নিউইয়র্ক ১০:৫৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

উপকার করতে গিয়ে রুহুল আমীন সিদ্দিকী গ্রেফতার ॥ জামিনে মুক্ত

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৪:১৭:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ জুন ২০১৮
  • / ৪৯৭ বার পঠিত

হককথা ডেস্ক: ঘুষ দিয়ে মামলা উঠিয়ে নেয়ার চাপ সৃষ্টির অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলেন নিউইয়র্কে বাংলাদেশ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমীন সিদ্দিকী (৪৬)। মামলার নম্বর সিআর ০২২২৮৪-১৮ কিউএন এবং গ্রেফতার নম্বর-কিউ ১৮৬২৫৪৪৯। একদিন জেলে থাকার পর ২১ জুন বৃহস্পতিবার রাতে জামিনে মুক্তি পেলেও ২ জুলাই তাকে কুইন্স ক্রিমিনাল কোর্টে হাজির হতে বলা হয়েছে। রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে মামলার বিচারকার্যে বিঘœ ঘটানোর অভিযোগ এবং সাক্ষীকে নগদ অর্থ ঘুষ প্রদানের গুরুতর অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।
কুইন্স ক্রিমিনাল কোর্ট থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ঈদের দিন (১৫ জুন, শুক্রবার) নিউইয়র্ক সিটির উডসাইডে রুহুল আমীনের বাসা সংলগ্ন এক বাড়িতে দাওয়াত খেতে এসেছিলেন জহুরুল ইসলাম মিঠু। মিঠুর বাড়ি বিক্রমপুরে এবং উবার চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। খাওয়া শেষে ঐ বাড়ির সামনে পার্ক করা ট্যাক্সিতে উঠেন। ট্যাক্সি রাস্তায় বের করার সময় পেছনে এক মহিলাকে দেখতে পান মিঠু। মিঠু সতর্ক না থাকলে বড় ধরনের একটি দুর্ঘটনার আশংকা ছিল বলে উল্লেখ করেন ঐ মহিলার উদ্দেশ্যে। মহিলার নাম নাজমা ইসলাম। সাথে স্বামী শফিক শাকিলও ছিলেন। এক পর্যায়ে মামুলি এই বাক-বিতন্ডা মারপিটে পরিণত হয়। নাজমা ইসলাম রক্তাক্ত হন বলে প্রতক্ষদর্শীরা উল্লেখ করেন। এ অবস্থায় টহল পুলিশ এসে মিঠুকে গ্রেফতার করে। পুলিশ ও অ্যাম্বুলেন্সের শব্দ পেয়ে বাসা থেকে বের হন রুহুল আমিন। কারণ, শফিক শাকিল এবং নামজা দম্পতি তার বাসাতেই আসছিলেন ঈদ-শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্যে। রুহুল আমীন ইয়েলো ট্যাক্সি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন এবং তার দিনের শিফটের পার্টনার হচ্ছেন নোয়াখালীর ন্ত—ান শফিক শাকিল। মামুলি বিষয়ে মারপিটে লিপ্ত হবার সংবাদে রুহুল আমিন বিচলিতবোধ করেন।
বৃহস্পতিবার (২১ জুন) স্থানীয় সময় রাত ১১টায় জেল থেকে জামিনে মুক্তি লাভের পর টেলিফোনে এ সংবাদদাতাকে রুহুল আমীন আরো বলেন, ‘যেহেতু উভয় পক্ষই আমার পরিচিত, তাই প্রস্তাব দিয়েছিলাম কোর্টের ঝামেলায় না গিয়ে আপস-মিমাংসার। মামলা উঠিয়ে নেয়ার শর্তে নাজমা ইসলাম মোটা অর্থ দাবি করলে মিঠু ২০ হাজার ডলার দিতে সম্মত হন। সে অনুযায়ী একটি চেক দেয়া হয় আমার সামনে। ঐ সমঝোতার শর্ত অনুযায়ী ২০ জুন কুইন্স ক্রিমিনাল কোর্টে হাজির হন উভয় পক্ষ। কিন্তু নাজমা ইসলাম মাননীয় আদালতকে অবহিত করেন যে, আমি নাকি তাকে চাপ দিয়েছি মামলা উঠিয়ে নিতে। বিনিময়ে নগদ অর্থও দিয়েছি ঘুষ হিসেবে। এরপরই মাননীয় আদালতের নির্দেশে আমাকে গ্রেফতার করা হয়।’
রুহুল আমীন সিদ্দিকী উল্লেখ করেন, ‘নিবাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে সকল বাংলাদেশীর কল্যাণে আমাকে কাজ করতে হয়। সে আলোকেই আদালতের ঝামেলায় না গিয়ে ঐ মামলা নিষ্পত্তির চেষ্টা করেছিলাম।’ ‘উল্টো বিপদে পড়লাম’-বলেন রুহুল।
ক্রিমিনাল কোর্টের এটর্নীরা এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘মামলা নিষ্পত্তির একটি রীতি আছে। সেটি অনুসরণ না করায় বিপদ ডেকে এসেছেন রুহুল আমিন। এথেকে রেহাই পাওয়া মুষ্কিল হয়ে পড়বে।’ ঘটনাটি কম্যুনিটিতে বেশ চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। এ অবস্থায় কেউই আর মামলা-মোকদ্দমা নিষ্পত্তির সহজ পথে পা বাড়াবেন বলে মনে হয় না। তবে রুহুল আমিন মর্মাহত এবং বলেন, ‘মানুষের মঙ্গল করতে গিয়ে এমন পরিস্থিতির শিকার হবো জীবনে কল্পনাও করিনি।’ -খবর এনআরবি নিউজ।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

