নিউইয়র্ক ০৩:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৪, ১২ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

করোনা : বাংলাদেশী ডা. রেজা চৌধুরীর ইন্তেকাল

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৪:১৭:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ এপ্রিল ২০২০
  • / ১৩৭ বার পঠিত

নিউইয়র্ক (ইউএনএ): বাংলাদেশী-আমেরিকান বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. রেজা চৌধুরী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নাল্লিাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজেউন)। বুধবার (৮ এপ্রিল) রাত ১১.৩০ মিনিটে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে তিনি লং আইল্যান্ডের নর্থ শোর ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে মারা যান। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক পুত্র ও এক কন্যা সহ বহু আতœীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে যান। খবর ইউএনএ’র।
নিউইয়র্কে বাংলাদেশী অধ্যুষিত ব্রঙ্কসে বসবাসকারী প্রবাসীদের প্রিয় মুখ ডা. রেজার চেম্বার ছিল পার্কচেস্টার সাবওয়ে সংলগ্ন ১৯৫৭ ওয়েস্টচেস্টার এভিনিউতে। যার নাম ওয়েস্ট চেস্টার মেডিক্যাল হেলথ কেয়ার। জানা গেছে ডা. রেজা চৌধুরী এই দূর্যোগের সময়ও চেম্বারে নিয়মিত তার রোগীদের সেবা দিতেন। ধারনা করা হচ্ছে তাঁর কোন রোগী থেকেই তিনি করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হন এবং হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর সেখানেই শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন।
ডা. সিনহা মনসুর

এদিকে ডা. রেজা চৌধুরীর ইন্তেকালের পর অনুজ ডা. সিনহা মনসুর ‘কেউ কথা রাখেনি!’ শিরোনামে লিখেছেন-
‘নর্থ শোর জিউইস হসপিটাল, লং আইল্যানড, নিউইর্য়ক। এখানেই শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন অগ্রজ ডা. রেজা চৌধুরী। আমাদের ‘রেজা ভাই’! করোনা তার প্রাণ কেড়ে নিয়েছে!
শেষবার আমার বাসায় এসেছিলে তার সদ্য কেনা টেসলা গাড়িটি হাঁকিয়ে। খুব সৌখিন ছিলেন। ছিলেন সাহিত্য প্রেমিকও!
আমরা একই চিকিৎসকা মহাবিদ্যালয়ে পডেছি, নিউইয়রকে এসেছি একই সময়ে। একসাথে টঝগখঊ পরীক্ষার জন্য পড়াশুনা করেছি। একসাথে পরীক্ষা দিয়েছি। এক কাপ কফি ও সিগারট ভাগাভাগি করে খেয়েছি। ম্যানহাটানের ক্যাপলান সেন্টারে আমরা পড়াশুনা করতাম। ছুটির দিনে চলে যেতাম তার উডসাইডের বাসায়। ঘন্টার পর ঘন্টা পড়াশুনা করেছি। এক সময় ক্লান্ত হয়ে হাইওয়ের পাশে ছোট্ট পার্কটাতে গিয়ে বসতাম।
রেজা ভাই সিগারট ধরিয়েছেন।
হাইওয়ে ধরে সা সা করে বেরিয়ে যেত গাড়িগুলো। রেজা ভাই বিড় বিড় করে আবৃত্তি করতেন সুনীলের ‘কেউ কথা রাখেনি’।
আমি আবৃত্তি করতাম:
‘আমি কীরকম ভাবে বেঁচে আছি তুই এসে দেখে যা নিখিলেশ
এই কি মানুষজন্ম?
নাকি শেষ
পুরোহিত কঙ্কালের পাশা খেলা’!
রেজা ভাই আমার সিনিয়র ছিলেন।
ছিলেন বন্ধুও!
কত কথা, কত স্মৃতি!
চোখ ঝাপসা হয়ে আসে!
নিয়তির শঠতায়!
রেজা ভাই, এভাবে অসময়ে যাওয়ার তো কথা ছিল না! কথা ছিল আমরা একসাথে শেষ পুরোহিত কঙ্কালের পাশা খেলা দেখবো!
দেখা হলো না!
আসলে ‘কেউ কথা রাখেনি!
কেউ কথা রাখে না’!
রেজা ভাই ও আপনিও কথা রাখতে পারেন নি!’

