নিউইয়র্ক ০৬:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫, ২১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

চট্টগ্রাম সমিতির কোন্দল চরমে : বহিষ্কার পাল্টা বহিস্কার : সেলিম-রাসেলের বিরুদ্ধে ৪৪,৬২২ ডলার আতœসাতের অভিযোগ

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৩:১২:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ জানুয়ারী ২০১৮
  • / ১১৫৭ বার পঠিত

নিউইয়র্ক: প্রবাসের অন্যতম বৃহৎ সামাজিক সংগঠন চট্টগ্রাম সমিতি নর্থ আমেরিকা’র অভ্যন্তরীন কোন্দল আবার চরম আকার ধারণ করেছে। নেতৃত্বের কোন্দল আর অভিযোগ পাল্টা অভিযোগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন সমিতির নেতৃবৃন্দ সহ সদস্যবৃন্দ। উদ্ভুত পরিস্থিতে ‘সংগঠন বিরোধী কর্মকান্ডের অভিযোগে’ সংগঠনের একদিকে এক পক্ষ সভাপতি আব্দুল হাই জিয়া ও সিনিয়র সহ সভাপতি খোকন কে চৌধুরীকে, অপরদিকে অপর পক্ষ সাধারণ সম্পাদক মো: সেলিম ও কোষাধ্যক্ষকে দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দিয়ে বহিষ্কার করেছে। এদিকে এক সাংবাদিক সম্মেলনে সমিতির সভাপতি আব্দুল হাই জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আশ্রাব আলী খান লিটন পাল্টা অভিযোগ করে বলেছেন সভাপতির অনুমতি ছাড়াই ৪৪,৬২২ ডলার উত্তোলন করে ব্যক্তিগতভাবে সরিয়ে নিয়েছেন সাধারণ সম্পাদক মো: সেলিম ও কোষাধ্যক্ষ মীর কাদের রাসেল। যা আতœসাতের শামিল।
জানা গেছে, সমিতির গত নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই মূলত: চট্টগ্রাম সমিতিতে বিরোধ-বিভক্তি আর নেতৃত্বের কোন্দল শুরু হয়। সেই সময় সমিতির নিজস্ব ভবন দখল, পাল্টা দখলের ঘটনাও ঘটে। বিভক্তির কারণে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবীর অনুষ্ঠানে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। সমিতির এসব কর্মকান্ডে বিব্রত সাধারণ প্রবাসী চট্টগ্রামবাসী। সংশ্লিষ্টদের মতে সমিতির বর্তমান ও সাবেক কয়েকজন কর্মকর্তার মধ্যকার ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব, নেতৃত্বের কোন্দল, মত পার্থক্য প্রভৃতি কারনে ‘চরম খেসারত’ দিতে হচ্ছে প্রবাসের এক সময়ের সুনামধন্য সংগঠন চট্টগ্রাম সমিতিকে।
সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও কামাল হোসেন মিঠু ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন চৌধুরী খোকন প্রেরীত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে: ‘সমিতির গঠনতন্ত্রের ৬.১,৬.৬, ৭.১ (ক) (খ) ৮.৩  (ক), (খ) ও (গ) এবং ১৭.১ লঙ্ঘন করার কারণে গঠনতন্ত্রের অনুচ্ছেদ ১৪.১ ও ১৪.২ দ্বারা মোতাবেক সভাপতি আব্দুল হাই জিয়াকে তার পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে এবং তাকে উপরোক্ত ধারাসমূহ লঙ্গনে প্রত্যক্ষভাবে সহযোগীতা করার অপরাধে একই ধারা মোতাবেক সহ সভাপতি খোকন কে চৌধুরীকে তার পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। কার্যকরী পরিষদের সংখ্যা গরিষ্ট সদস্যদের ভোটের মাধ্যমে উপরোক্ত সিদ্ধান্তসমূহ গ্রহণ করা হলো।’
