নিউইয়র্ক ০৯:৪২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

আমেরিকা-চীন চাচ্ছে না বলেই পাকিস্তান বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চাইছে না

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০২:০৭:১৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ জুন ২০১৯
  • / ৩০৭ বার পঠিত

হককথা ডেস্ক: একাত্তুরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, নিউইয়র্ক আয়োজিত ‘দক্ষিণ এশিয়ায় মৌলবাদের উত্থান ও মুক্তির উপায়’ শীর্ষক সেমিনার সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি শাহরিয়ার কবীর বলেছেন, বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে কোন বিতর্ক থাকা উচিৎ হবে, সঠিক হবে না। তিনি বলেন, সরকার স্বীকৃত ৩০ লাখ-ই একাত্তুরে আমাদের শহীদের সংখ্যা। এই বিষয়টি নিয়ে যাতে কোন বিভেদ-বিভ্রান্তি বা ভুল বুঝা-বুঝির সৃষ্টি না হয় তার জন্য আইন করা প্রয়োজন এবং সরকার এব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করতে যাচ্ছে। তিনি বলেন, একাত্তুরে বাংলাদেশের মানুষের উপর বর্বরোচিত হামলার জন্য অবশ্যই পাকিস্তানকে ক্ষমা চাইতে হবে। এজন্য অনেক পাকিস্তানী একমত হলেও পাকিস্তান সরকার ক্ষমা চাওয়ার ব্যাপারে মুখ খুলছে না। কেননা, একাত্তুরে পাকিস্তানের পক্ষ নেয়া আমেরিকা আর চীন চাচ্ছে না বলেই পাকিস্তান স্বাধীন বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চাইছে না।
জ্যাকসন হাইটসের জুইস সেন্টারে গত ৮ জুন শনিবার অপরাহ্নে আয়োজিত এই উল্লেখিত সেমিনারো প্রশ্নত্তোর পর্বে বক্তব্য রাখতে গিয়ে একাত্তুরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় সভাপতি শাহরিয়ার কবীর উপরোক্ত কথা বলেন।
একাত্তুরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, নিউইয়র্ক-এর সভাপতি ফাহিম রেজা নূরের সভাপতিত্বে আয়োজিত সেমিনারে অন্যান্যের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন বিশিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতা কবীর আনোয়ার, বিশিষ্ট লেখক হাসান ফেরদৌস, সাপ্তাহিক বাঙালী সম্পাদক কৌশিক আহমেদ ও বিটিভি’র সাবেক প্রযোজক বেলাল বেগ। মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান। অনুষ্ঠান পরিচালনায় ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক স্বীকৃতি বড়–য়া।
এর আগে শাহরিয়ার কবীর নির্মিত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক দুটি ডকুমেন্টারী প্রদর্শীত হয় এবং শাহরিয়ার কবীর বাংলাদেশে মহান মুক্তিযুদ্ধ, আলবদর-রাজাকারদের অবস্থান, স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির করনীয় এবং তার পরিকল্পনা সহ একাত্তুরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কর্মকান্ড নিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন।
