নিউইয়র্ক ০৮:৪৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

বদলে গেল মুঘলদের তৈরি চারশো বছরের যে প্রথা

হককথা ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ০৬:২৫:৫২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ জুলাই ২০২৪
  • / ৩৭ বার পঠিত

যুগের পর যুগ থেকে নানা প্রথা চলে আসছে। সময়ের সঙ্গে মিল রেখে বেশ কিছু প্রথা পরিবর্তন বা বন্ধ হয়ে গেলেও এখনো চলামান রয়েছে কিছু প্রথা। এসবের মধ্যে এবার বাতিল করা হলো ৪৪০ বছরের পুরোনো মুঘল প্রথা। বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের পুরোনো সেই প্রথা অর্থবছরের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে চলতি মাস থেকে ৩০শে জুন পর্যন্ত কার্যকর করা হয়েছে।

যা আগে কার্যকর ছিল পহেলা বৈশাখ থেকে ৩০শে চৈত্র পর্যন্ত। এই রীতি চালু হয়েছিল প্রায় ৪৪০ বছর আগে। তবে এখন থেকে সেটা খ্রিষ্ট্রীয় ক্যালেন্ডার অনুসরণ করে আদায় করা হবে।

তবে হঠাৎ এমন পরিবর্তন কেন? এমন প্রশ্নের জাবাবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মূলত কৃষি ফসল ওঠার উপর নির্ভর করে মুঘল আমলে খাজনা আদায় করা হতো। এখন সেই কৃষির ফলনের ঋতু পরিবর্তন হয়েছে।

এ ছাড়াও হিসাব ব্যবস্থাপনা সহজ করার লক্ষ্যে অর্থবছর অনুযায়ী ভূমি কর আদায়ের উদ্দেশ্যেই চারশো বছরের পুরোনো এ প্রথা পরিবর্তন করা হয়েছে।

যেভাবে ভূমি কর পরিশোধ করতে হয়

ভুমি কর কিভাবে পরিশোধ করতে হয় তা ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে।

ভূমি উন্নয়ন কর হালসনের হিসাব অনুযায়ী পরিশোধ করতে হয়। প্রতি বছরের ভূমি উন্নয়ন কর ওই বছরের ৩০ জুনের মধ্যে জরিমানা ছাড়া আদায় করা যাবে।

কৃষিকাজের ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তি বা পরিবার-ভিত্তিক কৃষি জমির মোট পরিমাণ আট দশমিক ২৫ একর বা ২৫ বিঘা পর্যন্ত হলে ভূমি উন্নয়ন কর দিতে হবে না। তবে এই জমির পরিমাণ ২৫ বিঘার বেশি হলে সম্পূর্ণ কৃষিজমির ওপর ভূমি উন্নয়ন কর দিতে হবে।

এ ছাড়া, অকৃষি ভূমিকে ব্যবহার ভিত্তিক বাণিজ্যিক, শিল্প এবং আবাসিক ও অন্যান্য শ্রেণিতে বিভাজন করে সরকার কর আদায় করে থাকে।

যা বলছে সরকার

গত বছর ১৯৭৬ সালের ভূমি উন্নয়ন কর আইন রহিত করে নতুন আইন প্রণয়ন করা হয়। এটি ভূমি উন্নয়ন কর আইন ২০২৩ নামে পরিচিত।

ভূমি মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বকলেন, ২০২৩ সালে যে আইন হয়েছে সেটার আর্থিক কাঠামোর সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই হিসাব সহজ করার জন্য এই পরিবর্তন আনা হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, যেহেতু এটা সরকারের রেভিনিউ সেকশন তাই অর্থবছরের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এটা পরিবর্তন করা হয়েছে। আমাদের অর্থবছর হচ্ছে পহেলা জুলাই থেকে ৩০শে জুন। ফলে হিসাব – নিকাশ সহজ করার জন্য এ পরিবর্তন।

মুঘল আমলে মূলত কৃষিভিত্তিক রাজস্ব আদায় করা হতো। সে সময় প্রধানত আমন ধান চাষ করা হতো। এর সাথে কলাই, মুসুরি, সরিষা এসব ফসল বেশি চাষ হতো। এসব ফসল মাঘ-ফাল্গুন মাসে জমি থেকে তোলার সময় হতো। তাই চৈত্র মাসকে ফসল ওঠার শেষ সময় ধরে মুঘল সম্রাট বা তার জমিদারেরা খাজনা আদায় করতো। কারণ ওই সময় ফসল উঠলে বিক্রি করে খাজনার টাকা দিতো কৃষকরা।

মুঘল আমলের মতো কৃষির ফলনের সময় এখন নেই তা পরিবর্তন হয়েছে। এখন আমাদের দেশে প্রধান হয়ে গেছে গ্রীষ্মকালীন ধান। আমনের থেকে ফলন এখন বোরোর বেশি-যোগ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, এখন অর্থনীতি এমন হয়ে গেছে কৃষকদের বারো মাসই তরিতরকারি, সবজি, ফলমূল সবকিছু হচ্ছে। বারো মাসই ইনকাম থাকে। এখন সারা বছর কৃষকের ইনকাম যা আসে প্রয়োজন মিটিয়ে তারা খাজনা দিতে পারবে। বিশেষ করে জুন মাসে কর দিতে পারবে কারণ ধান উঠে যাচ্ছে মে মাসের মধ্যে। ফলে ধান উঠলে তারা খাজনা দিতে পারবে

ফলে সবকিছু মিলিয়ে আগের পরিস্থিত বদলে যাওয়ায় শতাব্দী প্রাচীন এই রীতি পরিবর্তন করা হয়েছে বলে জানান ভূমি মন্ত্রী। সূত্র: কালবেলা

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

বদলে গেল মুঘলদের তৈরি চারশো বছরের যে প্রথা

প্রকাশের সময় : ০৬:২৫:৫২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ জুলাই ২০২৪

যুগের পর যুগ থেকে নানা প্রথা চলে আসছে। সময়ের সঙ্গে মিল রেখে বেশ কিছু প্রথা পরিবর্তন বা বন্ধ হয়ে গেলেও এখনো চলামান রয়েছে কিছু প্রথা। এসবের মধ্যে এবার বাতিল করা হলো ৪৪০ বছরের পুরোনো মুঘল প্রথা। বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের পুরোনো সেই প্রথা অর্থবছরের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে চলতি মাস থেকে ৩০শে জুন পর্যন্ত কার্যকর করা হয়েছে।

যা আগে কার্যকর ছিল পহেলা বৈশাখ থেকে ৩০শে চৈত্র পর্যন্ত। এই রীতি চালু হয়েছিল প্রায় ৪৪০ বছর আগে। তবে এখন থেকে সেটা খ্রিষ্ট্রীয় ক্যালেন্ডার অনুসরণ করে আদায় করা হবে।

তবে হঠাৎ এমন পরিবর্তন কেন? এমন প্রশ্নের জাবাবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মূলত কৃষি ফসল ওঠার উপর নির্ভর করে মুঘল আমলে খাজনা আদায় করা হতো। এখন সেই কৃষির ফলনের ঋতু পরিবর্তন হয়েছে।

এ ছাড়াও হিসাব ব্যবস্থাপনা সহজ করার লক্ষ্যে অর্থবছর অনুযায়ী ভূমি কর আদায়ের উদ্দেশ্যেই চারশো বছরের পুরোনো এ প্রথা পরিবর্তন করা হয়েছে।

যেভাবে ভূমি কর পরিশোধ করতে হয়

ভুমি কর কিভাবে পরিশোধ করতে হয় তা ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে।

ভূমি উন্নয়ন কর হালসনের হিসাব অনুযায়ী পরিশোধ করতে হয়। প্রতি বছরের ভূমি উন্নয়ন কর ওই বছরের ৩০ জুনের মধ্যে জরিমানা ছাড়া আদায় করা যাবে।

কৃষিকাজের ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তি বা পরিবার-ভিত্তিক কৃষি জমির মোট পরিমাণ আট দশমিক ২৫ একর বা ২৫ বিঘা পর্যন্ত হলে ভূমি উন্নয়ন কর দিতে হবে না। তবে এই জমির পরিমাণ ২৫ বিঘার বেশি হলে সম্পূর্ণ কৃষিজমির ওপর ভূমি উন্নয়ন কর দিতে হবে।

এ ছাড়া, অকৃষি ভূমিকে ব্যবহার ভিত্তিক বাণিজ্যিক, শিল্প এবং আবাসিক ও অন্যান্য শ্রেণিতে বিভাজন করে সরকার কর আদায় করে থাকে।

যা বলছে সরকার

গত বছর ১৯৭৬ সালের ভূমি উন্নয়ন কর আইন রহিত করে নতুন আইন প্রণয়ন করা হয়। এটি ভূমি উন্নয়ন কর আইন ২০২৩ নামে পরিচিত।

ভূমি মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বকলেন, ২০২৩ সালে যে আইন হয়েছে সেটার আর্থিক কাঠামোর সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই হিসাব সহজ করার জন্য এই পরিবর্তন আনা হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, যেহেতু এটা সরকারের রেভিনিউ সেকশন তাই অর্থবছরের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এটা পরিবর্তন করা হয়েছে। আমাদের অর্থবছর হচ্ছে পহেলা জুলাই থেকে ৩০শে জুন। ফলে হিসাব – নিকাশ সহজ করার জন্য এ পরিবর্তন।

মুঘল আমলে মূলত কৃষিভিত্তিক রাজস্ব আদায় করা হতো। সে সময় প্রধানত আমন ধান চাষ করা হতো। এর সাথে কলাই, মুসুরি, সরিষা এসব ফসল বেশি চাষ হতো। এসব ফসল মাঘ-ফাল্গুন মাসে জমি থেকে তোলার সময় হতো। তাই চৈত্র মাসকে ফসল ওঠার শেষ সময় ধরে মুঘল সম্রাট বা তার জমিদারেরা খাজনা আদায় করতো। কারণ ওই সময় ফসল উঠলে বিক্রি করে খাজনার টাকা দিতো কৃষকরা।

মুঘল আমলের মতো কৃষির ফলনের সময় এখন নেই তা পরিবর্তন হয়েছে। এখন আমাদের দেশে প্রধান হয়ে গেছে গ্রীষ্মকালীন ধান। আমনের থেকে ফলন এখন বোরোর বেশি-যোগ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, এখন অর্থনীতি এমন হয়ে গেছে কৃষকদের বারো মাসই তরিতরকারি, সবজি, ফলমূল সবকিছু হচ্ছে। বারো মাসই ইনকাম থাকে। এখন সারা বছর কৃষকের ইনকাম যা আসে প্রয়োজন মিটিয়ে তারা খাজনা দিতে পারবে। বিশেষ করে জুন মাসে কর দিতে পারবে কারণ ধান উঠে যাচ্ছে মে মাসের মধ্যে। ফলে ধান উঠলে তারা খাজনা দিতে পারবে

ফলে সবকিছু মিলিয়ে আগের পরিস্থিত বদলে যাওয়ায় শতাব্দী প্রাচীন এই রীতি পরিবর্তন করা হয়েছে বলে জানান ভূমি মন্ত্রী। সূত্র: কালবেলা