উল্লেখ্য, গত বছরের এপ্রিল মাসে নির্বাচনের পর বিজিত পক্ষের দায়ের করা মামলা থেকে উত্তরণের পর সংগঠনের কার্যক্রম অত্যন্ত সুচারুভাবে পরিচালিত হতে থাকে। কিন্তু সংগঠনের সুন্দর কার্যক্রম সহ্য হচ্ছিল না বলে মোহাম্মদ হানিফ এবং তার দোষররা ট্রাষ্টিবোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করে সভাপতি আব্দুল হাই জিয়া ও সিনিয়র সহ-সভাপতি খোকন কে চৌধুরীর সহযোগিতায় সংগঠনের স্বাভাবিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে কার্যকরী পরিষদ কর্তৃক গঠিত বার্ষিক মিলাদুন্নবী (সা:) উদযাপনে বাধা প্রদান করা। সভাপতি কর্তৃক গঠনতন্ত্রের ৬.১, ৬.২, ৭.১ (ক), (খ) ও ৮.৩ অমান্য করে তথাকথিত বিশেষ সভার আয়োজন করে আদালতের বিজয়ী কার্যকরী কমিটি বিলুপ্তীর হুমকী দেওয়া হয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়: গত ১০/২২/২০১৭ তারিখের কার্যকরী পরিষদের সভায়  এনাম চৌধুরীর  হুমকীর মাধ্যমে সভাপতি তার পকেট থেকে ২টা তালিকা (ট্রষ্টি ও উপদেষ্টা) বের করে এবং তা পাশ করার জন্য উপস্থিত কার্যকরী কমিটির সকল সদস্যদের আদেশ করেন। অন্যথায় অনেক অসুবিধা হবে বলে হুমকি প্রদান করেন। উপস্থিত সদস্যদের কয়েকজন তাতে প্রতিবাদ করলে ও বেশীর ভাগ সদস্য তালিকাসমূহ অনুমোদনের পক্ষে মতামত দেন। উক্ত সভার ৩/৪ দিন পর  মোহাম্মদ হানিফ তাড়াহুড়া করে সংগঠনের পেড ব্যবহার করে কার্যকরী পরিষদের বিনা অনুমতিতে ট্রাষ্টিবোর্ড ও উপদেষ্টা পরিষদের ২টি তালিকা স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশ করে। যেখানে মোহাম্মদ হানিফ নিজেকে ট্রাষ্টিবোর্ড-এর চেয়ারম্যান এবং শামসুল আলম চৌধুরীকে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দেখানো হয়। উক্ত অনৈতিক কর্মকান্ডে কার্যকরী পরিষদের সকল সদস্য অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয় এবং ১১/১২/২০১৭ আরো একটি কার্যকরী পরিষদের সভা সভাপতি আবদুল হাই জিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্টিত হয়। উক্ত সভায় সর্বসম্মক্রিমে (সভাপতি সহ) পত্রিকায় প্রকাশিত ট্রাষ্টি ও উপদেষ্টা কমিটিকে স্থগিত করা হয় এবং তাতেই আতেঁ ঘা লাগে মোহাম্মদ হানিফ ও তার পালিত দোষরদের। তারই ধারাবাহিকতায় গত ১২/১৭/২০১৭ বার্ষিক পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা:) উৎযাপনের দিন মোহাম্মদ হানিফ সমিতির ভবনের মূলফটকে চারটি বিশাল আকৃতির চেইন দ্বারা তালাবদ্ধ করে দেয় এবং মিলাদুন্নবী অনুষ্টানে বাধা প্রদান করে। সাথে আগত চট্টগ্রামবাসীদের অকত্যভাষায় গালিগালাজ করে এবং ঐ উক্ত কর্মকান্ডে সহযোগীতা করেন সভাপতি আব্দুল হাই জিয়া, সিনিয়র সহ- সভাপতি খোকন কে চৌধুরী, এনাম চৌধুরী এবং শামসুল আলম চৌধুরী।
যার কারণে কার্যকরী পরিষদের সংখ্যগরিষ্ঠ সদস্য মিলাদুন্নবী উদযাপন কমিটি সমিতির ভবনের পরিবর্তে পাশ্ববর্তী একটি ভবনে মিলাদ মাহফিল সম্পন্ন করতে বাধ্য হয় এবং একই দিন রাতে কার্যকরী পরিষদের সদস্যরা মিলাদ সম্পন্ন করার পর এক জরুরী সভায় মিলিত হয়ে সভাপতি জিয়া, সিনিয়র সহ সভাপতি খোকন কে চৌধুরীকে তাদের স্ব স্ব পদ থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়।  একই সাথে সমিতির ব্যাংক একাউন্ট থেকে সভাপতি আব্দুল হাই জিয়ার নাম বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।
