টার দিকে বাসায় ফিরে এসে দেখেন স্বামী সহ সন্তানরা ঘুমিয়ে আছে। এসময় তিনি স্বামীকে জাগানোর জন্য ডাক দেন এবং স্বামীর কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে জাগানোর জন্য শরীরে ধাক্কা দেন। এসময় তিনি তার স্বামীর শরীর ঠান্ডা ও শক্ত অনুভব করেন এবং সাথে সাথে অ্যাম্বুলেন্স কল করেন। পরবর্তীতে অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরী বিভাগের স্বাস্থ্যকর্মীরা স্বপনের চেকআপ করে জানান অনেক আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। তবে কখন তার মৃত্যু হয়েছে তা জানা সম্ভব হয়নি। ধারণা করা হয়ে ঘুমের মধ্যেই হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তার মৃত্যু ঘটে।
শামীম আল মামুন স্বপন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী টাঙ্গাইলবাসীদের সামাজিক সংগঠনের একজন সক্রিয় কর্মকর্তা হিসেবে প্রথম থেকেই সংগঠনের যুক্ত ছিলেন। তার অকাল মৃত্যুতে টাঙ্গাইল সোসাইটি ইউএসএ’র পক্ষ থেকে মরহুমের বিদেহী আতœার শান্তি এবং রুহের মাগফেরাত কামনায় সকল প্রবাসী বাংলাদেশীর দোয়া কামনা করা হয়েছে।
এদিকে মরহুম শামীম আল মামুন স্বপনের নামাজে জানাজা ১৫ জুলাই শনিবার বেলা সোয়া ১২টার দিকে জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার (জেএমসি)-এ অনুষ্ঠিত হয়। বিপুল সংখ্যক প্রবাসী টাঙ্গাইলবাসী সহ নিউইয়র্ক সিটির এমটিএ-তে কর্মরত স্বপনের সহকর্মী সহ আতœীয়-স্বজন, বন্ধ-বান্ধব এবং কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ জানাজা নামাজে শরীক হন। ইমাম জুনায়েদ বেগ এই জানাজা নামাজে ইমামতি করেন। এর আগে জেএমসি’র ট্রাষ্টিবোর্ডের চেয়ারম্যান ডা. এম এম বিল্লাহ, মরহুম স্বপনের শশুর শওকত হোসেন, ভগ্নিপতি আজিজুর রহমান ও এমটিএ’র সুপারভাইজর তারেক হায়দার উপস্থিত মুসল্লীদের উদ্দেশ্যে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন এবং স্বপনের বিদেহী আতœার শান্তি কামনায় দোয়া কামনা করেন। পাশাপাশি তার কাছে কেউ কোন দেনা-পাওনা থাকলে সেব্যাপারে তাদের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানান।

মরহুম স্বপনের মরদেহ ফিউনেরাল হোম থেকে জেএমসিতে আসার আগেই শতাধিক প্রবাসী টাঙ্গাইলবাসী জেএমসিতে সমবেত হন। স্বপনের মরদেহ জেএমসিতে আনার পর এবং জানাজা শেষে তার মুখমন্ডল এক নজর দেখার সময় হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। স্ত্রী সিমি সহ ঘনিষ্টজনের অনেকেই এসময় কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। জানাজা শেষে মরহুম স্বপনের মরদেহ নিউইয়র্কের লং আইল্যান্ডস্থ ওয়াশিংটন মেমোরিয়াল কবর স্থানে দাফন করা হয়।
শামীম আল মামুন স্বপন ৯০ দশকের শেষের দিকে ডিভি লটারী জয়ী হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আগমন করেন। তিনি স্ত্রী-পুত্রদের নিয়ে প্রথমে নিউইয়র্ক সিটির কুইন্সের উডসাইড এবং পরবর্তীতে ফ্লাশিং এলাকায় বসবাস করছিলেন। তার আকস্মিক মৃত্যুর খবর পেয়ে প্রবাসী টাঙ্গাইলবাসীরা তার বাসায় গিয়ে গভীর শোক প্রকাশ করেন এবং স্ত্রী-পুত্রদের শান্তনা দেন।
অপরদিকে শামীম আল মামুন স্বপনের আকস্মিক ইন্তেকালে ঐক্যবদ্ধ প্রবাসী টাঙ্গাইলবাসীদের সামাজিক সংগঠন ‘টাঙ্গাইল সোসাইটি ইউএসএ’র যৌথ আহ্বায়ক দেওয়ান আমিনুর রহমান ও মোজাম্মেল হক এবং যৌথ সদস্য সচিব শাহীনুর রহমান ও তারিকুল ইসলাম ছাড়াও সাপ্তাহিক বাংলাদেশ পত্রিকা’র সম্পাদক ও নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক ডা. ওয়াজেদ এ খান, হককথা.কম-এর সম্পাদক ও টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবিএম সালাহউদ্দিন আহমেদ সহ বিশিষ্ট সংগঠক খন্দকার আশেক শামীম, মীর মাহবুবুর রহমান বাবু, মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান জঙ্গী, মোহাম্মদ আব্দুস সালাম, ফরহাদ তালুকদার, মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, মোহাম্মদ শামসুজ্জামান খান, মোহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম খান, মোহাম্মদ হারুনুর রশীদ বাবলু, খন্দকার মাহবুব হোসেন, মিজানুর রহমান খান আপেল, আখতারুজ্জামান হ্যাপী, অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা, মীর্জা নূরে আলম, মীর মাহবুবুল কায়েস, আব্দুল হাকিম, অশরাফ ভূঁইয়া টনি, আবৃত্তিকার গোপন সাহা প্রমুখ গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