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

About Author Information

করোনা : বাংলাদেশী ডা. রেজা চৌধুরীর ইন্তেকাল

প্রকাশের সময় : ০৪:১৭:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ এপ্রিল ২০২০

নিউইয়র্ক (ইউএনএ): বাংলাদেশী-আমেরিকান বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. রেজা চৌধুরী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নাল্লিাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজেউন)। বুধবার (৮ এপ্রিল) রাত ১১.৩০ মিনিটে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে তিনি লং আইল্যান্ডের নর্থ শোর ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে মারা যান। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক পুত্র ও এক কন্যা সহ বহু আতœীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে যান। খবর ইউএনএ’র।
নিউইয়র্কে বাংলাদেশী অধ্যুষিত ব্রঙ্কসে বসবাসকারী প্রবাসীদের প্রিয় মুখ ডা. রেজার চেম্বার ছিল পার্কচেস্টার সাবওয়ে সংলগ্ন ১৯৫৭ ওয়েস্টচেস্টার এভিনিউতে। যার নাম ওয়েস্ট চেস্টার মেডিক্যাল হেলথ কেয়ার। জানা গেছে ডা. রেজা চৌধুরী এই দূর্যোগের সময়ও চেম্বারে নিয়মিত তার রোগীদের সেবা দিতেন। ধারনা করা হচ্ছে তাঁর কোন রোগী থেকেই তিনি করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হন এবং হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর সেখানেই শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন।
ডা. সিনহা মনসুর

এদিকে ডা. রেজা চৌধুরীর ইন্তেকালের পর অনুজ ডা. সিনহা মনসুর ‘কেউ কথা রাখেনি!’ শিরোনামে লিখেছেন-
‘নর্থ শোর জিউইস হসপিটাল, লং আইল্যানড, নিউইর্য়ক। এখানেই শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন অগ্রজ ডা. রেজা চৌধুরী। আমাদের ‘রেজা ভাই’! করোনা তার প্রাণ কেড়ে নিয়েছে!
শেষবার আমার বাসায় এসেছিলে তার সদ্য কেনা টেসলা গাড়িটি হাঁকিয়ে। খুব সৌখিন ছিলেন। ছিলেন সাহিত্য প্রেমিকও!
আমরা একই চিকিৎসকা মহাবিদ্যালয়ে পডেছি, নিউইয়রকে এসেছি একই সময়ে। একসাথে টঝগখঊ পরীক্ষার জন্য পড়াশুনা করেছি। একসাথে পরীক্ষা দিয়েছি। এক কাপ কফি ও সিগারট ভাগাভাগি করে খেয়েছি। ম্যানহাটানের ক্যাপলান সেন্টারে আমরা পড়াশুনা করতাম। ছুটির দিনে চলে যেতাম তার উডসাইডের বাসায়। ঘন্টার পর ঘন্টা পড়াশুনা করেছি। এক সময় ক্লান্ত হয়ে হাইওয়ের পাশে ছোট্ট পার্কটাতে গিয়ে বসতাম।
রেজা ভাই সিগারট ধরিয়েছেন।
হাইওয়ে ধরে সা সা করে বেরিয়ে যেত গাড়িগুলো। রেজা ভাই বিড় বিড় করে আবৃত্তি করতেন সুনীলের ‘কেউ কথা রাখেনি’।
আমি আবৃত্তি করতাম:
‘আমি কীরকম ভাবে বেঁচে আছি তুই এসে দেখে যা নিখিলেশ
এই কি মানুষজন্ম?
নাকি শেষ
পুরোহিত কঙ্কালের পাশা খেলা’!
রেজা ভাই আমার সিনিয়র ছিলেন।
ছিলেন বন্ধুও!
কত কথা, কত স্মৃতি!
চোখ ঝাপসা হয়ে আসে!
নিয়তির শঠতায়!
রেজা ভাই, এভাবে অসময়ে যাওয়ার তো কথা ছিল না! কথা ছিল আমরা একসাথে শেষ পুরোহিত কঙ্কালের পাশা খেলা দেখবো!
দেখা হলো না!
আসলে ‘কেউ কথা রাখেনি!
কেউ কথা রাখে না’!
রেজা ভাই ও আপনিও কথা রাখতে পারেন নি!’