উক্ত জরুরী সভার গৃহিত সিদ্ধান্ত সমূহ নিচে হুবহু উল্লেখ করা হল। আমরা কার্যকরী পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ট সদস্যদের সিদ্ধান্তমতে চট্টগ্রাম বাসীর অবগতির জন্য এই সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হল।
সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দেশে থাকায় সর্বসম্মতিক্রমে কার্যকরী পরিষদের প্রথম সদস্য কামাল হোসেন মিঠুকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও মহিউদ্দিন চৌধুরী খোকনকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
এদিকে গত রোববার (২৮ জানুয়ারী) সন্ধ্যায় ব্রুকলীনে সমিতি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে সমিতির সভাপতি আব্দুল হাই জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আশ্রাব আলী খান লিটন তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ১৯৮৯ সালে ‘চিটাগাং এসোসিয়েশন অব নর্থ আমেরিকা ইনক’ প্রতিষ্ঠার পর প্রবাসী চট্টগ্রামবাসীদের সুখ-দুখে পাশে থেকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করাই ছিলো মূল লক্ষ্য। হাটি হাটি পা পা করে সমিতি আজ বিশাল রূপ ধারণ করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় বিগত ২ এপ্রিল ২০১৭ সারে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের মাধ্যমে পূর্ণ প্যানেলে নির্বাচিত হই এবং দায়িত্বে আসি। তারা বলেন, মাননীয় আদালতের নির্দেশে আমরা সমিতির কার্যক্রম শুরু করি। পরবর্তীতে কার্যকরী পরিষদের ২১জন কর্মকর্তার মধ্যে ১৭ জনের উপস্থিতিতে এবং ১৪ জনের মতামতের ভিত্তিতে ট্রাষ্টি ও উপদষ্টা বোর্ড গঠন করা হয়। কিন্তু সমিতির কিছু সিনিয়র নেতৃবৃন্দ ট্রাষ্টি ও উপদেষ্টা পরিষদে তাদের পছন্দের জায়গায় স্থান না পাওয়ায় কমিটির ভিতরে বিভিন্ন উষ্কানী দিয়ে সমস্যৗার সৃষ্টি করেন। যা পরবর্তীতে বিষয়টি দ্বিধা-দ্বন্দ্বের সৃষ্টি করে। এছাড়া সাধারণ সম্পাদক কার্যকরী কমিটির কতিপয় সদস্যদেরর নিয়ে সমিতির বাইরে সভা করেন। তার এই অসাংগঠনিক কার্যকলাপে চট্টগ্রামবাসী অসন্তোষ প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে গত ১৭ ডিসেম্বর বিশেষ সভা আহ্বান করা হয় এবং আমরা জানতে পারি যে সাধারণ সম্পাদক মো: সেলিম ও কোষাধ্যক্ষ মীর কাদের রাসেল ৩টি একাউন্ট থেকে সভাপতির অনুমতি ছাড়াই ৪৪,৬২২ ডলার ব্যক্তিগতভাবে সরিয়ে নেন যা সমিতির গঠনতন্ত্রের ১৪ ধারা মতে সমিতির সম্পদ ও অর্থ আত্বসাতের অপরাধ। যা সমিতির ইতিহাসে ঘটেনি।
সাংবাদিক সম্মেলনে অনতিবিলম্বে সমিতির অর্থ সমিতির একাউন্ডে ফিরিয়ে দেয়ার  দাবী জানানো হয়। অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান। সাংবাদিক সম্মেলনে আরো জানানো হয় যে, বিশেষ সভায় সমিতির পরিচালনার সুবিধার্থে প্রচার সম্পাদক আশ্রাব আলী খান লিটনকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এবং সমাজকল্যাণ ও আপ্যায়ন সম্পাদক মতিউর রহমানকে কোষাধ্যক্ষ মনোনীত করা হয়। (সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা)

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

About Author Information

চট্টগ্রাম সমিতির কোন্দল চরমে : বহিষ্কার পাল্টা বহিস্কার : সেলিম-রাসেলের বিরুদ্ধে ৪৪,৬২২ ডলার আতœসাতের অভিযোগ

প্রকাশের সময় : ০৩:১২:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ জানুয়ারী ২০১৮

নিউইয়র্ক: প্রবাসের অন্যতম বৃহৎ সামাজিক সংগঠন চট্টগ্রাম সমিতি নর্থ আমেরিকা’র অভ্যন্তরীন কোন্দল আবার চরম আকার ধারণ করেছে। নেতৃত্বের কোন্দল আর অভিযোগ পাল্টা অভিযোগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন সমিতির নেতৃবৃন্দ সহ সদস্যবৃন্দ। উদ্ভুত পরিস্থিতে ‘সংগঠন বিরোধী কর্মকান্ডের অভিযোগে’ সংগঠনের একদিকে এক পক্ষ সভাপতি আব্দুল হাই জিয়া ও সিনিয়র সহ সভাপতি খোকন কে চৌধুরীকে, অপরদিকে অপর পক্ষ সাধারণ সম্পাদক মো: সেলিম ও কোষাধ্যক্ষকে দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দিয়ে বহিষ্কার করেছে। এদিকে এক সাংবাদিক সম্মেলনে সমিতির সভাপতি আব্দুল হাই জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আশ্রাব আলী খান লিটন পাল্টা অভিযোগ করে বলেছেন সভাপতির অনুমতি ছাড়াই ৪৪,৬২২ ডলার উত্তোলন করে ব্যক্তিগতভাবে সরিয়ে নিয়েছেন সাধারণ সম্পাদক মো: সেলিম ও কোষাধ্যক্ষ মীর কাদের রাসেল। যা আতœসাতের শামিল।
জানা গেছে, সমিতির গত নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই মূলত: চট্টগ্রাম সমিতিতে বিরোধ-বিভক্তি আর নেতৃত্বের কোন্দল শুরু হয়। সেই সময় সমিতির নিজস্ব ভবন দখল, পাল্টা দখলের ঘটনাও ঘটে। বিভক্তির কারণে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবীর অনুষ্ঠানে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। সমিতির এসব কর্মকান্ডে বিব্রত সাধারণ প্রবাসী চট্টগ্রামবাসী। সংশ্লিষ্টদের মতে সমিতির বর্তমান ও সাবেক কয়েকজন কর্মকর্তার মধ্যকার ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব, নেতৃত্বের কোন্দল, মত পার্থক্য প্রভৃতি কারনে ‘চরম খেসারত’ দিতে হচ্ছে প্রবাসের এক সময়ের সুনামধন্য সংগঠন চট্টগ্রাম সমিতিকে।
সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও কামাল হোসেন মিঠু ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন চৌধুরী খোকন প্রেরীত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে: ‘সমিতির গঠনতন্ত্রের ৬.১,৬.৬, ৭.১ (ক) (খ) ৮.৩  (ক), (খ) ও (গ) এবং ১৭.১ লঙ্ঘন করার কারণে গঠনতন্ত্রের অনুচ্ছেদ ১৪.১ ও ১৪.২ দ্বারা মোতাবেক সভাপতি আব্দুল হাই জিয়াকে তার পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে এবং তাকে উপরোক্ত ধারাসমূহ লঙ্গনে প্রত্যক্ষভাবে সহযোগীতা করার অপরাধে একই ধারা মোতাবেক সহ সভাপতি খোকন কে চৌধুরীকে তার পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। কার্যকরী পরিষদের সংখ্যা গরিষ্ট সদস্যদের ভোটের মাধ্যমে উপরোক্ত সিদ্ধান্তসমূহ গ্রহণ করা হলো।’
