ওজনপার্কে ৭০ মিলিয়ন ডলারের এফোর্ডেবল হাউজিং
- প্রকাশের সময় : ০৮:০২:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ মার্চ ২০১৯
- / ৪৩১ বার পঠিত
হককথা ডেস্ক: নিউইয়র্ক সিটির ওজনপার্কে বাংলাদেশী কমিউনিটির প্রানকেন্দ্রে একটি বড় ধরনের হাউজিং প্রজেক্ট প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিটি প্রশাসন। ৭০ মিলিয়ন ডলার বাজেটের এই প্রজেক্টের কাজ এবছরই শুরু হতে পারে।
নিউইয়র্ক সিটির ইতিহাসে বিশাল এই প্রজেক্টের পুরো দায়িত্ব দেয়া হয়েছে ওজনপার্কের সবার পরিচিত বাংলাদেশীদের হাতে প্রতিষ্ঠিত স্বেচ্চাসেবী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশী-আমেরিকান কমিউনিটি ডেভোলাপমেন্ট ইয়ুথ সার্ভিসকে। জনকল্যানমুলক এই প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান হচ্ছেন মিছবাহ আবদীন।
জানা গেছে, ওজনপার্কের গ্রান্ড এভিন্যুতে অবস্থিত বর্তমান ডিওটি পার্কিং লটকে এই হাউজিং প্রজেক্টের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে। এখানেই প্রতিষ্ঠা করা হবে নিউইয়র্ক সিটির সর্ববৃহৎ ফ্রেইম দিয়ে বানানো মাডুলার বিল্ডিং। ৬ তলা বিশিষ্ট এই ভবনে ১৬৭ টি এপার্টমেন্ট তৈরী করা হবে। স্টুডিও, সিঙ্গেল, ডাবল, থ্রী ও ৪ বেডরুমের এসব এপার্টমেন্ট ভাড়া দেয়া হবে আবেদনকারীদের জনসংখ্যা ও আয় বিবেচনা করে।
এই ভবণ নির্মানে এখন বিভিন্ন নির্মাতা ও ডেভোলাপমেন্ট প্রতিষ্ঠান মরিয়া হয়ে প্রতিযোগিতা করছে। তবে এটা নির্ভর করবে এর সার্বিক তত্বাবধানের দায়িত্বে নিয়োজিত বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশী-আমেরিকান কমিউনিটি ডেভোলাপমেন্ট ইয়ুথ সার্ভিসের উপর। পক্ষান্তরেই তারাই নির্বাচন করবেন এই প্রতিষ্ঠান নির্মানের দায়িত্ব কারা পাবেন। এজন্য এপর্যন্ত ১৭টি ডেভোলাপমেন্ট প্রতিষ্ঠান টেন্ডারের আগ্রহ দেখিয়েছে বলে জানা গেছে।
এবিষয়ে বাংলাদেশী-আমেরিকান কমিউনিটি ডেভোলাপমেন্ট ইয়ুথ সার্ভিসের প্রতিষ্ঠাতা ও এফোর্ডেবল হাউজিং নির্মানের দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিউনিটি নেতা মিসবাহ আবদীনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এই হাউজিং কমপ্লেক্স হচ্ছে একটি স্বপ্নের প্রজেক্ট। এখানে হাউজিং ছাড়াও একটি কমিউনিটি সেন্টার থাকবে। যেখানে কমিউনিটির জন্য প্রয়োজনীয় সব সার্ভিস দেয়া হবে।
কমিউনিটি সার্ভিসে চাকুরী, চিকিৎসা, ইয়ুথ সার্ভিস সহ বিভিন্ন ধরনের সুবিধা থাকবে। বলতে পারেন এই প্রথম বাংলাদেশী কোন মুসলিম কমিউনিটি সংগঠনের হাতে এত বড় কাজের দায়িত্ব দেয়া হলো।
বাংলাদেশী কমিউনিটি ডেভোলাপমেন্ট ওজনপার্ক এলাকায় দীর্ঘদিন থেকে কাজ করছে। আমরা হাজারো সমস্যা ও চ্যালেঞ্জকে মোকাবেলা করে এই প্রতিষ্ঠানের সার্ভিস অব্যাহত রেখেছিলাম। যা এটা সবার জন্যই বিরাট সৌভাগ্যের বিষয় যে, বাংলাদেশী একটি প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্বে সিটি কাউন্সিল এত বড় একটি প্রজেক্ট বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেয়ার পর পরই বিভিন্ন ডেভোলাপার, হাউজিং প্রতিষ্ঠান অবিরত এই এলাকা পরিদর্শন করছে। আমরা মনে করি এটান বাস্তবায়ন হলে অত্র এলাকার বাংলাদেশীরাই বেশী লাভবান হবেন জানান মিসবাহ আবদীন।
স্বল্পভাড়ায় তারা সর্বাধিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত এপার্টমেন্টে বসবাসের সুযোগ পাবেন। এই প্রজেক্টের পাশেই এ ট্রেনের সাবওয়ে রয়েছে। যার ফলে যে কেউ সিটির যেকোন জায়গায় গিয়ে কাজও করতে পারবেন।
মিসবাহ আবদীন বলেন, এবছরের সেপ্টেম্বর নাগাদ আমরা এই প্রজেক্ট পাশের জন্য কমিউনিটি বোর্ডের কাছে যাবো। এর আগে ডিওটিকে জমির মালিকানা হস্তান্তর, নকশা ডিজাইন সহ সংশ্লিষ্ট অনেক কাজ শেষ করতে হবে। এজন্য বাংলাদেশী-আমেরিকান কমিউনিটি ডেভোলাপমেন্ট ইয়ুথ সার্ভিস দিনে রাত করে যাচ্ছে।
মিছবাহ আবদীন বলেন, আমরা আশা করছি কমিউনিটি বোর্ড সদস্যরা আমাদের সহযোগিতা করবেন। আগামী ২০২২ সালে অর্থাৎ তিন বছরের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।
কারা আবেদন করতে পারবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওজনপার্ক বা আশপাশের লোকজনের জন্য এই হাউজিংয়ের ৫০% বরাদ্দ থাকবে। বাকী ৫০% সিটির বাসিন্দা যে কেউ আবেদন করতে পারবেন।
আবেদনকারীদের আয় ২২ থেকে ৬০ হাজার ডলারের মধ্যে হলে তারা আবেদনের যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। তবে আবেদনের সময়সীমা নির্মানাধীন অবস্থাতেই জানানো হবে তিনি জানান।
উল্লেখ্য যে, মিসবাহ আবদীন ওজনপার্কে কমিউনিটি উন্নয়নে বাংলাদেশী-আমেরিকান কমিউনিটি ডেভোলাপমেন্ট ইয়ুথ সার্ভিসের কাজ শুরু করেন। ২০০৯ নন প্রফিট বা স্বেচ্চাসেবী সংস্থা হিসেবে সংস্থাটিকে সরকারী স্বীকৃতি দেয়া হয়।(বাংলা পত্রিকা )