ইসলামের আলো বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে চাই
- প্রকাশের সময় : ০৯:৩১:৩৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭
- / ৩৬৮০ বার পঠিত
হককথা রিপোর্ট: বাংলাদেশের বিশিষ্ট ইসলামিক স্কলার, জনপ্রিয় টিভি উপস্থাপক মওলানা তারেক মনোয়ার বলেছেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম। একমাত্র ইসলামিক আদর্শই পারে বিশ্বব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে। আমি বিশ্বব্যাপী ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিতে চাই। একজন মসুলমান হিসেবেও এটি আমার দায়িত্ব ও কর্তব্য। তিনি বলেন, বাংলাদেশে আধুনিকতা আর পাশ্চাত্য সংস্কৃতির নামে যা চলছে তা মেনে নেয়া যায় না। এই সংস্কৃতির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের আসল সংস্কৃতি মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। যা আমরা বুজতে পারছি না। অথচ মানবিক জীবনবোধ সম্পন্ন আমাদের উচুমানের নিজস্ব সংস্কৃতি রয়েছে। তাই নিজেদের আত্ব পরিচয়, জাতিসত্ত্বা বজায় রাখতে নিজেদেরই অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। ইসলামের চেতনার ঝান্ডাকে তুলে ধরতে হবে। তারেক মনোয়ার একজন ইন্টারফেইথ বক্তা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র এবং নর্থ-আমেরিকা সফরে রয়েছেন। উপমহাদেশের খ্যাতিমান ইসলামিক স্কলার তারেক মনোয়ার। দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশের মাটিতে বিভিন্ন ব্যক্তি ও সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সম্মাণনা স্মারক গ্রহণ করেছেন।
বাংলাদেশী ইমিগ্র্যান্ট কমিউনিটি এবং মূলধারার বিভিন্ন ধর্মের কনভেনশন ও ইসলামিক সেমিনারে প্রধান বক্তা হিসেবে অংশগ্রহণ করে তিনি সুনাম কুড়িছেন। যার ফলশ্রুতিতে তারেক মনোয়ারকে সম্মাণনা সার্টিফিকেট প্রদান করেন নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিলম্যান রাফায়ে স্পিনাল। ব্রুকলীনের ডিস্ট্রিক্ট ৩৭ থেকে নির্বাচিত এ জনপ্রতিনিধি মাওলানা মনোয়ারকে একজন দক্ষ ইসলামিক স্কলার হিসেবে ভূষিত করেন। এছাড়া নিউইয়র্ক বাংলাদেশ কমিউনিটির বেশ কয়েকট সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন,সাংবাদিক ও লেখক সংগঠনের পক্ষ থেকেও তারেক মনোয়ারকে তার কৃতিত্বের স্বীকৃতি দেয়া হয়। এসব সংগঠনগুলোর মধ্যে অন্যতম নিউইয়র্ক – বাংলাদেশ প্রেসক্লাব, বাংলাদেশ জার্নালিস্ট এন্ড রাইটার্স অ্যাসোসিয়েশন অব নর্থ আমেরিকা, রাইটার্স ফোরাম অব নর্থ আমেরিকা, টাইম টেলিভিশন ইউএসএ, সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা, বাংলাদেশ সোসাইটি, বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটি ইউএএসএ ইনক, কোম্পানীগঞ্জ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন, দারুল জান্নাহ ইসলামিক সেন্টার (ব্রুকলীন), মসজিদ আলহেরা আটলান্টিক সিটি, আমেরিকান মুসলিম সেন্টার অন্যতম। ইলমারে সঠিক ইতিহাস তরুণ প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার অবদান হিসেবে তাকে এসব স্কীকৃতি ও সম্মাননা দেয়া হয়।
মাওলানা তারেক মনোয়ার গত সপ্তাহে নিউজ পোর্টাল হককথা’র প্রতিনিধির সাথে আলাপকালে বলেন, আসলে আমি কাজ করছি আগামি প্রজন্ম যাতে ধর্মের নামে বিপদাগামির দিকে না যায়। তাদের মাঝে ইসলামের শান্তির বার্তা, এবং অন্য ধর্মের প্রতি সহনশীলতা পৌঁছে দিতে হবে পরিববার এবং সমাজের পক্ষ থেকে। তাহলেও বিশ্বজুড়ে ইসলামের নামে সন্ত্রাসবাদ আর জঙ্গিবাদ কখনো প্রতিষ্ঠা পাবে না। আগামি প্রজন্ম সন্ত্রাসবাদ আর জঙ্গিবাদকে ঘৃণা করতে শিখবে। এটাই আমার বিশ্বাস।