About Author Information

টাঙ্গাইল সোসাইটির সংগঠক স্বপনের অকাল মৃত্যু

প্রকাশের সময় : ০২:৪৪:৫২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ জুলাই ২০১৭

নিউইয়র্ক: নিউইয়র্ক সিটির এমটিএ-তে কর্মরত, বাংলাদেশী কমিউনিটি বিশেষ করে প্রবাসী টাঙ্গাইলবাসীদের পরিচিত মুখ, বিশিষ্ট সংগঠক, সমাজসেবক, বাংলাদেশের শিশু-কিশোর সংগঠন খেলাঘর আসরের টাঙ্গাইল শাখার সাবেক সংগঠন শামীম আল মামুন স্বপন (৪৬) আর নেই (ইন্নল্লিাহি…….রাজেউন)। ১৪ জুলাই শুক্রবার আনুমানিক ভোর ৩/৪টার দিকে নিজ গৃহে (১৫৩-৩৬, ৭৩ এভিনিউ, কুইন্স, নিউইয়র্ক) ঘুমন্ত অবস্থায় শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই পুত্র, ভাই-বোন সহ অনেক গুনগুাহী রেখে গেছেন। তার অকাল ও আকস্মিক মৃত্যু খবরে প্রবাসী টাঙ্গাইলবাসীদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে। তার গ্রামের বাড়ী টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলায় এবং টাঙ্গাইল শহরের সাবালিয়ায় তাদের স্থায়ী বসবাস। খবর ইউএনএ’র।
জানা গেছে, ১৩ জুলাই রাতের খাবার খেয়ে স্ত্রী ও দুই পুত্র নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। মধ্যরাতে একবার ঘুম থেকে জেগে বাথরুম সেরে পুনরায় ঘুমিয়ে পড়েন। স্ত্রী সিমি স্বামী আর পুত্রদের ঘুমে রেখেই ভোরে কাজে চলে যান। বাসার কাছেই তার কর্মস্থল থাকায় সিমি সকাল ৭টার দিকে স্বামী-সন্তানদের খোঁজ নিয়ে বাসায় ফোন করেন। কিন্তু কেউ ফোন না ধরায় তিনি ৮টার দিকে বাসায় ফিরে এসে দেখেন স্বামী সহ সন্তানরা ঘুমিয়ে আছে। এসময় তিনি স্বামীকে জাগানোর জন্য ডাক দেন এবং স্বামীর কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে জাগানোর জন্য শরীরে ধাক্কা দেন। এসময় তিনি তার স্বামীর শরীর ঠান্ডা ও শক্ত অনুভব করেন এবং সাথে সাথে অ্যাম্বুলেন্স কল করেন। পরবর্তীতে অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরী বিভাগের স্বাস্থ্যকর্মীরা স্বপনের চেকআপ করে জানান অনেক আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। তবে কখন তার মৃত্যু হয়েছে তা জানা সম্ভব হয়নি। ধারণা করা হয়ে ঘুমের মধ্যেই হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তার মৃত্যু ঘটে।
শামীম আল মামুন স্বপন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী টাঙ্গাইলবাসীদের সামাজিক সংগঠনের একজন সক্রিয় কর্মকর্তা হিসেবে প্রথম থেকেই সংগঠনের যুক্ত ছিলেন। তার অকাল মৃত্যুতে টাঙ্গাইল সোসাইটি ইউএসএ’র পক্ষ থেকে মরহুমের বিদেহী আতœার শান্তি এবং রুহের মাগফেরাত কামনায় সকল প্রবাসী বাংলাদেশীর দোয়া কামনা করা হয়েছে।
এদিকে মরহুম শামীম আল মামুন স্বপনের নামাজে জানাজা ১৫ জুলাই শনিবার বেলা সোয়া ১২টার দিকে জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার (জেএমসি)-এ অনুষ্ঠিত হয়। বিপুল সংখ্যক প্রবাসী টাঙ্গাইলবাসী সহ নিউইয়র্ক সিটির এমটিএ-তে কর্মরত স্বপনের সহকর্মী সহ আতœীয়-স্বজন, বন্ধ-বান্ধব এবং কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ জানাজা নামাজে শরীক হন। ইমাম জুনায়েদ বেগ এই জানাজা নামাজে ইমামতি করেন। এর আগে জেএমসি’র ট্রাষ্টিবোর্ডের চেয়ারম্যান ডা. এম এম বিল্লাহ, মরহুম স্বপনের শশুর শওকত হোসেন, ভগ্নিপতি আজিজুর রহমান ও এমটিএ’র সুপারভাইজর তারেক হায়দার উপস্থিত মুসল্লীদের উদ্দেশ্যে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন এবং স্বপনের বিদেহী আতœার শান্তি কামনায় দোয়া কামনা করেন। পাশাপাশি তার কাছে কেউ কোন দেনা-পাওনা থাকলে সেব্যাপারে তাদের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানান।

