নিউইয়র্ক ০৭:৪৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৫ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির অমিলে ছাত্রসংগঠনগুলো অখুশি

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৪:৫২:৫৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / ৪১ বার পঠিত
  • ফ্যাসিবাদের বিচার ও আহতদের চিকিৎসায় ব্যর্থতার অভিযোগ।
  • সরকার যথেষ্ট কঠোর হতে পারছে না বলে দাবি।
  • ‘জনজীবনের সমস্যা সমাধানে সরকার বেশি দুর্বল।’

গত বছরের জুলাই অভ্যুত্থানের আগুন সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্রশিবির, ছাত্র ইউনিয়নসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠন। জুলাইয়ের আগেও দেশের বিভিন্ন ক্যাম্পাসে আওয়ামী লীগের স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক আন্দোলন করেছে ছাত্র ফেডারেশন, ছাত্র ফ্রন্ট, ছাত্র অধিকার পরিষদ, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগঠন। তবে সেই সংগঠনগুলোই আবার ৬ মাস আগে অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের লক্ষ্য পূরণে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা ও নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে। ছাত্রসংগঠনগুলোর নেতারা বলছেন, এ সরকারের কর্মকাণ্ডে জুলাই অভ্যুত্থানের লক্ষ্য এবং চেতনা ফিকে হয়ে যাচ্ছে।

বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীরা বলেছেন, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার ও বিচার কার্যক্রমে ধীরগতি, ৬ মাসেও আন্দোলনের সব শহীদ ও আহতের ক্ষতিপূরণ এবং সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে না পারা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, নতুন ভ্যাটের ফলে পণ্য মূল্যবৃদ্ধি, বিভিন্ন উগ্রপন্থী গোষ্ঠীকে নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতাসহ বিভিন্ন কারণে তাঁরা মনে করছেন, সরকার যথাযথ ভূমিকা রাখতে পারছে না। ছাত্রসংগঠনের নেতারা মনে করেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর যেমন গণতান্ত্রিক পরিবেশ তাঁরা আশা করেছিলেন, তেমন পরিবেশ তৈরি করতেও সরকার ব্যর্থ হয়েছে।

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন বলেন, ‘যে চেতনা ও আকাঙ্ক্ষা থেকে জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছিল, তা পূরণে বর্তমান সরকার অনেকাংশেই অসফল। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, হত্যা-নির্যাতন-গুমে জড়িত অপরাধীদের বিচার শুরু করা এবং একের পর এক মহলের দাবিদাওয়া নিয়ে আন্দোলন শুরু হওয়া নিয়ন্ত্রণে সরকার দুর্বলতার পরিচয় দিয়েছে।’ শিপন আরও অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের দোসরেরা এখনো প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থেকে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। উপদেষ্টা পরিষদের কর্মকাণ্ডে সমন্বয়ের অভাবের কারণেও যথাযথভাবে সরকারের কার্যক্রম পরিচালনা সম্ভব হচ্ছে না বলে মন্তব্য করেন তিনি। শিপন বলেন, এ মুহূর্তে গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তিগুলোর ঐক্য এবং অতিদ্রুত রাষ্ট্র পরিচালনায় জনগণের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

জুলাই-আগস্টের হাসিনাবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব আরিফ সোহেল বলেন, ‘৬ মাসে সবকিছু বাস্তবায়িত হবে না। কিন্তু আরও অনেক কিছু হতে পারত বলে আমরা মনে করি। আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠনের লোকজনকে গ্রেপ্তার ও বিচার এবং গণ-অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের সুচিকিৎসার ক্ষেত্রে সরকার ব্যাপক দুর্বলতার পরিচয় দিয়েছে।’ আমলাতন্ত্রের ওপর অতিনির্ভরশীলতার কারণে সরকার যথাযথ ভূমিকা রাখতে পারছে না বলে মন্তব্য করেন আরিফ সোহেল। এ ছাড়া তিনিও পুলিশ, প্রশাসনসহ বিভিন্ন জায়গায় থাকা ‘ফ্যাসিবাদের দোসরদের’ অসহযোগিতার কথা উল্লেখ করেন।

