নিউইয়র্ক ০৫:৪২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৬ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

আগামী বছর ‘ষ্পেশাল চাইল্ড’ও থাকবে : শিশু-কিশোরদের প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে নিউইয়র্কে একুশের অনুষ্ঠান শুরু

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৪:৫১:৫২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৮
  • / ১২৪২ বার পঠিত

নিউইয়র্ক (ইউএনএ): প্রতি বছরের মতো এবছরও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশন ইউএসএ’র সম্মিলিতভাবে ‘অমর একুশে মহান শহীদ দিবস তথা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ পালন করার উদ্যোগ নিয়েছে। আর এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে মূল আয়োজন করা হয় শিশু-কিশোর-কিশোরীদের জন্য বিভিন্ন প্রতিযোগিতা। গত ১১ ফেব্রুয়ারী রোববার দুপুরে সিটির জ্যাকসন হাইটসের পিএস ৬৯-এর ক্যাফেটেরিয়ায় এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে অর্ধ শতাধিক শিশু-কিশোর-কিশোরীর সরব উপস্থিতি আর অংশগ্রহণ এবং ছবি আঁকা, হাতের লেখা ও কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শুরু হলো নিউইয়র্কে  ‘অমর একুশে’ উদযাপনের প্রথম অনুষ্ঠান।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ তের বছর ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসেসিয়েশন ইউএসএ বিভিন্ন সংগঠনের সমন্বয়ে সম্মিলিতভাবে ‘অমর একুশে’ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হচ্ছে। চলতি বছরে অমর একুশের মূল অনুষ্ঠান আয়োজিত হবে একুশের আগের দিন অর্থাৎ ২০ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার সন্ধ্যায়। মূল পর্ব থাকবে প্রথম প্রহরে। এতে অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মান করে শহীদ বেদীতে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হবে। ঐদিন সিটির উডসাইডস্থ কুইন্স প্যালেসে মিলনায়তনে বিকেল থেকেই একুশের অনুষ্ঠানমালা চলবে এবং শিশু-কিশোর-কিশোরীদের জন্য বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদেও মাঝে পুরষ্কার বিতরণ করা হবে। এছাড়াও অনুষ্ঠানমালার মধ্যে থাকবে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। খবর ইউএনএ’র।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসেসিয়েশন ইউএসএ সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম, জাহাঙ্গীরনগর, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্বাবদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, ইউএসএ ছাড়াও ইতিমধ্যেই প্রবাসের প্রায় ৫০টি সংগঠন ‘সম্মিলিত একুশ উদযাপন-২০১৮’ এর অনুষ্ঠানে অংশ নিতে রেজিষ্ট্রেশন করেছে।
জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশনের উদ্যোগে দীর্ঘ তের বছর ধরে প্রবাসে একুশ স্মরণে শিশু-কিশোরদের জন্য বিভিন্ন প্রতিযোগিতার অয়োজন করলেও চলতি বছর সহ ইতিপূর্বে কোন বছরই ‘ষ্পেশাল চাইল্ড’-দের জন্য পৃথকভাবে কোন প্রতিযোগিতার আয়োজন না করায় এব্যাপারে প্রতিযোগিতাস্থলে আগত একাধিক অভিভাবক বিষয়টি ইউএনএ প্রতিনিধির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং আগামী বছর থেকে কমিউনিটির বাংলাদেশী-আমেরিকান ‘ষ্পেশাল চাইল্ড’-দের জন্য পৃথকভাবে কোন প্রতিযোগিতার আয়োজনের দাবী জানান। অভিভাবকদের এই দাবীর ব্যাপারে এসোসিয়েশনের অন্যতম কর্মকর্তা এ্যানী ফেরদৌস এই দাবীর সাথে একাত্ততাা প্রকাশ করে বলেন, বিষয়টি ভালো উদ্যোগ হবে। আমাদের ‘ষ্পেশাল চাইল্ড’-দের মাঝেও অনেক প্রতিভা লুকিয়ে আছে। এবং অনেক ক্ষেত্রে তারাও ভালো করতে পারে। এব্যাপারে তিনি সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সাথে পরামর্শ করে আগামী বছর থেকে ‘ষ্পেশাল চাইল্ড’-দের জন্য একুশে প্রতিযোগিতা আয়োজনের আশ্বাস দেন।