শাহরিয়ার কবীর বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ শেষ হয়নি। একাত্তরের মতো স্বাধীনতার ৪৮ বছরেও স্বাধীনতা বিরোধী জামায়াত-শিবির আজো দেশ, দেশের গণতন্ত্র আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। দেশ-প্রবাসে সম্মিলিতভাবে এই ষড়যন্ত্র রুখতে হবে। তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ কখনোই শক্তি প্রয়োগ করে দমন করা যাবে না। একে আদর্শিকভাবে মোকাবেলা করতে হবে। আর সন্ত্রাসকে চিরতরে মোকাবেলার জন্যে দরকার তাত্ত্বিকভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করা। তিনি বলেন, একটি ধর্ম, মানবতার সামগ্রিক কল্যাণের একটি আদর্শকে জামায়াতীরা ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে মতলবি রাজনীতির স্বার্থে। জঙ্গিবাদে বিশ্বাসীরা যে ইসলাম ধর্মের প্রচার করছে, তার বিরুদ্ধে সত্যিকারের ইসলাম ধর্ম প্রচার করতে হবে। ইসলাম যে কখনোই নির্বিচারে মানুষ হত্যাকে সমর্থন দেয় না-তা সর্বসাধারণকে অবহিত করতে হবে। তাহলেই জঙ্গিবাদ দমনে দৃশমান সাফল্য আসবে।
তিনি বলেন, নানা বাধা-বিপত্তির মধ্যদিয়ে আমাদেরকে এগুতে হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আর স্বাধীনতার অক্ষুন্ন রাখতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। এই কাজ কারোর একার পক্ষে করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশের কাছে পাকিস্তানকে ক্ষমা চাওয়ার জন্য জনমত গড়তে তিনি কাজ করছেন এবং ইতিমধ্যেই পাকিস্তানের অনেকেই ব্যক্তিগতভাবে এব্যাপারে ঐক্যমত পোষণ করেছে।
অনুষ্ঠানে কবীর আনোয়ার বলেন, আমরা জানি ছবি কথা বলে। শাহরিয়ার কবীরের ডকুমেন্ট দুটি দেখে তা আবার প্রমাণীত হলো। ছবি দুটিতে যেভাবে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ আর পাকিস্তানীদের বর্বরতা তুলে ধরা হয়েছে তা প্রশংসার দাবী রাখে।
হাসান ফেরদৌস বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে পাকিস্তানীরা বা কে কি বললো বা পাকিস্তারীরা তাদের বর্বর কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চাইলো কি না চাইলো তাতে কিছু যায় আসে না। আমরা যুদ্ধ করে, প্রাণের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছি এটাই বড় কথা, গর্বের কথা। স্বাধীনতা বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধভাবে রুখতে হবে।
কৌশিক আহমেদ বলেন, শাহরিয়ার কবীর প্রদীপের আলোর মতো কাজ করছেন। তার ডকুমেন্টরী প্রশংসার দাবী রাখে এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে জনমত গঠনে ভুমিকা রাখবে।
বেলাল বেগ প্রশ্ন রেখে বলেন, আমরা কি স্বাধীনতা বুঝি। বাংলাদেশের মানুষ সত্যিই কি স্বাধীনতার সুফল ভোগ করছে? দেশে কি গণতন্ত্র আছে, আইনের শাসন আছে? কেনো আজো শাহরিয়ারদের মতো মানুষদের মার খেতে হয়? প্রসঙ্গত তিনি বলেন, দেশের মিডিয়াগুলো কি জনগণের স্বার্থ রক্ষা করছে, নাকি অর্থ-বৈভবের মালিক হচ্ছে? তিনি বলেন, আমরা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। মানুষের কষ্ট-ত্যাগ চোখে দেখেছি। বাংলা মাটিতে না খেয়ে মানুষ মরতে দেখেছি। আমরা স্বাধীনতার চেতার বাংলাদেশ চাই।
বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।(বাংলা পত্রিকা)