হতাশার কারণ হিসেবে গত ৫ আগস্ট-পরবর্তী বিভিন্ন হামলা ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের কথা উল্লেখ করেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক তামজিদ হায়দার চঞ্চল। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘অভ্যুত্থানের চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করে মন্দির, মাজার, আদিবাসীদের ওপর হামলা করা হচ্ছে। যৌথ বাহিনীর অভিযানের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হচ্ছে। মব ইনজাস্টিসের মাধ্যমে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণের নতুন বন্দোবস্তও দেখলাম। গণহত্যার বিচার ও সব আহতকে যথাযথ চিকিৎসা দিতে না পারা সরকারের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা হিসেবে তুলে ধরেন তিনি। এ ছাড়া গণতান্ত্রিক পরিবেশ এবং আইনের শাসন নিশ্চিত করা, সিন্ডিকেট ভেঙে পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনার ক্ষেত্রেও সরকার সফলতা পায়নি বলে মনে করেন ছাত্র ইউনিয়নের এই নেতা। ইসলামী ছাত্রশিবিরের দপ্তর সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ জানান, তাঁরা যেমন পরিবর্তন প্রত্যাশা করেছিলেন, তা দেখতে পাচ্ছেন না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের বিচার প্রশ্নে সরকারের ভূমিকা সবচেয়ে দুর্বল বলে মনে করেন তিনি।

শিবিরের এই নেতার ধারণা, সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণে নমনীয়তার নীতি অনুসরণের ফলেই সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। তিনি বলেন, সরকারের যেভাবে বড় সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া দরকার ছিল, সেগুলো নিতে পারেনি।বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ বলেন, ছাত্র-জনতা ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নিলেও সেই আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়নে সরকারি উদ্যোগ এ পর্যন্ত অত্যন্ত অপ্রতুল। তিনি বলেন, সরকার অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার পুরোপুরি বিপরীতে গিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠের কাছে জনপ্রিয় থাকতে চাচ্ছে। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো পুনর্গঠন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, গণহত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচার, শহীদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি, আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে সরকারের দুর্বলতায় মানুষ ক্ষুব্ধ ও হতাশ।

ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল শেখ মাহবুবুর রহমান নাহিয়ান বলেন, ‘অভ্যুত্থানের মূল চেতনা বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলাম। ৬ মাস বেশি সময় নয়। তবে মৌলিক চেতনাটিও বাস্তবায়নের চেষ্টা স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান নয়। ফ্যাসিস্টের পতন হলেও ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ হয়নি।’ সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি সালমান সিদ্দিকী বলেন, আন্দোলনে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ে তোলার যে চেতনা ছিল, তা সরকারের ভূমিকায় প্রতিফলিত হচ্ছে না। অভ্যুত্থানের পরই শ্রমিকের বুকে গুলি চলেছে। বাজার সিন্ডিকেটকে ভাঙা যায়নি। জনজীবনের সমস্যাগুলো সমাধানে সরকারের ভূমিকা সবচেয়ে দুর্বল। সূত্র : আজকের পত্রিকা।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির অমিলে ছাত্রসংগঠনগুলো অখুশি

প্রকাশের সময় : ০৪:৫২:৫৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ফ্যাসিবাদের বিচার ও আহতদের চিকিৎসায় ব্যর্থতার অভিযোগ।
  • সরকার যথেষ্ট কঠোর হতে পারছে না বলে দাবি।
  • ‘জনজীবনের সমস্যা সমাধানে সরকার বেশি দুর্বল।’

গত বছরের জুলাই অভ্যুত্থানের আগুন সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্রশিবির, ছাত্র ইউনিয়নসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠন। জুলাইয়ের আগেও দেশের বিভিন্ন ক্যাম্পাসে আওয়ামী লীগের স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক আন্দোলন করেছে ছাত্র ফেডারেশন, ছাত্র ফ্রন্ট, ছাত্র অধিকার পরিষদ, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগঠন। তবে সেই সংগঠনগুলোই আবার ৬ মাস আগে অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের লক্ষ্য পূরণে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা ও নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে। ছাত্রসংগঠনগুলোর নেতারা বলছেন, এ সরকারের কর্মকাণ্ডে জুলাই অভ্যুত্থানের লক্ষ্য এবং চেতনা ফিকে হয়ে যাচ্ছে।

বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীরা বলেছেন, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার ও বিচার কার্যক্রমে ধীরগতি, ৬ মাসেও আন্দোলনের সব শহীদ ও আহতের ক্ষতিপূরণ এবং সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে না পারা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, নতুন ভ্যাটের ফলে পণ্য মূল্যবৃদ্ধি, বিভিন্ন উগ্রপন্থী গোষ্ঠীকে নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতাসহ বিভিন্ন কারণে তাঁরা মনে করছেন, সরকার যথাযথ ভূমিকা রাখতে পারছে না। ছাত্রসংগঠনের নেতারা মনে করেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর যেমন গণতান্ত্রিক পরিবেশ তাঁরা আশা করেছিলেন, তেমন পরিবেশ তৈরি করতেও সরকার ব্যর্থ হয়েছে।