মরহুম স্বপনের মরদেহ ফিউনেরাল হোম থেকে জেএমসিতে আসার আগেই শতাধিক প্রবাসী টাঙ্গাইলবাসী জেএমসিতে সমবেত হন। স্বপনের মরদেহ জেএমসিতে আনার পর এবং জানাজা শেষে তার মুখমন্ডল এক নজর দেখার সময় হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। স্ত্রী সিমি সহ ঘনিষ্টজনের অনেকেই এসময় কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। জানাজা শেষে মরহুম স্বপনের মরদেহ নিউইয়র্কের লং আইল্যান্ডস্থ ওয়াশিংটন মেমোরিয়াল কবর স্থানে দাফন করা হয়।
শামীম আল মামুন স্বপন ৯০ দশকের শেষের দিকে ডিভি লটারী জয়ী হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আগমন করেন। তিনি স্ত্রী-পুত্রদের নিয়ে প্রথমে নিউইয়র্ক সিটির কুইন্সের উডসাইড এবং পরবর্তীতে ফ্লাশিং এলাকায় বসবাস করছিলেন। তার আকস্মিক মৃত্যুর খবর পেয়ে প্রবাসী টাঙ্গাইলবাসীরা তার বাসায় গিয়ে গভীর শোক প্রকাশ করেন এবং স্ত্রী-পুত্রদের শান্তনা দেন।
অপরদিকে শামীম আল মামুন স্বপনের আকস্মিক ইন্তেকালে ঐক্যবদ্ধ প্রবাসী টাঙ্গাইলবাসীদের সামাজিক সংগঠন ‘টাঙ্গাইল সোসাইটি ইউএসএ’র যৌথ আহ্বায়ক দেওয়ান আমিনুর রহমান ও মোজাম্মেল হক এবং যৌথ সদস্য সচিব শাহীনুর রহমান ও তারিকুল ইসলাম ছাড়াও সাপ্তাহিক বাংলাদেশ পত্রিকা’র সম্পাদক ও নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক ডা. ওয়াজেদ এ খান, হককথা.কম-এর সম্পাদক ও টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবিএম সালাহউদ্দিন আহমেদ সহ বিশিষ্ট সংগঠক খন্দকার আশেক শামীম, মীর মাহবুবুর রহমান বাবু, মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান জঙ্গী, মোহাম্মদ আব্দুস সালাম, ফরহাদ তালুকদার, মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, মোহাম্মদ শামসুজ্জামান খান, মোহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম খান, মোহাম্মদ হারুনুর রশীদ বাবলু, খন্দকার মাহবুব হোসেন, মিজানুর রহমান খান আপেল, আখতারুজ্জামান হ্যাপী, অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা, মীর্জা নূরে আলম, মীর মাহবুবুল কায়েস, আব্দুল হাকিম, অশরাফ ভূঁইয়া টনি, আবৃত্তিকার গোপন সাহা প্রমুখ গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন।