ক্ষমতা নিয়ে ইসি-ট্রাষ্টি বোর্ডের মধ্যে টাগ অব ওয়ার : ভায়োলেশন বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা
- প্রকাশের সময় : ০৩:১৯:২৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০১৯
- / ৫৯৮ বার পঠিত
নিউইয়র্ক (ইউএনএ): যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশের ‘আমব্রেলা সংগঠন’ হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ সোসাইটি ইনক’র ক্ষমতা নিয়ে ইসি-ট্রাষ্টি বোর্ডের মধ্যে টাগ অব ওয়ার শুরু হয়েছে। একদিকে সোসাইটির ট্রাষ্টিবোর্ড বর্তমান কমিটির কাজ থেকে দায়িত্ব নিতে চাচ্ছে। অপরদিকে বর্তমান কমিটি মামলার রায় চুড়ান্ত হওয়া না পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করতে চাচ্ছে। এদিকে সিটি কর্তৃক ভায়োলেশন জরিমানা সহ অন্যান্য বিষয়ে বর্তমান কমিটি আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছে। এছাড়াও গত ৩ ফেব্রুয়ারী রোববার অনুষ্ঠিত সোসাইটির কার্যকরী কমিটির সভায় ট্রাষ্টিবোর্ড ও বর্তমান কমিটির যৌথ সভায় পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে কার্যকরঅ কমিটির অধিকাংশ কর্মকর্তা নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালনের পক্ষে জানা গেছে। খবর ইউএনএ’র।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সোসাইটির গঠনতন্ত্র মোতাবেক দ্বি-বার্ষিক (নির্বাচন শেষে জানুয়ারী মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে নতুন কমিটির কাছে বিদায়ী কমিটির ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা। কিন্তু ২০১৮ সালের নির্বাচন ঘিরে মামলা-মোকদ্দমার ঘটনায় ‘কামাল-রুহুল’ নেতৃত্বাধীন কার্যকরী কমিটি ক্ষমতায় থাকায় এনিয়ে কোন কোন মহলে প্রশ্ন উঠেছে।
সূত্রমতে, বাংলাদেশ সোসাইটির ট্রাষ্টি বোর্ডে অতি সম্প্রতি এক সভা করে সোসাইটির বর্তমান কমিটির কার্যকাল-কে মেয়াদ উত্তীর্ণ দাবী করে ট্রাষ্টিবোর্ড কার্যকরী কমিটির দায়িত্ব পালন করা উচিৎ বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অপরদিকে বর্তমান কমিটির দাবী আমরা যথাযথভাবে নির্বাচন দিয়েছি এবং সোসাইটি কার্যকর রয়েছে। কার্যকরী কমিটির কোন সমস্যার কারণে মামলা হয়নি। তাই মামলার রায় না হওয়া পর্যন্ত বর্তমান কমিটিই দায়িত্ব পালন করবে।
এব্যাপারে সোসাইটির সভাপতি কামাল আহমেদ ইউএনএ প্রতিনিধিকে বলেন, সোসাইটির নির্বাচন নিয়ে মামলার প্রেক্ষাপটে আদালত যে সিদ্ধান্ত দেবে আমরা সেই সিদ্ধান্ত মেনে চলবো। তাছাড়া বর্তমান কমিটি কার্যকর, এই কমিটির কোন ভুল-ত্রুটি নেই। বর্তমান কমিটি গত সপ্তাহে ব্রুকলীনে কনস্রুলেট সেবা প্রদান করেছে। আগামী ৯ ফেব্রুয়ারী ব্রঙ্কসে কনস্যুলেট সেবার ব্যবস্থা করবে। এছাড়াও ২১ ফেব্রুয়ারী পালনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, গঠনতন্ত্রে এমন কোন কথা নেই যে, ট্রাষ্টিবোর্ডকে দায়িত্ব দিতে হবে। আর আমরা অসুদ উদ্দেশ্যে ক্ষমতায় থাকছি না।
সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমীন সিদ্দিকী ইউএনএ প্রতিনিধিকে বলেন, আমরা গঠনতন্ত্র মোতাবেকই দায়িত্ব পালন করছি। মামলার রায় না হওয়া পর্যন্ত বর্তমান কমিটিই দায়িত্ব পালন করে যাবে। আর ভবনের ভায়োলেশন-এর ব্যাপারে আইনগত উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তবে তিনি আরো বলেন, সোসাইটির ভায়োলেশনের বিষয়টি বর্তমান কমিটির সময় নয়, এটি আগের কমিটির সময়। তারপরও আমরা এব্যাপারে আইনী পদক্ষেপ নিচ্ছি। বিষয়টি নিষ্পত্তি হতে সময় লাগবে।
সোসাইটির বর্তমান পরিস্থিতির ব্যাপারে সংগঠনটির তিন তিনবারের প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ টিপু সুলতান বলেন, বাংলাদেশ সোসাইটি প্রবাসী বাংলাদেশীদের প্রাণের সংগঠন এবং ঐতিহ্যবাহী সংগঠন। গত বছরের নির্বাচন ঘিরে সোসাইটির যে অবস্থা তা মোটেই কাম্য নয়। সবাই মিলে উদ্ভুত সমস্যার সমাধান করা উচিৎ। প্রসঙ্গত তিনি বলেন, আমার জানা মতে সোসাইটির নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত বর্তমান কমিটিই দায়িত্ব পালন করার কথা। তবে সেক্ষেত্রে ট্রাষ্টি বোর্ডের তদারকী থাকতে হবে। যাতে মেয়াদ উত্তীর্ন কমিটি যেন কোন অসুদ উদ্দেশ্যে কোন পদক্ষেপ না নেয়।
সোসাইটির সাবেক সভাপতি নার্গিস আহমেদ ইউএনএ প্রতিনিধি-কে বলেন, সোসাইটির ইতিহাসে একমাত্র আমার সময়েই আমরা গঠনতন্ত্রের সময় অনুযায়ী ক্ষমতা থাকার পরও ১১দিন আগেই নতুন কমিটির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেছি। তিনি বলেন, সোসাইটির বর্তমান প্রেক্ষাপটে ট্রাষ্টি বোর্ড নয়, বর্তমান কমিটিরই দায়িত্ব পালন করে যাওয়া উচিৎ। কেননা, বর্তমান কমিটি সচল রয়েছে আর তাদের কারণে কোন ত্রুটির মামলা-মোকদ্দমা হয়নি। প্রসঙ্গত তিনি বলেন, সোসাইটির নির্বাচন সহ সকল বিষয়েই ট্রাষ্টি বোর্ডেকে নিরপেক্সভাবে দায়িত্ব পালন করা উচিৎ। অথচ আমরা লক্ষ্য করছি যে, ট্রাষ্টি বোর্ডের সদস্যরা নির্বাচনের সময় কোন কোন প্রার্থীর পক্ষে সরাসরি অংশ নিচ্ছেন যা সোসাইটির গঠনতন্ত্রের পরিপন্থি এবং সোসাইটির জন্য অসম্মানের।