চলতি বছরের একুশের প্রতিযোগিতার দিন বেলা বারোটায় শুরু হওয়া মেধা প্রতিযোগীতার অনুষ্ঠানটি চলে বেলা চারটা পর্যন্ত। এ সময় চারটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে তিনটি বিষয়ে নিউইয়র্ক সিটির বিভিন্ন স্কুলে অধ্যয়নরত অর্ধশতাধিক ছাত্র-ছাত্রী  (কিন্ডারগার্টেন থেকে শুরু করে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত) অংশগ্রহণ করে। প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও সম্মিলিতভাবে একুশ উদযাপনের সংশ্লিষ্ট সংগঠনের প্রতিনিধি এবং সংগঠক, অভিভাবক এবং শুভান্যুধায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিযোগীতায় শিশু-কিশোরদের অংকন, ছড়া ও কবিতা আবৃত্তি উপস্থিত দর্শক-শ্রোতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। বিশেষ করে রং বে রং এর কালার পেন্সিল ও জল রং দিয়ে আঁকা নৌকা, কুঁড়ে ঘর, নদী, সবুজ মাঠ, ‘সবুজে ঘেরা লাল’ বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা আর শহীদ মিনারের আঁকা দৃষ্টিনন্দন ছবি দর্শক-শ্রোতা ও আগত অতিথীদের মৃগ্ধ করে। তাছাড়াও শিশু-কিশোরদের বাংলা স্বর ও ব্যঞ্জন বর্ণের লেখা, ইংরেজী থেকে বাংলা অনুবাদ, বাংলা অনুলিখনও সবাইকে মুগ্ধ করে। প্রতিযোগিতায় নাইন থেকে টুয়েলভ গ্রেডে পড়া ছাত্র-ছাত্রীরা ‘হিষ্ট্রি অব বাংলাদেশ মুভমেন্ট ১৯৪৭-১৯৭১’ শিরোনামে রচনা লিখে উদ্যোক্তা, দর্শক ও বিচারকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে।
সকাল থেকে প্রচন্ড বৃষ্টি ও ঠান্ডা উপেক্ষা করে শিশু-কিশোররা তাদের অভিভাবকদের সাথে পিএস-৬৯-এর বিশাল ক্যাফেটেরিয়ায় সমবেত হয়। দিনটি ছুটির দিন থাকায় প্রতিযোগীতায় অভিভাবকদের মতো শিশু-কিশোররাও সমান উৎসাহ ও উদ্দিপনায় মেতে উঠেছিল। প্রতিযোগীরাা রীতিমতো প্রতিযোগীতায় অবর্তীর্ণ হবার জন্য বাসা-বাড়ী থেকে প্রস্তুত হয়ে এসেছিল। উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে কাগজ-কলম রংতুলি পেন্সিল সরবরাহ করা হলেও প্রতিযোগীদের অনেককেই তা বাসা থেকে আনতে দেখা গেছে।
কবিতা আবৃত্তির অংশে ‘বিশ্বকবি’ খ্যাত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘নির্ঝরের স্বপ্নভংগ’ থেকে শুরু করে ‘বিদ্রোহী কবি খ্যাত’ বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘বিদ্রোহী’ কবিতা, সুকুমার রায়ের বেশ কয়েকটি ছড়া, কবি আল মাহমুদ ও আসাদ চৌধুরীর একাধিক কবিতা সহ অন্যান্য বাংলাদেশের অন্যান্য খ্যাতিমান কবি’র কবিতা আবৃত্তি করা হয়। যা ছিল অত্যন্ত প্রাণবন্ত ও উপভোগ্য। এসময় অনেকে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন।
এর আগে রোববার অপরাহ্নে মেধা প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠানের উদ্ভোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশনের সভাপতি স্বপন বড়–য়া। এসময় আরও বক্তব্য রাখেন সাঈদা আক্তার লিলি, এমদাদুল হক ও এ্যানি ফেরদৌস। এসময় বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সঙ্গীত এবং একুশের অমর গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী’ পরিবেশিত হয়।
অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ গোলাম মোস্তাফা। কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগীতা সঞ্চালন করেন সাবিনা শারমিন নিহার ও রুহুল আমিন সরকার। রোববারের প্রতিযোগীতায় বিশেষ সমন্বয় ও সহযোগতিা করেন মোহাম্মদ হোসেন খান, তাজুল ইসলাম, মোল্লা মনিরুজ্জামান, গাজী সামসুদ্দিন ও মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।
কবিতা আবৃত্তির প্রতিযোগীতায় বিচারক ছিলেন আনোয়ারুল হক লাভলু, শাহরিয়ার তৈয়বুর ও ড. নজরুল ইসলাম। বাংলা লিখন প্রতিযোগীতায় বিচারক ছিলেন হুসনে আরা বেগম, কৌশিক আহমেদ ও মুহাম্মদ ফজলুল রহমান। অংকন প্রতিযোগীতায় বিচারক ছিলেন টিপু আলম ও আজিজুর রহমান।  অনুষ্ঠানে শিশু-কিশোর, অভিভাবক ও আগত অতিথীদের মধ্যাহ্ন-ভোজে আপ্যায়ন করা হয়।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

