নিউইয়র্ক ০৪:৩২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

এবারও কী ‘গৃহপালিত’ বিরোধী দল হবে?

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১০:৩৩:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / ৪৬ বার পঠিত

১০ বছর জাতীয় সংসদে কার্যকর কোনো বিরোধী দল ছিলো না বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। ২০১৪ ও ১৮ সালের মত সালের মতো এবারও সংসদে বিরোধী দলে জাতীয় পার্টি। তাই ঘুরেফিরে আবারও প্রশ্ন উঠেছে, বিরোধী দল হিসেবে কতোটা শক্ত ভূমিকা তারা পালন করতে পারবে।

যদিও এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। এবার ৬২ জন স্বতন্ত্র সদস্য যখন সংসদে সরব থাকার কথা দিচ্ছেন; তখন ‘গৃহপালিত’ বিরোধী দলের অপবাদ ঘোচাতে চাইছে জাতীয় পার্টি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর থেকেই আলোচনার বিষয় ছিলো এবার কে হচ্ছে বিরোধী দল। ৬২ জন স্বতন্ত্র সদস্যদের সম্মিলিত মোর্চা না কি ১১ আসন পাওয়া জাতীয় পার্টি।

বিরোধী দল কে হবে তার কোনো সংজ্ঞা আইনে না থাকলেও বিরোধী দলীয় নেতার সংজ্ঞা কার্যপ্রণালি বিধিতে দেওয়া আছে। সেই নিয়ম মেনে ২৯ জানুয়ারী জাতীয় পার্টি থেকেই বিরোধী দলীয় নেতা নির্বাচন করেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।

বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের এবং উপনেতা হিসেবে আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে স্বীকৃতি দেন স্পিকার। অবসান হয় বিতর্কের। একাদশ সংসদে জাতীয় পার্টির ২৩ জন সংসদ সদস্য ছিলো। আর সংরক্ষিত নারী আসনে ছিলেন চারজন। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে ২৬ আসনে সমঝোতা করে দলটি। কিন্তু জয় পায় ১১টিতে। সংরক্ষিত আসনে দু’জনকে মনোনয়ন দিতে পারবে জাতীয় পার্টি।

গেলো দুই সংসদে বিরোধী দল হিসেবে জাতীয় পার্টির ভূমিকা নিয়ে অনেক প্রশ্ন ছিলো। একইসঙ্গে বিরোধী দলের আসন আবার সরকারের মন্ত্রিসভায় থাকার কারণে সমালোচনা শুনতে হয়েছে দলটিকে। সে কারণে এবারও আলোচনা আবারও কি ‘গৃহপালিত’ বিরোধী দল পাচ্ছে সংসদ? ১৯৭৩ সালে প্রথম জাতীয় সংসদে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের উদাহরণ দিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গঠনমূলক সমালোচনা করতে পারলে সংখ্যা কোনো বিষয় নয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. গোবিন্দ চক্রবর্তী বলেন, সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা করা, গণনীতিতে সরকারকে সিরিয়াসলি এনগেজ করা, জনগণের জন্য অব্যাহত কথা বলা-এই জিনিসগুলো সিরিয়াসলি নিচ্ছে কি না। এগুলো সিরিয়াসলি নিতে হবে কারণ, জনগণ ভোট দিয়ে আপনাকে সংসদে পাঠিয়েছে। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর নানক বলছেন, জাতীয় পার্টির সাথে এবার ৬২ জন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য সরকারের সমালোচনায় সংসদকে প্রাণবন্ত রাখবেন।

তিনি বলেন, ৬২ জন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তারাও কিন্তু বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করবে বলে আমি মনে করি। তারা সঠিক পথ বাতলে দেবেন। গঠনমূলক সমালোচনা করবেন। এটা আমাদের প্রত্যাশা। এক সপ্তাহ আগে স্বতন্ত্র সদস্যদের গণভবনে ডেকে বৈঠক করেন সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাদের স্বতন্ত্র হিসেবে থাকার জন্য বলেন সংসদ নেতা। তবে স্বতন্ত্র সদস্যরা তাদের ভাগের সংরক্ষিত আসনে মনোনয়নের সিদ্ধান্ত শেখ হাসিনার ওপর ছেড়ে দিয়েছেন।

স্বতন্ত্র এই সদস্যদের প্রায় সবাই স্থানীয় পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতা। তবে, সংসদে যদি তারা সরকারের বিরোধিতা করে কিংবা দলের বিপক্ষে ভোট দেয় তবে তাদের ওপর সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের খাঁড়া পড়বে না। বিরোধী চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নু বলছেন, এবার জাতীয় পার্টির ভূমিকাই বলে দিবে সংসদে সংখ্যা কোন বিষয় নয়।

মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, বিরোধী দলের দায়িত্ব পালন করতে গেলে সংখ্যা কিন্তু কোনো বিষয় নয়। আন্তরিকতার প্রশ্ন, দায়িত্ব পালনের বিষয়ে কতটুকু আগ্রহ-ইচ্ছা, সেটা কিন্তু বড় বিষয়। আমরা সত্যিকার অর্থে বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করতে চাই ১১ সংখ্যাটি খুব একটা কম নয়। সংসদীয় গণতন্ত্রে বিরোধী দলকে বলা হয় ছায়া সরকার। তাই সরকারের ভুল-ভ্রান্তি তুলে গঠনমূলক সমালোচনার সংস্কৃতি বজায় রাখতে বিরোধী দলের জোরালো ভূমিকা প্রত্যাশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। সূত্র : একাত্তর টিভি।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

এবারও কী ‘গৃহপালিত’ বিরোধী দল হবে?