উল্লেখ্য, গত বছরের এপ্রিল মাসে নির্বাচনের পর বিজিত পক্ষের দায়ের করা মামলা থেকে উত্তরণের পর সংগঠনের কার্যক্রম অত্যন্ত সুচারুভাবে পরিচালিত হতে থাকে। কিন্তু সংগঠনের সুন্দর কার্যক্রম সহ্য হচ্ছিল না বলে মোহাম্মদ হানিফ এবং তার দোষররা ট্রাষ্টিবোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করে সভাপতি আব্দুল হাই জিয়া ও সিনিয়র সহ-সভাপতি খোকন কে চৌধুরীর সহযোগিতায় সংগঠনের স্বাভাবিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে কার্যকরী পরিষদ কর্তৃক গঠিত বার্ষিক মিলাদুন্নবী (সা:) উদযাপনে বাধা প্রদান করা। সভাপতি কর্তৃক গঠনতন্ত্রের ৬.১, ৬.২, ৭.১ (ক), (খ) ও ৮.৩ অমান্য করে তথাকথিত বিশেষ সভার আয়োজন করে আদালতের বিজয়ী কার্যকরী কমিটি বিলুপ্তীর হুমকী দেওয়া হয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়: গত ১০/২২/২০১৭ তারিখের কার্যকরী পরিষদের সভায়  এনাম চৌধুরীর  হুমকীর মাধ্যমে সভাপতি তার পকেট থেকে ২টা তালিকা (ট্রষ্টি ও উপদেষ্টা) বের করে এবং তা পাশ করার জন্য উপস্থিত কার্যকরী কমিটির সকল সদস্যদের আদেশ করেন। অন্যথায় অনেক অসুবিধা হবে বলে হুমকি প্রদান করেন। উপস্থিত সদস্যদের কয়েকজন তাতে প্রতিবাদ করলে ও বেশীর ভাগ সদস্য তালিকাসমূহ অনুমোদনের পক্ষে মতামত দেন। উক্ত সভার ৩/৪ দিন পর  মোহাম্মদ হানিফ তাড়াহুড়া করে সংগঠনের পেড ব্যবহার করে কার্যকরী পরিষদের বিনা অনুমতিতে ট্রাষ্টিবোর্ড ও উপদেষ্টা পরিষদের ২টি তালিকা স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশ করে। যেখানে মোহাম্মদ হানিফ নিজেকে ট্রাষ্টিবোর্ড-এর চেয়ারম্যান এবং শামসুল আলম চৌধুরীকে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দেখানো হয়। উক্ত অনৈতিক কর্মকান্ডে কার্যকরী পরিষদের সকল সদস্য অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয় এবং ১১/১২/২০১৭ আরো একটি কার্যকরী পরিষদের সভা সভাপতি আবদুল হাই জিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্টিত হয়। উক্ত সভায় সর্বসম্মক্রিমে (সভাপতি সহ) পত্রিকায় প্রকাশিত ট্রাষ্টি ও উপদেষ্টা কমিটিকে স্থগিত করা হয় এবং তাতেই আতেঁ ঘা লাগে মোহাম্মদ হানিফ ও তার পালিত দোষরদের। তারই ধারাবাহিকতায় গত ১২/১৭/২০১৭ বার্ষিক পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা:) উৎযাপনের দিন মোহাম্মদ হানিফ সমিতির ভবনের মূলফটকে চারটি বিশাল আকৃতির চেইন দ্বারা তালাবদ্ধ করে দেয় এবং মিলাদুন্নবী অনুষ্টানে বাধা প্রদান করে। সাথে আগত চট্টগ্রামবাসীদের অকত্যভাষায় গালিগালাজ করে এবং ঐ উক্ত কর্মকান্ডে সহযোগীতা করেন সভাপতি আব্দুল হাই জিয়া, সিনিয়র সহ- সভাপতি খোকন কে চৌধুরী, এনাম চৌধুরী এবং শামসুল আলম চৌধুরী।
যার কারণে কার্যকরী পরিষদের সংখ্যগরিষ্ঠ সদস্য মিলাদুন্নবী উদযাপন কমিটি সমিতির ভবনের পরিবর্তে পাশ্ববর্তী একটি ভবনে মিলাদ মাহফিল সম্পন্ন করতে বাধ্য হয় এবং একই দিন রাতে কার্যকরী পরিষদের সদস্যরা মিলাদ সম্পন্ন করার পর এক জরুরী সভায় মিলিত হয়ে সভাপতি জিয়া, সিনিয়র সহ সভাপতি খোকন কে চৌধুরীকে তাদের স্ব স্ব পদ থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়।  একই সাথে সমিতির ব্যাংক একাউন্ট থেকে সভাপতি আব্দুল হাই জিয়ার নাম বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।