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

About Author Information

আমেরিকা-চীন চাচ্ছে না বলেই পাকিস্তান বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চাইছে না

প্রকাশের সময় : ০২:০৭:১৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ জুন ২০১৯

হককথা ডেস্ক: একাত্তুরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, নিউইয়র্ক আয়োজিত ‘দক্ষিণ এশিয়ায় মৌলবাদের উত্থান ও মুক্তির উপায়’ শীর্ষক সেমিনার সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি শাহরিয়ার কবীর বলেছেন, বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে কোন বিতর্ক থাকা উচিৎ হবে, সঠিক হবে না। তিনি বলেন, সরকার স্বীকৃত ৩০ লাখ-ই একাত্তুরে আমাদের শহীদের সংখ্যা। এই বিষয়টি নিয়ে যাতে কোন বিভেদ-বিভ্রান্তি বা ভুল বুঝা-বুঝির সৃষ্টি না হয় তার জন্য আইন করা প্রয়োজন এবং সরকার এব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করতে যাচ্ছে। তিনি বলেন, একাত্তুরে বাংলাদেশের মানুষের উপর বর্বরোচিত হামলার জন্য অবশ্যই পাকিস্তানকে ক্ষমা চাইতে হবে। এজন্য অনেক পাকিস্তানী একমত হলেও পাকিস্তান সরকার ক্ষমা চাওয়ার ব্যাপারে মুখ খুলছে না। কেননা, একাত্তুরে পাকিস্তানের পক্ষ নেয়া আমেরিকা আর চীন চাচ্ছে না বলেই পাকিস্তান স্বাধীন বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চাইছে না।
জ্যাকসন হাইটসের জুইস সেন্টারে গত ৮ জুন শনিবার অপরাহ্নে আয়োজিত এই উল্লেখিত সেমিনারো প্রশ্নত্তোর পর্বে বক্তব্য রাখতে গিয়ে একাত্তুরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় সভাপতি শাহরিয়ার কবীর উপরোক্ত কথা বলেন।
একাত্তুরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, নিউইয়র্ক-এর সভাপতি ফাহিম রেজা নূরের সভাপতিত্বে আয়োজিত সেমিনারে অন্যান্যের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন বিশিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতা কবীর আনোয়ার, বিশিষ্ট লেখক হাসান ফেরদৌস, সাপ্তাহিক বাঙালী সম্পাদক কৌশিক আহমেদ ও বিটিভি’র সাবেক প্রযোজক বেলাল বেগ। মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান। অনুষ্ঠান পরিচালনায় ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক স্বীকৃতি বড়–য়া।
এর আগে শাহরিয়ার কবীর নির্মিত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক দুটি ডকুমেন্টারী প্রদর্শীত হয় এবং শাহরিয়ার কবীর বাংলাদেশে মহান মুক্তিযুদ্ধ, আলবদর-রাজাকারদের অবস্থান, স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির করনীয় এবং তার পরিকল্পনা সহ একাত্তুরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কর্মকান্ড নিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন।
শাহরিয়ার কবীর বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ শেষ হয়নি। একাত্তরের মতো স্বাধীনতার ৪৮ বছরেও স্বাধীনতা বিরোধী জামায়াত-শিবির আজো দেশ, দেশের গণতন্ত্র আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। দেশ-প্রবাসে সম্মিলিতভাবে এই ষড়যন্ত্র রুখতে হবে। তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ কখনোই শক্তি প্রয়োগ করে দমন করা যাবে না। একে আদর্শিকভাবে মোকাবেলা করতে হবে। আর সন্ত্রাসকে চিরতরে মোকাবেলার জন্যে দরকার তাত্ত্বিকভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করা। তিনি বলেন, একটি ধর্ম, মানবতার সামগ্রিক কল্যাণের একটি আদর্শকে জামায়াতীরা ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে মতলবি রাজনীতির স্বার্থে। জঙ্গিবাদে বিশ্বাসীরা যে ইসলাম ধর্মের প্রচার করছে, তার বিরুদ্ধে সত্যিকারের ইসলাম ধর্ম প্রচার করতে হবে। ইসলাম যে কখনোই নির্বিচারে মানুষ হত্যাকে সমর্থন দেয় না-তা সর্বসাধারণকে অবহিত করতে হবে। তাহলেই জঙ্গিবাদ দমনে দৃশমান সাফল্য আসবে।
তিনি বলেন, নানা বাধা-বিপত্তির মধ্যদিয়ে আমাদেরকে এগুতে হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আর স্বাধীনতার অক্ষুন্ন রাখতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। এই কাজ কারোর একার পক্ষে করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশের কাছে পাকিস্তানকে ক্ষমা চাওয়ার জন্য জনমত গড়তে তিনি কাজ করছেন এবং ইতিমধ্যেই পাকিস্তানের অনেকেই ব্যক্তিগতভাবে এব্যাপারে ঐক্যমত পোষণ করেছে।
অনুষ্ঠানে কবীর আনোয়ার বলেন, আমরা জানি ছবি কথা বলে। শাহরিয়ার কবীরের ডকুমেন্ট দুটি দেখে তা আবার প্রমাণীত হলো। ছবি দুটিতে যেভাবে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ আর পাকিস্তানীদের বর্বরতা তুলে ধরা হয়েছে তা প্রশংসার দাবী রাখে।
হাসান ফেরদৌস বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে পাকিস্তানীরা বা কে কি বললো বা পাকিস্তারীরা তাদের বর্বর কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চাইলো কি না চাইলো তাতে কিছু যায় আসে না। আমরা যুদ্ধ করে, প্রাণের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছি এটাই বড় কথা, গর্বের কথা। স্বাধীনতা বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধভাবে রুখতে হবে।
কৌশিক আহমেদ বলেন, শাহরিয়ার কবীর প্রদীপের আলোর মতো কাজ করছেন। তার ডকুমেন্টরী প্রশংসার দাবী রাখে এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে জনমত গঠনে ভুমিকা রাখবে।
বেলাল বেগ প্রশ্ন রেখে বলেন, আমরা কি স্বাধীনতা বুঝি। বাংলাদেশের মানুষ সত্যিই কি স্বাধীনতার সুফল ভোগ করছে? দেশে কি গণতন্ত্র আছে, আইনের শাসন আছে? কেনো আজো শাহরিয়ারদের মতো মানুষদের মার খেতে হয়? প্রসঙ্গত তিনি বলেন, দেশের মিডিয়াগুলো কি জনগণের স্বার্থ রক্ষা করছে, নাকি অর্থ-বৈভবের মালিক হচ্ছে? তিনি বলেন, আমরা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। মানুষের কষ্ট-ত্যাগ চোখে দেখেছি। বাংলা মাটিতে না খেয়ে মানুষ মরতে দেখেছি। আমরা স্বাধীনতার চেতার বাংলাদেশ চাই।
বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।(বাংলা পত্রিকা)