অত্যন্ত সদালাপি মাওলানা তারেক মনোয়ার হককথা’র সাথে আলাপকালে বলেন, বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র চলছে। এর বিরুদ্ধে সমগ্র মুসলিম জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আন্তর্জাতিক চক্রের ষড়যন্ত্র থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করে সকল মুসলিম দেশগুলোকে এক ছাতার তলে আসতে হবে। তবেই না বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে।
মাওলানা তারেক মনোয়ার বলেন, মিশ্র সংস্কৃতির দেশ আমেরিকায় ইসলামের শান্তির বার্তা পৌছে দেয়ার অনেক সুযোগ রয়েছে। এই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। যার যার অবস্থান থেকেই এই কাজ করা যেতে পারে।
ইংরেজী, বাংলা ও আরবী ভাষায় পারদর্শী তারেক মনোয়ারের স্বপ্ন ছিল ইসলামের শান্তির বার্তা বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরা। একই সাথে ধর্মের নামে বিপন্ন মানবতার অবক্ষয় থেকেও উপমহাদেশের বিপদগামী তরুণ প্রজন্মকে শিক্ষা ও সংস্কৃতির সেতুবন্ধনে আবদ্ধ করা। তিনি বলেন, ‘ইসলামের সঠিক ইতিহাস কেবল বাংলাদেশই নয়, বিশ্বজুড়ে বাংলা ভাষাভাষি প্রজন্ম’সহ অন্যান্য জাতিগোষ্ঠির মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে।’ সবাইকে ভালবাসার সেতুবন্ধনে আবদ্ধ করতে হবে।
তারেক মনোয়ার বলেন, ‘ইসলাম ধর্মের নামে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রবাদ বিশ্বের শান্তিপ্রিয় মুসলিম সম্প্রদায়েকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দিয়েছে।’ এর থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ হচ্ছে ‘ইসলামের সঠিক ইতিহাসের চর্চা করা এবং তা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দেয়া।’ তিনি বলেন, ইসলামে কোন নিরীহ মানুষ হত্যা সমর্থন করে না। নবী করীম (সা:) কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে মানুষের মাঝে ইসলামের শান্তির বারতা ছড়িয়ে দেয়ার কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ইসলামে স্পষ্ট নির্দেশনা আছে নিজের বিপরীত মত, পথ ও ধর্মের যে কেউ হোক না কেন, তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে হবে।
উল্লেখ্য, লক্ষèীপুরের সন্তান তারেক মনোয়ারের জন্ম ১৯৬০ সালে। প্রাইমারী শিক্ষার গন্ডি পেরিয়ে তিনি চলে আসেন রাজধানী ঢাকা। ঢাকা থেকেই উচ্চমাধ্যমিক ও মাধ্যমিক শেষ করে প্রাচ্যের অক্সফোর্ডখ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্র বিজ্ঞান নিয়ে উচ্চতর ডিগ্রি লাভ করেন। এছাড়া ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসা থেকে আদিস ও আদবে বিষয়ে কামিল’সহ তৎকালীন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পারেটিভ রিলিজিয়নেও উপর উচ্চর ডিগ্রী নেন। তিনি ঢাকার সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সাথেও সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলেন। ১৯৯০ সালে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জামান। তিনি বাংলাদেশের বেসরকারি টিভি চ্যানেল এটিএন বাংলার ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।