About Author Information

আগামী বছর ‘ষ্পেশাল চাইল্ড’ও থাকবে : শিশু-কিশোরদের প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে নিউইয়র্কে একুশের অনুষ্ঠান শুরু

প্রকাশের সময় : ০৪:৫১:৫২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৮

নিউইয়র্ক (ইউএনএ): প্রতি বছরের মতো এবছরও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশন ইউএসএ’র সম্মিলিতভাবে ‘অমর একুশে মহান শহীদ দিবস তথা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ পালন করার উদ্যোগ নিয়েছে। আর এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে মূল আয়োজন করা হয় শিশু-কিশোর-কিশোরীদের জন্য বিভিন্ন প্রতিযোগিতা। গত ১১ ফেব্রুয়ারী রোববার দুপুরে সিটির জ্যাকসন হাইটসের পিএস ৬৯-এর ক্যাফেটেরিয়ায় এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে অর্ধ শতাধিক শিশু-কিশোর-কিশোরীর সরব উপস্থিতি আর অংশগ্রহণ এবং ছবি আঁকা, হাতের লেখা ও কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শুরু হলো নিউইয়র্কে  ‘অমর একুশে’ উদযাপনের প্রথম অনুষ্ঠান।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ তের বছর ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসেসিয়েশন ইউএসএ বিভিন্ন সংগঠনের সমন্বয়ে সম্মিলিতভাবে ‘অমর একুশে’ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হচ্ছে। চলতি বছরে অমর একুশের মূল অনুষ্ঠান আয়োজিত হবে একুশের আগের দিন অর্থাৎ ২০ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার সন্ধ্যায়। মূল পর্ব থাকবে প্রথম প্রহরে। এতে অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মান করে শহীদ বেদীতে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হবে। ঐদিন সিটির উডসাইডস্থ কুইন্স প্যালেসে মিলনায়তনে বিকেল থেকেই একুশের অনুষ্ঠানমালা চলবে এবং শিশু-কিশোর-কিশোরীদের জন্য বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদেও মাঝে পুরষ্কার বিতরণ করা হবে। এছাড়াও অনুষ্ঠানমালার মধ্যে থাকবে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। খবর ইউএনএ’র।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসেসিয়েশন ইউএসএ সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম, জাহাঙ্গীরনগর, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্বাবদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, ইউএসএ ছাড়াও ইতিমধ্যেই প্রবাসের প্রায় ৫০টি সংগঠন ‘সম্মিলিত একুশ উদযাপন-২০১৮’ এর অনুষ্ঠানে অংশ নিতে রেজিষ্ট্রেশন করেছে।
জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশনের উদ্যোগে দীর্ঘ তের বছর ধরে প্রবাসে একুশ স্মরণে শিশু-কিশোরদের জন্য বিভিন্ন প্রতিযোগিতার অয়োজন করলেও চলতি বছর সহ ইতিপূর্বে কোন বছরই ‘ষ্পেশাল চাইল্ড’-দের জন্য পৃথকভাবে কোন প্রতিযোগিতার আয়োজন না করায় এব্যাপারে প্রতিযোগিতাস্থলে আগত একাধিক অভিভাবক বিষয়টি ইউএনএ প্রতিনিধির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং আগামী বছর থেকে কমিউনিটির বাংলাদেশী-আমেরিকান ‘ষ্পেশাল চাইল্ড’-দের জন্য পৃথকভাবে কোন প্রতিযোগিতার আয়োজনের দাবী জানান। অভিভাবকদের এই দাবীর ব্যাপারে এসোসিয়েশনের অন্যতম কর্মকর্তা এ্যানী ফেরদৌস এই দাবীর সাথে একাত্ততাা প্রকাশ করে বলেন, বিষয়টি ভালো উদ্যোগ হবে। আমাদের ‘ষ্পেশাল চাইল্ড’-দের মাঝেও অনেক প্রতিভা লুকিয়ে আছে। এবং অনেক ক্ষেত্রে তারাও ভালো করতে পারে। এব্যাপারে তিনি সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সাথে পরামর্শ করে আগামী বছর থেকে ‘ষ্পেশাল চাইল্ড’-দের জন্য একুশে প্রতিযোগিতা আয়োজনের আশ্বাস দেন।
