বাংলাদেশ কখনো আফগানিস্তান-পাকিস্তান হবে না : সাক্ষাৎকারে আবুল মকসুদ
- প্রকাশের সময় : ০৭:১৭:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ মার্চ ২০১৫
- / ১৫৭০ বার পঠিত
ঢাকা: লেখক ও সাংবাদিক আবুল মকসুদ বলেছেন, ধর্মান্ধ মৌলবাদীগোষ্ঠী যতই চেষ্টা করুন, বাংলাদেশ কখনো আফগানিস্তান-পাকিস্তান হবে না। যে জাতির রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রয়েছে, রামমোহনরায় রয়েছে, বিদ্যাসাগর রয়েছে, কাজী নজরুল ইসলাম রয়েছে। সে জাতি কখনো আফগানিস্তান হবে না। হতে পারে না।
লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যা প্রসঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, যে প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি চায় তাদের ধর্ম ব্যবসাকে চালিয়ে নিতে, এখনও তাদের সংখ্যা খুবই কম। এখনো জামায়াতের ভোটার ৪-৫ পার্সেন্টের বেশি হবে না। এই ধর্মান্ধ শক্তিকে আদর্শিকভাবে মোকাবিলা করতে হবে। আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর আরও ভূমিকা রাখা উচিত। জনসাধারণকে সচেতন হতে হবে।
তিনি বলেন, জামায়াতকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ইতোমধ্যেই চিহ্নিত করেছে। তাদের নিষিদ্ধ করা এখন সময়ের দাবি। বহু আগেই তাদের নিষিদ্ধ করার জন্য যে আইনি প্রক্রিয়া রয়েছে সেখানে স্বচ্ছতার প্রয়োজন। মৌলবাদ, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থানকে সমালোচনা করা যাবে না। কিন্ত এর সঙ্গে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণও জরুরি। আমরা অনেকেই চাই এমন একটি অসাম্প্রদায়িক সমাজ প্রতিষ্ঠা হোক। কিন্ত নিজেরা উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে আসছি না।
আবুল মকসুদ বলেন, একদিন-দুদিনের প্রতিবাদ করেই শেষ করা ঠিক হবে না। এটিকে কিভাবে দমন করা যায়, এর যেনো কোনো পুনরাবৃত্তি না ঘটে তার জন্য আদর্শিক লড়াই করতে হবে। সেই আদর্শিক লড়াই মিডিয়াগুলো করছে। সাধারণ নাগরিকসমাজ থেকেও হচ্ছে। তবে সেখানে বিভক্তি রয়েছে। গণতান্ত্রিক সমাজে সেটা থাকবে। কিন্ত প্রগতিশীল চিন্তাধারা করে, অসাম্প্রদায়িক মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র যারা প্রতিষ্ঠা করতে চান তারা বিভিন্ন দলমতে বিভক্ত থাকতে পারেন কিন্তু এই একটি ইস্যুতে তাদের একত্রিত হতে হবে। এজন্য কমিউনিস্ট পার্টিকে আওয়ামী লীগের সঙ্গে যোগ দেয়ার প্রয়োজন নেই। তেমনি জাসদের দরকার নেই। কিংবা ওয়ার্কার্স পার্টির দরকার নেই। আসলে সবার লক্ষ্য এক। এই ইস্যুতে সবাইকে একত্রিত হতে হবে।
তিনি বলেন, অর্থাৎ আমরা কোনোভাবেই একটি ধর্মান্ধ রাষ্ট্র বা সমাজ চাই না। কোনোভাবেই একটি মৌলবাদী সমাজ চাই না। একটি সাম্প্রদায়িক সমাজ চাই না। যেখানে ধর্মের কারণে মানুষ নির্যাতিত হবে বা বৈষম্যের শিকার হবে। এদেশে হিন্দু ও বৌদ্ধদের ওপরও নির্যাতন হয়েছে। আমাদের এসব ইস্যুতে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। প্রতিবাদ করতে হবে। তবেই এই অভিজিৎদের মতো আলোকিত মানুষদের হারাতে হবে না। (দৈনিক আমাদের অর্থনীতি)