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন বলেন, ‘যে চেতনা ও আকাঙ্ক্ষা থেকে জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছিল, তা পূরণে বর্তমান সরকার অনেকাংশেই অসফল। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, হত্যা-নির্যাতন-গুমে জড়িত অপরাধীদের বিচার শুরু করা এবং একের পর এক মহলের দাবিদাওয়া নিয়ে আন্দোলন শুরু হওয়া নিয়ন্ত্রণে সরকার দুর্বলতার পরিচয় দিয়েছে।’ শিপন আরও অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের দোসরেরা এখনো প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থেকে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। উপদেষ্টা পরিষদের কর্মকাণ্ডে সমন্বয়ের অভাবের কারণেও যথাযথভাবে সরকারের কার্যক্রম পরিচালনা সম্ভব হচ্ছে না বলে মন্তব্য করেন তিনি। শিপন বলেন, এ মুহূর্তে গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তিগুলোর ঐক্য এবং অতিদ্রুত রাষ্ট্র পরিচালনায় জনগণের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

জুলাই-আগস্টের হাসিনাবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব আরিফ সোহেল বলেন, ‘৬ মাসে সবকিছু বাস্তবায়িত হবে না। কিন্তু আরও অনেক কিছু হতে পারত বলে আমরা মনে করি। আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠনের লোকজনকে গ্রেপ্তার ও বিচার এবং গণ-অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের সুচিকিৎসার ক্ষেত্রে সরকার ব্যাপক দুর্বলতার পরিচয় দিয়েছে।’ আমলাতন্ত্রের ওপর অতিনির্ভরশীলতার কারণে সরকার যথাযথ ভূমিকা রাখতে পারছে না বলে মন্তব্য করেন আরিফ সোহেল। এ ছাড়া তিনিও পুলিশ, প্রশাসনসহ বিভিন্ন জায়গায় থাকা ‘ফ্যাসিবাদের দোসরদের’ অসহযোগিতার কথা উল্লেখ করেন।

হতাশার কারণ হিসেবে গত ৫ আগস্ট-পরবর্তী বিভিন্ন হামলা ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের কথা উল্লেখ করেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক তামজিদ হায়দার চঞ্চল। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘অভ্যুত্থানের চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করে মন্দির, মাজার, আদিবাসীদের ওপর হামলা করা হচ্ছে। যৌথ বাহিনীর অভিযানের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হচ্ছে। মব ইনজাস্টিসের মাধ্যমে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণের নতুন বন্দোবস্তও দেখলাম। গণহত্যার বিচার ও সব আহতকে যথাযথ চিকিৎসা দিতে না পারা সরকারের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা হিসেবে তুলে ধরেন তিনি। এ ছাড়া গণতান্ত্রিক পরিবেশ এবং আইনের শাসন নিশ্চিত করা, সিন্ডিকেট ভেঙে পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনার ক্ষেত্রেও সরকার সফলতা পায়নি বলে মনে করেন ছাত্র ইউনিয়নের এই নেতা। ইসলামী ছাত্রশিবিরের দপ্তর সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ জানান, তাঁরা যেমন পরিবর্তন প্রত্যাশা করেছিলেন, তা দেখতে পাচ্ছেন না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের বিচার প্রশ্নে সরকারের ভূমিকা সবচেয়ে দুর্বল বলে মনে করেন তিনি।

শিবিরের এই নেতার ধারণা, সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণে নমনীয়তার নীতি অনুসরণের ফলেই সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। তিনি বলেন, সরকারের যেভাবে বড় সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া দরকার ছিল, সেগুলো নিতে পারেনি।বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ বলেন, ছাত্র-জনতা ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নিলেও সেই আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়নে সরকারি উদ্যোগ এ পর্যন্ত অত্যন্ত অপ্রতুল। তিনি বলেন, সরকার অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার পুরোপুরি বিপরীতে গিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠের কাছে জনপ্রিয় থাকতে চাচ্ছে। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো পুনর্গঠন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, গণহত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচার, শহীদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি, আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে সরকারের দুর্বলতায় মানুষ ক্ষুব্ধ ও হতাশ।

ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল শেখ মাহবুবুর রহমান নাহিয়ান বলেন, ‘অভ্যুত্থানের মূল চেতনা বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলাম। ৬ মাস বেশি সময় নয়। তবে মৌলিক চেতনাটিও বাস্তবায়নের চেষ্টা স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান নয়। ফ্যাসিস্টের পতন হলেও ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ হয়নি।’ সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি সালমান সিদ্দিকী বলেন, আন্দোলনে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ে তোলার যে চেতনা ছিল, তা সরকারের ভূমিকায় প্রতিফলিত হচ্ছে না। অভ্যুত্থানের পরই শ্রমিকের বুকে গুলি চলেছে। বাজার সিন্ডিকেটকে ভাঙা যায়নি। জনজীবনের সমস্যাগুলো সমাধানে সরকারের ভূমিকা সবচেয়ে দুর্বল। সূত্র : আজকের পত্রিকা।