উক্ত জরুরী সভার গৃহিত সিদ্ধান্ত সমূহ নিচে হুবহু উল্লেখ করা হল। আমরা কার্যকরী পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ট সদস্যদের সিদ্ধান্তমতে চট্টগ্রাম বাসীর অবগতির জন্য এই সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হল।
সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দেশে থাকায় সর্বসম্মতিক্রমে কার্যকরী পরিষদের প্রথম সদস্য কামাল হোসেন মিঠুকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও মহিউদ্দিন চৌধুরী খোকনকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
এদিকে গত রোববার (২৮ জানুয়ারী) সন্ধ্যায় ব্রুকলীনে সমিতি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে সমিতির সভাপতি আব্দুল হাই জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আশ্রাব আলী খান লিটন তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ১৯৮৯ সালে ‘চিটাগাং এসোসিয়েশন অব নর্থ আমেরিকা ইনক’ প্রতিষ্ঠার পর প্রবাসী চট্টগ্রামবাসীদের সুখ-দুখে পাশে থেকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করাই ছিলো মূল লক্ষ্য। হাটি হাটি পা পা করে সমিতি আজ বিশাল রূপ ধারণ করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় বিগত ২ এপ্রিল ২০১৭ সারে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের মাধ্যমে পূর্ণ প্যানেলে নির্বাচিত হই এবং দায়িত্বে আসি। তারা বলেন, মাননীয় আদালতের নির্দেশে আমরা সমিতির কার্যক্রম শুরু করি। পরবর্তীতে কার্যকরী পরিষদের ২১জন কর্মকর্তার মধ্যে ১৭ জনের উপস্থিতিতে এবং ১৪ জনের মতামতের ভিত্তিতে ট্রাষ্টি ও উপদষ্টা বোর্ড গঠন করা হয়। কিন্তু সমিতির কিছু সিনিয়র নেতৃবৃন্দ ট্রাষ্টি ও উপদেষ্টা পরিষদে তাদের পছন্দের জায়গায় স্থান না পাওয়ায় কমিটির ভিতরে বিভিন্ন উষ্কানী দিয়ে সমস্যৗার সৃষ্টি করেন। যা পরবর্তীতে বিষয়টি দ্বিধা-দ্বন্দ্বের সৃষ্টি করে। এছাড়া সাধারণ সম্পাদক কার্যকরী কমিটির কতিপয় সদস্যদেরর নিয়ে সমিতির বাইরে সভা করেন। তার এই অসাংগঠনিক কার্যকলাপে চট্টগ্রামবাসী অসন্তোষ প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে গত ১৭ ডিসেম্বর বিশেষ সভা আহ্বান করা হয় এবং আমরা জানতে পারি যে সাধারণ সম্পাদক মো: সেলিম ও কোষাধ্যক্ষ মীর কাদের রাসেল ৩টি একাউন্ট থেকে সভাপতির অনুমতি ছাড়াই ৪৪,৬২২ ডলার ব্যক্তিগতভাবে সরিয়ে নেন যা সমিতির গঠনতন্ত্রের ১৪ ধারা মতে সমিতির সম্পদ ও অর্থ আত্বসাতের অপরাধ। যা সমিতির ইতিহাসে ঘটেনি।
সাংবাদিক সম্মেলনে অনতিবিলম্বে সমিতির অর্থ সমিতির একাউন্ডে ফিরিয়ে দেয়ার  দাবী জানানো হয়। অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান। সাংবাদিক সম্মেলনে আরো জানানো হয় যে, বিশেষ সভায় সমিতির পরিচালনার সুবিধার্থে প্রচার সম্পাদক আশ্রাব আলী খান লিটনকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এবং সমাজকল্যাণ ও আপ্যায়ন সম্পাদক মতিউর রহমানকে কোষাধ্যক্ষ মনোনীত করা হয়। (সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা)