কাশ্মীরে ভারতীয় আগ্রাসনের প্রতিবাদে নিউইয়র্কে বিক্ষোভ সমাবেশ
- প্রকাশের সময় : ০৮:১০:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ অগাস্ট ২০১৯
- / ২৭২ বার পঠিত
বিশেষ প্রতিনিধি: কাশ্মীরে গণহত্যার আশঙ্কায় উদ্বেগ প্রকাশ করে নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে গত ১৬ আগষ্ট শুক্রবার সন্ধ্যায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে নিউইয়র্কস্থ বেশ কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন। সাউথ এশিয়ান সলিডারিটি ফাউন্ডেশনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন উগ্রহিন্দুবাদী মানুসিকতা নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কাশ্মীরের মুসলমানদের নির্মূলে প্রয়াসী হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন। তারা বলেন, মোদীর নেতৃত্বে ভারতের গণতন্ত্র সুরক্ষিত নয়, সংখ্যালঘুদের অধিকার ভূলুন্ঠিত হতে বাধ্য। দক্ষিণ এশিয়ায় সহিংসতা ছড়াতে তাঁর এ উদ্যোগ কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলেও বক্তারা অভিমত ব্যক্ত করেন।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটির চেয়ারম্যান, সাবেক ছাত্রনেতা আতিকুর রহমান সালু, ইসলামিক লিডারশিপ কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক আব্দুল্লাহ, লং আইল্যান্ড ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. শওকত আলী, সাউথ এশিয়ান সলিডারিটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পারিচালক ইমরান আনসারী, মাওলানা ভাসানী ফাউন্ডেশন ইউএস-এর সেক্রেটারী আলী ইমাম শিকদার, বাংলাদেশ সোসাইটির সিনিয়র সহ সভাপতি আবদুর রহিম হাওলাদার, বাংলাদেশী-আমেরিকান এডভোকেসী গ্রুপের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার কামাল ভূইয়া ও নির্বাহী পরিচালক ড. জাহাঙ্গীর কবির, ইউনাটেড ওলামা কাউন্সিলের সভাপতি মুফতি লুৎফুর রহমান কাসেমি, নিউইয়র্ক প্রবাসী নাগরিক ফোরামের আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার ফরহাদ প্রমুখ।
সমাবেশে রাজা আবদুল্লাহ বলেন, যেখানেই মুসলমানেরা আগ্রাসন-নিগৃহের স্বীকার সেখানেই তাদের অধিকার রক্ষার জন্য আওয়াজ তোলা প্রতিটি মুসলমানের নৈতিক দায়িত্ব। আজ ইসরাইলী আগ্রাসনের মূখে ফিলিস্তিনের যে করুণ পরিণতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে, ঠিক অনুরুপভাবে ভারতের আগ্রাসনে কাশ্মীরে অবস্থাও সেই দিকে যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, বিষয়টি দ্রুত অনুধাবন করে যুক্তরাষ্ট্রের নীতি নির্ধারকদের কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
ড. শওকত আলী বলেন, কাশ্মীরে আগ্রাসনের মাধ্যমে ভারতের হিন্দু উগ্রবাদী সরকার ভারতের জাতীয় নেতাদের অপমান করেছে। কাশ্মীরে আগ্রাসনের পর বাংলাদেশ ও নেপালের সার্বভৌমত্ব হুমকির মূখে পড়বে। সুতরাং বাংলাদেশ সরকার কাশ্মীর ইস্যুতে কি ভূমিকা তা নিয়ে বসে থাকলে চলবে না।
ইমরান আনসারী বলেন, কাশ্মীর ইস্যুটি ভারতের আভ্যন্তরীণ ইস্যু নয়, এটি একটি আন্তর্জাতিক ইস্যু। সুতরাং দক্ষিণ এশিয়ায় আরেকটি রাখাইন রাজ্য দেখার আগেই অবিলম্বে কাশ্মীরে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী নিয়োগ করতে হবে। তিনি আরো বলেন, আমরা ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর, পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর কিংবা চীন নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের মানচিত্র দেখতে চাই না। আমরা দেখতে চাই একটি অখন্ড স্বাধীন সার্বভৌম কাশ্মীর।
ইঞ্জিনিয়ার কামাল ভূইয়া বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী উগ্রবাদী সংগঠন আর এস এস এর একজন সক্রিয় সদস্য। তাঁর প্রধান কাজই হলো মুসলিম নিধন। তাঁর এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বিশ্ব বিবেককে কথা বলতে হবে।
আলী ইমাম বলেন, কাশ্মীরে আজ মানবতার বিপর্যয় চূড়ান্ত পর্যায়ে যাচ্ছে। তাদের জীবন সম্পদের নিরাপত্তায় আজ বিশ্ব বিবেককে আওয়াজ তুলতে হবে। তিনি আরো বলেন, সারা বিশ্বে মুসলিম নিধনের মহোৎসব শুরু হয়েছে। আজকে মুসলমানদের রক্ষায় আওয়াজ তুলতে হবে।
মুফতি ফজলুর রহমান কাসেমি বলেন, কাশ্মীরে ৭ মিলিয়ন জনগন মানবিক জীবন যাপন করছে। তাদেরকে রক্ষায় আমাদের আওয়াজ তুলতে হবে।
আবদুর রহিম হাওলাদার বলেন, ভারতের প্রধানন্ত্রীকে ভাবতে হবে কতজন মুসলমান ভারতের স্বাধীনতার জন্য জীবন দিয়েছে। কোনো ভাবেই ভারতে সংখ্যালঘু মুসলমানদের হত্যা মেনে নেয়া হবে না।
সমাবেশে নিউইয়র্কের পরিচিত বাঁচিক শিল্পী রুমাইসা আনসারী অবিলম্বে কাশ্মীরে শিশুদের প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী নিশ্চিত ও স্কুলগুলো খুলে দেবার দাবী জানায়।
প্রতিবাদ বিক্ষোভটির সহযোগী সংগঠনগুলো ছিলো: মজলিসে শুরা নিউইয়র্ক, সাউথ এশিয়ান সলিডারিটি ইনিশিয়েটিব, ওয়ার্ল্ড রোহিঙ্গা অর্গানাইজেশন, বাংলাদেশী-আমেরিকান এডভোকেসী গ্রুপ, নিউইয়র্ক প্রবাসী নাগরিক সমাজ ও সেইফিস্ট।
এদিকে জাতিসংঘ নিরাপ্তা পরিষদের নজর কারতে জাতিসংঘ সদর দফতরের সামনে ১৬ আগষ্ট শুক্রবার স্ট্যান্ড উইথ কাশ্মীর ব্যানারে নিউইয়র্কের বেশ কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।