About Author Information

উপকার করতে গিয়ে রুহুল আমীন সিদ্দিকী গ্রেফতার ॥ জামিনে মুক্ত

প্রকাশের সময় : ০৪:১৭:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ জুন ২০১৮

হককথা ডেস্ক: ঘুষ দিয়ে মামলা উঠিয়ে নেয়ার চাপ সৃষ্টির অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলেন নিউইয়র্কে বাংলাদেশ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমীন সিদ্দিকী (৪৬)। মামলার নম্বর সিআর ০২২২৮৪-১৮ কিউএন এবং গ্রেফতার নম্বর-কিউ ১৮৬২৫৪৪৯। একদিন জেলে থাকার পর ২১ জুন বৃহস্পতিবার রাতে জামিনে মুক্তি পেলেও ২ জুলাই তাকে কুইন্স ক্রিমিনাল কোর্টে হাজির হতে বলা হয়েছে। রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে মামলার বিচারকার্যে বিঘœ ঘটানোর অভিযোগ এবং সাক্ষীকে নগদ অর্থ ঘুষ প্রদানের গুরুতর অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।
কুইন্স ক্রিমিনাল কোর্ট থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ঈদের দিন (১৫ জুন, শুক্রবার) নিউইয়র্ক সিটির উডসাইডে রুহুল আমীনের বাসা সংলগ্ন এক বাড়িতে দাওয়াত খেতে এসেছিলেন জহুরুল ইসলাম মিঠু। মিঠুর বাড়ি বিক্রমপুরে এবং উবার চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। খাওয়া শেষে ঐ বাড়ির সামনে পার্ক করা ট্যাক্সিতে উঠেন। ট্যাক্সি রাস্তায় বের করার সময় পেছনে এক মহিলাকে দেখতে পান মিঠু। মিঠু সতর্ক না থাকলে বড় ধরনের একটি দুর্ঘটনার আশংকা ছিল বলে উল্লেখ করেন ঐ মহিলার উদ্দেশ্যে। মহিলার নাম নাজমা ইসলাম। সাথে স্বামী শফিক শাকিলও ছিলেন। এক পর্যায়ে মামুলি এই বাক-বিতন্ডা মারপিটে পরিণত হয়। নাজমা ইসলাম রক্তাক্ত হন বলে প্রতক্ষদর্শীরা উল্লেখ করেন। এ অবস্থায় টহল পুলিশ এসে মিঠুকে গ্রেফতার করে। পুলিশ ও অ্যাম্বুলেন্সের শব্দ পেয়ে বাসা থেকে বের হন রুহুল আমিন। কারণ, শফিক শাকিল এবং নামজা দম্পতি তার বাসাতেই আসছিলেন ঈদ-শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্যে। রুহুল আমীন ইয়েলো ট্যাক্সি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন এবং তার দিনের শিফটের পার্টনার হচ্ছেন নোয়াখালীর ন্ত—ান শফিক শাকিল। মামুলি বিষয়ে মারপিটে লিপ্ত হবার সংবাদে রুহুল আমিন বিচলিতবোধ করেন।
বৃহস্পতিবার (২১ জুন) স্থানীয় সময় রাত ১১টায় জেল থেকে জামিনে মুক্তি লাভের পর টেলিফোনে এ সংবাদদাতাকে রুহুল আমীন আরো বলেন, ‘যেহেতু উভয় পক্ষই আমার পরিচিত, তাই প্রস্তাব দিয়েছিলাম কোর্টের ঝামেলায় না গিয়ে আপস-মিমাংসার। মামলা উঠিয়ে নেয়ার শর্তে নাজমা ইসলাম মোটা অর্থ দাবি করলে মিঠু ২০ হাজার ডলার দিতে সম্মত হন। সে অনুযায়ী একটি চেক দেয়া হয় আমার সামনে। ঐ সমঝোতার শর্ত অনুযায়ী ২০ জুন কুইন্স ক্রিমিনাল কোর্টে হাজির হন উভয় পক্ষ। কিন্তু নাজমা ইসলাম মাননীয় আদালতকে অবহিত করেন যে, আমি নাকি তাকে চাপ দিয়েছি মামলা উঠিয়ে নিতে। বিনিময়ে নগদ অর্থও দিয়েছি ঘুষ হিসেবে। এরপরই মাননীয় আদালতের নির্দেশে আমাকে গ্রেফতার করা হয়।’
রুহুল আমীন সিদ্দিকী উল্লেখ করেন, ‘নিবাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে সকল বাংলাদেশীর কল্যাণে আমাকে কাজ করতে হয়। সে আলোকেই আদালতের ঝামেলায় না গিয়ে ঐ মামলা নিষ্পত্তির চেষ্টা করেছিলাম।’ ‘উল্টো বিপদে পড়লাম’-বলেন রুহুল।
ক্রিমিনাল কোর্টের এটর্নীরা এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘মামলা নিষ্পত্তির একটি রীতি আছে। সেটি অনুসরণ না করায় বিপদ ডেকে এসেছেন রুহুল আমিন। এথেকে রেহাই পাওয়া মুষ্কিল হয়ে পড়বে।’ ঘটনাটি কম্যুনিটিতে বেশ চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। এ অবস্থায় কেউই আর মামলা-মোকদ্দমা নিষ্পত্তির সহজ পথে পা বাড়াবেন বলে মনে হয় না। তবে রুহুল আমিন মর্মাহত এবং বলেন, ‘মানুষের মঙ্গল করতে গিয়ে এমন পরিস্থিতির শিকার হবো জীবনে কল্পনাও করিনি।’ -খবর এনআরবি নিউজ।