প্রকাশের সময় : ১০:৩৩:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

১০ বছর জাতীয় সংসদে কার্যকর কোনো বিরোধী দল ছিলো না বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। ২০১৪ ও ১৮ সালের মত সালের মতো এবারও সংসদে বিরোধী দলে জাতীয় পার্টি। তাই ঘুরেফিরে আবারও প্রশ্ন উঠেছে, বিরোধী দল হিসেবে কতোটা শক্ত ভূমিকা তারা পালন করতে পারবে।

যদিও এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। এবার ৬২ জন স্বতন্ত্র সদস্য যখন সংসদে সরব থাকার কথা দিচ্ছেন; তখন ‘গৃহপালিত’ বিরোধী দলের অপবাদ ঘোচাতে চাইছে জাতীয় পার্টি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর থেকেই আলোচনার বিষয় ছিলো এবার কে হচ্ছে বিরোধী দল। ৬২ জন স্বতন্ত্র সদস্যদের সম্মিলিত মোর্চা না কি ১১ আসন পাওয়া জাতীয় পার্টি।

বিরোধী দল কে হবে তার কোনো সংজ্ঞা আইনে না থাকলেও বিরোধী দলীয় নেতার সংজ্ঞা কার্যপ্রণালি বিধিতে দেওয়া আছে। সেই নিয়ম মেনে ২৯ জানুয়ারী জাতীয় পার্টি থেকেই বিরোধী দলীয় নেতা নির্বাচন করেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।

বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের এবং উপনেতা হিসেবে আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে স্বীকৃতি দেন স্পিকার। অবসান হয় বিতর্কের। একাদশ সংসদে জাতীয় পার্টির ২৩ জন সংসদ সদস্য ছিলো। আর সংরক্ষিত নারী আসনে ছিলেন চারজন। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে ২৬ আসনে সমঝোতা করে দলটি। কিন্তু জয় পায় ১১টিতে। সংরক্ষিত আসনে দু’জনকে মনোনয়ন দিতে পারবে জাতীয় পার্টি।

গেলো দুই সংসদে বিরোধী দল হিসেবে জাতীয় পার্টির ভূমিকা নিয়ে অনেক প্রশ্ন ছিলো। একইসঙ্গে বিরোধী দলের আসন আবার সরকারের মন্ত্রিসভায় থাকার কারণে সমালোচনা শুনতে হয়েছে দলটিকে। সে কারণে এবারও আলোচনা আবারও কি ‘গৃহপালিত’ বিরোধী দল পাচ্ছে সংসদ? ১৯৭৩ সালে প্রথম জাতীয় সংসদে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের উদাহরণ দিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গঠনমূলক সমালোচনা করতে পারলে সংখ্যা কোনো বিষয় নয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. গোবিন্দ চক্রবর্তী বলেন, সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা করা, গণনীতিতে সরকারকে সিরিয়াসলি এনগেজ করা, জনগণের জন্য অব্যাহত কথা বলা-এই জিনিসগুলো সিরিয়াসলি নিচ্ছে কি না। এগুলো সিরিয়াসলি নিতে হবে কারণ, জনগণ ভোট দিয়ে আপনাকে সংসদে পাঠিয়েছে। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর নানক বলছেন, জাতীয় পার্টির সাথে এবার ৬২ জন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য সরকারের সমালোচনায় সংসদকে প্রাণবন্ত রাখবেন।

তিনি বলেন, ৬২ জন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তারাও কিন্তু বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করবে বলে আমি মনে করি। তারা সঠিক পথ বাতলে দেবেন। গঠনমূলক সমালোচনা করবেন। এটা আমাদের প্রত্যাশা। এক সপ্তাহ আগে স্বতন্ত্র সদস্যদের গণভবনে ডেকে বৈঠক করেন সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাদের স্বতন্ত্র হিসেবে থাকার জন্য বলেন সংসদ নেতা। তবে স্বতন্ত্র সদস্যরা তাদের ভাগের সংরক্ষিত আসনে মনোনয়নের সিদ্ধান্ত শেখ হাসিনার ওপর ছেড়ে দিয়েছেন।

স্বতন্ত্র এই সদস্যদের প্রায় সবাই স্থানীয় পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতা। তবে, সংসদে যদি তারা সরকারের বিরোধিতা করে কিংবা দলের বিপক্ষে ভোট দেয় তবে তাদের ওপর সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের খাঁড়া পড়বে না। বিরোধী চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নু বলছেন, এবার জাতীয় পার্টির ভূমিকাই বলে দিবে সংসদে সংখ্যা কোন বিষয় নয়।

মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, বিরোধী দলের দায়িত্ব পালন করতে গেলে সংখ্যা কিন্তু কোনো বিষয় নয়। আন্তরিকতার প্রশ্ন, দায়িত্ব পালনের বিষয়ে কতটুকু আগ্রহ-ইচ্ছা, সেটা কিন্তু বড় বিষয়। আমরা সত্যিকার অর্থে বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করতে চাই ১১ সংখ্যাটি খুব একটা কম নয়। সংসদীয় গণতন্ত্রে বিরোধী দলকে বলা হয় ছায়া সরকার। তাই সরকারের ভুল-ভ্রান্তি তুলে গঠনমূলক সমালোচনার সংস্কৃতি বজায় রাখতে বিরোধী দলের জোরালো ভূমিকা প্রত্যাশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। সূত্র : একাত্তর টিভি।