আসন্ন স্কুল ছুটিতে বাংলাদেশ ভ্রমণে এয়ার টিকেটের চাহিদা বাড়ছে : প্রতারক ‘ট্রাভেল এজেন্ট’ থেকে সাবধান
- প্রকাশের সময় : ০২:১৩:০১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ মার্চ ২০১৫
- / ৭৫৪ বার পঠিত
নিউইয়র্ক: প্রতি বছরের মতো এবারও আসন্ন স্কুল ছুটিতে অনেক প্রবাসী বাংলাদেশী সপরিবারে দেশ ভ্রমনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সহনশীল হয়ে ওঠায় অনেকেই দেশে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখাচ্ছে। এদিকে স্কুল ছুটির সময় পবিত্র রমজান থাকায় অনেক বাংলাদেশী রমজান শেষে পবিত্র ঈদুল ফিতর দেশে পালনে আগ্রহী হচ্ছেন। স্কুল ছুটির সময় অর্থাৎ সামার ভ্যাকেশেনে জুনের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত দেশে যাওয়ার ব্যাপক চাহিদা হতে পারে বলে অভিজ্ঞ ট্রাভেলস এজেন্ট সূত্রে জানা গেছে।
এয়ারলাইন্সগুলো যাত্রীদের চাহিদা আচ করতে পেরে টিকিটের মূল্য দ্বি¦গুনেরও বেশী বাড়িয়ে দিচ্ছে। যে টিকেটের বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৯০০ ডলার। সেই একই টিকেটই স্কুল ছুটির সময় বিক্রি হয় ১৮০০ থেকে ২২০০ ডলারের মতো। আর তাই ৫ সদস্যের একটি পরিবার দেশে যেতে চাইলে তার টিকেট খরচ দাঁড়ায় প্রায় ১০ হাজার ডলার। টিকেটের এই চাহিদার সুযোগে গত কয়েক বছর ধরে এই স্কুল ছুটির মৌসুমে একাধিক প্রতারক ট্রাভেলস এজেন্ট পত্রিকায় অবিশ্বাস্য কম মূল্যে চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে যাত্রীদের ঠকানোরর অপচেষ্টায় লিপ্ত হন। এই প্রতারকরা যাত্রীদের কাছে স্বল্প মুল্যের টিকিট বিক্রির প্রতিশ্রুতি দিয়ে পরবর্তীতে টিকিটের অর্থের বিনিময়ে যাত্রীদের হাতে ই-টিকেটের মতো দেখতে রিজার্ভেশন স্লিপ ধরিয়ে দেয়। গত কয়েক বছরে এই প্রতারকদের নিয়ে সাপ্তাহিক পরিচয়সহ প্রবাসের আরো ২/১টি সংবাদপত্রে বিস্তারিত প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছে। এই সকল প্রতারকদের কাছ থেকে ভুয়া টিকিট ক্রয় করে অনেক যাত্রী বিমানবন্দর থেকে ফিরে আসছেন, আবার কেউ কেউ মাঝ পথে আটকা পড়েছেন। এরা যাত্রীদের কাছে টিকিট বিক্রি করতে নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে যেমন ‘যত আগে কিনবেন, তত সস্তায় টিকিটি পাবেন’। এমন প্রতিশ্রুতির ফাঁদে পড়ে অনেক যাত্রী কিছু অর্থ বাঁচাতে প্রতারণার শিকার হয়ে বিমানবন্দর থেকে ফিরে আসেন। গত দুই বছরে জ্যামাইকা, জ্যাকসন হাইটস ও এস্টোরিয়ার একাধিক ট্রাভেল এজেন্সী থেকে টিকিট ক্রয় করে অনেক যাত্রী ফিরে এসেছেন। পরবর্তীতে ঐ ট্রাভেল এজেন্টগুলোকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।
গত ২৭ বছর ধরে নিউইয়র্ক তথা উত্তর আমেরিকার বাংলাদেশী কমিউনিটিতে সততা ও বিশ্বস্থতার সাথে ব্যবসারত প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ট্রাভেসের স্বত্তাধিকারী নাজমুল হুদা জানিয়েছেন গত বছর তিনি এই ধরণের প্রতরণার শিকার প্রায় ১০০ যাত্রীকে সঠিক টিকিট দিয়ে দেশে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, যাত্রীরা প্রতারক ট্রাভেল এজেন্টেদের মিষ্টি কথার শিকার হয়ে সস্তায় টিকিট কিনে বিমানবন্দরে গিয়ে প্রতারণার শিকার হলে অর্থ গচ্চা দেয়া ছাড়া আর কোন গতি থাকে না। জনাব হুদা দেশে যাওয়ার উচ্চ মূল্যের টিকিট ক্রয়ের ক্ষেত্রে যাত্রীদের সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দেন। এরমধ্যে একটি হচ্ছে টিকিট ক্রয়ের পর এয়ারলাইন্স অফিসে ফোন করে রিজার্ভেশন এবং টিকিটের সত্যতা যাচাই করা। যে ট্রাভেল এজেন্টের টিকিট ক্রয় করা হয় তাদের ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়া এবং টিকিটের অর্থ প্রদানে যথাযথ ডকুমেন্ট সংগ্রহ করা।
এস্টোরিয়ার জনপ্রিয় ট্রাভেল এজেন্ট ‘ডিজিটাল ট্রাভেলস’-এর স্বত্তাধিকারী জনাব নজরুল প্রতারক ট্রাভেলস এজেন্টেদের ব্যাপারে সতর্কতা থাকার জন্য যাত্রীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, সস্তায় টিকিট ক্রয়ের লোভ সামলাতে না পারলে যাত্রীদের সমুদয় অর্থ হারানোর সম্ভাবনা থাকে।(সাপ্তাহিক পরিচয়)