চলতি বছরের একুশের প্রতিযোগিতার দিন বেলা বারোটায় শুরু হওয়া মেধা প্রতিযোগীতার অনুষ্ঠানটি চলে বেলা চারটা পর্যন্ত। এ সময় চারটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে তিনটি বিষয়ে নিউইয়র্ক সিটির বিভিন্ন স্কুলে অধ্যয়নরত অর্ধশতাধিক ছাত্র-ছাত্রী  (কিন্ডারগার্টেন থেকে শুরু করে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত) অংশগ্রহণ করে। প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও সম্মিলিতভাবে একুশ উদযাপনের সংশ্লিষ্ট সংগঠনের প্রতিনিধি এবং সংগঠক, অভিভাবক এবং শুভান্যুধায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিযোগীতায় শিশু-কিশোরদের অংকন, ছড়া ও কবিতা আবৃত্তি উপস্থিত দর্শক-শ্রোতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। বিশেষ করে রং বে রং এর কালার পেন্সিল ও জল রং দিয়ে আঁকা নৌকা, কুঁড়ে ঘর, নদী, সবুজ মাঠ, ‘সবুজে ঘেরা লাল’ বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা আর শহীদ মিনারের আঁকা দৃষ্টিনন্দন ছবি দর্শক-শ্রোতা ও আগত অতিথীদের মৃগ্ধ করে। তাছাড়াও শিশু-কিশোরদের বাংলা স্বর ও ব্যঞ্জন বর্ণের লেখা, ইংরেজী থেকে বাংলা অনুবাদ, বাংলা অনুলিখনও সবাইকে মুগ্ধ করে। প্রতিযোগিতায় নাইন থেকে টুয়েলভ গ্রেডে পড়া ছাত্র-ছাত্রীরা ‘হিষ্ট্রি অব বাংলাদেশ মুভমেন্ট ১৯৪৭-১৯৭১’ শিরোনামে রচনা লিখে উদ্যোক্তা, দর্শক ও বিচারকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে।
সকাল থেকে প্রচন্ড বৃষ্টি ও ঠান্ডা উপেক্ষা করে শিশু-কিশোররা তাদের অভিভাবকদের সাথে পিএস-৬৯-এর বিশাল ক্যাফেটেরিয়ায় সমবেত হয়। দিনটি ছুটির দিন থাকায় প্রতিযোগীতায় অভিভাবকদের মতো শিশু-কিশোররাও সমান উৎসাহ ও উদ্দিপনায় মেতে উঠেছিল। প্রতিযোগীরাা রীতিমতো প্রতিযোগীতায় অবর্তীর্ণ হবার জন্য বাসা-বাড়ী থেকে প্রস্তুত হয়ে এসেছিল। উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে কাগজ-কলম রংতুলি পেন্সিল সরবরাহ করা হলেও প্রতিযোগীদের অনেককেই তা বাসা থেকে আনতে দেখা গেছে।
কবিতা আবৃত্তির অংশে ‘বিশ্বকবি’ খ্যাত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘নির্ঝরের স্বপ্নভংগ’ থেকে শুরু করে ‘বিদ্রোহী কবি খ্যাত’ বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘বিদ্রোহী’ কবিতা, সুকুমার রায়ের বেশ কয়েকটি ছড়া, কবি আল মাহমুদ ও আসাদ চৌধুরীর একাধিক কবিতা সহ অন্যান্য বাংলাদেশের অন্যান্য খ্যাতিমান কবি’র কবিতা আবৃত্তি করা হয়। যা ছিল অত্যন্ত প্রাণবন্ত ও উপভোগ্য। এসময় অনেকে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন।
এর আগে রোববার অপরাহ্নে মেধা প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠানের উদ্ভোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশনের সভাপতি স্বপন বড়–য়া। এসময় আরও বক্তব্য রাখেন সাঈদা আক্তার লিলি, এমদাদুল হক ও এ্যানি ফেরদৌস। এসময় বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সঙ্গীত এবং একুশের অমর গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী’ পরিবেশিত হয়।
অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ গোলাম মোস্তাফা। কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগীতা সঞ্চালন করেন সাবিনা শারমিন নিহার ও রুহুল আমিন সরকার। রোববারের প্রতিযোগীতায় বিশেষ সমন্বয় ও সহযোগতিা করেন মোহাম্মদ হোসেন খান, তাজুল ইসলাম, মোল্লা মনিরুজ্জামান, গাজী সামসুদ্দিন ও মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।
কবিতা আবৃত্তির প্রতিযোগীতায় বিচারক ছিলেন আনোয়ারুল হক লাভলু, শাহরিয়ার তৈয়বুর ও ড. নজরুল ইসলাম। বাংলা লিখন প্রতিযোগীতায় বিচারক ছিলেন হুসনে আরা বেগম, কৌশিক আহমেদ ও মুহাম্মদ ফজলুল রহমান। অংকন প্রতিযোগীতায় বিচারক ছিলেন টিপু আলম ও আজিজুর রহমান।  অনুষ্ঠানে শিশু-কিশোর, অভিভাবক ও আগত অতিথীদের মধ্যাহ্ন-ভোজে আপ্যায়ন করা হয়।